মেহেদী হাসান,চবি প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে(চবি) উদ্বোধন করা হয়েছে স্যানিটারি ন্যাপকিন সম্বলিত ভেন্ডিং মেশিন। যেখানে পাঁচ টাকার ধাতব মুদ্রা ফেললেই বেরিয়ে আসবে প্যাড। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি অনুষদ ও শেখ হাসিনা হলে এ সেবা দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৮ই ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালযের ব্যাবসায় প্রশাসন অনুষদ অডিটরিয়ামে এর উদ্বোধন করেন অনুষদটির নব-নির্বাচিত ডিন প্রফেসর এস. এম সালামত উল্যা ভূঁইয়া। তিনি বলেন, এটা অসাধারণ একটা উদ্যোগ। এর মধ্য দিয়ে নারী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিরাট অগ্রগতি সাধিত হবে। অনেক দেশের মত আমাদের দেশে নারী স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিশেষ করে নারীর বিশেষ প্রয়োজনকে মাথায় রেখে কখনো কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় না। সেখান থেকে এরকম একটি উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের নারীদের ১২-৪০ বছর সময়টায় শারীরিক প্রয়োজনে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যাবহার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে তারা দোকান থেকে এটি কিনতে ইতস্তত বোধ করে।বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেন্ডিং মেশিন চালুর মাধ্যমে মেয়েরা সেই অসুবিধা থেকে বাঁচবে এবং তাদের স্বাস্থ্যও নিরাপদ থাকবে।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ সাহিদুর রহমান, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শাহনেওয়াজ মাহমুদ সোহেল, মার্কেটিং বিভাগের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ, এলজি কোম্পানির বাংলাদেশ এ্যাম্বাসেডর ডি. কে. সন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচ. এম. কামরুল হাসান, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসাইন টিপু সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিনের যাত্রা শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তৌসিফ আহমেদ রাব্বির মাধ্যমে। তিনি বলেন, ফেসবুকের কল্যাণে বিভিন্ন দেশের স্কুলগুলোতে ভেন্ডিং মেশিন আছে এমন সংবাদ দেখতে পাই। তখন থেকেই এই বিষয়টা নিয়ে কাজ করার আগ্রহ। যেহেতু আমাদের দেশের মধ্যে ভেন্ডিং মেশিন এর ব্যবহার সম্পর্কে জানা ছিলো না। ২০১৯ সালে এলজি অ্যাম্বাসেডর প্রোগ্রামে এই প্রজেক্ট নিয়ে অংশগ্রহণ করি, পরবর্তীতে তারা আমার প্রজেক্ট কে সিলেক্ট করে এবং এটি বাস্তবায়নে আর্থিক অনুদান দেয়। পুরস্কার স্বরূপ এলজি স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনে সাড়ে চার লাখ টাকা অনুদান পাই। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শুরু করি মেশিন ইম্পোর্টের কাজ। এক সপ্তাহ হলো যা হাতে এসে পৌঁছায়।
ভেন্ডিং মেশিনের ব্যবহারঃ প্রতিটি ভেন্ডিং মেশিনে ১০০টি প্যাড রাখা থাকবে। ভেন্ডিং মেশিনগুলো কয়েন অপারেটেড। প্রতিটি মেশিনের নির্দিষ্ট স্থানে ৫ টাকার কয়েন (ধাতব মুদ্রা) ফেললেই বেরিয়ে আসবে একটি প্যাড। সহজেই ছাত্রীরা এটি ব্যবহার করতে পারবেন। ছাত্রীদের মধ্যে এটি ব্যবহারের প্রবণতা বাড়াতে উদ্বোধনের প্রথম দুই সপ্তাহ বিনামূল্যে ভেন্ডিং মেশিন থেকে প্যাড সংগ্রহ করা যাবে। এরপর থেকে নির্দিষ্ট মূল্যেই প্যাড সংগ্রহ করতে হবে। আর ভেন্ডিং মেশিনে সরবরাহকৃত প্যাডগুলো অত্যন্ত উন্নতমানের। যা সেনোরা ব্র্যন্ডের আল্ট্রা থিন প্যাড। তবে ছাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী পরবর্তীতে অন্য প্যাডও রাখা হতে পারে।