ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের রাজধরপুর গ্রামে কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে মন্দিরের সামনে পরিষ্কার করার সময় এক নারী মন্দিরের প্রতিমা ভাঙা দেখতে পানে। পরে বিষয়টি স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনকে জানানো হয়।
খবর পেয়ে ফরিদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন, মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা মনোয়ার, মধুখালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, সিআইডি, ডিএসবির কর্মকর্তারা, মধুখালী উপজেলা চেয়ারম্যান মির্জা মনিরুজ্জামান বাচ্চু, মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল হক বকু, মধুখালী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মুরাদুজ্জামান মুরা, কামারখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান বিশ্বাস বাবু প্রমুখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ রায় দোষীদের শাস্তির দাবি করে জানান, রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা কালী প্রতিমা ভেঙে ফেলেছে।
মধুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মন্দিরের মালিক অলোক রুদ্র বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত পূর্বক দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিরোজপুরের নাজিরপুরে দূর্গা মন্দির ও গোবিন্দ মন্দির এবং কালী মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা।
উপজেলার কলারদোয়ানিয়া গ্রামে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ সেবাশ্রম ও কালি মন্দিরে ঢুকে কালী প্রতিমা ভাঙচুর করার সময় হাতেনাতে কামরুল ইসলাম সুজন (৩০) নামে এক যুবককে আটক করে স্থানীয়রা।
সোমবার (২১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার দীর্ঘা ইউনিয়নের কলারদোয়ানিয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রতিমা ভাঙচুরকারী আটক যুবকের নাম কামরুল ইসলাম সুজন (৩০)। তিনি পার্শ্ববর্তী স্বরূপকাঠী উপজেলার রাজাবাড়ী গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে।
আটক হওয়ার আগেও সুজন উপজেলার কলারদোয়ানিয়া বাজার সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুর করে। পরে বাজার সংলগ্ন কলারদোয়ানিয়া বাজার সংলগ্ন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক অধির রঞ্জন মল্লিকের বাড়ির শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুর করে।
কলারদোয়ানিয়া বাজার সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের সাধারন সম্পাদক ডাক্তার সুখরঞ্জন মল্লিক জানান, মন্দিরটি তালা দিয়ে আটকা ছিলো। সকাল ৬টার দিকে মন্দিরের তালা ভেঙ্গে ওই যুবক মন্দিরে থাকা প্রতিমা থেকে কার্তিক ঠাকুর, সরস্বতি ও প্রলাদ ঠাকুর সহ ৫টি প্রতিমা ভাংচুর করে। এর আগে সকালে ওই বাজারের আটককৃত ওই যুবকের সাথে আরো এক যুবককে ঘুরতে দেখেন স্থানীয়রা।
মল্লিক বাড়ির গৃহবধূ গৌরী মল্লিক বলেন, তিনি ভোর বেলা মন্দিরের দরজার তালা খুলে রেখে পূজা দেওয়ার জন্য ফুল তুলতে যান। কিছুক্ষণ পরে এসে দেখে পাঞ্জাবি পরা, মাথায় টুপি ও মুখে দাড়িওয়ালা এক লোক বাড়ি থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। তখন তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেনি। মন্দিরে ঢুকে দেখেন মন্দিরের সব প্রতিমা ভাঙা।
এর কিছু সময় পরে জানতে পারেন একই গ্রামের আরেকটি মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুরের সময় একজন লোক আটক হয়েছে। সেখানে গিয়ে আমি তাকে চিনতে পারি। তাকেই আমাদের বাড়িথেকে বের হতে দেখেছি।
উপজেলার বৈঠাকাটা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই অনুপ কুমার মণ্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোমবার ভোর পৌনে ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে একই এলাকার তিনটি মন্দিরের তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে কামরুল ইসলাম সুজন।
এ সময় আশপাশের লোকজন দেখতে পেয়ে তাকে হাতেনাতে ধরে বৈঠাকাটা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে নাজিরপুর থানায় পাঠায়।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ হায়াতুল ইসলাম খান জানান, সরে জমিনে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ওই যুবক এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। তাকে আরো জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় নাজিরপুর থানায় মামলা হয়েছে বললেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মুনিরুল ইসলাম মুনির।