Tag: মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

  • মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে চট্টগ্রাম জেলা জজশীপ ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীর শ্রদ্ধা

    মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে চট্টগ্রাম জেলা জজশীপ ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীর শ্রদ্ধা

    মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা জজশীপ ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসী কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ড. আজিজ আহমদ ভূঞা মহোদয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

    উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম কামরুন নাহার রুমী।

    এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সকল অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজগণ এবং জেলা জজশীপ ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীতে কর্মরত সকল পর্যায়ের বিচারকবৃন্দ।

    অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

    মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর অবদান, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষাধিক শহীদের প্রাণ ও ২ লক্ষাধিক মা- বোনের সম্ভ্রম আত্মত্যাগ, যুদ্ধাপরাধীদপর বিচারে বিচার বিভাগের অবদান এবং স্বাধীনতা রক্ষায় স্বাধীন বিচার বিভাগের ভূমিকা সহ বিভিন্ন বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা করা হয়।

  • রাউজানে নানা আয়োজনে ৫৩ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন

    রাউজানে নানা আয়োজনে ৫৩ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন

    রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:চট্টগ্রামের রাউজানে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। ৫৩ তম মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে।

    রবিবার ২৬ মার্চ সকালে রাউজান উপজেলা সদর মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের নেতৃবৃন্দরা।

    পরে রাউজান সরকারী কলেজ মাঠে কুচকাওয়াজ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে রাউজানের বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী ও গার্লস গাইড সদস্যদের দেওয়া কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহন করেন এমপি ফজলে করিম চৌধুরী।

    অনুষ্ঠানে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরুস্কার বিতরন ও আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সামাদ শিকদারের সভাপতিত্বে ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিক্সন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন এমপি ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবদুল ওহাব, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন, পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ, সহকারী কমিশনার ভুমি রিদুয়ানুল ইসলাম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল হারুন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম. বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউছুপ খান, সাধন পালিত, রাউজান সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম নেওয়াজ চৌধুরীসহ মুক্তিযোদ্ধা, প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও রাউজান উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সমাজিক সংগঠন রাউজান উপজেলা সদর মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

  • চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

    চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

    যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের লক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বর্ণাঢ্য কর্মসূচির অয়োজন করেছেন। ২৬শে মার্চ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেখ রাসেল চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।

    এসময় নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান এনডিসি, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফি উল্লাহ, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) একেএম সরোয়ার কামাল, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোঃ মহিউদ্দিন, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক মোঃ আবু সাইদ, চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ মজিবুর রহমান পাটওয়ারী, বিভাগীয় ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর, রেলওয়ে পুলিশ, পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, নৌ-পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, এপিবিএন, সিআইডি, আনসার ভিডিপি, পরিবেশ অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, শিশু একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি,খাদ্য বিভাগ, সমাজসেবা কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান।

    এর পর সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্ত¡শাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

    এদিন সকাল ৮টায় এম. এ আজিজ স্টেডিয়ামে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পুলিশ, কারারক্ষী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আনসার-ভিডিপি, বিএনসিসি, বাংলাদেশ স্কাউটস, গার্লস গাইড কর্তৃক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান পরিদর্শন শেষে সালাম গ্রহণ।

    প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সালাম গ্রহণ করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ আমিনুর রহমান, এনডিসি। এর পর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি।

    জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফি উল্লাহ, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) একেএম সরোয়ার কামাল।

    শেষে জেলা শিশু একাডেমিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে (শারীরিক কসরত) অনুষ্ঠিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে এদিন বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন” শীর্ষক আলোচনা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হয়।

    চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান এনডিসি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফি উল্লাহ, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) একেএম সরোয়ার কামাল। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মহানগরীর ১৩০ জন ও জেলার ২২০ জনসহ মোট ৩৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

    আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান এনডিসি বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস বাঙইল জাতির পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে ৩০ লাখ শহিদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করার মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও সুদক্ষ দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ অদম্য অগ্রযাত্রায় স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় প্রবেশের একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক অতিক্রম করেছে। সরকারের এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।

    এছাড়া সুবিধাজনক সময়ে হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, শিশু পরিবার, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশু কেন্দ্রসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, জাতির শান্তি ও অগ্রগতি এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনায় মসজিদ, মন্দির, গীর্জা প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা। বিকেল ৪টায় শিশুপার্ক, যাদুঘর ও চিড়িয়াখানায় বিনা টিকিটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

  • মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

    মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

    আজ ৫৩তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের ওপর অতর্কিত গণহত্যা অভিযান ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু এবং বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পূর্বে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ রাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

    ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। ওই ঘোষণা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়।

    বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতারের আগে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পাশাপাশি যে কোনো মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। মুহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। সেই সময় বাস্তবতা ও নিরাপত্তা জনিত কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার এই ঘোষণা নথি সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল না। পরবর্তী সময়ে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

    তৎকালীন ইপিআর-এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পরে। পরে চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বেশ কয়েকজন শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।

    বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মূল্যবান দলিলটি সেখানে লিপিবদ্ধ হয়েছে এভাবে ‘ইহাই হয়তো আমাদের শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যাহা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও। শেখ মুজিবুর রহমান। ২৬ মার্চ, ১৯৭১।’

    ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ ডকুমেন্টস-এ ওই ঘোষণার পূর্ণ বিবরণ প্রকাশিত হয়েছিল। ঘোষণায় বলা হয়, ‘এই-ই হয়তো আপনাদের জন্য আমার শেষ বাণী হতে পারে। আজকে থেকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি, যে যেখানেই থাকুন, যে অবস্থাতেই থাকুন এবং হাতে যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। ততদিন পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান-যতদিন না দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর শেষ সৈনিকটি বাংলাদেশের মাটি থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হচ্ছে।’

    দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধর পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে একটি ভূখন্ডের, যার নাম বাংলাদেশ।

    ১৯৭১ সালে সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার বার্ষিক বাজেট আজ পরিণত হয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেটে। সেদিনের ১২৯ ডলার মাথাপিছু আয়ের দেশটিতে বর্তমান মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮শ ১৪ মার্কিন ডলার। সময় পেরিয়েছে, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও এগিয়েছে। মাথাপিছু আয়, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধি, বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও ব্যবহার এবং সম্পদ উৎপাদন ও আহরণ দৃশ্যমানভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

    স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ দেশ আখ্যা দেয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসে দারিদ্র্য আর দুর্যোগের বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রাপ্তি নিয়েই এবারও জাতি স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করবে।

    মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এদিন ঢাকাসহ সারাদেশে প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

    এ উপলক্ষে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে।

    এদিন সরকারি ছুটির দিন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী প্রদান করবেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র, নিবন্ধ ও সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।

  • মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী

    মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী

    আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল একটি ভূখন্ড, যার নাম বাংলাদেশ। সবুজ জমিনে রক্তিম সূর্যখচিত মানচিত্রের এ দেশটির স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী।

    স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এদিনটি বাংলাদেশের স্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছরও। এবার তাই উদযাপনেও যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। এর সাথে আর একটি নতুন পালক যোগ হয়েছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জাতিসংঘের চুড়ান্ত সুপারিশ।

    মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা যোগ্যতা নির্ধারণের তিনটি সূচকের ২০১৮ ও ২০২১ সালের মূল্যায়নে মান অর্জন করায় এলডিসি থেকে উত্তরণের সুপারিশ পায় বাংলাদেশ। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) সম্প্রতি এ সুপারিশ করেছে।

    বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের সুপারিশ করার এই ঘটনাকে বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামের উন্নয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের মিল আছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামের উন্নয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের যে তুলনা দেওয়া হয়েছে, তার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এই দেশগুলোও রপ্তানিভিত্তিক উন্নয়নের পথে হেঁটে আজ এত দূর গিয়েছে। আধুনিক ইতিহাসে দেখা গেছে, রপ্তানিমুখী উন্নয়নের বদৌলতে অতি নিম্ন আয়ের দেশও মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হতে পারে। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার সফল অর্থনীতি হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

    স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ দেশ আখ্যা দেয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে দারিদ্র্য আর দুর্যোগের বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রাপ্তি নিয়েই এবার জাতি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ২০২১ সালে স্বাধীনতা লাভের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছে। এই মহান উৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে, আমরা বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত এবং একটি মর্যাদা সম্পন্ন জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই যাতে কেউ আমাদেরকে দরিদ্র ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ দেশ হিসেবে উল্লেখ করে অবহেলা করতে না পারে।’

    বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি একটি প্রবন্ধে লিখেছেন, বিজয় অর্জনের পর ৫০ বছরের পথচলায় দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। একাত্তরে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি স্বতন্ত্র দেশ পেয়েছি, আর তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে তুলতে চলেছি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

    অনেক প্রাপ্তি নিয়েও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবার উদযাপিত হবে অন্যরকম ভাবে। এমন একটি সময়ে উদযাপন হবে, যখন বাংলাদেশসহ চারদিকে বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) থাবা। এর মধ্যেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে দশদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। গত ১৭ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে এ অনুষ্ঠান। বিদ্যমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আয়োজিত এসব অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশী অতিথিরা অংশগ্রহণ করেছেন। ১৭ মার্চ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্, ১৯ মার্চ অনুষ্ঠানে শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, ২২ মার্চ অনুষ্ঠানে নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভা-ারি, ২৪ মার্চ অনুষ্ঠানে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং উপস্থিত ছিলেন। আগামীকাল ২৬ মার্চ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকার কথা।

    স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতি মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। সাভার জাতীয় স্মৃতি সৌধ ও ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দিনের কর্মসূচি।

    বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারি দল আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দেন।

    একাত্তরের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালীদের উপর অতর্কিত হামলা চালালে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। এই ঘোষণা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়। ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা।

    সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। মুহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। সেই সময় বাস্তবতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার এই ঘোষণা নথি সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল না। পরবর্তী সময়ে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

    ১৯৮২সালে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্র তৃতীয় খন্ডে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের এই ঘোষণা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয় ২৫ মার্চ মধ্য রাতের পর অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে এ ঘোষণা দেন তিনি। যা তৎকালীন ইপিআর এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পরে। পরে চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বেশ কয়েকজন শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।

    বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মূল্যবান দলিলটি সেখানে লিপিবদ্ধ হয়েছে এভাবে ‘ইহাই হয়তো আমাদের শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যাহা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও। শেখ মুজিবুর রহমান। ২৬ মার্চ, ১৯৭১।’

    ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ ডকুমেন্টস-এ ওই ঘোষণার পূর্ণ বিবরণ প্রকাশিত হয়েছিল। ঘোষণায় বলা হয়, ‘এই-ই হয়তো আপনাদের জন্য আমার শেষ বাণী হতে পারে। আজকে থেকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি- যে যেখানেই থাকুন, যে অবস্থাতেই থাকুন এবং হাতে যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। ততদিন পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান-যতদিন না দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর শেষ সৈনিকটি বাংলাদেশের মাটি থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হচ্ছে।’

  • আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

    আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

    আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে অনন্যসাধারণ একটি দিন। সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগায় দিনটি। একাত্তরের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালালে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এই ঘোষণা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়।

    স্বাধীনতার এই ৪৯তম বার্ষিকীতে জাতি মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোসহ সকল জাতীয় কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। আওয়ামী লীগও এর আগে স্বাধীনতা দিবসের সকল কর্মসূচি বাতিল ঘোষণা করে।

    ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা।

    সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যেকোনো মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। মূহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়।

    সেই সময় বাস্তবতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার এই ঘোষণা নথি সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল না। পরবর্তী সময়ে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্র তৃতীয় খণ্ডে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের এই ঘোষণা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ২৫ মার্চ মধ্য রাতের পর অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে এ ঘোষণা দেন তিনি। যা তৎকালীন ইপিআরের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। পরে চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বেশ কয়েকজন শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।

    বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মূল্যবান দলিলটি সেখানে লিপিবদ্ধ হয়েছে এভাবে ‘ইহাই হয়তো আমাদের শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যাহা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও। শেখ মুজিবুর রহমান। ২৬ মার্চ, ১৯৭১।’

    ২০১৬ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশের সংবিধানের উপক্রমণিকায় এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানে বাংলার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জনসভায় এক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বর্ণনা করিয়া স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হইবার ডাক দেন এবং ঘোষণা করেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

    উপক্রমণিকায় আরও বলা হয়েছে, ‘রক্তপাতহীন স্বাধীনতাপ্রাপ্তির প্রত্যাশায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের সামরিক জান্তা এবং রাজনৈতিক নেতাদের সহিত ঢাকায় আলোচনায় বসেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাত্রিতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে নির্বিচারে গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করতে থাকে। এমতাবস্থায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। এই ঘোষণা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়।’

    অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু স্বকণ্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এমন তথ্য নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এ রকম একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, একাত্তর সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি আর্মি ঢাকা রেডিও’র দখল নিলেও, গোপন তিনটি ট্রান্সমিটার আগে থেকে প্রস্তুত রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেগুলোতে টেলিফোনে নিজের ঘোষণা রেকর্ড করান তিনি। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বার্তা প্রচারের ব্যবস্থা করেন। নিবন্ধে আরো বলা হয়, চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র চালু হওয়ার অন্তত ১৮ ঘণ্টা আগে গোপন রেডিও মনিটর করে শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার সংবাদ প্রকাশ করে বিশ্ব গণমাধ্যম।

    লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজীর জনসংযোগ অফিসারের দায়িত্ব পালনকারী সিদ্দিক সালিকের ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থেও এ সংক্রান্ত একটি বিবরণেও এর সত্যতা পাওয়া যায়। সিদ্দিক সালিক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জেনারেল নিয়াজীর পাশেই ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অনুগত পাকিস্তানি হিসেবে পাক সামরিক জান্তার চক্রান্ত তিনি খুব কাছে থেকেই দেখেছেন। ২৫ মার্চ, অপারেশন সার্চ লাইট শুরুর মুহূর্ত নিয়ে তিনি ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থে লিখেন “এভাবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সামরিক কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। এমন আঘাত হানার নির্ধারিত মুহূর্ত (এইচ-আওয়ার) পর্যন্ত স্থির থাকার চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেল। নরকের দরজা উন্মুক্ত হয়ে গেল। যখন প্রথম গুলিটি বর্ষিত হলো, ঠিক সেই মুহূর্তে পাকিস্তান রেডিও’র সরকারি তরঙ্গের (ওয়েব লেংনথ) কাছাকাছি একটি তরঙ্গ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষীণ কণ্ঠস্বর ভেসে এলো। ওই কণ্ঠের বাণী মনে হলো আগেই রেকর্ড করে রাখা হয়েছিল। তাতে শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানকে গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করলেন।”

    ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ ডকুমেন্টসে ওই ঘোষণার পূর্ণ বিবরণ প্রকাশিত হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ঘোষণায় বলা হয়, এই-ই হয়তো আপনাদের জন্য আমার শেষ বাণী হতে পারে। আজ থেকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি- যে যেখানেই খাকুন, যে অবস্থাতেই থাকুন এবং হাতে যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। ততদিন পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান- যতদিন না দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর শেষ সৈনিকটি বাংলাদেশের মাটি থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হচ্ছে।”

  • ঠাকুরগাঁওয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি সভা

    ঠাকুরগাঁওয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি সভা

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে এক প্রস্তুতি মূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ১১টায়  জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

    জেলা প্রশাসক ড.কে এম কামরুজ্জামান সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর (সার্কেল) আবু তাহের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহাবুবুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড.অরুনাংশু দত্ত টিটো, বীর মুক্তিযোদ্ধা শচিন চন্দ্র বর্মন,জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদ,পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেওয়ান মোর্শেদ কামাল, জেলা পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম স্বপন প্রমুখ।

    এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল আল মামুন, সরকারি কলেজের প্রতিনিধি, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মানিক হোসেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হারুনর রশিদ, জেলা সমবায় কার্যালয় জেলা অডিটর মোহাম্মদ নাজমুল হুদা, ওয়ার্ল্ড ভিশন এপি, ম্যানেজার লিওবাট চিসিম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী , জেলা নির্বাচন অফিসার, জিলহাজ উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ কুমার রায়, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জবেদ আলী, আশা এনজিও এর জেলা ব্যবস্থাপক মেজবা উদ্দিন, জেলা জননী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নুরবানু , ফায়ার সার্ভিস এর কর্মকর্তা রফিকুজ্জামানসহ সরকারি,বেসরকারি বিভিন্ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

    অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নুর কুতুবুল আলম।