চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ভেজাল ঘি, মধু এবং ওষুধ বিক্রির অভিযোগে চট্টগ্রামের দুই প্রতিষ্ঠানকে চার লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরীর বায়েজিদ এলাকার কল্পনা কমোডিটিস এবং বিকেলে মুরাদপুর এলাকার এক্সেলেন্ট ওয়ার্ল্ড নামের দুটি প্রতিষ্ঠানকে এ জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। বিএসটিআই ও ওষুধ প্রশাধন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে সহযোগিতা করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন মুরাদপুর মোড়ের করিমস আইকন ভবনের সাততলায় এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড নামের একটি ভেজাল পণ্য বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই প্রতিষ্ঠানে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, গ্যাস্ট্রিক ও ডায়াবেটিসের ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন ফুড সাপ্লিমেন্ট চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রির প্রমাণ পায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া রোগা থেকে মোটা হওয়া, হার্টের সমস্যা দূর করা, মেয়েদের ঋতুকালীন বিভিন্ন সমস্যা দূর করা এবং সর্দি-কাশি নিরাময়ের মতো বিজ্ঞাপন দিয়ে ওষুধ বিক্রি করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়া বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়া বিএসটিআইয়ের ভুয়া লোগো ব্যবহার করে বডি লোশন এবং মধু বিক্রি করছিল প্রতিষ্ঠানটি। চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে এসব ভেজাল ও অবৈধ পণ্য বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ গ্রাহকদের প্রতারিত করে আসছিল। এসব অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার আবু তাহেরকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে প্রায় দুই লাখ টাকার নকল, অবৈধ ও ভেজাল পণ্য জব্দ করে বিনষ্ট করা হয়।
একই দিন সকালে বায়েজীদ এলাকার বিসিক শিল্পনগরীতে কল্পনা কমোডিটিস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। কল্পনা কমোডিটিস নামের ওই কারখানাটিতে ঘি তৈরি করার প্রমাণ পায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রতিষ্ঠানটি বিএসটিআইয়ের অনুমোদন না নিয়েই ১০ ধরনের ঘি তৈরি করে বিএসটিআইয়ের ভুয়া লোগো লাগিয়ে বাজারজাত করে আসছিল।
ভ্রাম্যমাণ আদালত জানতে পারে কারখানাটিতে রাত ১২টার পর থেকে কাজ শুরু করে সকাল হওয়ার আগেই কাজ শেষ করা হতো। যে কারণে স্থানীয় লোকজন কারখানার কার্যক্রম সম্পর্কে জানতেন না। এসময় কারখানা মালিক জগদীশ ঘোষকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার প্রতীক দত্ত বলেন, অবৈধ ও ভেজাল পণ্য উৎপাদন, এসব বিপণন করে সাধারণ মানুষদের প্রতারিত করা হচ্ছিল। চট্টগ্রামে অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পাওয়া গেছে যারা অবৈধ ও ভেজাল পণ্য বাজারজাত করে আসছিল। বিশেষত ভেজাল ঘি ও ভেজাল ওষুধ বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি হচ্ছিল।