বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপে বড়ুয়াপাড়া সংলগ্ন বালুর মাঠ এলাকায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে শওকত হোসেন চইল্ল্যা (৪৫) নামের ব্যক্তি নিহত হয়েছে।
শওকত উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের খলিল তালুকদার বাড়ির হাছি মিয়ার ছেলে। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে একই এলাকার নাছির হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় তাকে আটক করেছিল বোয়ালখালী থানা পুলিশ।
পুলিশের দাবি, সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন’র ছেলে মোহাম্মদ নাছির হত্যার প্রধান আসামী শীর্ষ সন্ত্রাসী শওকত হোসেন চইল্ল্যা। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ বিভিন্ন আইনে একাদিক মামলা রয়েছে।
বন্দুকযুদ্ধের সময় বোয়ালখালী থানার ইনচার্জসহ(ওসি) ২ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বন্দুকযুদ্ধের ঘটানাটি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালখালী থানার ওসি আবদুল করিম।
যেভাবে আটক হয় শওকত:
গত শুক্রবার উপজেলায় মোহাম্মদ নাছির (৪৪) নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে একাদিক মামলার আসামী শওকত হোসেন ওরপে চইল্ল্যা ও তার ছোট ভাই জসীমসহ সন্ত্রাসী গ্রুপ। এ সময় নাছিরের পিতা মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন ও ছোট ভাই লোকমান আহত হন।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের খলিল তালুকদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ জসিম উদ্দিন ও শওকত হোসেনকে আটক করে ও তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি এলজি, ৫ রাউন্ড গুলি, ২টি কার্তুজ, ছুরি, চাপাতি ও দা উদ্ধার করে।
জানা গেছে, চরণদ্বীপের বটতল এলাকার বাসিন্দা হাছি মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধা আলী মদনের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, জমিজমা নিয়ে এ বিরোধ। এ নিয়ে আগেও দুই পরিবারের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ হয়। শুক্রবার রাতে এলাকার এক ধনাঢ্য ব্যক্তি খলিল তালুকদার নিজ বাড়িতে জাকাতের টাকা বণ্টন করছিলেন। টাকা বণ্টনে অনিয়মের অভিযোগ এনে আলী মদনের ছেলে লোকমান প্রতিবাদ করলে হাছি মিয়ার ছেলে জসিমের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। খবর পেয়ে জসিমের ভাই শওকত বাড়ি থেকে বন্দুক নিয়ে এসে লোকমানকে মারধর করতে থাকে। লোকমানকে বাঁচাতে বড় ভাই নাছির ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন এগিয়ে এলে জসিম ও শওকত তাদের উদ্দেশ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে। এতে মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন ও তার ছেলে নাছির গুলিবিদ্ধ হন। রাতে আহতদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ নাছিরকে চমেক হাসপাতালে রাত ১টা ৪০ মিনিটের সময় মৃত ঘোষণা করে।
এ ঘটনায় উপ-পরিদর্শক (এস আই) সুমন কুমার দে বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে এবং নিহত নাছিরের ভাই জয়নাল বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
যেভাবে বন্দুক যুদ্ধ সংঘটিত হয়: মুক্তিযোদ্ধার উপর হামলা ও তার ছেলে নাছিরকে গুলি করে হত্যা বিষয়ে আটকৃতরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সন্ত্রাসী শওকত হোসেনের কাছে আরো অস্ত্র থাকার কথা স্বীকার করে।
শনিবার (১৬মে) দিবাগত রাতে অতিরক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে বোয়ালখালী থানার ইনচার্জ(ওসি) আব্দুল করীম, এস আই সুমন কুমার দে, এস আই আরিফুর রহমান সরকার, এসআই কুদ্দুছ সঙ্গীয়ফোর্সসহ সন্ত্রাসী শওকত হোসেন চইল্ল্যাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে যাওয়া পথে উপজেলার চরণদ্বীপ বড়ুয়াপাড়া বালুর ঘাট এলাকায় সন্ত্রাসী শওকত হোসেন ওরপে চইল্ল্যার বাহিনী পুলিশের উপর এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়লে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে।
এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সন্ত্রাসী শওকত হোসেন ওরপে চইল্ল্যাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ১০টি কার্তুজের খোসা একটি রামদা, একটি চাকু উদ্ধার করা হয়।
এ সময় আশে পাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ নাছির হত্যায় জড়িত আরো একজনকে আটক করা হয়।
২৪ ঘণ্টা/এম আর/পূজন