Tag: প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

  • ‘স্বতন্ত্র-নৌকা’ বিভেদ ভুলে যাওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    ‘স্বতন্ত্র-নৌকা’ বিভেদ ভুলে যাওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দলের নেতাকর্মীদের নির্বাচনকেন্দ্রিক বিভেদ ভুলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বিভেদ ভুলে দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাইকে নিবেদিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

    দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে নৌকা প্রতীকে ২২৩ আসনে জয়লাভ করেছে। আবার আওয়ামী লীগেরই বহু নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জয় পেয়েছে। নির্বাচনের সময় নৌকার প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী নেতাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয় এবং স্থানীয়ভাবে বিভেদ তেরি হয়। কিছু জায়গায় নিজেদের দলের লোকদের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষও হয়।

    আজ অনুষ্ঠিত দলের যৌথ সভায় এই বিষয়ে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

    তিনি বলেন, যারা নির্বাচন করেছে, কেউ জয়ী হয়েছে, কেউ জয়ী হতে পারেনি। এখন একজন আরেকজনকে দোষারোপ করা বা কার কী অপরাধ তা খুঁজে বের করা— এসব বন্ধ করতে হবে। আমাদের দল ছাড়া আরও কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা জনগণের সমর্থন পেয়েছি। এটা কিন্তু কাজের স্বীকৃতি।

    শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের জন্য আমরা কাজ করেছি, সেজন্য দেশের মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে, আমাদের জয়ী করেছে। সেখানে হয়ত কেউ জিততে পেরেছে, কেউ জিততে পারেনি। হারজিত যাই হোক সেটা সবাইকে মেনে নিয়ে অন্তত নিজের দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে। আমরা যদি একে অপরের দোষ ধরতে ব্যস্ত থাকি, এটা আমাদের বিরোধী দলকে আরো উৎফুল্ল করবে, তাদের কিছু সুযোগ দেওয়া হবে।

    ‘কারও কারও কষ্ট আছে, কারও কারও আনন্দ আছে। কিন্তু ওই আনন্দ, দুঃখ, কষ্ট, হাসি, কান্না—সবকিছু মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। সবাইকে আবার এক হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। মানুষের যে আস্থা-বিশ্বাস আমরা অর্জন করেছি, সেটা যেন কোনোমতে হারিয়ে না যায়’—বলেন প্রধানমন্ত্রী।

    তিনি বলেন, ‘৭৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে এমন অবস্থায় ছিল, তখন বাংলাদেশ বললে মানুষ মনে করত একটা দুর্ভিক্ষের দেশ, দুর্যোগের দেশ; এদেশের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। জাতির পিতাকে হত্যার পর অনেক দেশ বলেছে, তোমরা তোমাদের নেতাকে হত্যা করেছ? তখন খুনি দেশ হিসেবে আমরা পরিচিত হই। সে সময় আন্তর্জাতিকভাবে কোথাও গেলে বলত বাংলাদেশ তো হাত-পাততে আসে। এখন অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিটা পরিবর্তন হয়েছে।

    আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এই অফিসে ঢুকতে দিত না, চারদিকে পুলিশি ব্যারিকেড দেওয়া ছিল। অনেক সময় নেতাকর্মীরা আটকা পড়ত, তখন আমি বাধ্য হয়ে জোর করে ঢুকতাম এবং নেতাকর্মীদের উদ্ধার করতাম। ২০০১ এ নির্বাচনের পর আমাদের অফিসটা হয়ে গিয়েছিল হাসপাতাল। কারণ, বিভিন্ন জেলা থেকে আহত নেতাকর্মীরা এখানে আশ্রয় নিয়েছিল। নেতাকর্মীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা, খাওয়ার ব্যবস্থা আমরা এখানে করেছিলাম।

    ‘৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর আমাদের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। স্বাধীনতাকে বিকৃত করা হয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়েছে।

    সরকারপ্রধান বলেন, নির্বাচন যাতে না হয় সেজন্য অনেক চক্রান্ত ছিল, অনেক ষড়যন্ত্র ছিল। সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আমরা নির্বাচন করেছি। যে দল নির্বাচন করে না, তারা তো গণতান্ত্রিক ধারায় নির্বাচন করায় অভ্যস্ত না। যেসব জরিপ আন্তর্জাতিকভাবে হয়েছিল তাতে স্পষ্ট ছিল বিএনপি নির্বাচন করলে কখনো সরকার গঠন করার মতো সাফল্য অর্জন করবে না। সেরকম সিটও তারা পাবে না।

    ‘আওয়ামী লীগের বেলায় সার্ভে ছিল, শুধু একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে। আওয়ামী লীগ পর্যাপ্ত সিট পাবে। এ কথা শোনার পর তারা নির্বাচনে আসবে না, এটা তো স্বাভাবিক। তাছাড়া ওদের সৃষ্টি হয়েছিল অবৈধভাবে যারা ক্ষমতা দখল করেছিল তাদের পকেট থেকে। তারা জানে ক্ষমতায় বসে নির্বাচন করতে। জনগণের ভোট চুরি করা, নির্বাচনে কারচুপি করা, এসব কালচার বিএনপির আমলেই সৃষ্টি। তারা ওটাই ভালো বুঝত।’

    আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, বিএনপির আগের চরিত্র দেখলাম গত ২৮ অক্টোবর। সেখানে পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশকে পিটিয়ে মেরেছে। ১৩ সালে এভাবে মেরেছিল। সেই একই চিত্র আমরা আবার দেখলাম। তারা বলে ওখানে উসকানি দেওয়া হয়েছিল। যে অঞ্চলে পুলিশকে মারল সেখানে আওয়ামী লীগের কেউ ছিলই না। ওরাই পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করে। গাড়ি পোড়ায়। প্রধান বিচারপতির বাড়ি, জাজেস কোয়ার্টার, সাংবাদিক, কেউ ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি।

    বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমাদের মহিলারা মিছিল নিয়ে আসছিল, তাদের ওপর আক্রমণ করে। এই ঘটনা ঘটিয়ে তারা আবার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিয়ে কাঁদে। তাদের মুরুব্বিদের কথামতো আবার কান্নাকাটি। তারা বলে সেটা উসকানি, আসলে উসকানিটা দিল কে? উসকানি দেওয়ার মতো তো কেউ ছিল না। পুলিশ তখন যথেষ্ট সহনশীলতা দেখিয়েছে। এরা এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটাবে, ঘটাতেই থাকবে। দুর্নীতি করা আর মানুষ খুন করা, এটাই হচ্ছে বিএনপির চরিত্র।

  • পণ্য সরবরাহ ও মূল্য ঠিক রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    পণ্য সরবরাহ ও মূল্য ঠিক রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    আসন্ন রমজানে পণ্য সরবরাহ ও মূল্য ঠিক রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি বাজারে পণ্যের দাম নিয়ে যারা কারসাজি করে তাদের নজরদারিতে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

    সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গঠিত নতুন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন যেটা সবচেয়ে বেশি আলোচিত সেটা হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি। পণ্যের দাম বেশি অথচ খাদ্যপণ্যের অভাব নেই।

    দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, কারসাজি যারা করে তাদের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সামনে আমাদের রমজান মাস। আমাদের খাদ্যপণ্য আমদানি করে সীমিত কয়েকটি গ্রুপ। তারাও এখানে সব সময় একটা খেলা খেলতে চায়। সেই ক্ষেত্রে এখন থেকে আমাদের একটু প্রস্তুতি নিতে হবে।

    তিনি বলেন, রমজান মাসে যে পণ্যগুলো আমাদের বেশি লাগে সেগুলোর মূল্য যেন ঠিক থাকে এবং সেগুলো যেন বাজারে পাওয়া যায় সরবরাহ যেন ঠিক থাকে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

    পণ্যের দাম কৃষক এবং ভোক্তা উভয়ের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা একটা অদ্ভুত ব্যাপার খাদ্যপণ্যের যখন দাম বাড়ে তখন কৃষক খুশি হয়। কিন্তু যারা ভোক্তা তারা দুঃখ পায়। তাদের উপরে চাপ এসে পড়ে। এটাকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে হবে, এটাকে কীভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা যায় এ বিষয়ে আমাদের খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

    শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধি যেটা হবে মূল্যস্ফীতি তার চাইতে কম থাকতে হবে। তাহলেই তার সুফলটা দেশের সাধারণ মানুষ পাবে।

    তিনি আরও বলেন, মুদ্রাস্ফীতি আমরা কমিয়েছি, খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১২ শতাংশ উঠে গিয়েছিল, সেটাকে কমিয়ে নয় ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। অন্য সব মিলিয়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু এটাকে আমাদের আরও কমাতে হবে।

    নির্বাচনী ইশতেহারের কথা উল্লেখ করে পাঁচবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা যে ওয়াদা দিয়েছি সেগুলো আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে।

  • বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান ও মূল্যস্ফীতি রোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান ও মূল্যস্ফীতি রোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    এই মুহূর্তে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সমস্যা এবং মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের মানুষ কষ্টে আছে জানিয়ে দুটি সমস্যার সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    মঙ্গলবার (৬ জুন) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন।

    একনেক সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।

    পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছেন এই মুহূর্তে আমাদের দুটি বড় সমস্যা হচ্ছে বিদ্যুৎ ও মূল্যস্ফীতি। এই দুটি সমস্যার সমাধানে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

    মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চাল, ডাল, তেল ইত্যাদি পণ্যের রিজার্ভ বাড়াতে হবে। এটি টিসিবির মাধ্যমে করতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু ঢাকায় নয়, অন্যান্য শহরগুলোতেও করতে হবে।

    মূল্যস্ফীতি কেন এত বেশি হবে এমন প্রশ্ন রেখে সরকারপ্রধান বলেছেন, আমরা এটিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কৃষিপণ্য সংরক্ষণ করব।

    বিদ্যুৎ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন দুই সপ্তাহে ঠিক হয়ে যাবে। আমরা প্রার্থনা করব দুই সপ্তাহ বিদ্যুতের যেন সমাধান হয়ে যায়।

    পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, জি টু জি ভিত্তিতে নেওয়া ঋণের ব্যবহার বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, এক্ষেত্রে তাদের গাফিলতি থাকলে ভিন্ন কথা। কিন্তু আমাদের দিক থেকে যেন কোনো সমস্যা না থাকে।

    সেই সঙ্গে ডলার সংকট মোকাবেলায় মিতব্যয়ী ও সাশ্রয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্পে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে গাড়ি কিনতে বলেছেন। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা প্রকল্প প্রস্তাবের গভীরে গিয়ে নিখুঁতভাবে মূল্যায়ন করবেন। যদিও এটা করা হচ্ছে। সেটি আরও কঠোরভাবে করা হবে।

    পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ডলার সংকট সাময়িক। আমরা আশা করি আমাদের রিজার্ভ বাড়বে।

    এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী আগামী অর্থবছর ৬ শতাংশের মধ্যে হয়ত মূল্যস্ফীতি রাখা যাবে না। কিন্তু সরকারি উদ্যোগগুলো দ্রুত নিলে কার্যকর ফল পাওয়া যাবে। যেমন আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী বললেন, দাম না কমালে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে দুই সপ্তাহ সময় লাগল। যখনই আমদানির চিঠি এলো তখনই দাম কমতে শুরু করল।

    পরিকল্পনা মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগেও বলেছেন আজ, আবারও বলেছেন মিতব্যয়ী হতে। তিনি অপচয় রোধ করতে বলেছেন, জমি খালি রাখা যাবে না এসব আবার বলেছেন। উৎপাদন বাড়াতে আবারও তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে সেসব বলেছেন। আমরা কমিশনের সবাইকে বলি, প্রকল্পের গভীরে যেতে, প্রাপ্ততার অধিক সুযোগ কেউ নিচ্ছে কি না সেটা দেখতে। উদ্দেশ্য মৃতব্যয়ী হওয়া।

    একনেকের আজকের সভায় ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়।

  • ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ব্যবস্থার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ব্যবস্থার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ে যারা হামলা করেছিল তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    বুধবার (৫ এপ্রিল) গণভবনে পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারি ঋণের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ টাকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সরকারের অর্থ বিভাগ সেতু কর্তৃপক্ষকে এই টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছিল।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অন্তত দুঃখজনক। ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।

    তিনি বলেন, বঙ্গবাজারে যারা ফায়ার সার্ভিসের অফিসে হামলা ও কাজে ব্যাহত করেছেন তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

    শেখ হাসিনা বলেন, অনেক উন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা ভালো। জনগণের সমর্থনই সরকারের মূল শক্তি।

    পদ্মা সেতু নির্মাণে বাধার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশি ও বিদেশি প্রবল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ বিশ্ববাসীকে সক্ষমতা দেখিয়েছে।

  • ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্ষণ প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণসহ এ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রশাসনের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা (ধর্ষণ) রোধ করার ব্যাপক ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। আর সব থেকে বড় কথা মানুষের মাঝেও জনসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।’

    সমসাময়িক কালে সামাজিক এই ব্যাধির প্রকোপ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইদানিং ধর্ষণটা ব্যাপকভাবে হচ্ছে এবং প্রচারও হচ্ছে। এটার যত বেশি প্রচার হয় প্রাদুর্ভাবটাও তত বাড়ে।’

    শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) ৭০ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী এবং সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

    সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের বিধান সংযুক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

    তাঁর সরকার ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আজকের যারা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হলেন আপনারাই থাকবেন আগামী দিনের কর্নধার। আপনারাই দেশটাকে পরিচালনা করে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আজকের যাঁরা নতুন প্রজন্ম তারাই ’৪১ এর উন্নত বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসসী হয়েই আমাদের কর্মকর্তা, কর্মচারিরা দেশ এবং জনগণের সেবা করবে, সেটাই আমার লক্ষ্য।’

    তিনি বলেন, ‘দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করুন।’
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে গণভবন থেকে সাভারস্থ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মূল অনুষ্ঠান স্থলসহ দেশের ৭টি বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হন।

    প্রধানমন্ত্রী ’৭৫ পরবর্তী সময়ে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলতে থাকার উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা চাই কোন ধরনের অন্যায়-অবিচার যেন না হয়। মানুষ যাতে ন্যায় বিচার পায়।’

    তিনি বলেন, ‘মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কারণ, আমি জানি যে, বিচার না পেলে কি কষ্ট। আমার বাবা-মা, ভাই, ভাতৃবধু-তাঁদেরকে যখন হত্যা করা হয়, খুনীদেরকে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছিল। আমার বিচার চাওয়ার কোন অধিকার ছিল না। আমি কেন ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট যাঁরা নিহত হয়েছিলেন তাঁদের পরিবারের কারোরই বিচার চাওয়ার কোন অধিকার ছিল না।’

    তিনি বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে বলেন, ‘আমার বাবা-মা, ভাই মারা গেছে আমি একটা মামলাও করতে পারিনি। আমার সেই অধিকারটাও ছিল না। এই সংস্কৃতি বাংলাদেশে যেন আর না থাকে।

    তাঁর সরকার ক্ষতায় আসতে পেরেছিল বলেই জাতির পিতার খুনী এবং দেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করেন তিনি।
    জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

    বিপিএটিসি’র রেক্টর মো. রাকিব হোসেন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ৭০ তম বুনিয়াদি কোর্সের ফলাফল হস্তান্তর করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানে সনদ বিতরণ করেন।

    এবারের ৬ মাস ব্যাপী কোর্সটির শেষ একমাস করোনার কারণে অনলাইনে সমাপ্ত করা হয়। যেখানে ১৬১ জন নারীসহ ৬৬৩ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্যে ৫০ জন পুরুষ এবং ১৮ জন নারী সেন্টার অব এক্সিলেন্স সনদ প্রাপ্ত হন।

    অনুষ্ঠানে সনদ প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পক্ষে মেহেদী হাসান কাওসার এবং মুনিয়া সিরাত নিজ নিজ অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন হবার পরই জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুণর্গঠনকালে সংস্কারের মাধ্যমে স্বাধীন দেশের উপযোগী সিভিল সার্ভিস গঠনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

    এ সময় সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেয়া জাতির পিতার একটি ভাষণেরও উদ্ধৃতি দেন প্রধানমন্ত্রী।

    জাতির পিতা তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনা দেয় ঐ গরীব কৃষক, আপনার মাইনা দেয় ঐ গরীব শ্রমিক, আপনার সংসার চলে ঐ টাকায়, আমি গাড়ি চড়ি ঐ টাকায়, ওদের সম্মান করে কথা বলেন, ওদের ইজ্জত করে কথা বলেন, ওরাই মালিক।’

    প্রধানমন্ত্রী এই উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, ‘আজকে যারা নবীন কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাঁদের কিন্তু ঐ কথাটাই মনে রাখতে হবে যে, এই দেশের গরিব মানুষ যাঁরা বা এখনও তৃণমূলে যাঁরা পড়ে রয়েছেন তাঁরাই এ দেশের মালিক। আর তাঁদের ঘর থেকেই লেখাপড়া শিখে আজকে উঠে এসেছেন। কাজেই, সে দিকে লক্ষ্য রেখে তাঁদের সেবা করাটাই হবে সব থেকে বড় দায়িত্ব।’

    তিনি জাতির পিতার সিভিল সার্ভিস কমিশন সংস্কার নিয়ে আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রফেসর মোজাফফর আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস রি-অর্গানাইজেশন কমিটি’ ও গঠন করেছিলেন।

    বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে জাতির পিতা তাঁর দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকল মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করে প্রত্যেক জেলার জন্য ‘জেলা গভর্নর’ নিযুক্ত করেন।

    কারণ, ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণই ছিল জাতির পিতার মূল লক্ষ্য।’

    তিনি বলেন, কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না, কোন শিশুই পথশিশু থাকবে না, প্রত্যেক শিশুরই একটা ঠিকানা হবে এবং লেখাপড়া এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান করে জীবনে যাতে দাঁড়াতে পারে তার ব্যবস্থা আমাদের করে যেতে হবে।’

    তিনি এ সময় সীমিত ভূখন্ড এবং বিশাল জনসংখ্যার উল্লেখ করে বলেন, ‘সে জন্যই তাঁর সরকারের লক্ষ্য প্রত্যেকটি গ্রামকে সকল ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে শহরে রূপান্তরিত করা।’

    সারা বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তির সংযোগের মাধ্যমে ইন্টারনেট সার্ভিস অন্তর্ভূক্ত করে ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টার, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ডিজিটাল পোষ্ট অফিস নির্মাণ করে দেশকে ডিজিটালাইজড করে স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন সরকারি সেবা জনগণের দোড়গোঁড়ায় নিয়ে আসায় তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন তিনি।

    তাঁর সরকারের মানুষের নাগালের মধ্যে কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোনকে নিয়ে আসার জন্য এ সব পণ্যের ওপর থেকে আমদানী শুল্ক প্রত্যাহার এবং বেসরকারী খাতকে উন্মুক্ত করে দেওয়ারও তথ্য দেন তিনি।

    তিনি বলেন, ‘সেই চর কুকরি মুকরি থেকে শুরু করে সারাদেশ যেন ডিজিটাল সংযোগের আওতায় আসতে পারে সে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। কাজেই, দেশ ডিজিটাল হয়েছে বলে যেখানে করোনাভাইরাসের কারণে ঘর থেকেই বের হতে পারছি না সেখানে আপনাদের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে কথা বলতে পারছি।’

    তিনি বলেন, করোনাভাইরানের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর পরই আমি একটা নির্দেশ দিয়েছিলাম-আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতেই হবে। যে কারণে দেশে কোন খাদ্য সংকট হয়নি।’
    তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির চাকা যেন সচল থাকে সে ব্যবস্থা যেমন আমাদের করতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে দেশটা যেন এগিয়ে যেতে পারে সেটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

    ভূমি সংস্কার ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করার ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ নামের ব-দ্বীপটাকে রক্ষা করার জন্য প্রত্যেকটি জলাধার সুরক্ষা করে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমানোর ওপরেও গুরুত্ব আরোপ করেন।

    তাঁর সরকার প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিকেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার নির্দেশনায় বিপিএটিসি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ভৌত অবকাঠামো পুনর্নিমাণ ও আনুষঙ্গিক সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিপিএটিসি’র সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ-শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

    তিনি বলেন, তারই ধারাবহিকতায় ২০ তলা বিশিষ্ট ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন’ এর নকশা ইতোমধ্যে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

    প্রশিক্ষণের আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি, আমাদের এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটা একদিকে যেমন দৃষ্টি নন্দন হয় এবং সেখানের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাটাও যেন বিশ্বমানের হয় এবং এখানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা সমগ্র বিশ্বে যেন একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। ‘আমি চাই এই কাজটা যেন একটু দ্রুত শেষ হয়,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

    পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশপাশি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে তাঁর একটি কাঠামো তৈরীতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১০ থেকে ২০২০ এখন আবার ২০২০ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ করছি। এমনকি শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা পরিকল্পনাও আমরা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’

    ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে গ্রাজুয়েশন প্রাপ্তিকে’ ধরে আরো রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিভিল প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা বাংলাদেশকে এমন ভাবে গড়ে তুলবেন। এই বাংলাদেশ যেন আর কোনদিন পিছিয়ে না যায়।’

    তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি মানুষের জীবনেই একটা দিক দর্শন থাকতে হয়। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকতে হয়। লক্ষ্য বিহীন জাতি যেমন এগোতে পারে না তেমনি দিকহারা জাতি কোন ঠিকানা খুঁজে পায় না। কাজেই, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সকল পরিকল্পনা দিয়ে গেলাম। যাকে আপনারাই সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।’

    পরিশেষে, করোনা ভাইরাসকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টিও সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

    তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে নিজে সুরক্ষিত থাকবেন এবং অপরকেও সুরক্ষিত রাখবেন।’

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে দায়িত্ব পালনকালে সকল সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাস্ক ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

    প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম আজ বাসস’কে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনকালে মুখে মাস্ক ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন।”

    স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে নতুন করে আরো ২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

    আজ আইইডিসিআর-এ ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংকালে স্বাস্থ্য সেবা অধিদফতরের পরিচালক (এমআইএস) ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গত ২৪ ঘন্টায় বাংলাদেশে মারাত্মক এ ভাইরাসে আরো ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫৬ জনে দাঁড়ালো।

  • চীনে আটকে পড়াদের ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    চীনে আটকে পড়াদের ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনে মারাত্মক করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে আটকে পড়া যে সব বাংলাদেশী ‘দেশে ফিরতে চান’ তাদের ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।

    পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম আজ এ কথা জানিয়েছেন।

    ফেসবুক পোষ্টে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ‘এ ব্যাপারে আমরা চীন সরকারের সাথে আলোচনা শুরু করেছি।’

    তিনি আরো বলেন, তাদের ফিরিয়ে আনার উপায় বের করার জন্য পররাষ্ট্র দফতর করোনা ভাইরাস আক্রান্ত অঞ্চলে চীনা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার পরিকল্পনা করেছে। কারণ, সেখানে লোকজনের প্রবেশ এবং বেরিয়ে আসা বন্ধ করে ভ্রমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

    শাহরিয়ার আলম বলেন, যারা দেশে ফিরতে চান আজকের মধ্যেই তাদের তালিকা তৈরির প্রাথমিক নির্দেশনা দেয়া হবে।

    প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

    ভাইরাসের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জরুরি সহায়তা প্রদানের প্রয়োজনে বেইজিংয়ের বাংলাদেশী দূতাবাস প্রবাসী বাংলাদেশীদের যোগাযোগের জন্য ইতোমধ্যে ২৪ ঘন্টা হটলাইন চালু করেছে।

    হটলাইন নম্বর হচ্ছে + ৮৬ ১৭৮-০১১১-৬০০৫ এবং এই নম্বরটি চীনে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিশেষত শিক্ষার্থী ও গবেষকদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

    ভাইরাস আক্রান্ত অঞ্চল উহানে বর্তমানে প্রায় ৩শ’ থেকে ৪শ’ বাংলাদেশী শিক্ষার্থী অবস্থান করছে।
    বাংলাদেশী দূতাবাস এর আগে জানিয়েছিল যে, বেইজিংয়ে বাংলাদেশী মিশন তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।

    চীনে প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সোমবার মৃতের সংখ্যা ৮০ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আরো কয়েকশ’ জন নতুন করে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের আলাদা করে এবং ভ্রমণ বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদেশী সরকারগুলো চীনে আটকে পরা তাদের নাগরিকদের সহায়তা প্রদানের চেষ্টা চালাচ্ছে।

  • ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার ১০টি বিদ্যমান প্রকল্পের সঙ্গে আরো বেশকিছু প্রকল্পকে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করবে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে কয়েকটি প্রকল্পকে ফাস্ট ট্র্যাক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছি এবং প্রকল্পগুলোর সামগ্রিক বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছি। কমিটির (ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটি) আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বড় প্রকল্প পর্যবেক্ষণ করা উচিত।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে (পিএমও) ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ মনিটরিং কমিটির পঞ্চম সভায় সভাপতিত্বকালে একথা বলেন।

    ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত ১০টি প্রকল্প ছাড়াও অন্যান্য বড় প্রকল্পগুলো মনিটর করতে ‘ফাস্ট ট্র্যাক মনিটরিং কমিটি’কে নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সেগুলোতো মনিটর করবোই ভবিষ্যতে আমার মনে হয় এই কমিটি থেকে শুধু এই কয়েকটা দেখলে হবে না আরও অনেকগুলো প্রজেক্ট আছে যেগুলো দেখতে হবে।’

    সরকারের ধারাবাহিকতার সুফল তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এই ধারবাহিকতা না থাকলে সরকার পরিবর্তন হলে কাজের ধারাও নষ্ট হয়ে যায়। টানা তিন বার আওয়ামী লীগকে দেশ পরিচালনার সুযোগ দেওয়ার জন্য জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ যে, অন্তত তারা আমাদের এইটুকু সুযোগ দিয়েছে এবং এবার নিয়ে আমরা পর পর তৃতীয় বার এসেছি (রাষ্ট্র পরিচালনায়)। তাতে আমাদের উন্নয়নের কাজগুলো বাস্তবায়নও করতে পারছি এবং মানসম্মতও করতে পারছি।’
    পদ্মা বহুমুখী মূল সেতুর নির্মাণ কাজ ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় ফাস্ট ট্র্যাক মনিটরিং কমিটি। পদ্মা সেতুসহ ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত ১০টি প্রকল্পের প্রতিটির অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরা হয় এ সভায়।

    ১০টি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হচ্ছে- পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল), মহেশখালি-মাতারবাড়ি সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম, ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, গভীর সমুদ্র বন্দর, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মান প্রকল্প, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এবং দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মায়ানমারের নিকটে ঘুমধুম পর্যন্ত সিংগেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প।

    বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট সচিব ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

  • মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

    বাংলাদেশে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পাশাপাশি আমদানিনির্ভর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রফতানি বাড়াতে এসব দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    সংযুক্ত আরব আমিরাত সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (১৩ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় রাতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন। আবুধাবির হোটেল শাংগ্রিলায় এই বৈঠক (এনভয় কনফারেন্স) অনুষ্ঠিত হয়।

    বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এসব কথা জানান।

    মধ্যপ্রাচ্যের নয়টি দেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশে করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগ ও রপ্তানি বিষয়ে দেখতে হবে কোন দেশে কি চাহিদা এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কীভাবে রফতানি বাড়ানো যায়, কীভাবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ আকর্ষণ করা যায় সেভাবে কাজ করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স যায় সে কথা উল্লেখ করে এখানকার প্রবাসীদের যাতে কোনো কষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশ দেন তিনি।

    বিদেশগামী কেউ যেন দালালদের খপ্পরে না পড়ে এবং সরকারি রেটের চেয়ে বেশি টাকা না দেয় তা নিশ্চিত করতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

    বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা একটা নীতিমালা দিয়ে গেছেন। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।

    জাতির পিতা জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি উপলক্ষে মুজিববর্ষ (১৭ মার্চ, ২০২০ থেকে ২৬ মার্চ ২০২১) উদযাপন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, মুজিববর্ষ পালন এটা আমাদের একটা সৌভাগ্য। দেশে অনেক প্রোগ্রাম হবে। বিদেশে যারা আছেন এখানেও প্রোগ্রাম করতে হবে। সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

    চীন সফর নিয়ে বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘আমার দেখা নয়া চীন’ নামে একটি বই প্রকাশ পাবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

    দেশের অর্থনীতি এখন অনেক শক্তিশালী সে কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আগে আমাদের অনেক কসরত করে দাতাদের কাছ থেকে ঋণ নিতে হতো, আমরা সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছি। এখন আমরা দাতা বলি না কাউকে, এখন তারা হচ্ছে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী।

    দারিদ্র্য হ্রাসের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এই পরিশ্রমের ফলে দারিদ্র্যসীমা ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছি। আরও ৩ শতাংশ কমিয়ে আনতে চাই। এটা করতে দ্রুত চেষ্টা করতে হবে।

    বৈঠকে অংশ নেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান, বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) কে এম মমিনুর রহমান, ইরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার, ইরাকে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ এম এম ফরহাদ, কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম, লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার, ওমানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. গোলাম সারোয়ার এবং কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ।

    এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।