Tag: নির্বাচন কমিশনার

  • নির্বাচনে কোন পক্ষপাতমূলক আচরণ কিংবা শৈথিল্য প্রদর্শন করা যাবে না: নির্বাচন কমিশনার

    নির্বাচনে কোন পক্ষপাতমূলক আচরণ কিংবা শৈথিল্য প্রদর্শন করা যাবে না: নির্বাচন কমিশনার

    আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে কি কি নির্দেশনা দিয়েছেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মোঃ আনিছুর রহমান বলেন, আমরা আজকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা রিটার্নিং অফিসার, সহকারি রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলার রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ এর সাথে মতবিনিময় করেছি। আমাদের একটাই নির্দেশনা নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন প্রকার পক্ষপাত মূলক আচরণ কিংবা শৈথিল্য প্রদর্শন করা যাবে না। কারো পক্ষপাত মূলক আচরণের কারণে যদি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয় তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

    আজ ২৬ নভেম্বর রোববার সকালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সাধারণ নির্বাচন-২০২৪ উপলক্ষ্যে জেলা রিটার্নিং অফিসার, সহকারি রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের সাথে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি মতবিনিময় করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম।

    তিনি বলেন, যে সমস্ত দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন তারা এখনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে সন্ধিহান এ ব্যাপারে আপনার নির্দেশনা কি এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বরাবরই বলে আসছি, আমরা একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং অবাধ নির্বাচন করতে চাই। সেজন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যা যা করার দরকার তা করা হচ্ছে এবং হবে। এ বিষয়ে এখনো কেউ কিছু বলেনি। আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারছি বিভিন্ন দল বিভিন্নভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যে অনেকগুলো দল অংশগ্রহণ করেছে এবং করছে। তা দেখে মনে হচ্ছে এবারের নির্বাচন প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ হবে। এবারের নির্বাচনকে শুধু আমরা আমাদের চোখে দেখছি না, বিশ্ববাসী ও দেখছে। সুতরাং নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার কোন বিকল্প নেই, করতেই হবে।

    ভোটারদের যেন কোন প্রকার ভয়ভীতি দেখানো না হয় এবং ভোটার সংখ্যা কিভাবে বাড়ানো যায় সেজন্য কোন পদক্ষেপ নিয়েছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোটারকে কেন্দ্রে আনা নির্বাচন কমিশন বা নির্বাচনকারী কর্মকর্তা কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ নয়। যে নির্বাচন করবে সেই প্রার্থীর ও দলের এবং দলের কর্মী সমর্থকদের। আমরা বলে দিয়েছি ভোটারদের কোন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতে চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
    সামনে নির্বাচন, কিছু কিছু দল নির্বাচনে যাচ্ছেনা, আবার নির্বাচন বানচাল করার ঘোষণা দিয়েছে। যদি কেউ নির্বাচন বানচাল করতে চায় সে ক্ষেত্রে, তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন করা এবং না করার এখতিয়ার প্রত্যেকটি দলের আছে। তবে, নির্বাচন বানচাল করার অধিকার কারো নেই। কোন আইনেও তা দেওয়া নেই। যদি কেউ এরকম অপচেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরেআলম মিনা, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, বিজিবির রিজিওনাল কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজিদুর রহমান, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুছ আলী, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এনামুল হক প্রমূখ।

  • ভোটার উপস্থিতির দায়িত্ব প্রার্থীদের, নির্বাচন কমিশনের না

    ভোটার উপস্থিতির দায়িত্ব প্রার্থীদের, নির্বাচন কমিশনের না

    নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, ভোটারদের উপস্থিতির দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের না। উপস্থিতি বাড়ানোর দায়িত্ব প্রার্থীদের। তাদের প্রচার-প্রচারণা এবং তৎপরতা থাকতে হবে। আরেকটি বিষয়, জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকমাস বাকি। এর মধ্যে উপনির্বাচন হচ্ছে। এ কারণে হয়তো ভোটারদের উপস্থিতি একটু কম হচ্ছে। ঢাকা-১৭ আসনে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হয়েছেন। তবে ভোটারের উপস্থিতি যাই হোক আমরা তার ভিত্তিতে ফল ঘোষণা করব। অতীতেও করেছি এবং ভবিষ্যতেও করব।

    রোববার (২৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচন সামনে রেখে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

    নির্বাচনে প্রার্থীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গে আনিছুর রহমান বলেন, এটি নিন্দনীয় কাজ। ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচন শেষ হওয়ার একটু আগে প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে, যেটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ঘটনা তদন্তাধীন রয়েছে। এতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বরিশাল সিটি নির্বাচনেও এরকম ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা যারা করে তারা কারও উদ্দেশ্য সফল করার জন্য করে নাকি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য করে তাও প্রশ্নসাপেক্ষ।

    তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে প্রার্থী ছোট-বড় বলে কিছু নেই। প্রার্থী যেই হোক তার নিরাপত্তা বিধান আমাদের দায়িত্ব। এখন প্রার্থীদের সঙ্গে সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন এবং প্রার্থীদেরকে বলেছি তারা যেখানে যাবে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকে যাতে অবহিত করে। প্রার্থীদের নিরাপত্তা ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কিন্তু এখনো কোনো দলকে নিবন্ধন দেইনি। মাঠ পর্যায় থেকে তথ্যউপাত্ত নিয়ে আমরা বলেছি, দুটি দল নিবন্ধনের জন্য সব যোগ্যতা অর্জন করেছে। তাদের বিষয়ে যদি কোনো আপত্তি থাকে তাহলে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে জানাতে বলেছি। এখন এর মধ্যে কেউ অভিযোগ দিলে সেটি ২৬ তারিখের পর যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর নিবন্ধনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

    নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বদলি নিয়মিত প্রক্রিয়া। এখনো প্রশাসন আমাদের আওতার বাইরে। যখন তফসিল ঘোষণা করা হবে, তখন বদলি নিয়োগ সব আমরা করতে পারব। তখন অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    একজনের ভোট আরেকজন দিচ্ছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচনে ভোটার কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারেননি, এরকম অভিযোগ আমরা পাইনি। ইভিএম পদ্ধতিতে একজনের ভোট আরেকজনের দেওয়ার তো সুযোগ নেই। এখন কেউ কেন্দ্রে না এসে বাড়িতে বসে অভিযোগ দিলে তো আমাদের করার কিছু নেই। এখন প্রত্যেক কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকে, শুধুমাত্র গোপন কক্ষ ছাড়া। ওই কক্ষে কেউ ঢুকতে পারে না। আবার বাইরের সব দৃশ্য কিন্তু আমরা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখতে পারি।

    চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে বিষয়ে ইসি আনিছুর বলেন, এই আসনে নির্বাচন হবে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ। এক্ষেত্রে সবাইকে সতর্কভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সব প্রার্থী নির্বিঘ্নে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে এক প্রার্থীর প্রধান কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিন্তু মামলা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার হয়েছে। এছাড়া বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা বলেছি, কোনো ঘটনাকে ছোট করে দেখলে হবে না। একটি কারণে কিন্তু আরেকটি ঘটনা ঘটে।

    এর আগে গত ২ জুন চট্টগ্রাম-১০ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যু হয়। ৪ জুন আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ জুলাই এই আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

  • কারো ভূমিকা নির্বাচনে প্রশ্নবিদ্ধ হলে ব্যবস্থা নেবে কমিশন: ইসি

    কারো ভূমিকা নির্বাচনে প্রশ্নবিদ্ধ হলে ব্যবস্থা নেবে কমিশন: ইসি

    নির্বাচনে কারো ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টিগোচর হলে কমিশন ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব।

    মঙ্গলবার (৭ জুন) বিকেলে সার্কিট হাউজে চট্টগ্রামের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

    এসময় বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবং বিভিন্ন নির্বাচনে আমরা দেখেছি পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চমৎকার দায়িত্ব পালন করেছে। অনেক জায়গায় নির্বাচন সুন্দর এবং সুষ্ঠু হয়েছে।

    বর্তমান নির্বাচন কমিশন এ কার্যক্রমকে আরো উচ্চতর মাত্রায় নিয়ে যেতে চায়। সম্প্রতি যেসকল স্থানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেসকল নির্বাচনকে নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

    নির্বাচন কমিশন চায় প্রত্যেকে যার যার দায়িত্ব আইন সঙ্গতভাবে এবং নিরপেক্ষতার সাথে পালন করবে। অন্যথায় নির্বাচন কমিশন তার আইনসঙ্গত ক্ষমতা প্রয়োগ করে নির্বাচনে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
    তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে আরো স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্যতা আনয়নের লক্ষ্যে নির্বাচনে ইতোপূর্বে ব্যবহৃত ম্যানুয়াল ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। যা স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে। ভোটারদেরকে নিরবিঘ্নে, নিরাপদে ও নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত ও ভোট প্রদানের সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল টিমের তৎপরতা বাড়াতে হবে। সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। যে সকল প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করবেন রিটানিং অফিসার ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গহণ করবেন। বারবার সতর্ক করার পরও যদি প্রার্থীগণ আচরণবিধি বঙ্গ করে তাহলে নির্বাচন কমিশন বিধি মোতাবেক প্রয়োজনে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করবে।

    জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

  • ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত বিবেচনা করা হবে: সিইসি

    ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত বিবেচনা করা হবে: সিইসি

    ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

    মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে কমিশনের প্রশিক্ষণ ভবনে ভোটার তালিকা হালনাগাদ উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ তাগিদ দেন।

    সিইসি বলেন, সম্পূর্ণ ইভিএমে ভোট নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ইভিএম এর বিষয়ে রাজনৈতিক দলের মতামত বিবেচনা করবে কমিশন। নির্বাচন নিয়ে সরকারের দেওয়া বক্তব্যে কোনো চাপে পড়ছে না কমিশন। এছাড়া কাউকে ভোটের মাঠে আনা কমিশনের কাজ নয়। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানই কমিশনের মূল দায়িত্ব বলে জানান তিনি।

    তিনি বলেন, ঠিকঠাক ভোটার তালিকা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। ধৈর্য ও সততার সঙ্গে নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে।

    সিইসি বলেন, জাতীয় নির্বাচনসহ সব ধরনের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে বদ্ধপরিক নির্বাচন কমিশন। আগামী কুমিল্লা সিটিসহ স্থানীয় নির্বাচনগুলো যাতে সুষ্ঠু হয় তার জন্য কমিশন সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

    ভোটার তালিকা হালনাগাদের কর্মীদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, আগামী ২০ মে থেকে সারাদেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হচ্ছে। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পূর্বশর্ত স্বচ্ছ ভোটার তালিকা। সে জন্য আপনাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কোনো ভোটার যাতে বাদ না পড়ে সে দিকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেন তিনি।

    তিনি বলেন, এবার হালনাগাদ কার্যক্রম মোট চার ধাপে শেষ করা হবে। প্রথম ধাপে ১৪০ উপজেলায় ২০ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ সময়ে নির্বাচন কমিশনের তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করবেন।

    ভোটের মাঠে কেনো মানুষ যায় না এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর আমি দেবো না। আমাদের দায়িত্ব ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা। আমাদের কর্মীরা ভোটার তালিকা প্রণয়ন করতে মাঠে যাবে। আপনি যেই প্রশ্নটা করেছেন, সেই প্রশ্নের কোনো মন্তব্যই আমি করবো না।

    ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো মধ্যে যে আলোচনা হচ্ছে সেটি নিয়ে কী করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, সেটি নিয়ে পত্রিকায় আসছে এবং আমাদের বক্তব্যগুলো আপনাদের জানানো হয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠান করার দায়িত্ব আমাদের। হয়তো আপনারা বলতে পারেন যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি বক্তব্য দিয়েছেন এবং বিভিন্নজন থেকে বক্তব্য আসতে পারে। এই বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নাকি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেছেন বিষয়টি এখনো স্পষ্ট না। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলা, বিএনপির প্রধান বলা, জাসদের আব্দুর রব বলা এগুলো ভিন্ন জিনিস।

    আর সব থেকে বড় কথা যেটি স্পষ্ট করে বলতে চাচ্ছি, অনেকে ইচ্ছা পোষণ করতে পারেন, সদিচ্ছা ব্যক্ত করতে পারেন আর ইভিএমে ভোট দেওয়ার বিষয়ে আমরা এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। ইতোমধ্যে আমরা নিজেরা অনেকগুলো সভা করেছি, আগামীতে আরও সভা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত হবে আমাদের। ভোট স্বাধীনভাবে আমরা পরিচালনা করবো যতদূর সম্ভব। এটা আমাদের এখতিয়ারভুক্ত, পদ্ধতিও আামাদের এখতিয়ারভুক্ত।

    সাংবাদিকদের এক আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত আমাদের ওপরেই থাকবে। মতামত আমরা বিবেচনায় নিতে পাারি। আপনিও মতামত দিতে পারেন, রাস্তায় কেউ মতামত দিতে পারেন, রাজনৈতিক দলগুলো মতামত দিতে পারবেন। আল্টিমেটলি আমরা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো ভোট কোন পদ্ধতি ও কেমন হবে। সেটি আমাদের বিষয়। এই বিষয়ে আমরা স্বাধীন।

    এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব আসনে ইভিএমে ভোট করার মত এখন আমাদের সামর্থ নেই। ৩০০ আসনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা এখনো নেইনি। ভোট ব্যালটে হবে না ইভিএমে, কতটি আসনে ইভিএমে হবে, এই বিষয়ে কমিশন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এটি পর্যালোচনাধীন রয়েছে।

    এরআগে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের শুদ্ধ ও সিদ্ধভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দিয়ে সিইসি বলেন, শুদ্ধ ও সঠিক ভোটার তালিকা ছাড়া প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন সম্ভব নয়।

    ইসি জানায়, এবারের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে দুই বছরের অগ্রিম তথ্যসহ মোট তিন বছরের তথ্য নেওয়া হবে। যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৭ বা তার পূর্বে অর্থাৎ ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যে সব ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ কার্যক্রমে ১ জানুয়ারি ২০০৫ বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ২ জানুয়ারি ২০২৩, ১ জানুয়ারি-২০০৬ বা তার আগে যাদের জন্ম তাদের ২ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে এবং ১-১-২০০৭ বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে নিবন্ধিত ভোটার হিসেবে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

    হালনাগাদে সম্ভাব্য ভোটার বৃদ্ধির হার ৭.৫০ শতাংশ। এছাড়া এর আগে বিভিন্ন কারণে যারা ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি তাদের

    হালনাগাদে ভোটার করা হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে মৃত ভোটরের তথ্যও সংগ্রহ করা হবে। এসময় ভোটার স্থানান্তরের আবেদনও করা যাবে। ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য যে সব ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে এরমধ্যে রয়েছে- ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পিতা/মাতার এনআইডির ফটোকপি, ইউটিলিটি বিলের কপি। এবারের হালনাগাদ কার্যক্রমে প্রায় ৫৬ হাজার তথ্যসংগ্রহকারী এবং ১১ হাজার ৩০০ সুপারভাইজার নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের দিনব্যাপী হাতে কলমে নিবিড়ি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা তথ্যসংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

    হালনাগাদ কার্যক্রমর প্রত্যেক ধাপে ৩ সপ্তাহ সময় দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একাজে নিয়োজিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক/শিক্ষিকারা পাঠদানের পাশাপাশি যেন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন সেজন্য সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একজন তথ্যসংগ্রহকারী গড়ে ১৮০ জন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করবেন। তথ্য সংগ্রহের পরপরই ধাপে ধাপে নিবন্ধন কেন্দ্রে ভোটারদের নিবন্ধন করা হবে। আগের মতো উপজেলা, থানা পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ এবং সিটি কর্পোরেশন ও পৌর এলাকায় ওয়ার্ড পর্যায়ে নিবন্ধন কেন্দ্র স্থাপন করে ভোটারদের ছবি, দশ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ গ্রহণ করে ভোটার নিবন্ধন করা হবে। এ সময় ভোটারদের মূল তথ্যের প্রিন্ট কপি দেওয়া হবে।

    রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার তালিকাভুক্ত হতে না পারে সে জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৩২টি বিশেষ এলাকার জন্য বিশেষ কমিটির মাধ্যমে নিবন্ধন যাচাই-বাছাই করা হবে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক সম্বলিত ডাটাবেজও ব্যবহার করা হবে।

    ইসি আরও জানায়, ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর ২০১০ সালের ৩১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে, তাদের নাম অন্তর্ভুক্তিসহ প্রথমবারের মতো ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে ১ জানুয়ারি তারিখে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে, তাদের নাম অন্তর্ভুক্তিসহ ২৬ বার, ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে তাদের অন্তভুক্তিসহ ৩য় বার এবং ২০১৮ সালে ১ জানুয়ারি তারিখে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে , তাদের নাম অন্তর্ভুক্তিসহ ৪র্থ বার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিল।

    একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিশেষ কার্যক্রম হিসেবে ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে যাদের জন্ম অথবা ভোটার তালিকায় হালনাগাদের বিগত কার্যক্রমে বাদ পড়েছেন, তাদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ৫ম বার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিল।

    সবশেষ ২০১৯ সালে ৬ষ্ঠ বা মাঠ পর্যায়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ করা হয়, যাতে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যে সব ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে অথচ ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিগত কার্যক্রমে বাদ পড়েছিল তাদের তথ্য নিয়ে।

  • চসিক নির্বাচনে নিরস্ত্র সেনাবাহিনী থাকবে

    চসিক নির্বাচনে নিরস্ত্র সেনাবাহিনী থাকবে

    চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে সেনাবাহিনী উপস্থিতি থাকবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রফিকুল ইসলাম।

    শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই সংক্রান্ত দিকনির্দেশনামূলক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

    রফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমরা নির্বাচনের সব ধরনের পরিবেশ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। আপনার ভোট আপনি কেন্দ্রে গেলেই দিতে পারবেন। কোনো ঝামেলা হবে না, এটুকু আশ্বস্ত আমরা করতে পারি। কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি থাকবে, তবে তারা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখবেন।

    তিনি আরও বলেন, নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। কারণ ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। যা চলবে পুরো মাসব্যাপি। এরপর রোজা এবং ঈদ-উল-ফিতর রয়েছে। তাছাড়া বর্ষাকালে চট্টগ্রাম শহরে নির্বাচন কল্পনাও করা যায় না।

    এক প্রশ্নের জবাবে ইসি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কখনও আমরা সেনা মোতায়েন করিনি। এবারও করবো না। কিন্তু কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি থাকবে এবং সেটা পোশাকে। তবে অস্ত্র থাকবে না। তারা শুধুমাত্র ইভিএম এর টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখবেন।

    এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনির হোসেন খান, অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতাউর রহমান, বশির আহমদ, রাঙামাটি সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শফিকুর রহমান, কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসাইন, খাগড়াছড়ি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাজু আহমেদ, কুমিল্লা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন।