Tag: ভক্ত

  • আজ সরস্বতী পূজা: মন্ডপে মন্ডপে ভক্তদের আরাধনা

    আজ সরস্বতী পূজা: মন্ডপে মন্ডপে ভক্তদের আরাধনা

    হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা। আজ (শনিবার) সকাল থেকে সারাদেশের মন্ডপে মন্ডপে ও নিজ নিজ বাড়িতে সরস্বতীর পূজা উদযাপন হচ্ছে।

    তবে করোনার কারণে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি ও বিধি-নিষেধ মেনে সংক্ষিপ্ত পরিসরে এবারের পূজার আয়োজন করা হচ্ছে। আজ সকাল ৭টা ৭ মিনিটে শুরু হয় পঞ্চমী তিথি। আগামীকাল রবিবার সকাল ৭টা ৯ মিনিটে পূজার তিথি সমাপ্ত হবে।

    সরস্বতী পূজা বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী সরস্বতীর আরাধনাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় এ উৎসবটি শনিবার সকালে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ভক্তদের বাসা ও পূজামণ্ডপে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়। পূজা শেষে ভক্তরা অঞ্জলি গ্রহণ করেন। তাছাড়া এদিনে অসংখ্য শিশুদের হাতেখড়িরও আয়োজন করা হয়।

    শাস্ত্রীয় বিধান অনুযায়ী, মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ তিথি বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক।

    কল্যাণময়ী, ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দেবী সরস্বতীর আরাধনা করেন।

    বাংলাদেশে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিদ্যা ও শিল্পকলার দেবী সরস্বতীর পূজা হয়ে থাকলেও নভেল করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় এ বছর পূজামণ্ডপে সীমিত আকারে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হচ্ছে।

    সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও সরস্বতী পূজা বর্তমান রূপটি আধুনিককালে প্রচলিত হয়েছে। তবে প্রাচীন কালে তান্ত্রিক সাধকেরা সরস্বতী-সদৃশ দেবী বাগেশ্বরীর পূজা করতেন বলে জানা যায়।

    সরস্বতী দেবী শ্বেতশুভ্র বসনা। দেবীর এক হাতে বেদ, অন্য হাতে বীণা। এ জন্য তাকে বীণাপাণিও বলা হয়। সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, দেবী তার আশীর্বাদের মাধ্যমে মানুষের চেতনাকে উদ্দীপ্ত করতে প্রতি বছর আবির্ভূত হন ভক্তদের মাঝে।

    সরস্বতী পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তাঁরা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এ ভূখন্ডে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে আসছেন।

    দেবীর এই পূজাকে কেন্দ্র করে সারাদেশের বিভিন্ন পুজা মন্ডপে মন্ডপে ভক্তদের ঢল নামে। পূজাকে কেন্দ্র করে আনন্দে মেতে উঠে সনাতন ধর্মালম্বীরা।

    চট্টগ্রামের পটিয়া খরনা ইউনিয়নের পশ্চিম মুজাফরাবাদ সেন বাড়ির ঐতিহ্যবাহী নারায়ণ মন্দিরের পুরোহিত কাজল জানায়, মায়ের কাছে বিদ্যা বুদ্ধিদানের পাশাপাশি রোগশোগ থেকে মুক্তিলাভের প্রার্থনা করা হয়েছে। সবাই যেন ভালো থাকে এ জন্য মায়ের চরণে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

    ২৪ ঘন্টা/প্রিন্স

  • দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে ভক্তরা

    দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে ভক্তরা

    দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা ভাবছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। তবে, এর পক্ষে-বিপক্ষে মত দিচ্ছেন অনেকেই। দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ হলে বিশেষ করে ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থার শিডিউল নিয়ে বিপাকে পড়বে। তবে, ভক্তদের বেশির ভাগ এর পক্ষেই আছে। ভক্তদের বেশির ভাগই চায়, দুই বছর পর পর অনুষ্ঠিত হোক ফুটবলের এই মহাযজ্ঞ।

    এ ব্যাপারে একটি জরিপ করেছে। ফিফার ওয়েব সাইট অনুসারে ওই জরিপে বেশির ভাগ ভক্ত দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে।

    দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজন করা নিয়ে গত মে মাসে ভোটাভুটির ব্যবস্থা করেছিল ফিফা। ভোট আয়োজন করে ‘ইউ গভ’কে নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ওই জরিপে ১৫ হাজার ফুটবলপ্রেমী অংশ নেন।

    ফিফা নিজেদের ওয়েব সাইটে জানিয়েছে, এর মধ্যে ৫৫ শতাংশই বিশ্বকাপ আয়োজনের সময় চার বছর থেকে কমিয়ে আনার পক্ষে। ৩০ শতাংশ ভোটার দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন। প্রতি বছর বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে ১১ শতাংশ এবং ১৪ শতাংশ তিন বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে মত দেয়।

    বিষয়টি নিয়ে আরও বড় পর্যায়ে জরিপ চালাবে সংস্থাটি। ১০০-এর বেশি দেশজুড়ে এক লাখ লোকের মধ্যে ভোটাভুটি আয়োজনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পথে রয়েছে ফিফা।

    এদিকে, ফুটবল বিশ্বকাপ দুই বছর পর পর আয়োজনের পক্ষে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে আফ্রিকা মহাদেশ। বাংলাদেশ, নেপাল, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা- দক্ষিণ এশিয়ার এই চার দলও দুই বছর পর পর বিশ্বকাপের পক্ষে।

    চারটি দেশের ফুটবল সংস্থার সভাপতিদের সই করা চিঠিতে বিশ্বকাপ দুই বছর পর আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, অ্যাসোসিয়েশন অব মালদ্বীপের সভাপতি বাসাম আদেল জলিল, অল নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কারমা তিসেরাং শেরপা ও ফুটবল ফেডারেশন অব শ্রীলঙ্কার সভাপতি জাসওয়ার উমর।

    এন-কে

  • মায়াপুরে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সব থেকে বড় মন্দির : এক সঙ্গে উপাসনা করবে ১০ হাজার ভক্ত

    মায়াপুরে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সব থেকে বড় মন্দির : এক সঙ্গে উপাসনা করবে ১০ হাজার ভক্ত

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ : আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মায়াপুরে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সব থেকে বড় মন্দির ‘বেদিক প্লানেটারিয়াম’। এক লক্ষ স্কোয়্যার ফুট জুড়ে তৈরি হচ্ছে সেই মন্দির।

    ওই মন্দির শুধুমাত্র বিশ্বের সবথেকে বড় নয়, এটি হয়ে উঠবে যেন আধুনিককালের এক প্রাসাদ। এই মন্দিরে একসঙ্গে ১০ হাজার ভক্ত উপাসনা করতে পারবে। আধুনিকতম প্রযুক্তির ব্যবহারে প্রার্থনার লাইভ সম্প্রচার হবে পুরো বিশ্ব জুড়ে।

    জানা যায়, বিশাল বড় বড় ঝাড়বাতি দিয়ে সাজানো হবে এই মন্দির। প্রায় বছর দশেক আগে এই মন্দির তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ২০২২-এর মধ্যে মন্দির তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    এখনও পর্যন্ত দু’কোটি কিলোগ্রাম সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে এই মন্দির তৈরির কাজে। ফেব্রুয়ারিতেই সাধারণের জন্য খুলে যাবে মন্দির। চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ।মায়াপুরে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সব থেকে বড় মন্দির

    প্রত্যেকটি ফ্লোরের আকার হবে এক লক্ষ স্কোয়্যার ফুট। আর এই মন্দিরের গম্বুজ হবে বিশ্বের সব থেকে বড় আর একেবারে আলাদা। ৩৮০ ফুট উঁচু সেই মন্দিরে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ নীল রঙের বলিভিয়ান মার্বেল। এতে রয়েছে পাশ্চাত্য স্থাপত্যের প্রভাব।

    মন্দির কর্তৃপক্ষের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সদাভূজ দাস বলেন, ‘প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মিশ্রণে এই মন্দির তৈরি হচ্ছে। বেদের সংস্কৃতি গোটা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই মন্দির তৈরি করা হচ্ছে।

    তিনি বলেন, ভিয়েতনাম থেকে মার্বেল আনা হয়েছে। কিছু মার্বেল ভারতেও তৈরি হয়েছে।’ ২০ মিটার লম্বা ঝাড়বাতি বানানো হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

    কর্তৃপক্ষের আর এক সদস্য সুব্রত দাস বলেন, গোটা বিশ্বের মানুষকে মায়াপুরে নিয়ে আসার জন্যই এমন মন্দির। এখানে এক সঙ্গে ১০ হাজার ভক্ত উপাসনা করতে পারবেন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য খোলা থাকবে মন্দিরের দরজা।মায়াপুরে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সব থেকে বড় মন্দির

    এমনিতেই ইস্কনের হেডকোয়ার্টার মায়াপুরে। তাই মায়াপুর জুড়ে রয়েছে কৃষ্ণ বন্দনার বহু স্থান। বিভিন্ন জায়গায় শোনা যায় শ্রীকৃষ্ণের ভজন। প্রতি বছর প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ মায়াপুরে আসেন। সম্প্রতি মায়াপুরকে ‘হেরিটেজ’ শহর ঘোষণাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    এবার সেই মায়াপুরেই তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সব থেকে এ বড় মন্দিরটি। খুব শীঘ্রই যে এই মন্দির মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠবে তা বোঝাই যাচ্ছে। সূত্র : kolkata24x7

  • ভক্ত, পূর্ণার্থী ও সন্নাসীদের মিলনমেলায় পরিণত বাঁশখালীর ঋষিকুম্ভ মেলা

    ভক্ত, পূর্ণার্থী ও সন্নাসীদের মিলনমেলায় পরিণত বাঁশখালীর ঋষিকুম্ভ মেলা

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। রাজীব প্রিন্স : চট্টগ্রামের বাঁশখালী ঋষিধামে বর্ণাঢ্য মহাশোভাযাত্রার মাধ্যমে গত ৩১ জানুয়ারি ১০ দিন ব্যাপী বিংশতম আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভমেলা শুরু হয়।

    আজ শনিবার ছিল মেলার নবম দিন। এ দিনে চলছে অহোরাত্র মহানাম সংকীর্তন। আগামীকাল রবিবার মেলার দশম ও শেষ দিনে মঙ্গল আরতি ও ষোড়শ প্রহরব্যাপী মহা নামযজ্ঞের পূর্ণাহুতি, গঙ্গাপূজা ও মহাস্নান, বিশ্ব কল্যাণে গীতাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে।

    মেলার প্রথমদিনে মহাশোভাযাত্রার পৌরহিত্য করেন চট্টগ্রাম তুলসীধাম ও বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ স্বামী সুদর্শনানন্দ পুরী মহারাজ। মহাশোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন দেশ হতে আগত সাধু সন্ন্যাসীগণ।

    মেলার শুরু থেকেই প্রতিদিন ঢল নামছে হাজার হাজার পূর্ণার্থীর। মেলা উপলক্ষে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সন্ন্যাসীরাও ভিড় জমিয়েছেন। প্রতিদিনই রুপ নিয়েছে ভক্ত, পূর্ণার্থী ও সন্নাসীদের মিলনমেলায়।

    বাঁশখালী উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের কোকদণ্ডী গ্রামের ঋষিধামের ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভমেলায় অষ্টম দিন শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ঋষিধাম মন্দিরে চলছে পূজা-অর্চনা। মন্দিরে ঢোকার মুখে পাশের মাঠে বসেছে মেলা। পাশেই রাখা হয়েছে দুর দুরান্ত থেকে আগত ভক্তদের জন্য প্রসাদ আস্বাদনের ব্যবস্থা। কুম্ভমেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের গ্রামেও উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে।

    মন্দিরের সুদৃশ্য বিশাল ফটক দিয়ে শত শত মানুষের ভিড় ঠেলে মন্দিরে মন্দিরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় কিছু দূরে মঞ্চে কয়েকজন যোগবিদ শিশুদের যোগাসন শিক্ষা দিচ্ছেন। যোগাসনের মাধ্যমে রোগমুক্তির এই শিক্ষা দেখতে মঞ্চের সামনে ভিড় করেছেন শত শত নর-নারী।

    হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী ভারতের চারটি স্থানে কুম্ভমেলা হয়। এগুলো হলো হরিদ্বার, প্রয়াগ, নাসিক ও উজ্জয়িনী। তিন বছর পর চক্রাকারে চারটি স্থানে কুম্ভমেলা বসে। সে হিসাবে একেকটি স্থানে ১২ বছর পরপর এই মেলা ঘুরে আসে। বাংলাদেশে একমাত্র ঋষিধামেই তিন বছর পরপর এই মেলার আয়োজন করা হয়।

    মেলায় কথা হয় বিংশতম আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভমেলা উদ্যাপন পরিষদের আহবায়ক দেবাশীষ পালিতের সাথে। তিনি মেলা সুন্দর ও শান্তিপুর্ণভাবে কার্যক্রম পরিচালনায় কমিটির পক্ষ থেকে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় কোন বিশৃঙ্খলা ছাড়াই মেলার অষ্টম দিন পর্যন্ত অতিবাহিত হয়েছে বলেন।

    তিনি জানায়, যাঁরা দূরদূরান্ত থেকে ভারতের এই চারটি স্থানে গিয়ে তীর্থ করতে অক্ষম, তাঁদের কথা বিবেচনা করে বাঁশখালী ঋষিধামের প্রতিষ্ঠাতা মোহন্ত শ্রীমৎ অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ ১৯৫৭ সাল থেকে এখানে কুম্ভমেলার প্রবর্তন করেছিলেন। ভারতের চারটি স্থানের যেকোনো একটি মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার এক বছর পর বাংলা মাঘ মাসের ত্রয়োদশী তিথিতে ঋষিধামে কুম্ভমেলা বসে।

    তিনি আরো বলেন, প্রতিবারই ভারতসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক সন্ন্যাসী আসেন। এটি এক মহা মিলনমেলা। মেলা উপলক্ষে দূরদূরান্ত থেকে ইতিমধ্যে অর্ধশতেরও বেশি সন্ন্যাসী এসেছেন।

    মন্দিরে আগত কয়েকজন সন্ন্যাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কুম্ভ মানে কলস। অমৃতের কলস। অমরত্ব লাভের আশায় একবার দেবতাদের সঙ্গে অসুরকুলের সমুদ্রমন্থন হয়েছিল। সমুদ্রমন্থনের ফলে উঠে এল বহু মূল্যবান সামগ্রী। উঠল একটি অমৃতের ভাণ্ড। অসুরদের এই অমৃতকুম্ভ না দেওয়ার জন্য দেবরাজ ইন্দ্রপুত্র জয়ন্ত একসময় সেটি নিয়ে পালালেন।

    পালানোর সময় অমৃত ভাণ্ডার রাখা হয়েছিল চারটি স্থানে। হরিদ্বার, প্রয়াগ, ত্রিম্বকেশ্বর-নাসিক ও উজ্জয়িনী এই চারটি স্থানে কলস থেকে কয়েক ফোঁটা অমৃত রস পড়েছিল বলে ধারণা। তাই এই চারটি স্থানে অমৃত সুধারস আস্বাদনের জন্য বসে কুম্ভমেলা। এগুলো তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত।

    মেলা উপলক্ষে প্রতিদিনই চলছে নানা অনুষ্ঠান। গত ৯দিন ধরে মন্দির প্রাঙ্গণে শোভাযাত্রা, দেব-দেবীর পূজা, চণ্ডীযজ্ঞ, গঙ্গা স্নান, ঋষি সম্মেলন, ধর্মীয় সংগীতানুষ্ঠান, ধর্ম মহাসম্মেলন এমন নানা আয়োজনে মুখর হয়ে ওঠে বাঁশখালীর জনপদ। অংশ নেন দেশ-বিদেশ থেকে আসা ঋষি-সন্ন্যাসীরা।

    এর আগে ঋষিকুম্ভ মেলা উপলক্ষে মঙ্গল আরতি ও জয়গানে মঙ্গল আহ্বান, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, তৈজস সামগ্রী সহকারে ভান্ডারগৃহের উদ্বোধন, মহাশোভাযাত্রা, গুরু মন্দিরে শ্রীগুরু বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা ও মন্দিরের মাঙ্গলিক কাজের উদ্বোধন, গুরু মহারাজের পূজা, ভোগরাগ ও সমবেত প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

    এছাড়াও ধর্মসম্মেলন ও সঙ্গীতাঞ্জলি, সন্ধ্যারতি ও সমবেত প্রার্থনা, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, গীতাপাঠ প্রতিযোগিতা, সঙ্গীতাঞ্জলি, চণ্ডীযজ্ঞ, ভগবান শ্রী বিষ্ণুর অভিষেক, সংগীতাঞ্জলি, ধর্ম মহাসম্মেলন, দেবাদিদেব মহাদেব’র অভিষেক, সংগীতাঞ্জলি, ধর্ম মহাসম্মেলন, নাটক যুগাবতার পরম পুরুষ স্বামী অদ্বৈতানন্দ, দশমহাবিদ্যা পূজা, ধর্মীয় সংগীতাঞ্জলি, স্বামীজি রচিত শ্রী শ্রী দশমহাবিদ্যা অনুসরণে ধর্ম মহাসম্মেলন, গঙ্গা পূজা ও মহাস্নান, ঋষিধ্বজা উত্তোলন, বেদমন্ত্র পাঠ, ১০৮ দীপমণ্ডিত মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, সাধু ভাণ্ডার ও আন্তর্জাতিক ঋষি সম্মেলন, গঙ্গারতি ও অদ্বৈতানন্দ সরোবরে দীপদান উৎসব, সমবেত প্রার্থনা, অষ্টপ্রহরব্যাপী মধুসুদন কীর্তনের শুভ অধিবাস, চতুষ্প্রহরব্যাপী অহোরাত্র কীর্তন, রাধাকৃষ্ণের অভিষেক, সংগীতাঞ্জলি, ধর্ম মহাসম্মেলন, ষোড়শ প্রহরব্যাপী মহানাম যজ্ঞের অধিবাস, ষোড়শপ্রহর ব্যাপী মহানামযজ্ঞের শুভারম্ভ ও অহোরাত্র নামসংকীর্তন, গঙ্গাপূজা ও মহাস্নান, সপ্তশতী তুলসীদান, বিশ্বকল্যাণে পঞ্চাঙ্গ স্বস্থ্যয়ন, শান্তি হোম ও অঞ্জলি প্রদান, অন্নকূট উৎসব, গুরু মহারাজের ভোগরাগ ও সমবেত প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

    অনুষ্ঠানমালায় পৌরহিত্য করছেন ঋষিধামের মোহন্ত শ্রীমৎ স্বামী সুদর্শনানন্দ পুরী মহারাজ। বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে অংশ নেওয়া লাখো পুণ্যার্থীদের জন্য প্রতিদিন দুপুর ও রাতে থাকছে অন্ন প্রসাদ। লোকজ পণ্যের বিশাল পসরা বসেছে মেলা প্রাঙ্গণে। মেলায় বাঁশ-বেতের জিনিসপত্র, দা-বঁটি, হাতপাখা, শিশুদের খেলনাসহ নানা পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।