সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির স্থগিত হওয়া প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে ফল প্রকাশের কথা থাকলেও রাত সাড়ে ১০টায় স্থগিত হওয়া ফলাফল প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
আজ বুধবার রাতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ্ রেজওয়ান হায়াত স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। কারিগরি ত্রুটির কারণে ফলাফল পুনঃযাচাই এর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ায় প্রকাশিত ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করা হয়। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার স্থগিত ফলাফল পুনঃযাচাইক্রমে প্রকাশ করা হলো।
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ সম্পর্কিত অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ফলাফল ভুলের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী জাকির হোসেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ফল প্রকাশের ভুলের দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বদলিসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।’
এদিকে এ ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক উত্তম কুমার দাশ বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কাজ শুরু করেছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফল ঘোষণা করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন—সচিব ফরিদ আহাম্মদ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ্ রেজওয়ান হায়াত। কিন্তু ফল ঘোষণার ৬ ঘণ্টার পরই তা স্থগিত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
ফল প্রকাশ স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। এতে স্বাক্ষর করেন মহাপরিচালক শাহ্ রেজওয়ান হায়াত। এতে বলা হয়, কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রাথমিক বৃত্তি ২০২২ এর ফলাফল পুনঃযাচাই এর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ায় ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত প্রাথমিক বৃত্তির ফলাফল স্থগিত করা হলো। আগামী ১ মার্চ বিকেলে প্রাথমিক বৃত্তির ফলাফল প্রকাশিত হবে।
উল্লেখ্য, এবার পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করেছিল। পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪ লাখ ৮২ হাজার ৯০৪ শিক্ষার্থী। বাকিরা নিবন্ধন করেও পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ২০০৯ সালে জাতীয়ভাবে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পিইসি পরীক্ষা শুরু করে সরকার। প্রথমে শুধু সাধারণ ধারার শিক্ষায় এটি সীমাবদ্ধ ছিল। পরে মাদ্রাসার ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (পঞ্চম শ্রেণির সমমান) পরীক্ষাও চালু করা হয়। এরপর থেকে এই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই বৃত্তি দেওয়া হতো। এর আগে শিক্ষার্থীদের পৃথকভাবে বৃত্তি পরীক্ষায় বসতে হতো। করোনা সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর পিইসি পরীক্ষা হয়নি। ফলে দেওয়া হয়নি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি।