Tag: বিশ্বের প্রথম

  • সৈয়দপুরে মাত্র ১ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে বিশ্বের প্রথম ফাইলেরিয়া হাসপাতাল

    সৈয়দপুরে মাত্র ১ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে বিশ্বের প্রথম ফাইলেরিয়া হাসপাতাল

    শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিশ্বের প্রথম ফাইলেরিয়া হাসপাতালটি স্থানীয় দখলদাররা কব্জা করেছে। এতে বিপাকে পড়েছে ফাইলেরিয়া রোগীরা। ফাইলেরিয়া নির্মূলের উদ্দেশ্যে সরকার এবং দাতা সংস্থা এই হাসপাতালটি নির্মাণ করে।

    বর্তমানে ফাইলেরিয়া রোগের বিশেষজ্ঞ ছাড়াই এই হাসপাতালটি প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ জন রোগীর চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। প্রতি শুক্রবার এখানে ফাইলেরিয়া রোগের অপারেশন করা হচ্ছে ভাড়াটিয়া ডাক্তার নিয়ে এসে।

    এদিকে ফাইলেরিয়া হাসপাতালটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন অবৈধ দখলদারের হাত থেকে উদ্ধারের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রাণালয়, ডিজি র‌্যাব, স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নীলফামারী জেলা প্রসাশক, সিভিল সার্জন, রংপুরের স্বাস্থ্য বিভাগীয় পরিচালক, বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন।

    অন্যদিকে আইএসিআইবি’র পক্ষ থেকে হাসপাতালটির পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ পল্লী ডাক্তার এসোসিয়েশন (বিপিডিএ)’র মহাসচিবকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

    আ্যাম্বুলেন্স, অপারেশন থিয়েটার, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি অকেজে হয়ে পড়ে আছে। অনেক দামী-দামী জিনিসপত্র ব্যবহার না হওয়ায় মরিচা ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।

    এক সময় হাসপাতালটিতে রংপুর বিভাগের ৮ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসত। এখন দখলদারদেও কারণে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটির বেড থাকলেও তা ফাঁকা পড়ে আছে। এক সময় বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতালে রোগীর পরিপূর্ণ ও গিজগিজ অবস্থা বিরাজ করলেও এখন তা ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে।

    ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগ বাংলাদেশের একটি বড় স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশেষ করে নারীরা এ রোগের কারণে সমাজে নানাভাবে হচ্ছে উপেক্ষিত। কারো কারো সংসারও ভেঙে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিভিন্ন ধরনের ফাইলেরিয়াল প্যারাসাইট বা পরজীবী শরীরে প্রবেশ করলে এ রোগের সৃষ্টি হয়। এ ধরনের পরজীবী একজন রোগী হতে আরেকজন সুস্থ লোকের শরীরে কয়েক প্রজাতির মশার কামড়ে সংক্রামিত হয়। এ রোগের লক্ষণগুলো হলো তীব্র এবং ঘন ঘন কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে যা এমনিতেই সেরে যায়। আক্রান্ত লসিকান্ত্রন্থির প্রদাহের কারণে লসিকা গ্রন্থিতে ব্যথা, লাল হয়ে যাওয়া এবং লসিকা নালী ফুলে যায়। গোদ হলে সাধারণত শরীরের হাত-পা বা পুরুষের অন্ডকোষ, নারীর স্তন ও যৌনাঙ্গ অস্বাভাবিক মোটা হয়ে যায়।

    এ রোগ নির্মূলে সরকারের সমাজসেবা অধিদফতর ও এনজিও বিষয়ক ব্যুরো কর্তৃক নিবন্ধন নিয়ে কাজ শুরু করেন বাংলাদেশের একমাত্র ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড কিনিক্যাল ইমুনোলজি অব বাংলাদেশ (আইএসিআইবি)।

    ১৯৯৫ সালের ১৫ জানুয়ারি স্বেচ্ছাসেবী ও অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠে। এ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জাপান সরকারের অর্থায়নে সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছে ফাইলেরিয়া হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ৬৯.৫ শতাংশ জমির ওপর গড়ে তোলা হয় এ হাসপাতালটি। পরবর্তীতে দাতা সংস্থার দেয়া অনুদানের প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে তিন ও চার তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক মডেলের দুইটি ভবন নির্মাণ করা হয়।

    রংপুর মোসলেম পাড়ার ফাইলেরিয়া রোগী রাসুলা বেগম (৫৫) বলেন, ২০ বছর ধরে এই রোগে ভুগছি। ৫ মাসে এই হাসপাতালে ৪ বার এসেছি। প্রতি মাসে ১৮শ’ টাকার ওষুধ খেতে হয়। রোগ নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। সামান্য একটু ব্যথা কমেছে।

    কর্তব্যরত ডাঃ রায়হান তারেক বলেন, আমার একার পক্ষে এত বড় হাসপাতালের রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়া কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। সরকার যদি ডিপুটেশনে কিছু চিকিৎসক দিত তাহলে এই হাসপাতালটির সেবার মানও বাড়ত। প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাক্তার নিয়ে এসে হাইড্রসিল অপারেশন করা হয়ে থাকে।

  • বিশ্বের প্রথম হাতের সেলাই করা কুরআন শরীফ

    বিশ্বের প্রথম হাতের সেলাই করা কুরআন শরীফ

    বিশ্বের প্রথম হাতে সেলাই করে পবিত্র কুরআন শরীফ লেখা সম্পন্ন করলেন পাকিস্তানী নারী নাসিম আক্তার। তিনিই প্রথম পবিত্র কুরআন শরীফ হাতে সেলাই করে লেকার গৌরব অর্জন করেছেন।

    ৩২ বছরের কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায়, নিবেদন এবং ইসলাম ও পবিত্র কোরআনের প্রতি ভালবাসা থেকে কাজটি তিনি সম্পন্ন করেছেন।

    নাসিম আক্তার বলেন, ‘আমি কুরআনটি সম্পূর্ণ হতে কতদিন লাগবে তা নিয়ে চিন্তা না করে পূর্ণ সংকল্প নিয়ে সেলাই শুরু করি। এই মহৎ কাজটি সম্পন্ন করার রহমত দানের জন্য আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি এটা করতে পেরে খুব খুশি। আমি আমার পুরো জীবনে আর কখনও এত খুশি হতে পারিনি।’

    তিনি জানান, ৩২ বছর আগে তার মনে হঠাৎ করেই এই ইচ্ছাটা জাগে এবং তিনি এটি কার্যকর করা শুরু করেন। তবে, তিনি জানতেন না যে তার এই কাজ শেষ হতে কয়েক দশক সময় লাগবে। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন।

    নাসিম আক্তারের মতে, ‘এই কাজটির সম্পূর্ণ করার মত তৃপ্তি ও আনন্দ তিনি জীবনে আর কখনই পাননি। তিনি এর জন্য আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ।

    নাসিমার সেলাই করা পবিত্র কোরআনের ওজন ৬০ কেজি এবং এটি সুতির কাপড় দিয়ে তৈরি। এটিকে পরিপূর্ণতা দিতে সোনালী এমব্রয়ডারিও করা হয়েছে। এর মলাট রেশমি কাপড় দিয়ে মোড়ানো হয়েছে। প্রতিটি পারার শুরুতে পৃথক কভার পৃষ্ঠা রয়েছে। তিনি কুরআনের সমস্ত আয়াতকে সজীব সবুজ বর্ণে সেলাই করেছিলেন। সব কিছুই তিনি নিজে হাতে করেছেন। কোন মেশিনের সাহায্য নেননি। এমনকি এই উদ্দেশ্যে তিনি কারও কাছ থেকে কোন সহায়তাও নেননি।

    সর্বোপরি তিনি শুধুমাত্র ওযু থাকা অবস্থাতেই সেলাই করতেন যা সরাসরি কাজের প্রতি তার উৎসর্গকে প্রতিনিধিত্ব করে।

    নাসিম আক্তার বর্তমানে পাকিস্তানের গুজরাটে থাকেন। সউদী কর্মকর্তারা তার কাজের কথা শুনে তাকে সেখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তিনি খুশি মনে তার হাতের সেলাই করা পবিত্র কুরআনের অনুলিপিটি পবিত্র মদিনার মিউজিয়ামে দান করেন। সেটি এখন মদিনার পবিত্র কুরআনের জাদুঘরে প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে। তার পরিশ্রম এবং ইসলামের প্রতি উৎসর্গের জন্য তার পুরো পরিবার গর্বিত।