Tag: পারকি সমুদ্র সৈকত

  • পারকি সৈকত দ্বিতীয় কক্সবাজারে পরিণত হবে : পর্যটন প্রতিমন্ত্রী

    পারকি সৈকত দ্বিতীয় কক্সবাজারে পরিণত হবে : পর্যটন প্রতিমন্ত্রী

    পারকি সমুদ্র সৈকত দ্বিতীয় কক্সবাজারে পরিণত হবে। সৈকতে নতুন করে বনায়ন করা হবে। পর্যটন কমপ্লেক্সের নির্মিত ভবনগুলোর কাজ শেষ হবে খুবই শিগগিরই। পর্যটকের নিরাপত্তায় থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশ, সৈকতে রাতে আলোর ব্যবস্থাসহ আধুনিক হোটেল-মোটেল নির্মিত হয়ে পারকি হবে আধুনিক পর্যটন কমপ্লেক্স।

    রবিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকিতে পর্যটন সুবিধাদি প্রবর্তন শীর্ষক প্রকল্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।

    তিনি বলেন, সারাদেশের ট্যুরিজম মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত করে, আধুনিক বিমানবন্দর ও রেলপথকে নতুন করে সাজানো হবে। কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ স্থাপনসহ নানা মেগা প্রকল্প চট্টগ্রামে বাস্তবায়ন হচ্ছে।

    পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো.মাহবুব আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর চট্টগ্রামকে নতুন রূপে সাজিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশের সবচেয়ে মেগা প্রকল্পগুলো চট্টগ্রামে হয়েছে। এখনও চলছে বিপুল কর্মযজ্ঞ। বাংলাদেশের ইতিহাসে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু (কর্ণফুলী) টানেল। টানেলের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এরই মাধ্যমে দেশের পর্যটন খাত বিশ্বমানের পর্যটন স্পটে পরিণত হচ্ছে। বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশে আসলে মুগ্ধ হয়ে যাবে।

    এরপর প্রতিমন্ত্রী পারকি সমুদ্র সৈকত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং সৈকতের চর রক্ষায় সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান।

    এ সময় পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. রাহাত আনোয়ার, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, উপ-সচিব ড. সাইফুর রহমান, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহামুদ কবীর, চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদ, আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মুমিন, কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দুলাল মাহমুদ, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জাফর উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী, বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. এ কাইয়ূম শাহ্, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাহাব উদ্দিন, ছগীর আজাদ, আবদুল মালেকসহ পর্যটন কর্পোরেশনের কর্মকর্তাবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

  • পারকী সৈকতে পর্যটকদের আকর্ষনের মূলে ক্রেন ‘তিয়ান-ই’ ও ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজ

    পারকী সৈকতে পর্যটকদের আকর্ষনের মূলে ক্রেন ‘তিয়ান-ই’ ও ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজ

    আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগামের ভ্রমণ পিপাসুদের নতুন আকর্ষণ এখন ক্রেন তিয়ান-ই ও ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজ। প্রকৃতির রূপসী কন্যা নামে পরিচিতি চট্টগ্রাম আনোয়ারা উপজেলার পারকী সমুদ্র সৈকত, আর এই সৈকতের তীরে এসে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশের কোটি মানুষের মাঝে স্বপ্ন দেখানো পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ধারণক্ষমতার ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই।

    অপর দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাত থেকে রক্ষা পেতে কূলে এসে আটকা পড়েছে ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজ। এছাড়াও পারকী সৈকত কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে হোটেল রেস্তুরা। পর্যটকদের কাছে টানতে সরকার পর্যটন উন্নয়নে হচ্ছে হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ।

    সাম্প্রতিক সময়ে পারকি সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের কৌতূহল শেষ নেই, ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই এবং ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজ নিয়ে। ভ্রমন পিপাসুদের ধারুণ ভাবে কাছে নিয়েছে ক্রেন তিয়ান-ই। অপর দিকে ক্রিস্টাল গোল্ড বাড়িয়ে দিয়েছে পর্যটকদের কৌতুহুল। পর্যটকদের ছবির কবিতা যেন ক্রেন তিয়ান-ই ও ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজ।

    জানা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ভাসমান ক্রেনবাহী জাহাজ তিয়ান-ই পদ্মা সেতুর প্রকল্পের স্প্যান বসানোর কাজে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল। সে বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথম স্প্যান থেকে চলতি বছরের গত ১০ ডিসেম্বর সেতুর ৪২টি পিয়ারে ৪১টি স্প্যান বসানোর কাজ করে ক্রেনটি।

    চীনে তৈরি ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার বিশেষ ধরনের এই ভাসমান ক্রেনটির দাম আড়াই হাজার কোটি টাকা। কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় ক্রেনটি পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা ছেড়ে চট্রগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। ১৩ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ১০ টায় চট্টগ্রাম বন্দরের থেকে পারকি সমুদ্রসৈকতের কাছাকাছি আবস্থান করেন। এখানে ১ মাস অবস্থান করে চট্টগ্রাম বন্দরে থেকে সেটি হংকং হয়ে চীনে পাড়ি জমাবে।

    পারকি থেকে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স শেষে বড় মাদার ভেসেলে সেটি হংকংয়ের উদ্দেশে রওনা হবে। এটি চীন পৌঁছাতে এক মাসেরও অধিক সময় লাগবে।

    ক্রিস্টাল গোল্ডের অজানা তথ্য বেরিয়ে আসে তার করুণ কাহিনী। সৈকতে নেমেই একটি বিশাল দৈত্যাকার জাহাজ স্বাগতম জানাবে আপনাকে। পারকি সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের আরেক আকর্ষণ দানবাকার ক্রিস্টাল গোল্ড জাহাজ। পর্যটকরা জাহাজকে ঘিরে সেলফিতে তোলতে ব্যস্ত থাকে সারাক্ষণ।

    জাহাজ কর্তৃপক্ষ জানায়, এই বিশাল দৈত্যাকার জাহাজ গতবছর ভারতের কলকাতা থেকে আটলান্টিকের উদ্দেশ্য ছেড়েছিল। ২০১৭ সালের ৩০ মে দুপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে নাবিক ধরে রাখতে না পারায় বাতাসের বেগ পারকি উপকূলে তুলে দিয়েছিল জাহাজটিকে। সেই হতে জাহাজটি আটকে আছে বিচের বালুকায়। একটা সময় প্রশান্ত, আটলান্টিক, ভারত মহাসাগর চষে বেড়ানো সেই ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ আজ পারকি সৈকতে আসা প্রতিটা পর্যটককে হাসিমুখে স্বাগতম জানায়।

    ‘ত্রুিস্টাল গোন্ড’ জাহাজটি সৌন্দর্যের রূপ দেখে আশিকুর রহমানের পরিচালিত বাংলা ছবি ‘সুপার হিরো’ ছবি শুটিং ২৭ মার্চ ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম আনোয়ারা উপজেলায় পারকী সমুদ্র সৈকতের জাহাজটি নিয়ে ঘিরে ছবি বিভিন্ন শুটিং ধারন করেন।

     

    পারকি বিচের ১৩ একর জায়গায় আধুনিক পর্যটকের কমপ্লেক্স বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (বিপিসি)। ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হওয়ার পর পারকি বিচ হবে দেশের অন্যতম একটি আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র।

    বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, পারকি বিচকে আধুনিক বিচ ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পর্যটন করপোরেশন তিন বছর মেয়াদি ‘পারকি বিচে পর্যটন সুবিধাদি প্রবর্তন’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছে।

    প্রকল্পটির মধ্যে রয়েছে ১৪টি বহুতলবিশিষ্ট আধুনিক কটেজ, একটি মানসম্মত বার, দুটি পিকনিক শেড, দুটি কিডস কর্নার জোন, আধুনিক রেস্তোরাঁ, কনভেনশন হল নির্মাণ, চেঞ্জিং ক্লসেট ও ওয়েটিং রুম এবং কার পার্কিং জোন সুবিধাও রাখা হয়েছে।

    প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য সম্পাদনা: পারকী সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পথে দেখা মিলে অন্যরকম এক দৃশ্য। আঁকা বাকা পথ ধরে ছোট ছোট পাহাড়ের দেখা মিলে। চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিঃ (সিউএফল) এবং কাফকোর দৃশ্যও পর্যটকদের প্রাণ জুড়ায়। পারকি বীচে ঢুকার পথে সরু রাস্তার দুপাশে সারি সারি গাছ, সবুজ প্রান্তর আর মাছের ঘের দেখা যায়। বীচে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো অসংখ্য ঝাউ গাছ আর ঝাউবন রয়েছে। সৈকতে রয়েছে ঘোড়া চড়া, রাইডিং বোট, বসার জন্য বড় ছাতা সহ হেলানো চেয়ারের মতো বেশ কিছু ব্যবস্থা।

    যেভাবে যাবেন: চট্টগ্রাম শহর থেকে “পারকি বীচের” দূরত্ব প্রায় ২৫ কিঃমিঃ। যেতে সময় লাগবে ১ ঘন্টা। এটা মূলত কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত। অর্থাৎ কর্ণফুলী নদীর মোহনার পশ্চিম তীরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এবং পূর্ব-দক্ষিণ তীরে পারকী সমুদ্র সৈকত। চট্টগ্রাম সার কারখানা ও কাফকো যাওয়ার পথ ধরে এই সৈকতে যেতে হয়।

  • পারকি সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের সেবা ও নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসনের নানা উদ্যোগ

    পারকি সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের সেবা ও নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসনের নানা উদ্যোগ

    আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন নতুন নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

    সমুদ্র সৈকতসহ পুরো পর্যটন বিচরণ এলাকায় দেশি-বিদেশী পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সেবা প্রদানের লক্ষে ইতিমধ্যে পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা কর্মী ৪ জন এবং ২১ জন ফটোগ্রাফার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সৈকতে চৌকি ও ছাতা ১০০টি, টয়লেট ৪টি, ওয়াশরুম ১টি ও গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ পুরো পারকী বীচ কে ঘিরে পর্যটকদের ভ্রমন নির্বিঘ্ন করতে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।

    উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা সামশুল হক জানান, পারকি সমুদ্র সৈকতে যত্রতত্র দোকানপাঠ তৈরি করা যাবে না। উপজেলা প্রশাসন ডিজাইন করে লিজ দেয়া নির্ধারিত স্থানে দোকানপাঠ নির্মাণ করতে হবে। পারকি সৈকতকে সৌন্দর্য্যময় করতে স্থানীয় যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের আচার আচরণে পর্যটকরা যাতে মনে কোন রকম কষ্ট না পায় সেদিকে সবাইকে সচেতন হতে
    হবে।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জুবায়ের আহমেদ জানান, পারকি সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের জন্য সেবা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমান পর্যটন প্রতিযোগিতার বাজারে যে যত বেশি সেবা দিবে সে দিকেই পর্যটকরা ঝুঁকবে। সুতরাং সেবার মান নিশ্চিত করতে পারলে দেশি বিদেশী পর্যটকরা ভীড় জমাবে।

    আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির উপদেষ্ঠা তৌহিদুল হক চৌধুরী জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পর্যটন শিল্পের বিকাশ নিশ্চিত করেছে। আনোয়ারার সংসদ সদস্য ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নেতৃত্বে পারকি সৈকতকে ব্র্যান্ডিং পর্যটন সমুদ্র সৈকত করার জন্য সব কিছুু বাস্তবায়ন করা হবে।

    ইতিমধ্যে পারকি সমুদ্র সৈকতে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে দিয়েছে। পর্যটন কর্পোরেশনের ৬২ কোটি টাকার প্রকল্প বদলে দিবে সমুদ্র সৈকতের চেহারা। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতা ছাড়া পর্যটনের বিকাশ সম্ভব নয়। পর্যটন শিল্প বিকাশের জন্য সবাইকে পর্যটন বান্ধব হতে হবে বলে জানান তিনি।