রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত।
পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সাবেক সেনাপ্রধানকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হলো। তবে এটি চূড়ান্ত রায় নয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে।
পেশোয়ার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার আহমেদ সেঠের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চের বিশেষ আদালত আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
১৯৯৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন মুশাররফ৷ তার আগে তিনি ছিলেন দেশের সেনা বাহিনীর প্রধান৷ সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নওয়াজ শরিফের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিলেন মুশাররফ৷
তবে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল, ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা ঘোষণার জেরে৷সেই মামলাতেই এ দিন তাঁকে ফাঁসির সাজা শোনায় ৩ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷যার অন্যতম পেশোয়ার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার আহমেদ শেঠ৷ ২০০৭ সালে মুশাররফ জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট জরুরি ওই সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছিল৷ কিন্তু সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকরী হবে না৷
এর আগে বিশেষ আদালত তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়েছিল৷ বলা হয়েছিল, মুশারফ তাঁর বয়ান রেকর্ড করতে পারেন৷ দুবাইয়ের একটি হাসপাতাল থেকে নিজের বয়ান রেকর্ডও করে পাঠিয়েছিলেন মুশাররফ৷ জানিয়েছিলেন, বিচার বিভাগীয় দল গিয়ে তাঁর বয়ান লিখে নিয়ে যেতে পারে৷
২০১৬ সালেই দেশ ছেড়ে দুবাইয়ে চলে গিয়েছিলেন মুশাররফ৷ জানিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্যই সেখানে যাচ্ছেন তিনি৷ কিন্তু এর পর আর কখনও পাকিস্তানে ফেরেননি মুশাররফ৷
একাধিকবার জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জন্যই দেশে ফিরতে পারছেন না তিনি৷ গত ৪ ডিসেম্বর দুবাইয়ের একটি হাসপাতাল থেকে এক টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি শেষবার বলেছিলেন, ‘আমি পাকিস্তানের জন্য লড়াই করেছি৷ আশা করি সুবিচার পাবো৷’
সাজা ঘোষণার পর মুশারফ আর পাকিস্তানে ফিরবেন না বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা৷ তবে দুবাই থেকে মুশারফকে দেশে ফেরানোর জন্য পাকিস্তান বিশেষ কোনও ব্যবস্থা নেয় কি না, সেটাও দেখার বিষয়৷