নিজস্ব প্রতিবেদক : কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নে নিখোঁজের ছয় দিন পর বাড়ির পাশের পুকুর থেকে শিশু সানির(৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার রাত ৯টায় উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের দক্ষিণ পালপাড়া গ্রামের লুৎফুর রহমানের পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করে লালমাই থানা পুলিশ।
নিহত আবু সুফিয়ান সানি দক্ষিণ পালপাড়ার সৌদি প্রবাসী জুয়েল রানার একমাত্র ছেলে। সে পালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থী ছিলো।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৮ই মার্চ দক্ষিণ পালপাড়া গ্রামের আবদুল গনির ছেলে জুয়েল রানা প্রতিবেশি মোস্তফা কামালের মেয়ে মাহমুদা আক্তার খুকিকে গোপনে বিয়ে করে। দাম্পত্য জীবনে আবু সুফিয়ান সানি নামে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। প্রায় ৩ বছর পূর্বে জুয়েল রানা কর্মের তাগিদে সৌদি আরব চলে যান। ২০১৮ সালের ৯ই জুলাই জুয়েল রানাকে তালাক দিয়ে নোটিশ দেন স্ত্রী মাহমুদা।
কিছুদিন পর আবু সুফিয়ানকে তার দাদা আবদুল গনির হেফাজতে রেখে অন্যত্র বিয়ে করেন মাহমুদা। এসবের জেরে দুই পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ ও মামলা চলছিলো। গত ৫ জানুয়ারী দুপুর থেকে আবু সুফিয়ান নিখোঁজ হয়েছে মর্মে লালমাই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন দাদা আবদুল গনি।
শনিবার সন্ধ্যায় পালপাড়া গ্রামের লুৎফুর রহমানের পুকুরে আবু সুফিয়ানের লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। রাত অনুমান ৯টায় সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সদর দক্ষিণ সার্কেল) প্রশান্ত পাল ও লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ুবসহ পিবিআই ও সিআইডি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লাশটি উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। লাশের পা দুটি পুকুরে থাকা নেটের সঙ্গে আটকানো ছিলো। তার শরীরে পচন ধরেছে।
নিহতের দাদা আবদুল গনি বলেন, নাতিটা আমার কলিজার টুকরা। এই নাতির প্রাণের বিনিময়ে চাইলে আমার প্রাণটা দিয়ে দিতাম।
স্থানীয় বেলঘর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মজুমদার বলেন, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, শিশুটির মলদ্বারে মল আছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ও সিআইডি কাজ করছে। মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।