কাতার বিশ্বকাপ শেষে এখন আবার ক্লাবে ফিরে যাচ্ছে খেলোয়াড়রা। আর্জেন্টিনার সাথে ফাইনাল হারার দুইদিন পরেই পিএসজিতে যোগ দিয়েছিলেন এমবাপ্পে। এবার পিএসজিতে যোগ দিলেন নেইমার।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়ের ১২ দিন পর বৃহস্পতিবার পিএসজির হয়ে অনুশীলন শুরু করেন নেইমার।
ক্লাবে ফেরার দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করে ক্যাপশন দিয়েছেন-‘মর্নিং’।
১৮ ডিসেম্বর বিশ্বকাপ শেষ হলেও ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের বিশ্বকাপ আরও আগেই শেষ হয়েছে। কেননা ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যায় ব্রাজিল। সেই হতাশা কাটিয়ে উঠার জন্য কিছুদিন ছুটি কাটান নেইমার।
তারপর ফিরেন পিএসজিতে। তার সঙ্গে যোগ দেন আরেক ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মারকিনিওস।
বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলা খেলোয়াড়দের কয়েকদিনের ছুটি দিয়েছে পিএসজি। এর মধ্যে বিশ্বকাপজয়ী লিওনেল মেসিও আছেন।
মেসি এখন নিজ দেশে জাতীয় উৎসবের মধ্যমণি। আপাতত স্বপ্ন পূরণের এই আনন্দ পরিবার, সতীর্থ ও সমর্থকদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মেসি। তিনি ফিরলেই পূর্ণতা পাবে পিএসজি।
কাতার বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের ম্যাচে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায় ম্যাচটি শুরু হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিল জয় পাবে এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন দেশের অন্যতম সেরা বক্সার আল-আমিন।
জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে একাধিকবার স্বর্ণ পদকজয়ী আল-আমিনের বিশ্বাস ইনজুরিতে থাকা নেইমার খেলতে না পারলেও সমস্যা হবে না ব্রাজিলের। শেষ ষোলোয় দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জিতেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করবে সেলেকাওরা।
কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পায় ব্রাজিল। সেই ম্যাচে পায়ের গোড়ালিতে চোট পেয়ে গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচ খেলতে পারেননি নেইমার। তাকে ছাড়া সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় পেলেও পরের ম্যাচে ক্যামেরুনের বিপক্ষে ১-০ গোলে হারে ব্রাজিল।
আল-আমিন বলেন, আমার মনে হয়, ব্রাজিল শুধু নেইমার-নির্ভর দল নয়। যার প্রমাণ তারা দিয়েছে গ্রুপপর্বে। এমন কেউ নিশ্চয় আছেন, যিনি নেইমারের অভাব বুঝতে দেবেন না।
নকআউট পর্বে ব্রাজিল ম্যাচ নিয়ে আল-আমিন বলেন, এই ব্রাজিলের সামনে কোনো দলই টিকবে না। আমার বিশ্বাস, দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতে শেষ আট নিশ্চিত করবে ব্রাজিল।
ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার নেইমার ডি সিলভাকে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আর মাঠে দেখা যাবে না। চলমান কাতার বিশ্বকাপে গোড়ালির চোটে পড়া ব্রাজিলিয়ান এই সুপারস্টার সুইজারল্যান্ড এবং ক্যামেরুনের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েছেন। আর ছিটকে পড়ার পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন এক বার্তা।
সেখানে তারকা এই ফুটবলার জানান ব্রাজিলের জার্সি গায়ে গর্ব এবং ভালোবাসা অনুভব করেন। নেইমার বলেন, ‘ব্রাজিলের জার্সি গায়ে দিতে আমি যে পরিমাণ গর্ব ও ভালোবাসা অনুভব করি তা বলে বোঝানো যাবে না। যদি ঈশ্বর আমাকে কোনো দেশে জন্মানোর সুযোগ দিতেন, সেটা ব্রাজিলই হতো।’
নেইমার আরো বলেন, ‘আমার জীবনে কিছুই এমনিতে বা সহজে হয়নি। আমাকে সবসময় লক্ষ্য ও স্বপ্নের পেছনে ছুটতে হয়েছে। কখনও কারো ক্ষতি না করে সাহায্য করতে চেয়েছি।’
ইনজুরি থাকলেও আবার ফিরে আসার কথা বলে নেইমার বললেন, ‘আজ ক্যারিয়ারের অন্যতম কঠিন এক মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছি, আবারও একটা বিশ্বকাপে। হ্যাঁ, আমার ইনজুরি আছে এটা বিরক্তিকর, জানি, এটা কষ্টও দেবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত ফিরে আসার সুযোগ আছে। কারণ দেশকে সাহায্য করতে সেরা চেষ্টা করবো। আমার আস্থা অনিঃশ্বেষ।’
বিশ্বকাপের সঙ্গে যেন নেইমারের আড়ি। ২০১৪ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা নেইমার ভয়াবহ এক চোটে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিলেন। পরের আসরে খেলেছিলেন ছয় মাস ইনজুরিতে ভোগার পর। এবার ফিট ও ইন ফর্ম নেইমার কাতারে এসেছিলেন।
ম্যাচের আগের দিন থিয়াগো সিলভা বলেছিলেন, এবার ভিন্ন নেইমারকে দেখা যাবে। কিন্তু সার্বিয়ার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই চোটে পড়েছেন নেইমার। এবারও বেশ কয়েকবার গুরুতর ট্যাকলের শিকার হন তিনি। কিন্তু ম্যাচের ১০ মিনিটে থাকতে তাকে করা ট্যাকল ছিল আর ভয়াবহ। যে কারণে মাঠ ছাড়তে হয় তার।
ইনজুরিতে দলের ২-০ গোলের জয় সাইডলাইনে বসে দেখতে হয়েছে পিএসজির ব্রাজিলিয়ান তারকাকে। তার চোখে মুখে লেগে ছিল শঙ্কা। ব্রাজিল শিবির থেকে জানানো হয়েছে, নেইমারের গোড়ালি মচকে গেছে। নেইমারের পায়ের যে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে তাতে দেখা গেছে, গোড়ালি অনেকটা ফুলে গেছে। ব্রাজিল দলে এখন নেইমারের বিশ্বকাপ শেষের শঙ্কা।
ম্যাচ শেষে ব্রাজিল দলের চিকিৎসক নিশ্চিত করেছেন যে, নেইমারের গোড়ালি মচকে গেছে। গোড়ালির অবস্থা কী পর্যায়ে আছে ম্যাচ শেষেই বলতে পারেনি তিনি। পরিষ্কার ধারণা পেতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা নেইমারকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। অথচ তিনদিন পরেই ব্রাজিলের পরবর্তী ম্যাচ।
টিম ডক্টর ভয়ের কথা বললেও ব্রাজিলের কোচ তিতে আশা করছেন নেইমার সুস্থ হয়ে উঠবেন। অন্তত তার বিশ্বকাপ শেষ নয় বলে জোর দিয়ে বলেছেন কোচ, ‘আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন নেইমার বিশ্বকাপে খেলবে। আপনারা অবশ্যই নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, নেইমার বিশ্বকাপে আরও ম্যাচ খেলবে।’
কাতারের ফুটবল বিশ্বকাপের অপেক্ষা কমে এক মাসের নিচে চলে এসেছে। এমন সময়েই বিশ্বকাপে ব্রাজিলের পারফরম্যান্স নয় নেইমারের সামনে ছিল মামলা, জেল, জরিমানাসহ বেশ বাজে রকমের সমস্যা। অবশেষে বিশ্বকাপের ২২ দিন আগে এসব ঘিরে বিশাল বড় ধরনের সুসংবাদ পেলেন ব্রাজিল এবং প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর তারকা ফুটবলার নেইমার।
স্পেনের আদালতে নেইমারের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি, প্রতারণা ও দুর্নীতির যত মামলা করা হয়েছিল, সবকিছু থেকে মুক্তি মিলেছে এই ব্রাজিলিয়ান তারকার। ২৮ অক্টোবর শুক্রবার ৩০ বছর বয়সী নেইমার ও অন্য আট জনের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এমনই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইংরেজি গণমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়েছে, ২০১৩ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোষ থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেন নেইমার। সেই সময় প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কাতালান ক্লাবটি চুক্তির অঙ্ক কম দেখিয়েছে। আর সেটি দেখিয়ে কর ফাঁকি দিয়েছিলেন নেইমার।
মূলত ২০১৩ সালে নেইমার বার্সায় যোগ দিলেও দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি ২০১১ সালেই হয় বলে জানিয়েছে কাতালান ক্লাবটি। যে চুক্তির অর্থ ৫৭.১ মিলিয়ন ইউরো দাবি করেছিল বার্সা। যার ৪০ মিলিয়ন ইউরো নেইমারের পরিবার এবং বাকি অর্থ পায় সান্তোষ। তবে নেইমারের মধ্যে আনা মামলায় বলা হয়, এই অর্থ আরও বেশি ছিল। যা থেকে কম করে হলেও ৮.৫ মিলিয়ন ইউরো কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।
এই মামলার প্রেক্ষিতে নেইমার, তার বাবা ও বার্সার সেই সময়কার প্রেসিডেন্টের দুই বছরের কারাদণ্ড চাওয়া হয়। এরসঙ্গে জরিমানা হিসেবে ১০ মিলিয়ন ইউরোও দাবি করা হয়।
কাতার বিশ্বকাপের আগে এই বিষয় আবারও নেইমারের সামনে চলে আসে। এই জন্য গত ১৬ অক্টোবর পিএসজি তারকা নেইমার আদালতে হাজিরাও দেন। যেখানে তিনি জানান, তিনি চুক্তির বিষয়ে কিছুই জানেন না। তার বাবার আদেশ মতে তিনি কেবল চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। সবকিছুর যুক্তি প্রমাণ শেষে সেই মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি মিলেছে নেইমারের।
দুই মহাদেশ চ্যাম্পিয়নের প্রথম ও শেষ মহারণ ইতালির জন্য ‘মরণ’ হয়ে উঠল।
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে পরশু রাতে লিওনেল মেসি ও আনহেল দি মারিয়ার চোখধাঁধানো আলোয় মেরেকেটে বেরিয়ে গেল ম্যারাডোনার দেশ। একবারের জন্যও মনে হয়নি ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার দুই চ্যাম্পিয়ন দলের দ্বৈরথ এটি।
৩-০ গোলে ফাইনালিসিমা জেতার পর মাঠে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস করেছে আর্জেন্টিনা ফুটবল দল। ড্রেসিংরুমে গিয়ে এ উল্লাসের মাত্রা আরও বেড়েছে। সেই বাড়তি উচ্ছ্বাসে জড়ানো হয় ব্রাজিল দলকেও।
ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে ছড়িয়ে পড়া একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, ব্রাজিলকে খোঁচা মেরে গান গাইছেন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা— ‘কী হলো ব্রাজিল? পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা কি ভয় পেয়ে গেল?’
ইনস্টাগ্রামে ফুটবল ইজ আর্ট নামের একটি প্রোফাইল থেকে আপলোড করা হয় আর্জেন্টিনার সেই গান গেয়ে উদযাপনের ভিডিও।
ক্রীড়া ডেস্ক : নেইমার নৈপুণ্যে দাপুটে জয় দিয়ে আসর শুরু করেছে ব্রাজিল। বি গ্রুপের প্রতিপক্ষ ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে সেলেসাওরা। পেনাল্টি থেকে গোল আদায়ের পাশাপাশি একটি অ্যাসিস্ট করেছেন নেইমার। একটি করে গোল করেছেন মারকুইনহোস আর বারবোসা।
ব্রাসিলিয়ার মানে গারিঞ্জায় ভেনেজুয়েলাকে নিয়ে ছেলে খেলা করতে না পারলেও আধিপত্য ঠিকই বিস্তার করেছে সেলেসাওরা। নেইমারের নৈপুণ্যে ব্রাজিল ৩-০ গোলে হারিয়েছে ভেনেজুয়েলাকে। তিন গোলের একটি নেইমার করেছেন। অন্য দুটির পেছনে অবদান এই পিএসজি তারকার।
বি গ্রুপের প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ৪-৩-৩ ছকে মাঠে নেমেছিল। বিপরীতে ভেনেজুয়েলা ৫-৪-১ ছকে নিজেদের রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত থেকেছে। যদিও গোল হজম থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পারেনি।
ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্রাজিল। একের পর এক আক্রমণ করে তটস্থ রেখেছে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের। কিন্তু প্রথমার্ধে তাদের এক গোল নিয়ে থাকতে হয়েছে। তবে প্রথমার্ধে যেভাবে আক্রমণ হয়েছে, তাতে করে গোল সংখ্যা আরও বাড়লে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না।
ম্যাচের ৯ মিনিটে গোলকিপারকে একা পেয়ে নেইমার লক্ষ্যে শট নিতে পারেনি। একটু পর মিলিতাওর হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। যদিও সেলেসাওদের প্রথম গোল পেতে বেশি সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়নি।
২৩ মিনিটে প্রথম গোল হয়। নেইমারের বা প্রান্তের কর্নার থেকে মারকুইনহোস ৬ গজের মধ্যে থেকে লক্ষ্যভেদ করে দলকে এগিয়ে নেন। ২৫ মিনিটে বল জালে জড়ালেও অফসাইডের কারণে ব্রাজিল গোল পায়নি। ৩০ মিনিটে নেইমারের আরও একটি প্রচেষ্টা পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
বিরতির পর ব্রাজিল আরও দুর্বার। ৫৩ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল জেসাসের ক্রসে নেইমার পোস্টের সামনে ফাঁকায় পা ছোঁয়াতে পারেননি। ৬২ মিনিটে দানিলোকে ফেলে দেয় ভেনেজুয়েলার এক ডিফেন্ডার। পেনাল্টি থেকে দেখে শুনে নেইমার গোলকিপারের বিপরীত দিক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন।
নেইমারের ঝলক তখনও শেষ হয়নি। ৮৯ মিনিটে ব্রাজিল তৃতীয় ও শেষ গোল পায়। সেখানেও অবদান নেইমারের। বা প্রান্ত থেকে গোলকিপারকে কাটিয়ে নেইমারের নেওয়া ক্রসে গাব্রিয়েল বারবোসা ৩-০ করেন।
কোচ তিতের মুখে তখন চওড়া হাসি। দল যে হেসে-খেলে কোপা আমেরিকা অভিযান শুরু করেছে।
মঙ্গলবার রাতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে বলিভিয়ার বিপক্ষে মেসি গোল না পেলেও বুধবার সকালের ম্যাচে দারুণ এক হ্যাটট্রিক উপহার দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার।
তার হ্যাটট্রিকে ভর করে পেরুর বিপক্ষে ৪-২ গোলে জিতেছে রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
শুধু হ্যাটট্রিক গোলে জয় পায়নি নেইমার। ভেঙেছেন দুটি বিশ্ব রেকর্ডও।
পরিসংখ্যান বলছিল, আর মাত্র এক গোল করতে পারলে কিংবদন্তি রোনালদো দ্য লিমাকে ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি। আর দুই করতে পারলে তাকে ছাড়িয়ে ব্রাজিলের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে যাবেন নেইমার।
পেরুর বিপক্ষের ম্যাচ দিয়েই ব্রাজিলের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন নেইমার।
বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে পেরুর আতিথ্য গ্রহণ করে ব্রাজিল।
তারকায় ভরপুর সেলেকাওদের সঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই চালিয়ে যায় পেরু।
আক্রমণের জবাবে পাল্টা আক্রমণ করে পেরু। এতে সফলও হয় পেরু। ম্যাচের শুরুতেই লিড নেয় পেরু। খেলা শুরুর ৬ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত ভলিতে পরাস্থ ব্রাজিল গোলরক্ষক ওয়েভারটনকে পরাস্ত করে পেরুর ফরোয়ার্ড আন্দ্রে কারিল্লো।
গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে সেলেকাওরা। ম্যাচের ২৬ মিনিটে পেরুর ডি-বক্সে উড়ে আসা একটি ক্রসকে লাফিয়ে ধরতে যান নেইমার। এ সময় নেইমারের জার্সি ধরে তাকে ফেলে দেন পেরুর মিডফিল্ডার ইয়োশিমার ইয়োটান। সঙ্গেসঙ্গে রেফারির বাঁশি। সফল স্পটকিক থেকে গোল করে সমতায় ফেরান নেইমার।
এর ৩ মিনিট পর ফের পেরুর জালে বল জড়ান নেইমার। কিন্তু রিশার্লিসন অফসাইডে থাকায় সে গোল বাতিল করে দেন রেফারি।
এভাবেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে চলতে থাকে প্রায় ৯ মিনিট।
৪১তম মিনিটে ডি-বক্সে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন ফিরমিনো। এভাবে প্রথমার্ধ শেষ হলে ১-১ সমতায় বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতিয়ার্ধে নেমে ৫৯তম মিনিটে আবারও লিড নেয় পেরু। এবার পেরুর নায়ক রেনাতো তাপিয়া। ইয়োতুনের লম্বা থ্রো ইন হেডে ক্লিয়ার করতে গিয়ে রেনাতোর পায়ের কাছে বল পাঠিয়ে দেন রদ্রিগো কাইয়ো। আর জোরালো ভলিতে গোলরক্ষক ওয়েভারটনকে পরাস্ত করেন রেনাতো।
২-১ স্কোরলাইনে ৬৪ মিনিট পর্যন্ত খেলা হয়ে যায়। এ সময় নেইমারের কর্নারে হেড করেন ফিরমিনো। আর তাকে গোললাইনের মুখ থেকে আলতো ছোঁয়ায় বল জালে জড়ায় এভারটন ফরোয়ার্ড রিশার্লিসন।
৮৩তম মিনিটে লিড নেয় ব্রাজিল। সেটি নেইমারের কল্যাণে। ডি-বক্সে দ্বিতীয়বারের মতো ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টিটি পায় ব্রাজিল ।আরেকটি সফল স্পট কিকে ম্যাচে নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন নেইমার।
৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হলে তা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
আর এই যোগ করা সময়েই বাজিমাত করেন নেইমার। হ্যাট্রটিক গোল করে ৪-২ ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে আনেন। করেন দুটি রেকর্ড।
বলতে গেলে ২ বার এগিয়ে জয়ের দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েছে পেরু। কিন্তু পেরুর সেই সম্ভাবনাকে ধুলোয় মিশিয়ে দেন নেইমার। তার দারুণ হ্যাটট্রিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা দ্বিতীয় জয় নিয়ে ফিরেছে ব্রাজিল।
করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে চার মাস বিরতির পর প্রথম প্রতিযোগিতা ম্যাচে খেলতে নেমেই শিরোপার দেখা পেল পিএসজি।
নেইমারের একমাত্র গোলে দশ জনের দলে পরিণত হওয়া সেন্ত-এতিয়েনকে হারিয়ে ফরাসি কাপের শিরোপা কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে টমাস টুখেলের দল।
প্যারিসে শুক্রবার রাতে প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে অতিথি সেতিয়েনকে ১-০ গোলে হারায় পিএসজি। পার্থক্য গড়ে দেওয়া একমাত্র গোলটি করে নেইমার, চতুর্দশ মিনিটে।
অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার পাস ধরে ডি-বক্সের মাঝামাঝি থেকে বাঁ পায়ের শটে গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার।
পিএসজির ভেন্যুটিতে ৮০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার গ্যালারি থাকলেও স্বাস্থ্য বিধি মেনে ম্যাচটি মাঠে বসে দেখতে অনুমতি দেওয়া হয় ৫ হাজার সমর্থককে।
করোনা সংকটের মধ্যে এটাই ছিল ফ্রান্সে প্রথম কোনও প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল ম্যাচ। খেলা শুরুর আগে খেলোয়াড়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো।
তবে এ সময় নিরাপদ দূরত্ব মানার পাশাপাশি মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা যায় তাকে।
এই নিয়ে ১৩ বার ফরাসি কাপের শিরোপা জিতল পিএসজি। টানা চার মৌসুম জেতার পর গত মৌসুমে ফাইনালে টাইব্রেকারে রেনের কাছে হেরে গিয়েছিল দলটি।
এদিকে শিরোপা জিতলেও পিএসজিকে একটি দুঃসংবাদও শুনতে হয়েছে। ম্যাচটির প্রথমার্ধেই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়া হন দলটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় কিলিয়ান এমবাপে। ফরাসি এই ফরোয়ার্ড গুরুতর চোট পেয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ম্যাচের ২৭তম মিনিটে সেতিয়েনের খেলোয়াড় লোয়িচ পেরিন এমবাপেকে ফাউল করলে দু’দলের খেলোয়াড়দের হাতাহাতিতেও জড়াতে দেখা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখা হয়। বেঞ্চ থেকে উঠে আসা মার্কো ভেরাত্তিসহ হলুদ কার্ড দেখেন পিএসজির তিন জন, এতিয়েনের একজন খেলোয়াড়।
ভিএআরের সাহায্যে পেরিনকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। ম্যাচের বাকি সময় ১০ নিয়েই খেলতে হয় অতিথিদের। আর এই সময়টা আক্রমণে না গিয়ে রক্ষণেই বেশি নজর দেয় সেতিয়েন।
এই নিয়ে চলতি মৌসুমে ফ্রান্সের দুটি শীর্ষ শিরোপা ঘরে তুলল পিএসজি। করোনা মহামারির কারণে এপ্রিলে লিগ ওয়ানের এবারের মৌসুম বাতিল করা হয়। তবে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয় পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা পিএসজিকে।