বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল প্রসঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির আবেদন সম্পূর্ণ তাঁর পরিবারের ব্যাপার। এ সিদ্ধান্ত বেগম জিয়া নিজে কিংবা তার পরিবারের সদস্যরাই নেবেন।’
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। কবর জিয়ারত করেছি। পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে আমরা শপথ নিয়েছি যে, গণতন্ত্রের মাতা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমাদের সংগ্রামকে অব্যাহত রাখবো। একইসঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের সংগ্রামকে আরও বেগবান করবো।’
দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির বিষয়ে বিএনপি কী করছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে একটা মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী, তিনি জামিন যোগ্য, তিনি জামিন পেতে পারেন এবং পাওয়া উচিৎ ছিলো। কিন্তু এ সরকার সম্পূর্ণ রাজনীতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে জামিন না দিয়ে কারাকারে বন্দি করে রেখেছে। আমরা এর জন্য আন্দোলন করছি। গত দুই বছর ধরেই আমরা আন্দোলনের মধ্য আছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া সেই মুক্তি দিতে সরকার বাধ্য হবে। অবশ্যই জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তারা এগিয়ে আসবে।’
বেগম জিয়ার প্যারোল কিংবা মুক্তি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ফোন করার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো কোনও প্যারোল নিয়ে কথা বলিনি। আমাদের দল থেকে আজ পর্যন্ত বলেছি কি? তো এটা নিয়ে কথা বলা কতটা সঠিক হয়েছে সেটা তিনি (ওবায়দুল কাদের) বিবেচনা করবেন।’
এ ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তার শরীরের যে অবস্থা তাতে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেজন্য আমরা বলেছি যে, এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে তাকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে কারাগারের মধ্যে। অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া উচিত। কারণ এই দেশে সত্যিকার অর্থে যদি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হয় সেটা বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া হবে না।’
আইনি প্রক্রিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির না হলে প্যারোলে আবেদনের কোনও সম্ভাবনা রয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ বেগম জিয়া ও তাঁর পরিবারের ব্যাপার। তারাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম-আহ্বয়ক ড.কাজী মনিরুজ্জামান মনিরসহ তাঁতী দলের নেতাকর্মীরা।