দিল্লির বিখ্যাত জামেয়া মিল্লিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের নৃশংস হামলা, নির্যাতন ও আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য নাজমা আখতার।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের অভিযানে মর্মাহত বলে এক ভিডিওবার্তায় জানান নাজমা আখতার। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের লড়াইয়ে তিনিও আছেন।
মিল্লিয়ার ভিসি বলেন, ‘আমার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যে বর্বরোচিত আচরণ করা হয়েছে, তাতে আমি ব্যথিত।
যেভাবে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে এবং লাইব্রেরিতে পড়াশোনারত শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। ’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার শিক্ষার্থীদের জানাতে চাই যে, তারা এই কঠিন লড়াইয়ে একা নন। আমি ও পুরো জামিয়া তাদের সঙ্গে রয়েছি। যতক্ষণ সম্ভব আমি এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে যাব। আপনারা কখনও একা নন, হতাশ হবেন না এবং কোনও গুজবে বিশ্বাস করবেন না। ’
রোববার সন্ধ্যায় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংসতা চালিয়েছে দেশটির পুলিশ। তবে পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে যা করার দরকার ছিল, তারা তা-ই করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুসারে, ক্যাম্পাসে পুলিশের ঢুকতে হলে আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেয়ার পর কয়েক শত লোক দিল্লি পুলিশ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে করতে গেলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়েছে।
এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সহিংসতায়-বিক্ষত মূল সড়ক ধরে আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে হাত উঁচিয়ে শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে। এসময় পুলিশ তাদের তাড়িয়ে-ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
জামিয়ার প্রধান প্রক্টর ওয়াসিম আহমেদ খান বলেন, পুলিশ জোর করে ক্যাম্পাসে ঢুকেছে। তাদের কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি। আমাদের কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়েছে। তাদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে মাথার ওপর হাত তুলে হোস্টেল থেকে ছাত্রদের বের করে নিচ্ছে পুলিশ। যদিও আটকের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি এখনো।
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের জন্য মিল্লিয়ার শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে পুলিশ। যদিও শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট ভেঙে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর অভিযান চালায়।