রোহিঙ্গা শরনার্থীদের (বলপ্রয়োগে বাস্তচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক) মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে আগ্রহী করে তুলতে হবে। এজন্য ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মাঝে প্রয়োজনীয় মোটিভেশনাল ওয়ার্ক করতে হবে।
পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরনার্থীদের দ্রুততম সময়ে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক মহলের মাধ্যমে মিয়ানমারের উপর চাপ বৃদ্ধি করতে হবে। বাংলাদেশকে এ বিষয়ে বহুমাত্রিক কুটনৈতিক তৎপরতাও আরো বাড়াতে হবে। রোহিঙ্গা শরনার্থীরা মিয়ানমারে ফিরে যেতে যাতে কেউ প্রতিবন্ধকতা ও উস্কানীমূলক কার্যক্রম নাকরে, সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে।
রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্য গঠিত National Task Force (NTF) এর ২৮ তম সভায় এবিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সেগুলো বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
কক্সবাজার শহরের কলাতলী সমুদ্র পাড়ের সায়মান বীচ রিসোর্টের সম্মেলন কক্ষে বুধবার (৬ নভেম্বর) সকালে এনটিএফ এর প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ শহীদুল হকের সভাপতিত্বে রোহিঙ্গা শরনার্থী বিষয়ক নীতিনির্ধারণী জাতীয় কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বলা হয়, ভাসানচর রোহিঙ্গা শরনার্থী স্থানান্তরে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। সেখানে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরনার্থী স্থানান্তরের প্রাথমিক প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। ক্যাম্প গুলোতে জাতিসংঘের সংস্থা গুলো, আইএনজিও এবং এনজিও সমুহের কার্যক্রম আরো নিবিড়ভাবে তদারকি ও তাদের সার্বিক কর্মকান্ড ব্যাপক নজরদারিতে রাখতে হবে। জয়েন্ট রেসপন্স প্লেন (জেআরসি) তে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্য মানবিক সাহায্য বরাদ্দের পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যয়াদি, ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে পূণর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবেশ ও পরিবর্তিত জলবায়ু বিষয়ে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের জন্য গুরুত্বারোপ করা হয়। সভায় রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প গুলোর চারিদিকে আন্তর্জাতিক মানের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ সহ নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে আরো পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এনটিএফ এর এসভায় অন্যান্যের মধ্যে দুর্যোগ ও ত্রান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার, এনিজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) কে. এম আবদুস সালাম, আরআরআরসি মোঃ মাহবুব আলম তালুকদার, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা উপ সচিব গুলশান আরা, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাঃ শাজাহান আলি, জাতিসংঘের বাংলাদেশে আবাসিক সমন্বয়কারী মিস. মিয়া সিপ্পো, ইউএনএইচসিআর-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ মি. স্টিভ, আইওএম-এর বাংলাদেশের মিশন প্রধান মি. জিওরজি এবং আইএসসিজি’র প্রধান মিস. নিকোলি, আইএনজিও এবং এনজিও প্রতিনিধি, এনটিএফ এর অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এনটিএফ অন্যান্য বৈঠকের তুলনায় বুধবার কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোহিঙ্গা শরনার্থী সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা অপেক্ষাকৃত বেশী অংশ নেওয়ায় এ বৈঠকে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে প্রত্যেক বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত হয়।
ফলে এ বৈঠকটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয় বলে বৈঠকে অংশ নেয়া একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। বৈঠকে এ বিষয়ে সরকারের নেয়া সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য সভায় বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করা হয়।