২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এ সংক্রমিত হয়ে বাংলাদেশের মধ্যে চারজন এবং দেশের বাইরে আরো ৪টি দেশে ১৫ জনসহ এখন পর্যন্ত ১৯ জন বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর জানা গেছে।
আজ ২৫ মার্চ বুধবার সকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার। এর মধ্যে বাংলাদেশি রয়েছেন ১৯ জন।
প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশেই মারা গেছেন ৪ জন। দেশের মধ্যে প্রথম মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায় গত ১৮ মার্চ। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগ (আইইডিসিআর) প্রথম নিশ্চিত করেন গত ১৮ মার্চ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর।
দুদিনে মৃত্যুর আর কোন খবর পাওয়া না গেলেও গত ২১ মার্চ মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে আরেকজনের মৃত্যুর খবর জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গত ২৩ মার্চ বিকেলে আইইডিসিআর অনলাইন ব্রিফিংয়ে জানায় দেশের মধ্যে তৃতীয় বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর।
গতকাল ২৪ মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা চতুর্থ ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
দেশের বাইরে ১৫ বাংলাদেশির মৃত্য : দেশের বাইরে আরো ৪টি দেশে মোট ১৫ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে সর্ব্বোচ্চ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। সেখানে এখন পর্যন্ত ৮ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। শুধুমাত্র গতকাল মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজন নারী ও দুজন পুরুষের মৃত্যু হয় দেশটির নিউইয়র্কে।
তারা সেদেশের এলমহার্স্ট হসপিটাল ও প্লেইনভিউ হসপিটাল নর্থওয়েলে মারা গেছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদের মধ্যে ৬০ বছরের আবদুল বাতেন, ৭০ বছরের নূরজাহান বেগম এবং ৪২ বছরের এক বাংলাদেশি প্রবাসী নারী মারা গেছে এলমহার্স্ট হসপিটালে। এবং ৫৯ বছরের এটিএম সালাম মারা গেছেন প্লেইনভিউ হসপিটাল নর্থওয়েলে।
এর আগে গত ২৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন ৩৮ বছরের আমিনা ইন্দ্রালিব তৃষা এবং ৬৯ বছরের মোহাম্মদ ইসমত। তার আগের সপ্তাহে মারা গেছেন মোতাহের হোসেন ও মোহাম্মদ আলী নামের আরো দুজন বাংলাদেশি।
দেশের বাইরে এর পরেই বাংলাদেশি মৃত্যুর সংখ্যা বেশি ছিলো যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যে সর্বমোট ৫ জন বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) সকালে ৪৯ বছর বয়সী খসরু মিয়া নামে এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয় লন্ডনে।
এর আগের দিন মঙ্গলবার একই হাসপাতালে মারা গেছেন পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত হোয়াইট চ্যাপেলের সেটেলস স্ট্রিট এলাকার বাসিন্দা বাংলাদেশি প্রবাসি হাজি জমসেদ আলী (৮০)।
যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন ম্যানচেস্টারে বসবাসরত ৬০ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি। তিনি পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে ইতালি থেকে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন ব্রিটেনে।
দ্বিতীয় বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসে। করোনাভাইরাসের সঙ্গে হাসপাতালে আটদিন যুদ্ধ করার পর পূর্ব লন্ডনের রয়েল লন্ডন হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন ৬৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি। তৃতীয় বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন যুক্তরাজ্যে সফররত এক বাংলাদেশি। লন্ডনের গ্রেট অরমন্ড হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তাছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশের বাইরে একজন বাংলাদেশির মৃত্যু হয় ইতালির মিলানে। গত ২০ মার্চ তিনি মারা যান। পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, তার বয়স ৫০ হলেও ঘনিষ্ঠজনেরা জানান, প্রায় ৬০ বছর বয়সী ছিলেন ওই ব্যক্তি।
গতকাল ২৪ মার্চ মঙ্গলবার গাম্বিয়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক বাংলাদেশি ইমামের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ধর্ম প্রচারের কাজে সেখানে সফররত ছিলেন। এর আগে আরো কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। গাম্বিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এটাই প্রথম মৃত্যুর ঘটনা।
২৪ ঘন্টা/আর এসপি