আমন মৌসুমের নতুন চাল বাজারে আসায় কমেছে মোটা চালের দাম। কিছুটা প্রভাব পড়েছে সরু চালেও। এ ছাড়া শীতকালীন সবজি সরবরাহ বেশি, তাই দামও কিছুটা স্বস্তির মধ্যে রয়েছে। তবে বাজারে মুরগি ও ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে।
আজ শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমনটা।
বাজারে মোটা পাইজাম বিআর-২৮ জাতের ধানের চাল আগের তুলনায় কেজিপ্রতি ২ থেকে ৪ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকায়। মিনিকেট জাতের চালের দামও কমেছে। তবে কেজিপ্রতি ১-২ টাকা। প্রতি বস্তা পাইজাম বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ থেকে ২৪২০ টাকায়। যা বস্তাপ্রতি আগের তুলনায় প্রায় ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কম।
মোটা চালের পাশাপাশি প্রতিবস্তা মিনিকেট ৩ হাজার ৫০ টাকায় নেমেছে। যা আগের তুলনায় বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। আগে খুচরায় প্রতি কেজি মিনিকেট ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতো, যা এখন ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনো কমেনি নাজিরশাইল চালের দাম।
এদিকে বাজারে এখন দেকানগুলোয় সাজানো রয়েছে শীতের নানা ধরনের সবজি। সরবরাহ বাড়ায় দামও নাগালের মধ্যে রয়েছে। বেশিরভাগ সবজি ৫০ টাকার আশাপাশের দরে কেনা যাচ্ছে। বিশেষ করে শালগম, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পেঁপে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে গ্রীষ্মের যেসব সবজি এখনো বাজারে রয়েছে সেগুলোর দাম একটু বেশি, ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
এদিকে গত কয়েক দিন কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে মুরগির দাম। গত দুই দিনে কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। একই সঙ্গে বাড়ছে ডিমের দামও। তিন দিনে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজনে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। আগে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা বিক্রি হয়েছিল। দাম বেড়ে এখন ব্রয়লারের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা দরে।
এ ছাড়া বাদামি ও সাদা দুই ধরনের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা দরে। তিন দিন আগে বাদামি ডিমের ডজন ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা এবং সাদা রঙের ডিমের ডজন ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।
বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা এবং খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা।
মাছের বাজার স্থির রয়েছে। শুক্রবার ৪০০ গ্রাম আকারের ইলিশ মাছের কেজি ৭০০ টাকা, চাষের শিং (আকারভেদে) ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, মাগুর ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা , মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল ৪০০ থেকে ৯০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ৯০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকায়, পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার টাকা, বাইম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, দেশি কই ১ হাজার টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং কাকিলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে ভারতের রপ্তানি বন্ধের খবরে দেশে একদিনেই পেঁয়াজের কেজিতে ১০০ টাকার বেশি বেড়েছিল। তাতে গত শনিবার নগরের খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ২৫০ ও ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ২০০ টাকা ছুঁয়েছিল। এরপর সরকার বিকল্প আমদানির উদ্যোগ নেয়। পাশাপাশি সারাদেশে পেঁয়াজের বাজারে তদারকি জোরদার করে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। এরপর পেঁয়াজের দাম অনেকটাই কমে এসেছে। এখন দেশি পুরোনো পেঁয়াজের কেজি ১৪০ থেকে ১৬০, ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ১২০ থেকে ১৩০ এবং মুড়িকাটা পেঁয়াজের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে পেঁয়াজের দামি কিছু স্বস্তি এলেও এখন বাজারে দেশি রসুনের দাম চড়া। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা, যা সপ্তাহ খানেক আগে ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা। চায়না রসুনের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়। এ মানের রসুনের কেজিতে সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে।