Tag: বেলা

  • রিজওয়ানা হাসানের গাড়িতে হামলার নিন্দা ৫২ নাগরিকের

    রিজওয়ানা হাসানের গাড়িতে হামলার নিন্দা ৫২ নাগরিকের

    বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়িতে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৫২ বিশিষ্ট নাগরিক।

    আজ শনিবার এক বিবৃতিতে তাঁরা চট্টগ্রাম নগরে আকবরশাহ এলাকায় রিজওয়ানা হাসান, বেলার অন্যান্য কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ ও তাঁদের বহনকারী গাড়ি আটকে রাখার ঘটনাকে ন্যক্কারজনক ও উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেন।

    এ ঘটনার তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, ‘রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে নাগরিকদের চলাফেরা ও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার প্রত্যেকের সাংবিধানিক অধিকার। তাই রাষ্ট্রকে সব নাগরিকের এই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’

    তাঁরা বলেন, গত ২৬ জানুয়ারি আকবরশাহ থানাধীন লেকসিটি আবাসিক এলাকায় পাহাড় কেটে ভরাট করা ছড়া পরিদর্শনের সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের নেতৃত্বে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়েছে। তাঁর সফরসঙ্গীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিনিধি দলের গাড়িটি কমিশনারের লোকজন আটকে রাখে। পরে পুলিশ গাড়ি ছাড়িয়ে নেয়।

    এ আক্রমণের ঘটনায় আকবরশাহ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান।

    বিবৃতি দিয়েছেন—মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, নিজেরা করির সমন্বয়কারী ও এএলআরডির চেয়ারপারসন খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, আইন ও সালিস কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, সিপিডির বোর্ড অব ট্রাস্ট্রি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, নারীপক্ষের সদস্য শিরিন হক, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো ড. স্বপন আদনান, সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, কবি ও লেখক রাহনুমা আহমেদ, ব্লাস্টের সম্মানী নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, আলোকচিত্রী ও সমাজকর্মী ড. শহিদুল আলম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী, কোস্ট ট্রাস্ট নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী ও কাপেং ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা।

  • চট্টগ্রামে বেলার প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা হাসানের ওপর হামলা

    চট্টগ্রামে বেলার প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা হাসানের ওপর হামলা

    চট্টগ্রাম নগরীতে পাহাড় কাটা ও দখল পরিদর্শনে গিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) নগরীর আকবর শাহ থানার উত্তর পাহাড়তলি সুপারি বাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

    এ ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহুরুল আলম জসিমসহ আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত আকবর শাহ থানায় মামলা করেছেন রিজওয়ানা হাসান। আকবরশাহ থানার ওসি ওয়ালি উদ্দিন আকবর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

    মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী মনিরা পারভিন, কর্মসূচি প্রধান ফিরোজুল ইসলাম, চট্টগ্রামের ফিল্ড অফিসার ফারমিন এলাহী, দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের বিশেষ প্রতিনিধি ও বেলার নেটওয়ার্ক মেম্বার আলীউর রহমানে এবং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আবুল মনসুরসহ বেশ কয়েকজন আকবর শাহ থানার উত্তর পাহাড়তলীর সুপারি বাগান এলাকায় যান। তারা মূলত অবৈধভাবে পাহাড় কাটা এবং কালির ছড়াখাল ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। যাওয়ার পথে স্থানীয় ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি বাধা দেয়। এবং আক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গী প্রদর্শন করে। বার বার পরিদর্শনকারীদের কাছে জানতে চায় তারা কেন এসেছেন? কোথা থেকে এসেছেন? একই সময় কাউন্সিলর জসিম পরিদর্শনকারী বেলা নেটওয়ার্ক মেম্বার আলীউর রহমানসহ অন্যান্য উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে ফোন করে তার সঙ্গে রিজওয়ানা হাসানকে কথা বলাতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায়ে রিজওয়ানা হাসানের ভাড়া করা গাড়িটি লেকসিটি আবাসিকের প্রধান গেটে আটকে দিয়ে ধারালো অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক সেটিকে আবাসিকের অফিসে নিয়ে যায়। তাদের আক্রমণের প্রস্তুতি দেখে পরিদর্শনকারীরা পথ পরিবর্তন করে বায়েজিদ লিংক রোডে অবস্থান নিয়ে পুলিশকে ফোনে বিষয়টি অবহিত করে। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চালকসহ গাড়িটি উদ্ধার করে। গাড়িটি লিংক রোডে যাওয়ার সময় পিছু ধাওয়া করে ইট পাটকেল ছোঁড়া হয়।

    এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি গেট এবং কাট্টলী এলাকার পানিপ্রবাহের একমাত্র মাধ্যম কালীর ছড়া খাল উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম ও আমরা আকবর শাহবাসী নামের কয়েকটি সংগঠন। সংগঠনগুলো দাবি করছে, পানিপ্রবাহের পথ বন্ধ করে সেখানে গরুর খামার গড়ে তুলেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর।

    অভিযোগে আরও জানা যায়, উত্তর পাহাড়তলীতে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার অভিযোগে কাউন্সিলর জসিমের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আকবরশাহ থানায় মামলা দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর। এর আগে ২০১৫ সালেও তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিলো পরিবেশ অধিদপ্তর।

    জানতে চাইলে আকবর শাহ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম শাকের আহমেদ বলেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন। কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

  • সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মান বন্ধ করতে বেলা সহ পাঁচ সংগঠনের লিগ্যাল নোটিশ

    সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মান বন্ধ করতে বেলা সহ পাঁচ সংগঠনের লিগ্যাল নোটিশ

    চট্টগ্রামের সিআরবিতে গাছপালা কেটে ও পরিবেশ নষ্ট করে হাসপাতাল নির্মান বন্ধ করে “বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা, জাতীয় ঐতিহ্য স্মারক বৃক্ষ এবং কুঞ্জ বন ও জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক স্থান ঘোষণা এবং শতবর্ষী গাছ গুলিকে স্মারক বৃক্ষ হিসেবে ঘোষণা” করার দাবি জানিয়ে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা সহ ৫টি সংগঠন।

    নোটিশটি রেলপথ মন্ত্রণালয় সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধান বনসংরক্ষক, বাংলাদেশ, রেলওয়ে জেনারেল ম্যানেজার পূর্বাঞ্চল, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ ও কোম্পানি লিঃ বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে। লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ কবীর।

    লিগেল নোটিশে উল্লেখ করা হয়,
    সম্প্রতি পত্র-পত্রিকায় সংবাদে দেখা যায় বাংলাদেশ রেলওয়ে ও বেসরকারি সংস্থা ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ এন্ড কোম্পানি লিমিটেড যৌথভাবে ৬ একর জায়গার উপর ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ১০০ আসন বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। যদিও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনাতেই সিআরবি এলাকাকে উন্মুক্ত স্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং চট্টগ্রাম নগরীর সকল পাহাড়-টিলা কে বিশেষ নিয়ন্ত্রণ অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করে সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত রক্ষিত অঞ্চল হিসেবে গণ্য করেছে।

    চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত অপরূপ নৈসর্গিক অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্যকলা ইতিহাসসমৃদ্ধ সিআরবি এলাকায় স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি হাসপাতাল থাকা সত্বেও একটি বেসরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মিত হলে পাহাড়-টিলা এবং অসংখ্য গাছপালা কাটা পড়বে। জীববৈচিত্র তাদের বাসস্থান হারাবে। জনসাধারণের যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে। লোক সমাগম হবে। যাতে করে সিআরবি অঞ্চল তার শত বছরের বৈশিষ্ট্য হারাবে এবং নির্জন এলাকাটি কোলাহল যুক্ত একটি ব্যস্ত এলাকায় পরিণতি হবে। তাতে করেই এ অঞ্চলের গাছ ও জীববৈচিত্র্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

    লিগ্যাল নোটিশ আরও বলা হয়, গাছপালা ও টিলার সমন্বয়ে মোট ২১০ একর এলাকায় রয়েছে সেন্ট্রাল ব্রিটিশ আমলের রেলওয়ে বিল্ডিং। অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন বাংলো, সিরিজ গর্জন সহ নানা শতবর্ষী গাছ। সমুদ্র তীরবর্তী নদীবেষ্টিত চট্টগ্রাম নগরী তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য দেশি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করে আসছে। নগর জীবনের ব্যস্ততার মাঝে একদণ্ড শান্তি খোঁজার জন্য নাগরিকদের সিআরবি এলাকায় সমবেত হন মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নির্মল বায়ু নির্জনতা উপভোগ ইত্যাদি কারণে। সেখানে শিরিষতলা নামে একটি প্রশস্ত মাঠ রয়েছে। যেখানে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ ও পহেলা ফাল্গুন ইত্যাদি উৎসব আয়োজন হয়ে থাকে।

    লিগ্যাল নোটিশ প্ররণের সাথে যুক্ত অন্যান্য সংগঠন হচ্ছে, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), এসোসিয়েসন ফর ল্যান্ড রিফফরম অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট, নিজেরা করি ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)।

  • বিরূপ পরিবেশে ডিম দিচ্ছে না বোস্তামী কাছিম,হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়নে নোটিশ দিবে বেলা

    বিরূপ পরিবেশে ডিম দিচ্ছে না বোস্তামী কাছিম,হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়নে নোটিশ দিবে বেলা

    পরিবেশ বিপন্ন ও ডিম দেয়ার উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় গত দুইবছর ধরে ডিম দিচ্ছনা বায়েজিদ বোস্তামী কাছিম। জাতিসংঘ ঘোষিত চরম বিপন্ন নান্দনিক এই প্রাণী রক্ষায় হাইকোর্টের সুনির্দিষ্ট নির্দশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

    আজ ২৭ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা আয়োজিত কমিউনিটি পরামর্শ সভা চট্টগ্রামের চাঁন্দগাস্থ বেলার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

    সিনিয়র সাংবাদিক ও পরিবেশ কর্মী আলীউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন বেলার প্রোগ্রাম এন্ড ফিল্ড কমিউনিটর এ এম এম মামুন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফিল্ড অফিসার জিয়াউর রহমান কল্লোল, ফারমিন এলাহি। কমিউনিটি সদস্যদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন রেজাউল করিম রাজা প্রমুখ।

    সভাপতির বক্তব্যে আলীউর রহমান বলেন, বোস্তামী কাছিম চট্টগ্রামের ঐতিহ্যের প্রতীক। বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারনে এই মহামূল্যবান প্রাণীটির জীবন বিপন্ন। উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মাজার কতৃপক্ষ, বনবিভাগ, জেলা প্রশাসন কেউ কাছিমগুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করেনি। বিষয়টি উচ্চ আদালতের আদেশ অবমাননাকর। সেজন্য বেলার পক্ষ থেকে কাছিম রক্ষায় নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

    সভায় বক্তারা বলেন, নরম খোলসের এই বোস্তামী কাছিম একমাত্র চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী মাজার পুকুরে বসবাস করে। চরম বিলুপ্ত এই প্রাণীটি রক্ষায় ২০১২ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ সমিতি বেলা কাছিম রক্ষায় হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করে। সেই মামলার রায়ে বায়েজিদ মাজার পুকুরটি পরিবেশ সঙ্কটাপন্ন এলাকা ঘোষণাসহ পুকুর রক্ষায় ছয়টি নির্দেশনা দেয়। যার কোনটি বাস্তবায়ন করা হয়নি।

    এই মামলার বিবাদী পক্ষ হচ্ছে, বায়েজিদ মাজার কমিটি, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়ট, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বনবিভাগ ও চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক।
    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • ট্যাংগ পুরস্কার পেল ‘বেলা’

    ট্যাংগ পুরস্কার পেল ‘বেলা’

    আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ নেয়ায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সম্মানজনক `ট্যাংগ পুরস্কার’ পেয়েছে।

    আইনের শাসন ক্যাটাগরিতে তাইওয়ানভিত্তিক দ্য ট্যাংগ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের বেলা, কলম্বিয়ার দ্য জাস্টিসিয়া ও লেবাননের দ্য লিগাল এজেন্ডা নামের সংগঠনকে যৌথভাবে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।

    রোববার (২১ জুন) পুরস্কার কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জুয়ান রং ইয়েহ সংগঠন তিনটির নাম ঘোষণা করেন। এই পুরস্কারের জন্য সংগঠনগুলোকে যৌথভাবে ১৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেয়া হবে। একইসঙ্গে গবেষণার জন্য তারা তিন লাখ ৩০ হাজার ডলার পাবে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারটি দেয়া হবে।

    এ বিষয়ে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এই স্বীকৃতি প্রমাণ করে যে বৈষম্য থাকলেও আমাদের দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভালো অগ্রগতি হচ্ছে। এই প্রাপ্তি মানুষের অধিকার রক্ষায় সুশাসন, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা তৈরিতে আরও ভালো কাজ করার দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে।

    তাইওয়ানের বেসরকারি উদ্যোক্তা ডক্টর স্যামুয়েল ২০১২ সালে এ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১৪ সাল থেকে আইনের শাসন, টেকসই উন্নয়ন ও জৈবপ্রযুক্তি বিজ্ঞান ক্যাটাগরিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তারা এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। পুরস্কারটি এবারই প্রথম পেল বাংলাদেশের কোনো সংগঠন।

    বাংলাদেশের বেলাকে এই পুরস্কার দেয়ার কারণ তুলে ধরতে গিয়ে ট্যাংগ ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, পরিবেশ সুরক্ষার দিক থেকে দুর্বল অবস্থায় থাকা এবং আইনের শাসনের নানা ঘাটতিতে থাকা একটি পরিস্থিতিতে বেলা কাজ করছে। আইনের শাসনের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে তারা একইসঙ্গে জনস্বার্থে মামলা করছে। আবার জনসচেতনতা তৈরিতে নানা প্রচারণা ও গবেষণা করছে। তারা এ পর্যন্ত ৩০০টিরও বেশি জনস্বার্থমূলক মামলা পরিচালনা করেছে।

    সর্বশেষ ২০১৭ সালে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ খালগুলো দখলমুক্ত করতে আইনি লড়াইয়ে নামে বেলা। খালগুলোর পানিপ্রবাহ ঠিক করতে বেলা উচ্চ আদালতে মামলা করে। উচ্চ আদালত সরকারকে ওই খালগুলো দখলমুক্ত ও পরিষ্কার করার জন্য নির্দেশ দেয়। ঢাকার বিপুল পরিমাণে মানুষ প্রতি বছর বর্ষায় যে জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে, তা থেকে রক্ষায় মামলা একটি আদর্শ উদাহরণ হয়ে থাকবে।

    ১৯৯২ সালে ড. মহিউদ্দিন ফারুকের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বেলা দেশে পরিবেশগত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। বেলার উদ্যোগের কারণে সংবিধান ও আইনের ইতিবাচক ব্যাখ্যার মাধ্যমে দেশে জনস্বার্থমূলক মামলার স্বীকৃতি আসে। স্বীকৃতি আসে পরিবেশের অধিকারের, যা সংবিধানে জীবনের অধিকারের অংশ উল্লেখ করে আদালত রায় প্রদান করেন।

    সংগঠনটি ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য ব্যবহার ও আমদানি রোধ, বর্জ্য ঝুঁকিতে থাকা শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা, পানির অধিকার রক্ষা, নদী দখল ও দূষণ রোধ, জলাশয় রক্ষা, শিল্প দূষণ, যানবাহনের দূষণ, বায়ু দূষণ, মাটি দূষণ রোধ, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও খনিজ আহরণ রোধ, ক্ষতিকর প্লাস্টিক ও কীটনাশকের ব্যবহার রোধ, পাহাড়-বন-কৃষি জমি রক্ষার কাজে নিরলসভাবে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

    ইতোপূর্বে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বেলা ২০০৩ সালে ইউনেপ-এর গ্লোবাল ৫০০ রোল অব অনার্স পুরস্কার, ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ পুরস্কার, ২০০৯ সালে এম সলিমুল্লাহ মেমোরিয়াল গোল্ড মেডেল পুরস্কার পেয়েছে।

    এছাড়াও বেলার প্রধান নির্বাহী ২০০৯ সালে গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্ট পুরস্কার এবং ২০১২ সালে র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার অর্জন করেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর