নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও খ্যাতিমান গবেষক ড. বেলাল হোসেনকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
রবিবার (৩১ মে) নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. মজনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিজ্ঞপতিতে বলেন, সম্প্রতি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের সম্মানিত সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন নোয়াখালী উপকূল হতে এনিলিডা পর্বের একটি নতুন প্রজাতির আবিষ্কার করেছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা অর্জনে গৌরবময় ভূমিকা ও গবেষণা ক্ষেত্রে তাঁর অনন্য অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে তিনি এর নামকরণ করেছেন “Glycera sheikhmujibi”। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে এই নামকরণ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্মানিত করেছে।
নামকরণের পূর্বে তিনি ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রধান সমন্বয়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি ও সাবেক মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে আমরা অবগত আছি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলেন, একজন প্রথিতযশা গবেষক হিসেবে তাঁর নিয়মিত গবেষণা কাজের সফলতায় আমরা শিক্ষক সমিতি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। বৈজ্ঞানিক নামকরণ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান না রেখে গত ২৯ মে, ২০২০ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে “আখতারুজ্জামান আজাদ” নামক একজন লেখক এই গবেষক-বিজ্ঞানীকে নিয়ে বিভিন্ন মানহানিকর মন্তব্য করেছেন। তাঁর ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করেছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এই দুর্যোগের সময় যখন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও এর শিক্ষকগণ বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা পরীক্ষা ও করোনা শনাক্তকরণের কিট আবিষ্কারসহ বিভিন্ন উপায়ে তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে দেশের জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন, তখন বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর একজন শিক্ষককে অসম্মান করে এমন বক্তব্য প্রকাশে আমরা নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। অতি দ্রুত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করে এই বিষয়টি সুরাহা করতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাই।
বিজ্ঞপতিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর একজন সিনিয়র শিক্ষক সম্পর্কে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর এই তথ্যগুলো নোবিপ্রবির একজন জুনিয়র শিক্ষক উক্ত লেখককে পাঠিয়েছেন বলে পোস্টটি হতে জানা যায়। বিষয়টি খুব দুঃখজনক, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত শিক্ষককে চিহ্নিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।
বিজ্ঞপতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন যুক্তরাজ্যের হাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স, ব্রুনাই দারুস সালাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে পোস্ট-ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেল এর পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে মার্চ ২০১৫ থেকে এপ্রিল ২০১৫, নভেম্বর ২০১৬ থেকে অক্টোবর ২০১৮, এবং অক্টোবর ২০১৯ হতে বর্তমান পর্যন্ত অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোপূর্বে তিনি মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের দুইবার বিভাগীয় চেয়ারম্যান এর দায়িত্বে ছিলেন। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে তাঁর শতাধিক প্রকাশিত প্রবন্ধ রয়েছে। আন্তর্জাতিক সাইটেশেন মাধ্যম Google Scholar এ তাঁর সাইটেশেন সংখ্যাঃ ১১৫৬, H-ইনডেক্সঃ ১৮ i-10 ইনডেক্সঃ ৩৯। এই আবিষ্কারের পূর্বেও তিনি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে নেফটাইস বাংলাদেশি (Nephtys bangladeshi), নিউমানিয়া নোবিপ্রবিয়া (Neumania nobiprobia) ও অ্যারেনুরাস স্মিটি (Arrenurus smiti), এবং ব্রুনাইয়ের সমুদ্র এলাকা থেকে ভিক্টোরিয়োপিসা ব্রুনেইয়েনসিস (Victoriopisa bruneiensis) নামের আরো চারটি নতুন অমেরুদণ্ডী প্রজাতি আবিষ্কার করে বিশ্ব বিজ্ঞানমঞ্চে আলোড়ন তৈরি করেন।
২৪ ঘণ্টা/এম আর