Tag: বিশ্বকাপ

  • বিশ্বকাপের ব্যর্থতা অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি

    বিশ্বকাপের ব্যর্থতা অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি

    বড় রকমের প্রত্যাশা নিয়ে বিশ্বকাপে যাত্রা করেছিল বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্ব থেকে অন্তত সেমিফাইনাল যাওয়ার লক্ষ্যই ছিল টাইগারদের। তবে ৯ ম্যাচে টাইগাররা যেন ছিল নখদন্তহীন। মাত্র ২ জয় দিয়ে শেষ করেছে বিশ্বকাপ মিশন। কোনক্রমে ৮ম স্থানে থেকে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা নিশ্চিত করেছে তারা। বিশ্বকাপের এমন ভরাডুবিতে স্বাভাবিকভাবেই অসন্তোষ চলছে ক্রিকেট বোর্ডে।

    আগেই গুঞ্জন ছিল, বিশ্বকাপ ব্যর্থতার অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি করবে বিসিবি। বুধবার বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজের মাঝেই এলো সেই ঘোষণা। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির কথা জানিয়েছে বিসিবি নিজেই।

    তিন সদস্যের এই কমিটিতে আছেন বিসিবির তিন পরিচালক এনায়েত হোসেন সিরাজ, মাহবুবুল আনাম এবং আকরাম খান। কমিটিতে এনায়েত হোসেন সিরাজ থাকবেন আহ্বায়ক হিসেবে।

    বিসিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিন সদস্যের এই কমিটির উদ্দেশ্য, তারা এই টুর্নামেন্টে (বিশ্বকাপ ২০২৩) দলের দুর্বল পারফরম্যান্সের পেছনের মূল কারণগুলো যাচাই করবে এবং এটি পরবর্তীতে বোর্ডের কাছে ফলাফল উপস্থাপন করবে।

    এর আগে সদ্য সমাপ্ত ভারত বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের এমন ভরাডুবির ব্যাখা বিসিবির কাছে পেশ করেছিলেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। একইসঙ্গে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও দিয়েছেন ব্যাখ্যা। বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স সূত্রে জানা গেছে, ই-মেইলের মাধ্যমে তারা তিন জন নিজেদের রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। পরবর্তী বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হবে এই রিপোর্ট নিয়ে।

    তবে তদন্ত কমিটি করার আগেই বিশ্বকাপে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন আকরাম খান। গত শনিবারই মিরপুরে সাংবাদিকদের সামনে আকরাম বলেন, ‘মনে হয় না বাংলাদেশ এত বাজে খেলেছে এর আগে। ১৯৯৯ আসরে ছয়টা ম্যাচের দুটিতে জিতেছি। প্রত্যাশা বেশি ছিল। আমরা পরিকল্পনাও করেছিলাম অনেক ভালোভাবে। চার বছর আগে থেকেই শুরু করেছিলাম যেহেতু ভারতে খেলা হবে। আবহাওয়া আমাদের মতো হবে।’

    অতিরিক্ত এক্সপেরিমেন্টকেও এজন্য দায় দিয়েছিলেন এই বিসিবি কর্মকর্তা, ‘ওটা নিয়ে অনেক আশা ছিল আমাদের। একটা দেশে যদি খেলার আগে এত কথাবার্তা হয় অন্য বিষয় নিয়ে, তো ওই দল কোনোদিন ভালো করতে পারবে না। এটা আমি এশিয়া কাপেও বলেছিলাম, বিশ্বকাপের আগে এটা একটা ভালো টুর্নামেন্ট যারা অংশ নেবে তাদের জন্য। কিন্তু ওখানে আমরা এক্সপেরিমেন্ট করে পুরো দলকে দাঁড় করাতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত একটা দলই আমরা দাঁড় করাতে পারিনি। এত এক্সপেরিমেন্ট করলে আমার মনে হয় না কোনো দেশ ভালো করবে।’

  • নিউজিল্যান্ডকে বিদায় করে ফাইনালে ভারত

    নিউজিল্যান্ডকে বিদায় করে ফাইনালে ভারত

    মুম্বাইয়ে কিউই বোলারদের কচুকাটা করে রান-উৎসব করেছেন কোহলি-আইয়াররা! তাদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে রান পাহাড় গড়েছিল ভারত। জিততে হলে এই পাহাড় টপকে নতুন করে ইতিহাস লিখতে হতো কিউইদের। কিন্তু মোহাম্মদ শামি সেখানে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছেন! এই ডানহাতি পেসারের আগুনে পুড়েছে কেন উইলিয়ামসনের দল। ৭০ রানের জয়ে ফাইনালের টিকিট পেয়েছে স্বাগতিকরা।

    বুধবার (১৫ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৯৭ রান করে ভারত। সর্বোচ্চ ১১৭ রান এসেছে বিরাট কোহলির ব্যাট থেকে। তাছাড়া সেঞ্চুরি পেয়েছেন শ্রেয়াস আইয়ারও।

    জবাবে খেলতে নেমে ৪৮ ওভার ৫ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩২৭ রানে থেমেছে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৩৪ রান করেছেন ড্যারিল মিচেল। তাছাড়া ৭৩ বলে ৬৯ রান করেছেন উইলিয়ামসন। ভারতের হয়ে ৭ উইকেট শিকার করেছেন মোহাম্মদ শামি।

    বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। ষষ্ঠ ওভারে প্রথমবার বল হাতে আক্রমণে আসেন শামি। তার করা প্রথম বলটা চতুর্থ/পঞ্চম স্টাম্পে ছিল, গুড লেন্থের এই বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ধরা পড়েন কনওয়ে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৫ বলে ১৩ রান।

    কনওয়ে ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রাচিন রবীন্দ্র। এই ওপেনারও শামির শিকার হয়েছেন। অস্টম ওভারের পঞ্চম বলে লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। আসর জুড়ে দারুণ পারফর্ম করা রবীন্দ্র সেমি ফাইনালে করতে পেরেছেন মোটে ১৩ রান।

    ৩৯ রানে দুই উইকেট হারানোর পর কিউই সমর্থকরা হয়তো আশা ছেড়ে দিয়েছিল। তবে হাল ছাড়েননি উইলিয়ামসন-মিচেল। এই দুই টপ অর্ডার ব্যাটার মিলে তৃতীয় উইকেটে ১৮১ রানের জুটি গড়েন। তাতে ম্যাচেও ফেরে তারা। কিন্তু ৭৩ রান করে উইলিয়ামসন ফেরার পর ফের পথ হারায় দল।

    মিচেল এক প্রান্তে দুর্দান্ত খেললেও তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। শেষ পর্যন্ত ৯ চার আর ৭ ছক্কায় ১১৯ বলে ১৩৪ রান করে থেমেছেন মিচেল। এই মিডল অর্ডার ব্যাটার ফেরার পর নূন্যতম প্রতিরোধটুকুও গড়তে পারেনি দল। এক শামির আগুনেই পুড়ে ছাই কিউইরা! এই পেসার একাই শিকার করেছেন ৭ উইকেট।

    এর আগে ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা-শুবমান গিল নতুন বলে আক্রমণাত্মক শুরু করেন। ট্রেন্ট বোল্টের মতো বিশেষজ্ঞ সুইং বোলারও সুবিধা করতে পারেননি। শুরুর ৫০ রান তুলতে মাত্র ৩২ বল খরচ করেছেন ভারতীয় ওপেনাররা। যেখানে সিংহভাগ রানই আসে রোহিতের ব্যাট থেকে।

    উড়ন্ত শুরু করলেও রোহিত সাজঘরে ফিরেছেন হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে। নবম ওভারে টিম সাউদিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কেন উইলিয়ামসনের হাতে ধরা পড়েছেন ভারত অধীনায়ক। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৯ বলে ৪৭ রান।

    রোহিত ফেরার পর রানের গতি কিছুটা কমেছিল। তবে সেটা ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন গিল। তাতে ১৩তম ওভারেই তিন অঙ্ক ছুঁয়েছে স্বাগতিকরা।

    প্রথমবার কোনো আইসিসি ইভেন্টের সেমিতে খেলতে নেমে দারুণ শুরু করেছিলেন গিল। ৪১ বলে ছুঁয়েছিলেন ব্যক্তিগত ফিফটি। দারুণ সব শটে এগোচ্ছিলেন শতকের দিকেই। তবে তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে বাধা হয়ে দাঁড়ায় চোট। পায়ের পেশিতে টান লাগায় ২৩তম ওভারের খেলা চলাকালে মাঠ ছাড়েন তিনি। তবে সেই চোট গুরুত্বর ছিল না। ৪ উইকেট যাওয়ার পর আবারও ব্যাটিংয়ে নেমেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৮০ রানে।

    তিনে নেমে ধীর গতির শুরু করেছিলেন কোহলি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খোলস ছেড়ে বের হয়ে এসেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। স্বভাবজাত ব্যাটিংয়ে আরও একবার বড় মঞ্চে নিজের জাত চেনালেন তিনি। ৫৯ বলে ফিফটি করেছিলেন। পরের ৫০ রান করতে খেলেছেন ৪৭ বল। সবমিলিয়ে ১০৬ বলে তিন অঙ্কে পৌঁছেছেন তিনি। এটি ওয়ানডেতে তার ৫০তম সেঞ্চুরি। তাতে শচীনকে ছাড়িয়ে এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির মালিক হলেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ১১৭ রান করে থেমেছেন কোহলি।

    এরপর আক্রমনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন আইয়ার। কোহলি রানে-বলে সেঞ্চুরি করলেও আইয়ার এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন টি-টোয়েন্টি মেজাজে। ৩ চার আর ৮ ছক্কায় শতকে পৌঁছেছেন মাত্র ৬৭ বলে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭০ বলে ১০৫ রান।

    শেষদিকে লোকেশ রাহুলও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। তার ২০ বলে ৩৯ রানের ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৩৯৭ রান তুলেছে ভারত।

  • সাকিবের বিশ্বকাপ শেষ

    সাকিবের বিশ্বকাপ শেষ

    বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটিতে আঙুলে চোট পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। জানা গেছে, সেই চোটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ। তবে দলের সঙ্গে আজ (মঙ্গলবার) তাকে পুনেতে যেতে দেখা গিয়েছে।

    সর্বশেষ গতকাল (সোমবার) লঙ্কানদের বিপক্ষে নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ের সময় বাঁ-হাতের আঙুলে চোট পান সাকিব। এরপরও নিজের পূর্ণ বোলিং কোটাই পূরণ করেছিলেন তিনি, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ২ উইকেটও পেয়েছিলেন। এরপর ব্যাট হাতে খেলেছিলেন ৮২ রানের দারুণ এক ইনিংস। ম্যাচ শেষে পাওয়া রিপোর্ট তার বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ বলে জানিয়েছে। ফলে আজই দেশে ফিরে আসছেন টাইগার অধিনায়ক।

    সাকিব না থাকায় সহ-অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তবে সাকিবের বদলি হিসেবে কাউকে দলে ডাকা হয়নি।

    আগামী ১১ নভেম্বর পুনেতে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

  • সবার আগে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় বাংলাদেশের

    সবার আগে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় বাংলাদেশের

    দেশের ক্রিকেট ভক্তদের যেন সমীকরণের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে হারের পর আর কোন সমীকরণেই আটকে থাকতে হচ্ছে না বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। বিশ্বকাপের সপ্তম রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের মাধ্যমে সবার আগে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত হলো টাইগারদের। ৭ ম্যাচ শেষে পয়েন্ট মাত্র ২। তাই কাগজ-কলমেও বিদায়ই বলতে হচ্ছে বিশ্বকাপকে।

    কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ব্যাটে বলে কখনোই আধিপত্য বিস্তার করা হয়নি বাংলাদেশের। ব্যাট হাতে যেমন ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। তেমনি ছিল একেবারেই নিরীহদর্শন বোলিং। একপেশে ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে বাবর আজমের দল। এই জয়ের পর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের দৌড়ে এখনও টিকে রইলো পাকিস্তান।

    ২০৫ রানের স্বল্প লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই দাপট দেখিয়েছেন দুই ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক এবং ফখর জামান। রানখরায় ভুগতে থাকা ফখর যেন নতুন জীবন পেলেন আজকের এই ম্যাচ থেকে। শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। আর ছন্দে থাকা শফিক নিয়মিত যন্ত্রণাই বাড়িয়েছেন বোলারদের। সাদামাটা বোলিংয়ে পার্থক্য গড়ার মত স্পেল ছিল না কারোরই। প্রথম দশ ওভারেই এসেছে ৫২ রান।

    শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান কেউই পারেননি নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে। বাধ্য হয়ে বল ঘোরাতে হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তকেও। তবে কাজের কাজ হয়নি।

    পাকিস্তানের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে ২২তম ওভারে। এলবিডব্লিউতে আব্দুল্লাহ শফিককে ফেরান মেহেদি মিরাজ। তবে শফিক ততক্ষণে এবারের বিশ্বকাপে নিজের চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। মিরাজের বলে আউট হওয়ার আগে খেলেছেন ৬৮ রানের ইনিংস। ১২৮ রানে প্রথম উইকেটের পতন।

    বাবর আজম এসে খুব বেশি কিছু করতে পারেননি। ১৬ বলে ৯ করেই ফিরে গিয়েছেন সাজঘরে। এবারও উইকেট মিরাজের। ক্যাচটা নিয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। আর সেঞ্চুরির দিকে ছুটতে থাকা ফখর জামান থেমেছেন ৮১ রানে। তাকেও ফিরিয়েছেন মিরাজই। বাউন্ডারি লাইনে রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হয় এই ওপেনারকে।

    এরপর ক্রিজে থাকা ইফতেখার আহমেদ আর মোহাম্মদ রিজওয়ান দেখেশুনেই ইনিংস শেষ করেছেন। এই ম্যাচের পর ৭ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের। আর ৬ পয়েন্ট নিয়ে এখনও সেমির আশা বাঁচিয়ে রেখেছে পাকিস্তান।

  • অনলাইন জুয়ায় দেশ থেকে ৫০ লাখ টাকা পাচার, গ্রেফতার ৪

    অনলাইন জুয়ায় দেশ থেকে ৫০ লাখ টাকা পাচার, গ্রেফতার ৪

    ক্রিকেট বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার সাইটের মাধ্যমে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতাররা হলেন- মো. নিশাত মুন্না (২০), মো. কামরুল ইসলাম শুভ (২৭), মো. সুমন (৩৫) ও মো. নাজমুল হোসেন বাবু (৩১)।

    এসময় তাদের কাছ থেকে ১৬টি মোবাইল ফোন, ১৮টি সিম কার্ড, ১টি সিপিইউ, ১টি মনিটর উদ্ধার করা হয়।

    সোমবার (২৩ অক্টোবর) গাজীপুরের শ্রীপুর ও রাজধানীর মালিবাগে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

    মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

    তিনি বলেন, দেড় বছর ধরে চক্রটি বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার সাইটের কার্যক্রম বাংলাদেশে পরিচালনার সঙ্গে জড়িত। দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত বিভিন্ন সাইটের কার্যক্রম এদেশে পরিচালনার অন্যতম মূলহোতা নিশাত মুন্না। তার নেতৃত্বে চক্রের ৭-৮ জন সদস্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার সাইটের প্রচার, অ্যাকাউন্ট খোলা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন, হুন্ডির মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশে অর্থ পাঠানোর সঙ্গে জড়িত।

    মূলত ফুটবল বিশ্বকাপ, ক্রিকেট বিশ্বকাপ, আইপিএল, বিপিএল, বিভিন্ন ফুটবল লিগ/টুর্নামেন্ট ও অন্যান্য খেলাকে কেন্দ্র করে দেশের তরুণদের টার্গেট করে এই অনলাইন জুয়ার প্রচার চালাতো চক্রটি।

    কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এ চক্রের কেউ বিভিন্ন বিদেশি বেটিং সাইটের বাংলাদেশের প্রচার/মার্কেটিংয়ের কাজ করতেন, কেউ আগ্রহী ব্যক্তিদের বিভিন্ন সাইটের অ্যাকাউন্ট খুলে দিতেন, কেউ আবার অ্যাকাউন্ট করা ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তা হুন্ডির মাধ্যমে অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্ম পরিচালনাকারীর কাছে প্রেরণ করতেন।

    তিনি বলেন, চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে কনটেন্টের সঙ্গে জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে বেটিং সাইটের বিজ্ঞাপন, সরাসরি মানুষের কাছে বলার মাধ্যমে এই জুয়ার সাইটের প্রচারের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। পরে বিজ্ঞাপন দেখে আগ্রহী ব্যক্তিরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অ্যাকাউন্ট খুলতেন। কোনো নতুন গ্রাহক তাদের মাধমে বেটিং সাইটে অ্যাকাউন্ট খুললে তারা কমিশন পেতেন।

    গ্রেফতাররা 1xBet, MeltBet, PariMatch, Velkiex, BjBaji Casino, Ludo Match-সহ বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার সাইটের কার্যক্রম দেশে পরিচালনার সঙ্গে জড়িত।

    র‌্যাবের মুখপাত্র আরও বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বা বিটিআরসি কর্তৃক অনলাইন জুয়া বা বাজি সংক্রান্ত বিভিন্ন অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট এর আগে বন্ধ করা হলেও তারা ডোমেইন পরিবর্তন করে পুনরায় অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে জুয়া চালু করেন। তারা নামে-বেনামে একাধিক সিম সংগ্রহ করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে অনলাইন জুয়ার অর্থ সংগ্রহ করতেন এবং প্রাপ্ত অর্থ থেকে নিজেদের লভ্যাংশ রেখে অবশিষ্ট টাকা তারা হুন্ডির মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশে অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্ম পরিচালনাকারীর কাছে পাঠাতেন।

    গ্রেফতাররা নিজেদের প্রাপ্ত লভ্যাংশের টাকা দিয়ে অনলাইনে জুয়া খেলতেন এবং নষ্ট করতেন বলে জানিয়েছেন। তারা অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে এ পর্যন্ত অর্ধ কোটি টাকার অধিক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা যায়।

    চক্রের মূলহোতা কে এই নিশাত মুন্না

    কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেফতার নিশাত মুন্না বিভিন্ন অনলাইন বেটিং সাইটের দেশীয় কার্যক্রম পরিচালনার অন্যতম মূলহোতা। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায়লয়ে তড়িৎ প্রকৌশল বিষয়ে অধ্যয়নরত। তিনি NISHAT MUNNA নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল এবং Nishat Munna (সাইলেন্ট কিলার) নামে একটি ফেসবুক আইডি খুলে বিভিন্ন রোস্টিং/বিতর্কিত ভিডিও তৈরি করে প্রচার করতেন। দেড় বছর আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গ্রুপের বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন দেখে এর প্রতি আসক্ত হন।

    তিনি বলেন, গ্রেফতার নিশাত অনলাইনের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বেটিং সাইটের প্রসারের জন্য ভিডিও বানাতে তাকে দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। পরে তিনি অধিক অর্থ লাভের আশায় বিভিন্ন বেটিং সাইটের প্রচার ও অন্যান্য কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত হন। তার ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুকে তার তৈরি করা ভিডিওতে বিভিন্ন অনলাইন জুয়া সাইটের বিজ্ঞাপন প্রচার করতেন। প্রতিটি ভিডিওতে বেটিং সাইটের বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য ১০ হাজার টাকা করে সিতেন বলে জানা গেছে।

    পরে তিনি নিজেও অনলাইন জুয়ার কার্যক্রম শুরু করেন। ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জুয়ার বিজ্ঞাপন দেখে আগ্রহী ব্যক্তি তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের অনলাইনে বিভিন্ন জুয়ার সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার বিষয়ে গ্রেফতার কামরুলের কাছে প্রেরণ করেন।

    জুয়ার অ্যাকাউন্ট খুলে ৩০০ টাকা পেতেন কামরুল

    গ্রেফতার কামরুল স্নাতক শেষ করে একটি মোবাইল কোম্পানির সেলস রিপ্রেসেন্টেটিভ হিসেবে কাজ করতেন। দেড় বছর আগে থেকেই গ্রেফতার নিশাতের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার পরিচয় হয়। পরে তিনি নিশাতের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ায় জড়িযে পড়েন।

    কামরুল স্বল্পসময়ে অধিক অর্থ লাভের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন পরিচিত লোককে অনলাইন জুয়ার সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলতে উদ্বুদ্ধ করতেন এবং আগ্রহী ব্যক্তিদের অনলাইন জুয়ার বিভিন্ন সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে দিতেন। তিনি প্রতিটি অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ৩০০ টাকা কমিশন পেতেন।

    মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ীর নামে নিবন্ধনকৃত সিম সংগ্রহ করতেন সুমন

    কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেফতার সুমন অনলাইন জুয়ার অর্থ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি রাজধানীর মালিবাগে স্টেশনারী ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা করতেন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসার সুবাধে কামরুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে কামরুল তাকে স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ লাভের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন বেটিং সাইটের অ্যাকাউন্ট খুলে দেন এবং তার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়ার সব টাকা লেনদেন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। সুমন পরিচয় গোপন করে অনলাইন জুয়ার আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করার জন্য কৌশলে তার পাশের এক মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ীর নামে নিবন্ধনকৃত সিম সংগ্রহ করেন, যাতে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট হিসাবে লেনদেন করা যেতো।

    পরে সুমন বিভিন্ন অনলাইন বেটিং সাইটের সব ধরনের লেনদেন ওই মোবাইল সিম দিয়ে নিবন্ধনকৃত মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সম্পন্ন করতেন। এছাড়াও তিনি নামে-বেনামে বিভিন্ন সিম সংগ্রহ করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মাধ্যমে অনলাইন জুয়ার অর্থ লেনদেন করতেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওয় অর্থ তিনি নিশাত মুন্না ও কামরুলের সহায়তায় হুন্ডির মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশে অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্ম পরিচালনাকারীর কাছে পাঠাতেন।

    মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা করতেন নাজমুল

    র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, গ্রেফতার নাজমুল নোয়াখালীতে থাই গ্ল্যাসের এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা করতেন। তিনি এক বছর আগে কামরুলের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ার আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি নোয়াখালী অঞ্চলে বেটিং সাইটের জন্য গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় অর্থ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করতেন এবং বেটিং সাইটে টাকা রিচার্জ/বেটিং সাইট থেকে টাকা উত্তোলনের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

    এছাড়াও নাজমুল নামে-বেনামে বিভিন্ন সিম সংগ্রহ করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ার অর্থ লেনদেন করতেন। তিনি কামরুল ও নিশাত মুন্নার সহায়তায় গ্রাহকদের থেকে প্রাপ্ত অর্থ পার্শ্ববর্তী দেশে অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্ম পরিচালনাকারীর কাছে পাঠানোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।

  • বিশ্বরেকর্ড গড়ে লঙ্কানদের হারাল পাকিস্তান

    বিশ্বরেকর্ড গড়ে লঙ্কানদের হারাল পাকিস্তান

    বলের পর ব্যাট হাতেও হতাশার এক ম্যাচের দিকে এগোচ্ছিল পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার ৩৪৫ রানের জবাবে ইমাম-উল-হক ও বাবর আজম দুজনেই ফিরে যান দলীয় ৩৭ রানে। এরপর যা ঘটেছে– সেটি পাকিস্তান কেন ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ তা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট! লঙ্কান ব্যাটার কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমার জোড়া সেঞ্চুরির জবাবে পাকিস্তানি ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান এবং আব্দুল্লাহ শফিকও ম্যাজিক ফিগার পূর্ণ করেছেন। যার ওপর ভর করে ১০ বল হাতে রেখেই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান টপকানোর রেকর্ড গড়েছে বাবরের দল।

    তুলনামূলক দুর্বল দল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয়ের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। আজ (মঙ্গলবার) আগে ব্যাট করা দাসুন শানাকার দলের বিপক্ষে তারা বাজে বোলিংয়ের পসরা বসিয়েছিল। প্রায় সব বোলারই রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ৬-এর বেশি গড়ে। অন্যদিকে লঙ্কানরা আগের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪২৮ রানের পাহাড়ের সামনে পড়ে যায়। যদিও এরপর তারা ৩২৬ রান করে লড়াই চালিয়েছিল।

    হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমার জোড়া সেঞ্চুরিতে লঙ্কানরা ৩৪৫ রানের বড় লক্ষ্য দাঁড় করায়। এরপর রানতাড়ায় নেমে চতুর্থ ওভারেই ব্যক্তিগত ১২ রানে ফিরেন পাকিস্তানি ওপেনার ইমাম। দিলশান মাদুশঙ্কার শর্ট লেংথের বাউন্স বল খেলতে গিয়ে তিনি কুশল পেরেরার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পর আজও রান পাননি পাক অধিনায়ক বাবর। বলতে গেলে মাদুশঙ্কার দুর্বল ডেলিভারিতে তিনি নিজের উইকেট তুলে দিয়েছেন সামারাবিক্রমার হাতে। ফিরেছেন ব্যক্তিগত ১০ রানে।

    এরপরই নিজেদের খোলস ছেড়ে দারুণ ফর্ম দেখিয়েছেন আব্দুল্লাহ শফিক ও রিজওয়ান। টানা ব্যর্থতার পর এদিন একাদশে জায়গা মেলে শফিকের। এর আগে যখনই সুযোগ পেয়েছেন ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন এই ২৩ বছর বয়সী ব্যাটার। সেই ধারাবাহিকতায় আরও একবার দায়িত্ব পেয়ে তিনি দলের জন্য জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছেন। চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নেমেই দেখা পেয়েছেন প্রথম সেঞ্চুরির। যদিও এরপর বেশিক্ষণ আর ক্রিজে টিকে থাকতে পারেননি শফিক। ১০৩ বলে তিনি ১০টি চার ও তিন ছক্কায় ১১৩ রানের ইনিংস খেলেছেন।

  • আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

    আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

    বিশ্বকাপ মিশনে দেশ ছাড়ার আগের দিন দল ঘোষণা, মাস দুয়েক আগে অধিনায়কত্বে পরিবর্তন, ওপেনিং জুটিতে মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো পরিবর্তন সবমিলিয়ে কিছুটা হলেও মানসিকভাবে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবে মাঠ আর মাঠের বাইরের এসব বিতর্ক পারফরম্যান্স দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা। আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে ভারত মিশনের শুরুটা রাঙাল সাকিব আল হাসানের দল।

    আজ (শনিবার) ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৭ ওভার ২ বলে ১৫৬ রান তুলে অলআউট হয় আফগানিস্তান। সর্বোচ্চ ৪৭ রান এসেছে রহমানুল্লাহ গুরবাজের ব্যাট থেকে। ৩টি করে উইকেট শিকার করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসান। জবাবে খেলতে নেমে ৩৪ ওভার ৪ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। টাইগারদের হয়ে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

    ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। দেখে-শুনে খেলছিলেন দুই ওপেনার লিটন দাস-তানজিদ তামিম। কিন্তু ৫ম ওভারেই ঘটল বিপত্তি! ফজল হক ফারুকির করা বল কাভারে ঠেলে রান নেওয়ার জন্য সামনের পায়ে একটু ঝুঁকেছিলেন লিটন। রান নেওয়ার চেষ্টা করেননি তিনি। তবে অন্য প্রান্ত থেকে তামিম ততক্ষণে দৌড়ে উইকেটের মাঝে চলে এসেছিলেন, লিটনের ডাক না শুনেই। নজিবুল্লাহ জাদরানের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হন তামিম।

    সর্বশেষ দুই বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক লিটন। অথচ এই ওপেনারই গত কয়েক মাস ধরে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী। অবশ্য প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু মূল ম্যাচে এসে আবারও ব্যর্থ হলেন। তামিমের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না লিটনও। ফারুকিকে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে আফ স্টাম্পের অনেক বাইরে থেকে বল টেনে এনে বোল্ড হয়েছেন। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৮ বলে ১৩ রান।

    দ্রুতই সাজঘরে ফিরেছিলেন দুই ওপেনার। তবে তিনে নেমে দলের হাল ধরেন মিরাজ। শান্তকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে জয়ের ভীত গড়ে দেন তিনি। তুলে নেন ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরিও। এই মাইলফলক ছুঁতে তিনি খরচ করেছেন ৫৮ বল। ফিফটির পরপরই ফিরতে পারতেন মিরাজ। ২৫তম ওভারের তৃতীয় বলটি গুগলি করেছিলেন মুজিব। লাইন মিস করেন মিরাজ। বল প্যাডে আঘাত হানলে আম্পায়ার আউট দেন। কিছুটা সময় নিয়ে আম্পায়ারের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন এই ব্যাটার। রিভিউয়ে দেখা যায় বল প্রথমে ব্যাটে লেগেছে এরপর প্যাডে। তাই সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হন আম্পায়ার। এর আগে দুইবার মিরাজের ক্যাচও ফেলেছিলেন আফগান ফিল্ডাররা।

    দুই দফা জীবন পেয়ে ফিফটি হাঁকানো মিরাজ থামেন নাভিন উল হককে মিড অফের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে।সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ৭৩ বলে ৫৭ রান। তবে আউট হওয়ার আগে বাংলাদেশের জয় একপ্রকার নিশ্চিত করেই গেছেন তিনি। এশিয়া কাপে আফগানদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি, একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ম্যাচে ফিফটি। মেহেদী হাসান মিরাজের প্রিয় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে যেন আফগানিস্তান!

    মিরাজ ফেরার পর উইকেটে এসে দ্রুতই জয়ের দিকে এগোচ্ছিলেন সাকিব। তবে ৩৪তম ওভারে ওমরজাইকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন। অধিনায়ক ১৪ রান করে ফিরলেও জয়ের পথে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। বাকি কাজটা মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে ভালোভাবেই সেরেছেন শান্ত। এই টপ অর্ডার ব্যাটার অপরাজিত ৫৯ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।

    এর আগে বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ইনিংস শুরু করা তাসকিন প্রথম ওভারটায় বেশ আঁটসাঁট বোলিং করেছিলেন। তবে এরপর লাইন-ল্যান্থ ঠিক রাখতে পারছিলেন না। অপর প্রান্তে শরিফুল ইসলামও নতুন বলের বাড়তি সুবিধা নিতে পারেননি। ফলে ভালো শুরুই পেয়েছিল আফগানিস্তান। ৫ ওভার শেষে বিনা উইকেটে তারা স্কোরবোর্ডে তুলে ২৭ রান।

    পেসাররা সুবিধা করতে না পারায় ইনিংসের সপ্তম ওভারেই স্পিন আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। নিজের হাতে বল তুলে নেন সাকিব। বোলিংয়ে এসে প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি হজম করেন এই বাঁহাতি স্পিনার। তবে পরের ওভারে এসে ঠিকই পাল্টা জবাব দিয়েছেন মিস্টার সেভেন্টি ফাইভ। এই বাঁহাতি স্পিনারকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে এডজ হয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন ইব্রাহিম। ২২ রান করা এই ওপেনারকে ফিরিয়ে আফগান শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

    শুরুটা দারুণ করলেও উইকেট হারানোর পর আফগানদের রান তোলার গতি কিছুটা কমে। তবে প্রথম পাওয়ার প্লের মধ্যেই প্রথম ফিফটির দেখা পায় তারা। প্রথম পাওয়ার প্লে শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৫০ রান তুলেছিল আফগানিস্তান।

    প্রথম পাওয়ার প্লে শেষেও রানের চাকা সচলই ছিল আফগানদের। তারপরও ষোলতম ওভারের প্রথম বলেই সাকিবকে বড় শট খেলতে গেলেন রহমত শাহ। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে সুইপের চেষ্টায় টপ-এজ হয়ে বল আকাশে, সিলি মিড অফে লিটন দাস লুফে নিতে ভুল করেননি। সাজঘরে ফেরার আগে রহমতের ব্যাট থেকে এসেছে ২৫ বলে ১৮ রান।

    শুরুর ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৫০ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। পরের দশ ওভারে কিছুটা হলেও রানের লাগাম টেনে ধরতে পেরেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে স্পিনাররা-সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ। ১১-২০ ওভারের মধ্যে আফগানিস্তান তুলেতে পেরেছে ৪৬ রান। বিপরীতে তারা হারিয়েছে রহমত শাহর উইকেট।

    উইকেটে এসে ধীর গতির শুরু করেছিলেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি। তার এমন ব্যাটিংয়ের প্রভাব পড়েছিল দলের রান রেটের ওপরও। সেটা অধিনায়ক হয়তোবা বুঝতে পেরেছিলেন। তাইতো ২৫তম ওভারে মিরাজের ওপর আক্রমণ করতে গেলেন। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হলো না। উল্টো দলের বিপদ বাড়ান নিজের উইকেট হারিয়ে। ১৮ রান করা এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।

    ইনিংস ওপেন করতে নেমে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। শুরুতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও পরে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছেন। স্পিনার কিংবা পেসার সবার বিপক্ষেই সাবলীল ছিলেন তিনি। তবে ২৬তম ওভারে মুস্তাফিজে কাটা পড়েন তিনি। এই বাঁহাতি পেসারকে ডাউন দ্য উইকেটে এগিয়ে এসে এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে হাঁকাতে চেয়েছিলেন। তবে ব্যাটারের মুভমেন্ট বুঝে গতি কমিয়ে দেন মুস্তাফিজ। ফলে ঠিকমতো টাইমিং হয়নি। ৪৭ রান করে গুরবাজ ফিরেছেন হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে।

    নাজিবুল্লাহ জাদরানকে থিতু হতে দেননি সাকিব। এই বাঁহাতি স্পিনারের সোজা বলে লাইন মিস করেছেন নাজিবুল্লাহ। খানিকটা নিচু হওয়া বলে টার্নের আশায় ব্যাট চালিয়ে ছিলেন, আউটসাইড এডজে বল স্টাম্পে আঘাত হানে। ৫ রান করা নাজিবুল্লাহকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট শিকার করেন সাকিব।

    টপ অর্ডার ব্যাটারদের কল্যাণে ভালো শুরুই পেয়েছিল আফগানিস্তান। তবে মিডল অর্ডার ভেঙে যায় তাসের ঘরের মতোই। ১০ রানের ব্যবধানে ফিরেছিলেন-হাশমতউল্লাহ-গুরবাজ-নাজিবুল্লাহ। তাই মোহম্মদ নবির দায়িত্বটা বেড়ে গিয়েছিল। তার অভিজ্ঞতায় ভরসা খুঁজছিল আফগানরা। তবে এবার ব্যর্থ হলেন তিনি। তাসকিনের ল্যান্থ বলে ইনসাইড এডজে লেগ স্টাম্প উপড়ে গেছে এই অভিজ্ঞ ব্যাটারের। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬ রান।

    মিডল অর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ, তবে লোয়ার মিডল অর্ডারে পার্থক্য গড়ে দিলেন রশিদ, এমনটা অনেকবারই ঘটেছে আফগানিস্তান ক্রিকেটে। তবে আজ চিত্রটা ভিন্ন। ধর্মশালায় যখন ধুঁকছে দল, তখন বিপদ বাড়িয়ে ফেরেন রশিদও। মিরাজের নিচু হওয়া বল স্টাম্পে ডেকে এনে বোল্ড হয়েছেন তিনি।

    প্রথম স্পেলে সুবিধা করতে পারেননি শরিফুল ইসলাম। মাঝে স্পিনাররা ভালো করায় শরিফুলের শরণাপন্ন হননি সাকিব। তবে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে উইকেটের দেখা পান এই বাঁহাতি পেসারও। ৩৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে বোল্ড করেছেন তিনি। দলীয় ১৫৬ রানে আউট হয়েছেন ওমরজাই। সেই একই রানে পরের দুই উইকেটও হারিয়েছে আফগানিস্তান। ফলে ১৫৬ তেই আটকে যায় তারা।

  • নেদারল্যান্ডসকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ শুরু পাকিস্তানের

    নেদারল্যান্ডসকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ শুরু পাকিস্তানের

    গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কিউইদের দুর্দান্ত জয়ের পর আজ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামে পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডস। হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে যেখানে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে ম্যান ইন গ্রিনরা। শুরুতেই ডাচদের বোলিং তোপে পড়লেও প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন মিডেল অর্ডার ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা। শেষ দিকে পেসার বাস ডি লিডের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৪৯ ওভারে ২৮৬ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। ২৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আশা জাগালেও বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারেনি ডাচরা। হারিস রউফ ও হাসান আলীদের বোলিং তোপে মাত্র ২০৫ রানে অলআউট হয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। ফলে ৮১ রানের বড় জয়ে নিজেদের বিশ্বকাপ যাত্রার সূচনা করে বাবর আজমের দল।

    ২৮৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা পায় নেদারল্যান্ডস। ওপেনার বিক্রমজীত সিং ও বাস ডি লিডের ব্যাটে ২ উইকেট হারিয়ে দলিয় ১০০ রান পূরণ করে ডাচরা। এই দুই ব্যাটারের তৃতীয় উইকেটের জুটি পাকিস্তানকে অস্বস্তিতে ফেললেও শেষ পর্যন্ত দলীয় বোলিং পারফরম্যান্সে স্কট এডওয়ার্সের আটকে দেয় পাকিস্তান।

    মিডেল ওভারে পাকিস্তান বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১২০ রানে ২ উইকেট থেকে খেই হারিয়ে ২০৫ রানে অলআউট হয়ে যায় ডাচরা। বল হাতে চার উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে নেদারল্যান্ডসের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন বাস ডি লিড। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন হারিস রউফ।

    এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ম্যান ইন গ্রিনদের। আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই ফন বেকের শিকার হন ওপেনার ফখর জামান। ১৫ বলে ১২ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এ বাঁহাতি ব্যাটার।

    এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ক্রিজে নেমে দলে হাল ধরার চেষ্টা করেন বাবর আজম। কিন্তু ইনিংসের নবম ওভারে কলিন আকারম্যানের শিকার হন ম্যান ইন গ্রিনদের অধিনায়ক। ১৮ বলে ৫ রান করে সাজঘরে ফিরেন তিনি। এরপর ক্রিজে নামেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। এক প্রান্তে তিনি দাঁড়িয়ে থাকলেও আরেক ওপেনার ইমাম উল হক ডাচ পেসার ফন মিকেরেনের শিকার হন। দলীয় ৩৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে রীতিমত চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান।

    কিন্তু চাপ সামলে রেকর্ড পার্টনারশিপে ম্যাচের হাল ধরেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সাউদ সাকিল। দুই মিডেল অর্ডার ব্যাটার মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১২০ রান স্কোর বোর্ডে যোগ করেন। ২৯তম ওভারে ৫২ বলে ৬৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে আরিয়ান দত্তের শিকার হন সাকিল।

    দলীয় ১৫৮ রানে চতুর্থ উইকেটের পতনের পর আবারো খেই হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। ১৫৮ রানে তিন উইকেট থেকে ১৮৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দ্রুত অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে বাবর আজমের দল। তবে সপ্তম উইকেট জুটিতে ম্যাচের হাল ধরেন শাদাব খান ও মোহাম্মদ নওয়াজ। দুই লোয়ার অর্ডার ব্যাটার মিলে ৬৪ রানের জুটি গড়ে দলের লড়াইয়ের পুঁজির ভীত গড়ে দেন।

    ৪৪তম ওভারে পেসার বাস ডি লিডের জোড়া আঘাতে ২৫২ রানে ৬ উইকেট থেকে শাদাব খান ও হাসান আলীকে হারিয়ে দ্রুত অলআউট হওয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে যায় পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত ৪৯ ওভারে ২৮৬ রানে গুটিয়ে যায় বাবর আজমের দল। পাকিস্তানের হয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সাউদ সাকিল দুজনেই খেলেন সর্বোচ্চ ৬৮ রানের ইনিংস। নেদারল্যান্ডসের হয়ে ৪টি উইকেট নেন বাস ডি লিড।

  • আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৩তম আসর শুরু আজ

    আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৩তম আসর শুরু আজ

    আজ থেকে শুরু বহু অপেক্ষার‍ আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসর। যে কোনবারের তুলনায় এবার আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে ঢের। ফরম্যাটের ভিন্নতা, ভারত-পাকিস্তান বৈরিতা, ওয়ানডের ক্রিকেটের গতিপথ নির্ধারণ সবমিলিয়ে এবারের বিশ্বকাপ পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা।

    ৪৮ ম্যাচ, ৪৬ দিন, দশ দেশ ট্রফি মাত্র একটা। উত্তরে ধর্মশালা, দক্ষিণে চেন্নাই। পূর্বের কলকাতা থেকে পশ্চিমের আহমেদাবাদ বিশ্বকাপের মঞ্চ তৈরি। অপেক্ষায় দশ ভেন্যু। শুরুটা শেষ থেকে, শেষ বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের লড়াই দিয়ে।

    ফাইনাল আর চির বৈরিতার ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের ভেন্যুও এক আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। পাকিস্তান শেষ চারে টিকে থাকলে ফিরতে হবে কলকাতায়। ভারতের ক্ষেত্রে ভেন্যু হবে মুম্বাই। আর দুই দল সেমিতে মুখোমুখি হলে দেখা হবে সিটি অব জয়ে। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স সাক্ষী হবে সেই ম্যাচের।

    প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ মঞ্চে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতি। সেখান থেকে সেরা চার দল খেলবে সেমিফাইনালে। রিজার্ভ ডে থাকছে শুধু নক আউট পর্বে। বিশ্বকাপের রঙ হারিয়েছে বাছাই পর্বে, দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজর বিদায়ে। নেই নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলা জিম্বাবুয়েও। বাছাই পর্বের চমক নেদারল্যান্ডস।

    হট ফেভারিট ভারত ও ইংল্যান্ড, কিন্তু স্পটলাইট থাকবে অস্ট্রেলিয়ার ওপর। হ্যাটট্রিক শিরোপাসহ ৫ বারের বিশ্বসেরা যে অজিরা। অবশ্য ঘরের মাঠের সুবিধা আর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে হট ফেভারিট ভারত। সাবেক ক্রিকেটার থেকে বিশেষজ্ঞরা তৃতীয় ট্রফি দেখছেন স্বাগতিকদের ঘরে।

    ১৪২ কোটি মানুষের দেশ ভারত, সঙ্গে দর্শকপ্রিয়তার তুঙ্গে বলেই যেকোনও বারের তুলনায় আগ্রহ, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ বাড়িয়েছে এবারের আসরে। সে তুলনায় অবশ্য বাড়েনি প্রাইজমানি। আগের আসরের সমান ১০ মিলিয়ন ডলার এবারও। টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ১১০ কোটি। যেখানে চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৪০ কোটির বেশি। রানার্সআপ পাবে এর অর্ধেক।

    বিশ্বকাপ ডামাডোলে সমালোচনাও কম নয়। যেখানে আসর শুরুর এক বছর আগেই চূড়ান্ত সূচি ঘোষণা করে আয়োজকরা সেখানে ভারত প্রকাশ করেছে মাত্র ১০০ দিন আগে।

    একাধিকবার সূচি বদলেও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে আয়োজক বিসিসিআই। ৭ বছর পর ভারতে পা রেখেছে পাকিস্তান। সেখানেও ভিসা জটিলতা এড়াতে পারেনি। যে কারণে ম্যান ইন গ্রীনদের প্রস্তুতিতেও ছিলে ঘাটতি। অসন্তোষ ছিলে অনলাইন টিকিট বিক্রির প্রক্রিয়া নিয়ে। বিশ্বকাপ জুড়ে ভ্রমণ ক্লান্তি নিয়েও আলাদা করে ভাবতে হচ্ছে দলগুলোর কোচিং স্টাফদের।

    সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের গতিপথ নির্ধারণ হতে পারে এবারের বিশ্বকাপে।

  • ট্রফি নিয়ে একসঙ্গে বিশ্বকাপের সব অধিনায়ক

    ট্রফি নিয়ে একসঙ্গে বিশ্বকাপের সব অধিনায়ক

    জমজমাট বিশ্বকাপের পর্দা উন্মোচন হতে যাচ্ছে আগামীকাল ৫ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার থেকে। ভারতের নরেন্দ্র মোদী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে গতবারের দুই ফাইনালিস্ট নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড।

    বিশ্বকাপ শুরুর আগেরদিন আজ আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ক্যাপ্টেন্স ডে। শুরুতেই স্টেডিয়ামে ১০ দলের ১০ অধিনায়কের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফটো সেশন। স্বাভাবিকভাবেই ১০ অধিনায়কের মাঝে রাখা হয়েছিলো বিশ্বকাপ ট্রফি।

    ১০ অধিনায়ক হলেন স্বাগতিক ভারতের রোহিম শর্মা, বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান, পাকিস্তানের বাবর আজম, শ্রীলঙ্কার দাসুন শানাকা, আফগানিস্তানের হাশমতউল্লাহ শহিদি, ইংল্যান্ডের জস বাটলার, নেদারল্যান্ডসের স্কট অ্যাডওয়ার্ডস, দক্ষিণ আফ্রিকার টেম্বা বাভুমা, অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স এবং নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন।

    ট্রফি নিয়ে গ্রুপ ছবি তোলার পর আইসিসি-ক্রিকেট.কম এর সঙ্গে নিজেদের লক্ষ্য নিয়ে কথা বলেছেন ১০ দলের অধিনায়ক। বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো। যতি ২০১৯ সালের পর গত তিন-চার বছরের কথা বলি, তাহলে আমরা বিশ্বের তিন কিংবা চার নম্বর দল। এছাড়া আইসিসি সুপার লিগে আমরা ছিলাম তিন নম্বর দল। আমরা একটি গ্রুপ হিসেবে অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি। এখন আমাদের সামনে সময় হলো, নিজেদের ভালোভাবে বিশ্বকাপে উপস্থাপন করা। আমরা প্রস্তুত। আমাদের দেশের মানুষও আগে যা করেছি, তার চেয়ে এবার বেশি কিছু প্রত্যাশা করছে।’

  • আইসিসির চোখে, বিশ্বকাপের যে পাঁচ ম্যাচ অবশ্যই দেখতে হবে

    আইসিসির চোখে, বিশ্বকাপের যে পাঁচ ম্যাচ অবশ্যই দেখতে হবে

    আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের সূচি মঙ্গলবার (২৭ জুন) ঘোষণা করে আইসিসি। আর সূচি ঘোষণার পরপরই গ্রুপ পর্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বিশেষ নজর রাখতে বলেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক এই সংস্থাটি। এরমধ্যে জায়গা পেয়েছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের ম্যাচও।

    ওয়ানডে বিশ্বকাপের হাই-ভোল্টেজ ম্যাচ ভারত-পাকিস্তান মহারণ আহমেদাবাদ মাঠে গড়াবে! এদিকে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নেমে। এদিকে গেলবারের দুই ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের ম্যাচে দেখা যেতে পারে রোমাঞ্চের ছড়াছড়ি।

    আইসিসির মতে বিশ্বকাপের যে পাঁচটি ম্যাচ অবশ্যই দেখতে হবে-

    ভারত-পাকিস্তান (আহমেদাবাদ, ১৫ অক্টোবর)

    ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড (আহমেদাবাদ, ৫ অক্টোবর)

    ভারত-অস্ট্রেলিয়া (চেন্নাই, ৮ অক্টোবর)

    অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা (লখনৌ, ১৩ অক্টোবর)

    বাংলাদেশ-আফগানিস্তান (ধর্মশালা, ৭ অক্টোবর)

  • ওয়েলস ৬৪ বছর পর বিশ্বকাপে

    ওয়েলস ৬৪ বছর পর বিশ্বকাপে

    ইউক্রেন নয়, কাতার বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে গ্যারেথ বেলের ওয়েলস। ৬৪ বছর পর বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে তারা। রোববার রাতে ইউরোপিয়ান অঞ্চলের প্লে-অফের ফাইনালে ইউক্রেনকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় দশকের অপেক্ষা ঘুচাল ওয়েলস। এই জয়ে কাতার বিশ্বকাপে তারা খেলবে ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ইরানকে নিয়ে গড়া ‘বি’ গ্রুপে।

    স্বপ্ন পূরণে কাতার বিশ্বকাপের যাওয়া নিশ্চিত করতে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই কার্ডিফে নেমেছিল ইউক্রেন। তবে শেষ পর্যন্ত এক আত্মঘাতী গোলে কপাল পুড়লো তাদের। ইউক্রেনের অধিনায়ক ইয়ারমোলেঙ্কোর নিজেদের জালে করা সেই গোলের কল্যাণেই ১৯৫৮ সালের পর আবার বিশ্বকাপে ওয়েলস।

    যদিও এই লড়াইয়ের প্রথমার্ধটা ইউক্রেনই দাপটের সঙ্গে খেলেছে। বল দখলের লড়াই আর আক্রমণেও এগিয়ে ছিল তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে নিজেরা গোল তো পেলই না, উল্টো ৩৪ মিনিটে গোল খেয়ে বসল। বক্সের বাঁ-দিক থেকে নেওয়া বেলের ফ্রি-কিক হেডে ক্লিয়ার করার চেষ্টায় নিজেদের জালে পাঠান ইয়ারমোলেঙ্কো।

    ওই ১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ওয়েলস। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ম্যাচের ৫৬ মিনিটে ইউক্রেনের ভিক্তর তিশিহানকোভের নিচু শট ঠেকিয়ে জাল অক্ষত রাখেন ওয়েলস গোলরক্ষক হেনেসি। ৭৫তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায় ওয়েলস। এবার বেলের প্রচেষ্টা রুখে দেন সফরকারী গোলরক্ষক। এক মিনিট পরেই সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল উইক্রেন। কিন্তু এবারো ইয়ারমোলেঙ্কোর আক্রমণ বিফলে যায়।

    ম্যাচে সাকুল্য ওয়েলসের গোলমুখে ২২টি শট নিয়েও কোনো লাভ হয়নি ইউক্রেনের। পরে আর কোনো দল গোল না পেলে ইউক্রেনের স্বপ্ন ভেঙে ৬৪ বছর পর বিশ্বকাপের টিকিট পায় ওয়েলস। এই হারের ফলে ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে খেলার হাতছানি থাকলেও পূরণ হলো না ইউক্রেনের আশা।