Tag: বাম্পার ফলন

  • আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্থ সময় পার করছেন আনোয়ারার কৃষকরা

    আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্থ সময় পার করছেন আনোয়ারার কৃষকরা

    মো. জাবেদুল ইসলাম, আনোয়ারা প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিকাংশ বাড়িতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। পরিণত হয়েছে ধান কাটার মহোৎসবে। হেমন্তের শেষে ধান কাটার যে রেওয়াজ রয়েছে তা অনুসরণ করেই জমিনে ফলিত আমন ধান কেটে ঘরে তুলতে মহাব্যস্থ কৃষকরা।

    উপজেলার বৈরাগ, বটতলী, হাইলধর, বারখাইন, বরুমচড়া, জুঁইদন্ডিসহ প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নের বাড়িতে বাড়িতে চলছে আমন ধান কাটার উৎসব। আমন ধানের ঘ্রাণে মিস্টি হাসি বইছে কৃষকের মুখে। কাজের জন্য চাতরী চৌমুহনী, বটতলী রুস্তমহাট, জয়খালীর হাঁটসহ আনোয়ারার বিভিন্ন হাট থেকে দিনমজুর লোক আনা হয়েছে ধান কেটে ফলন ঘরে তুলতে।

    বৈরাগ ইউনিয়নের স্থানীয় কৃষক মাহবু আলমের সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানায়, ধান গাছ রোপন করার পর সঠিক ভাবে পরিচর্যা এবং পানি ও সার ছিটিয়ে জমিতে নিয়মিত ব্যবস্থা গ্রহণ করার ফলে ভাল ফলন হয়েছে। তিনি বলেন, এসব ফলন ঘরে তুলতে বেশ কয়েকজন দিনমজুর নিয়োগ করতে হয়েছে। একজন দিনমজুরের বেতন দৈনিক ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা সাথে খাবার এবং থাকার ব্যবস্তা করতে হয়। এরপরও যদি ধানের দাম কম হয় তবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কৃষকরা যাতে ফলনে লাভবান হয় তার জন্য ৪৫০জন কৃষককে উন্নত জাতের বীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এবারে আমন রোপনের পরিকল্পনার নির্ধারিত ছিল প্রায় ৬ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। আমনের যে লক্ষমাত্রা ছিল তা এবার লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেল। এবার আমনের যে পরিমান চাষাবাদ হয়েছে প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না ঘটলে উৎপাদিত ফসল হবে প্রায় ৪১ হাজার মেট্রিকটন।আমন ধানের বাম্পার ফলন

    আমনের বাম্পার ফলন নিয়ে কথা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামানের সাথে। ।তিনি বলেন, অনেক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে ফসলে সমস্যা দেখা দেয়। এবার কিন্তু প্রাকৃতিক তেমন কোন দুর্যোগ ছিলনা। আমন রোপন থেকে পরিবেশ ভাল ছিল, বৃষ্টির পরিমান ভারসাম্য ছিল যার ফলে আশাকরি এবার উপজেলায় আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা থাকবে।

    তিনি আরো বলেন, এখন স্থায়ী বেড়ীবাঁধ হয়েছে বন্যার তেমন প্রভাব নাই, খাল খনন হওয়ায় পানি নিষ্কাশন দ্রুত হচ্ছে আর আমরা মাঠ দিবসের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন করে যাচ্ছি যার ফলে ফসলের ব্যাপক উন্নতি হচ্ছে। সব মিলিয়ে আশা করা যায় আনোয়ারায় আমনে এবার ব্যাপক সাফল্য পাওয়া যাবে।

  • রাউজানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষক পরিবারে হাসি

    রাউজানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষক পরিবারে হাসি

    চট্টগ্রামের রাউজানের প্রত্যন্ত এলাকায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে আমনের। বিস্তৃত ফসলী জমিতে দোল খাচ্ছে হলদে বর্ণের আমন ফসল। ইতিমধ্যেই উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে শুরু হয়েছে ফসল ঘরে তোলার কাজ। বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফিরেছে হাসির আভা।

    সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য বারের চাইতে এবার আমনের ফলন আশানুরুপ ভালো হয়েছে।

    রাউজান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (উন্নয়রন শাখা) সঞ্জিব কুমার সুশীল ২৪ গন্টা ডট নিউজের প্রতিবেদককে বলেন, চলতি আমন মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৭৬ হেক্টর। এর বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৪৮০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০৪ হেক্টর বেশী চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে উপশী জাতের ১১ হাজার ২১০, হাইব্রিড জাতের ৮০ হেক্টর, ও স্থানীয় জাতের ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ করেছে কৃষকরা।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০হাজার মেক্টিকটন শুকনা ধান উৎপাদন হতে পারে।

    উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনকূলে থাকায় এবারের মৌসুমে আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া উপজেরা কৃষি অফিস মাঠপর্যায়ে প্রান্তিক চাষীদের নানান পরামর্শ ও সেবা দেওয়ায় মাঠে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ ছিল অন্যান্য বারের চেয়ে তুলনামূলক কম। ফলে বাম্পার ফলন দেখা গেছে আমন ক্ষেতে।

    উপজেলার পাহাড়তলী, বাগোয়ান, কদলপুর, নোয়াপাড়া, সুলতানপুর, হলদিয়া, পশ্চিম গুজরা, উরকিরচর, গহিরা, নোয়াজিশপুর, চিকদাইরছাড়াও রাউজার পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কৃষি জমিতে হলদে বর্ণের আমনের দোল খাওয়ার দৃশ্য কৃষকদের মাঝে ফিরে এনেছে স্বস্তি। অনেক ইউনিয়নে আগেভাগেই শুরু হয়েছে আমন ফসল কাটার ধূম। মান্ধাতা আমলের ধান মাড়াইয়ের দৃশ্যও চোখে পড়ছে অনেক স্থানে। পাশাপাশি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় উপজেলার কৃষকরা ধান মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র ব্যাবহার করে অল্প সময়ে মাঠের ধান মাড়াই করে ঘরে তুলছে।

    আমনের মৌসুম শুরু হওয়ায় বাজারে কামলার উপস্থিতি বেড়ে গেছে। মৌসুমী কামলাদের ভীড় দেখা গেছে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে। ভোলা, নোয়াখালী, সন্দীপ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, বাশঁখালীসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে কামলারা ছুটে আসছে রাউজানসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায়। অতীতের তুলনায় কামলাদের মজুরীও খুব বেশী হওয়ায় বিপাকে পড়েছে অনেক কৃষক। একেকজন কাজের লোকের দৈনিক মজুরি ৫০০-৬০০ টাকা।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রান্তিক জনপদের কৃষকরা মোবাইলে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করে কৃষি বিষয়ক নানান সেবা গ্রহন করে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে এবার উপজেলায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।