Tag: বিজয়ের মাস

  • বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু

    বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু

    ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ‘নতুন বাংলাদেশে’ এসেছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ৫৩ বছর আগে ১৯৭১ সালের এই ডিসেম্বরেই বাঙালির নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষার শপথ নিয়ে মাসটি নানান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হবে।

    বিজয়ের মাসে পুরো বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের, যাদের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের এই মহান স্বাধীনতা।

    বাঙালির সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ঘটনা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্নসাধ পূরণ হয় এ মাসে।

    বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় আসে এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে।

    বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হওয়ার পাশাপাশি বহু তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এ অর্জন হওয়ায় বেদনাবিধুর এক শোকগাঁথার মাসও এ ডিসেম্বর।

    এ মাসেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল-শামসদের সহযোগিতায় হানাদার গোষ্ঠী দেশের মেধাবী, শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেওয়ার এ ধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের দ্বিতীয় কোনো নজির বিশ্বে নেই।

    ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর জল, স্থল আর আকাশপথে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর চারদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে।

    ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

    মহান এ বিজয়ের মাস উদযাপনে জাতীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

  • শুরু হলো মহান বিজয়ের মাস

    শুরু হলো মহান বিজয়ের মাস

    শুরু হয়েছে মহান বিজয়ের মাস, ডিসেম্বর। ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এ বিজয়। মাসটি নানান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হবে দেশে এবং বিদেশের দূতাবাসগুলোতে।

    বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্ন পূরণ হয় এ মাসে।

    বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় আসে এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা।

    ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে।

    বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হওয়ার পাশাপাশি বহু তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই অর্জন হওয়ায় বেদনাবিধূর এক শোকগাঁথার মাসও এই ডিসেম্বর।

    এ মাসেই হানাদার বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর, আল-শামসদের সহযোগিতায় দেশের মেধাবী-শ্রেষ্ঠ সন্তান, বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেওয়ার এ ধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের দ্বিতীয় কোনো নজির বিশ্বে নেই।

    ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর জল-স্থল ও আকাশপথের সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের সংবাদ চারদিক থেকে আসতে থাকে।

    ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। যেখান থেকে ৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সেখানেই পরাজয়ের দলিলে সই করেন পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজী।

    এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। জাতি অর্জন করে হাজার বছরের স্বপ্নের স্বাধীনতা।

  • ডিসেম্বরকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস ঘোষণার দাবি

    ডিসেম্বরকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস ঘোষণার দাবি

    এ দেশ বীর মুক্তিযোদ্ধার, তাই বিজয়ের মাস ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা মাস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

    বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে তিনি এ দাবি করেন।

    সমাবেশে প্রধান অতিথি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের প্রতি দাবি জানিয়ে স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বর মাসকে যেনো মুক্তিযোদ্ধা মাস ঘোষণা করা হয়। এটা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের দাবি।

    তিনি বলেন, যতদিন দেশ থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু থাকবেন। আর কেউ যেনো ইতিহাস বিকৃতি করতে না পারে।

    এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) জয় বাংলা স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।

    বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ, আগাখান মিন্টু, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল হেলাল মোর্শেদ খান, মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, ওসমান আলীসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

  • শুরু হলো মহান বিজয়ের মাস

    শুরু হলো মহান বিজয়ের মাস

    ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। বাংলাদেশের এক অবর্ণনীয় ইতিহাস। ৩০ লাখ শহীদ আর অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ডিসেম্বরের ১৬ তারিখেই বাঙালি জাতির চূড়ান্ত বিজয় আসে। দেশ হয় হানাদারমুক্ত। আজ ১ ডিসেম্বর, ২০২২। শুরু হলো মহান বিজয়ের মাস।

    পুরো এই মাস জুড়ে থাকবে নানা অনুষ্ঠান। বিজয়ের মাস উদযাপনে জাতীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কর্মসূচি। এরমধ্যে, আজ বেলা ১১টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।

    সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এই দিনে। মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে স্বাধীনতাকামী অদম্য বাঙালির কাছে। অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।

    ১৯৭১ সালের এই মাসে সুদীর্ঘ ২৩ বছরের শোষণ-বঞ্চনা আর অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ৯ মাস যুদ্ধ করে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয় দামাল বাঙালি। মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও ডিসেম্বরে এসে পাকিস্তানি বাহিনী এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শেষ করে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে তৎপর হয়। তালিকা করে একে একে হত্যা করা হয় দেশের খ্যাতিমান শিক্ষক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের।

    শেষ পর্যন্ত এ ডিসেম্বর মাসেই পর্যুদস্ত হয় হানাদারবাহিনী। রচিত হয় নতুন ইতিহাস। বাংলার আকাশে উদিত হয় নতুন সূর্য।

  • বিজয়ের মাসে এক মুক্তিযোদ্ধার আকুতি

    বিজয়ের মাসে এক মুক্তিযোদ্ধার আকুতি

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ৬৮ বছরের বীর মুক্তিযোদ্ধা রমেশ চন্দ্র দাস সবার কাছে পরিচিত ‘গলেয়া দা’ হিসাবে। সম্ভ্রান্ত কোনো পরিবারের সদস্য কিংবা আহামরি শিক্ষিত না হয়েও শুধু দেশের প্রতি ভালোবাসার প্রবল টানে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন।

    ১৯৫২ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের দেবীগঞ্জ বাজারে জন্মগ্রহন করেন রমেশ চন্দ্র দাস। মাত্র ১৮ বছর বয়সে দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। জন্মের পরে বাবাকে হারিয়েছেন। মা অসুস্থ্য, বড় ভাইটিও ছিলেন প্রতিবন্ধি। ছিলো অভাবের সংসার। এক বেলা খেয়েই কোন মতো দিন পার করতেন। অর্থের অভাবে রোগ যন্ত্রণায় বিনা চিকিৎসায় মাকে হারিয়েছেন। কিন্তু শত বেদনার মাঝেও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পিছু হাটেননি তিনি।

    রাখালের কাজ করে এক বেলার আহার জোগাড় ও কষ্ট করে ৯ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন, পরে আর পড়তে পারেননি। এরপর মা হারানোর বেদনা ও প্রতিবন্ধী বড় ভাইকে অন্যের হাতে তুলে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য আনসার কমান্ডার আব্দুর রহমানের সাথে চলে যান ভারতের থুকরাবাড়ি ক্যাম্পে। সেখানে প্রথমে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে ভারতের পাটাপাড়ায় আসার সময় ইন্ডিয়ান আর্মি তাদেরকে আটক করে নিয়ে যায় ক্যাম্পে। এরপর তাদের নাম খাতায় রেজুলেশন বহিতে লিখে নেওয়া হয়। তারপর তাদেরকে নিয়ে যায় মুজিব ক্যাম্পে। দীর্ঘ ২৮ দিন মুজিব ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শেষে চলে যান মুক্তিযুদ্ধের ৬ নং সেক্টর চেংরা মাড়া টাউনের বুড়ি মাড়ি হাটে সেখানেই উইং কমান্ডার মোহাম্মদ খাদেমুল বাশারের অধিনে যুদ্ধে অংশগ্রহন করে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনেন। জন্ম দেন এক নতুন রাষ্ট্রের।

    দেশ স্বাধীনের পর ফিরে আসেন নিজ ভুমিতে। দেবীগঞ্জ বাজারের একটি ছোট সাইকেল মেকারের দোকান দেন। এরপর নতুন সংসার গড়েন। সেই সংসারে ২ মেয়ে আর ২ ছেলের জন্ম নেয়। দুই মেয়ের বিয়ে দিলেও বড় মেয়ের স্বামী একালপ্রয়াত হওয়ায় সে এখন বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন। আর বড় ছেলে বাস-রেলস্টেশনে কুলির কাজ করে সংসার চালান। ছোট ছেলে ডিগ্রী পাস করে চাকুরির জন্য দফতরে দফতরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে এখন ক্ষেত খামারে কাজ করেন। আর বাবা রাস্তায় ধারে বসে অন্যের বাইসাইকেল মেরামত করেন।

    বীর মুক্তিযোদ্ধা রমেশ চন্দ্র বেশির ভাগ সময় থাকেন মুখ ভরা হাসি নিয়ে। স্থানীয়দের কাছে মানুষ হিসেবে অত্যন্ত রসিক এবং খোলা মনের, কারো কাছে তাঁর কোন চাওয়া কিংবা কারো প্রতি রাগ-অনুরাগ নেই তার। শুধু আছে অন্যের প্রতি গভীর ভালোবাসা, সম্মান, বিশ্বাস, দেশপ্রেম, আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।

    জানা যায়, দীর্ঘ ৩০ বছর অপেক্ষার পর বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দেওয়া শুরু করলে তিনিও সেই ভাতা পান। প্রথম দিকে ৩শ থেকে এখন ১২ হাজার টাকা মাসিক মুক্তিযদ্ধা ভাতা উত্তোলন করেন। এবং বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাকে মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত অবদানের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসাবে একটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়।

    আরও জানা যায়, ২০০২ সালে স্থানীয় বিএনপি নেতা শহিদুল রহমান স্ত্রী সেলিনা আক্তার জমি সংক্রান্ত বিষয়ে রমেশ চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা চালাতে দীর্ঘ ১৮ বছর আদালত পাড়ায় দৌড়ঝাঁপ করতে গিয়ে ঋণের দায়ে তিনি আজ সর্বশান্ত। স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে গেলেও কোন প্রতিকার না পেয়ে বরং উল্টো কথা শুনে অসহায়ের মতো ছলছল চোখে ফিরে আসেন। অবশেষে চলতি বছরে সেই মিথ্যা মামলা রায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রমেশ চন্দ্র দাসের পক্ষে আসে।

    বীর মুক্তিযোদ্ধা রমেশ চন্দ্র দাস বলেন, যদি জানতাম মিথ্যা মামলার জন্য আমাকে ১৮ বছর কোর্টের বারান্দায় ঘুরাঘুরি করতে হবে তাহলে দেশের জন্য যুদ্ধ করতাম না। আমি ১৮ বছর খেয়ে না খেয়ে ঋণ করে মিথ্যা মামলা চালিয়েছি। আমার ঋণের বোঝা বেড়ে গেছে। বাধ্য হয়ে এই বয়সে সাইকেলের মেকারি করে ছেলে মেয়ে মানুষ করতে হয়। কাকে কি বলব বলুন? আমার দুচোখের পানি শুকায় গেছে। ছোট ছেলেকে অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা শিখালাম যদি একটা চাকুরী পাই। আমার টাকা নাই তাই চাকুরীও নাই। তাই রাস্তায় বসে সাইকেল মেকারি করে মাহাজন শোধ করতেছি। যত দিন বেচে থাকবো মেকারি করে মাহাজন শোধ করব। কিন্তু আমি এই মামলাতেই মরে গেছি।

    বীর মুক্তিযোদ্ধা রমেশ চন্দ্র দাসের মুখে শুনতে চাই তৎকালীন দেশের অবস্থার কথা। মুক্তিযুদ্ধের কথা আসতেই কাঁদতে শুরু করেন তিনি। কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, শেখ মুজিবুরের কথা শুনলেই আমার কান্না আসে। উনি এমন একটা মানুষ ছিলেন ওনার আওয়াজ শুনলেই আমার বুক কেঁপে ওঠে। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দিবো, তবুও এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এই কথা গুলো শুনলে আমি আবেগাপ্লুত হয়ে যাই।

    তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যদি আমাকে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ও একটা ঘর নির্মাণ করে না দিতো তাহলে আজ আমাকে বউ বাচ্চা নিয়ে পথে বসতে হতো। শেখ হাসিনার প্রতি আমি খুবই খুশি। ভগবান যেন শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু দান করে। সব সময় সুস্থ্য থাকে ভগবানের কাছে এটাই আমার আবেদন।

    বিজয়ের মাসে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার আকুতি , আমি তো রাস্তায় বসে মেকারি করি। আমি আর কয়দিন বাঁচব। আমার একটা আবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলে গৌতম চন্দ্র দাসের যেন একটা চাকুরী দেয়। এটা শেখ হাসিনার কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি। আমার ছেলেকে যেন একটা চাকুরী দেয়।

    ২৪ ঘণ্টা/গৌতম চন্দ্র বর্মন