Tag: পহেলা বৈশাখ

  • জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একাত্মতার দিন

    জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একাত্মতার দিন

    পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ভোরের রঙিন আলো রাঙিয়েছে বাঙালির নতুন স্বপ্ন ও সম্ভাবনা। প্রতিবারের ন্যায় এবারও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণে জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়েছে পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল)।

    শুক্রবার সকাল ৯টায় শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গন থেকে বের করা হয় বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। এটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। বাদ্যের তালে তালে গ্রাম-বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যের লোকজ উপকরণ পালকি, পুতুল, রঙিন প্ল্যাকার্ড মঙ্গল শোভাযাত্রায় যোগ করেছে অনন্য মাত্রা। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় দলীয় নৃত্য, দলীয় ও একক সংগীত।

    এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

    এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সাল মাহমুদ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায়, জেলা পুলিশ সুপার এস. এম শফিউল্লাহ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল।

    অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ শোভাযাত্রা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো থেকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা পায়। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এখনো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। তারা বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য ও অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র ভেদে ভিন্ন হলেও সকল বাঙালি বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান এক এবং অভিন্ন সত্ত¡ার আলোকে পালন করে। আমরা যদি দেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে বিনাশ করতে না পারি, তাহলে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথ রূদ্ধ হয়ে যাবে। তাই সকলের প্রচেষ্টায় অশুভশক্তিকে মোকাবেলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো এটা হোক আজকের এই দিনে আমাদের অঙ্গীকার।

    নববর্ষের আনন্দ আয়োজন উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ছুটে এসেছে সর্বস্তরের জনসাধারণ। এসময় জেলা শিল্পকলা একাডেমি সংগীত দল, চট্টগ্রাম শিশু একাডেমি, ওড়িসী টেগোর এন্ড ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, ঘুংঘুর নৃত্যকলা কেন্দ্র, সংগীত ভবনসহ অসংখ্য সাংস্কৃতিক সংগঠন সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন। শিল্পীরা ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানে গানে বরণ করে নেন বাংলা নববর্ষকে। নাচে-গানে জমজমাট ছিল পুরো শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ।

  • যারা বৈশাখ উদযাপনের ইতিহাস মানে না তাদের প্রতিহত করতে হবে

    যারা বৈশাখ উদযাপনের ইতিহাস মানে না তাদের প্রতিহত করতে হবে

    আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক চেতনার ডালপালা গজিয়েছে, তাদের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উৎখাত করা হবে। যারা বৈশাখ উদযাপন করা ইতিহাস মানে না, সাম্প্রদায়িক আদর্শ পছন্দ করে, দ্বিজাতিতত্ত্ব পছন্দ করে তাদের প্রতিহত করতে হবে।

    শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে নববর্ষ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভাটি রাজধানীর বাহাদুর পার্কে সামনে অনুষ্ঠিত হয়।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে, তাদের আদর্শ দ্বিজাতিতত্ত্ব ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধিতা করা। এ অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করে বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা এগিয়ে যাবে। আমরা বাংলা ও বাঙালি চেতন ধারণ করি।

    সেতুমন্ত্রী বলেন, পয়লা বৈশাখসহ বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আগেও ছিল এখনো আছে। কে পালন করল, না করল, তাতে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই, আমরা পালন করব। যতদিন আওয়ামী লীগ থাকবে ততদিন বৈশাখ উদযাপন করা হবে। বৈশাখ আত্মপরিচয় প্রকাশ করার দিন, অন্য দিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রকাশের দিন। উৎসবমুখর পরিবেশে বাঙালি পয়লা বৈশাখ উদযাপন করছে। বাঙালির চেতনার ইতিহাস ঐতিহ্যের ঠিকানা পয়লা বৈশাখ।

    তিনি আরো বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটকে মোকাবিলাসহ সব সংকটকে মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে শেখ হাসিনা।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, বহুদিন পর বাঙালির চিরচেনা পরিবেশে পয়লা বৈশাখ উদযাপিত হচ্ছে। সারা বাংলায় আজকে নবজাগরণের ঢেউ উঠেছে। বাংলাদেশ আর বাঙালি সংস্কৃতির এমন উৎসবমুখর দিনটিকে বাংলার মানুষ তাদের হৃদয়ে যত ভালোবাসা আছে, তাদের অন্তরে যত চেতনা আছে, সবকিছু উদার করে দিয়ে আজ বৈশাখ উদযাপন করছে।

    তিনি আরো বলেন, ভুলে যাবেন না আমাদের নববর্ষ বাংলার নববর্ষ। এটাই আমাদের নববর্ষ। পহেলা জানুয়ারি যে নববর্ষ ওটা ইংরেজি নববর্ষ। আমরা ওটা ইংরেজি নববর্ষ হিসেবে পালন করি। কিন্তু আমাদের আবেগে, হৃদয়ে, চেতনা ও ইতিহাস ও ঐতিহ্যে, আমাদের অস্তিত্বের ঠিকানা হচ্ছে পয়লা বৈশাখ।

    সেতুমন্ত্রী বলেন, এই পয়লা বৈশাখ নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের সংকট, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, এইসব বিভিন্ন সমস্যা যখন আক্রান্ত, তখন পয়লা বৈশাখ, পরপর ঈদের উৎসব, আমাদের জীবনে দুটি উৎসব, এই দুই উৎসবে আমাদের শহরে, আমাদের গ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্যের, কেনা-বেচার আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার এক সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে এসেছে। আমাদের নেত্রী পরিস্থিতিকে সংকটকে সম্ভাবনা রূপ দিচ্ছে। এই দুটো উৎসবে যে বাণিজ্য হবে, এ বাণিজ্য গতিটা আমাদের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চয় করবে।

    আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের চেতনার যে বাংলাদেশ, আমাদের চেতনার যে ধর্মনিরপেক্ষতা, যেই চেতনা বাংলা নববর্ষের সূচনা হয়, এই চেতনা অসাম্প্রদায়িক চেতনা। আজকে বাংলাদেশে আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি, আমাদের প্রধানতম শত্রু হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা।

    তিনি বলেন, আজকে বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ বাংলাদেশে ডালপালা ছড়িয়েছে, আজকের এই দিনে শপথ নিতে হবে যে, বাংলা নববর্ষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার অশুভ বিষবৃক্ষকে আমরা উৎখাত করব। এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার। এখানে কোনো আপস নেই। পয়লা বৈশাখের সঙ্গে যাদের সংঘাত তারাই সাম্প্রদায়িকতা বিশ্বাস করে।

     

  • আজ পহেলা বৈশাখ, বাংলা ১৪৩০ সালের প্রথম দিন

    আজ পহেলা বৈশাখ, বাংলা ১৪৩০ সালের প্রথম দিন

    আজ পহেলা বৈশাখ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হবে নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩০।

    শুক্রবার পয়লা বৈশাখ-নতুন বাংলা বর্ষ। জীর্ণ পুরাতন সবকিছু ভেসে যাক, ‘মুছে যাক গ্লানি’ এভাবে বিদায়ী সূর্যের কাছে এ আহ্বান জানায় বাঙালি। পয়লা বৈশাখ আমাদের সকল সঙ্কীর্ণতা, কুপম-ুকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মনের ভিতরের সকল ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যোমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণে আমাদের মধ্যে এই স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়।

    অন্য দিকে পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সার্বজনীন লোকউৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদ্যাপিত হয় নববর্ষ।

    আজ পহেলা বৈশাখে বর্ণিল উৎসবে মাতবে দেশ। ভোরের প্রথম আলো রাঙিয়ে দেবে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। রাজধানী এবং সারাদেশ জুড়ে থাকবে বর্ষবরণের নানা আয়োজন। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। ছায়ানট ভোরে রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদ্যাপন করবে। ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করবে। বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান আবশ্যিকভাবে জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ গান পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হবে। বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস ও ইউনেস্কো কর্তৃক এটিকে বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসাবে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরে এদিন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। বাংলা নববর্ষে সকল কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার ও ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে।

    এক সময় নববর্ষ পালিত হতো আর্তব উৎসব বা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে। তখন এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কৃষির, কারণ কৃষিকাজ ছিল ঋতুনির্ভর। পরে কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে বাংলা সন গণনার শুরু হয়। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌর সনের ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয় নতুন এই বাংলা সন। অতীতে বাংলা নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা। এটি পুরোপুরিই একটি অর্থনৈতিক ব্যাপার। গ্রামে-গঞ্জে-নগরে ব্যবসায়ীরা নববর্ষের প্রারম্ভে তাঁদের পুরানো হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করে হিসাবের নতুন খাতা খুলতেন। এ উপলক্ষে তাঁরা নতুন-পুরাতন খদ্দেরদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করতেন এবং নতুনভাবে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগসূত্র স্থাপন করতেন। চিরাচরিত এ অনুষ্ঠানটি আজও পালিত হয়।

    মূলত ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথমদিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে।

    কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজের সঙ্গে বাংলাবর্ষের ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে। পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। আর ষাটের দশকের শেষে তা বিশেষ মাত্রা পায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে।

    এসময় ঢাকায় নাগরিক পর্যায়ে ছায়ানটের উদ্যোগে সীমিত আকারে বর্ষবরণ শুরু হয়। আমাদের মহান স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে এই উৎসব নাগরিক জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে। কালক্রমে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন শুধু আনন্দ-উল্লাসের উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

    শুধু তাই নয়, উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। যা ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।

  • অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ হোক পহেলা বৈশাখের প্রত্যয়: চসিক মেয়র

    অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ হোক পহেলা বৈশাখের প্রত্যয়: চসিক মেয়র

    পহেলা বৈশাখের উৎসবে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের  মেয়র (প্রতিমন্ত্রী) বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

    বুধবার এক শুভেচ্ছা বার্তায় মেয়র বলেন, পহেলা বৈশাখের উৎসব আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আমাদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাঙালি জাতিয়তাবাদের ভিত্তিতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়লেও এখনো সাম্প্রদায়িক অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে নেই।

    সাম্প্রদায়িক শক্তি আমাদের নৃতাত্তি¡ক পরিচয় ভুলিয়ে দিতে নানা অপকৌশল, গুজব আর অপব্যাখ্যার আশ্রয় নিচ্ছে। এজন্য এবারের পহেলা বৈশাখ কেবল উৎসবের উপলক্ষ নয় বরং এটি আমাদের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেয়ারও সময়।  জাতির প্রতি আহ্বান রইল যাতে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হই। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নির্মূল করে আগামীর বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক, সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদী এবং উন্নত বাংলাদেশ এই হোক আমাদের শপথ।

  • পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি

    পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি

    পহেলা বৈশাখে সব ধরণের অনুষ্ঠান স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

    বুধবার (০১ এপ্রিল) উপসচিব মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়।

    সেখানে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) এর বিস্তার রোধকল্পে জনসমাগম পরিহার করার লক্ষ্যে আসন্ন ১লা বৈশাখ ১৪২৭ তারিখ বা এতদসময়ে সকল ধরণের অনুষ্ঠান/কার্যক্রম (তিন পার্বত্য জেলার বৈসাবিসহ) স্থগিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।