মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে আসা ১০১ সদস্যকে তুমব্রু সীমান্ত এলাকা থেকে টেকনাফে স্থানান্তর করা হয়েছে।
রাখাইন রাজ্যে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধে টিকতে না পেরে সোমবার কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালি ইউনিয়নের রহমতের বিল সীমান্ত পেরিয়ে ১১১ বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে এসে বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে।
তাদেরকে অস্ত্রমুক্ত করার পর সেখানকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিজিপির হেফাজতে রাখা হয়েছিল। দুদিন তারা সেখানেই ছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে সাড়ে ৩টার দিকে বিজিবির গাড়িতে করে টেকনাফ উপজেলার উপকূলবর্তী হ্নিলা ইউনিয়নে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম জানান।
কেন তাদের স্থানান্তর করা হল- জানতে চাইলে জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, “এখানে লোকজন বেশি হয়ে গেছে। তাই তাদের অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
রহমতের বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিজিবির দুটি সাঁজোয়া যান, তিনটি ট্রাক ও দুটি সেডান কার অপেক্ষা করছে। স্কুলের ভেতর থেকে এক এক করে বিজিপি সদস্যদের গণনা করে ট্রাকে তোলা হচ্ছে। তাদের অনেকের গায়ে বাহিনীর পোশাক পরিহিত ছিল। আবার কেউ কেউ সাধারণ পোশাকেও ছিলেন।
বিকাল ৩টা ২৬ মিনিটের দিকে দুটি সাঁজোয়া যানের পাহারায় টেকনাফের দিকে রওনা হয়। এ সময় সেখানে এলাকার উৎসাহী লোকজনকে জড়ো হতে দেখা যায়। কিন্তু সশস্ত্র বিজিবি সদস্যরা তাদের কাছে ঘেঁষতে দেননি।
৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিদ্রোহীরা বিজিপির একটি ফাঁড়ি দখল করে নিলে পরদিন সকালে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১৪ সদস্য। এরপর থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত সেই সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ৩২৮ জনে পৌঁছেছে। বুধবার এসেছেন ৬৪ জন।
তাদের মধ্যে মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), সেনাবাহিনী, ইমিগ্রেশন সদস্য, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা রয়েছেন। তাদের নিরস্ত্র করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
বাংলাদেশ সরকার বলে আসছে, মায়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর এই সদস্যদের ফেরত পাঠানোর জন্য আলোচনা চলছে। তবে কীভাবে সেটা করা হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।