Tag: মহেশখালী

  • মহেশখালীর ৯৬ আত্মসমর্পণকারী জলদস্যু পরিবারকে ১ লক্ষ টাকা করে অনুদান

    মহেশখালীর ৯৬ আত্মসমর্পণকারী জলদস্যু পরিবারকে ১ লক্ষ টাকা করে অনুদান

    কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের মহেশখালীতে আত্মসমর্পণকারী ৯৬ জন জলদস্যু ও শীর্ষ অস্ত্রের কারিগরের প্রতিটি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল হতে ১ লক্ষ টাকা করে ৯৬ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে।

    রোববার ( ৫ এপ্রিল) সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ৯৬ টি পরিবারকে এ অনুদান প্রদান করা হয়।

    ৯৬ জন জলদস্যু ও শীর্ষ অস্ত্রের কারিগর আত্মসমর্পণের আগে তাদেরকে এ অনুদান দেওয়া হবে বলে রাষ্ট্রের পক্ষ হতে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিলো।

    অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার), জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান।

    আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ৯৬ জন জলদস্যু ও শীর্ষ অস্ত্রের কারিগর আত্মসমর্পণের সফল মধ্যস্থতাকারী আনন্দ টিভি’র চট্টগ্রাম ব্যুরো চীফ ও কক্সবাজারের পেকুয়ার সন্তান এম.এম আকরাম হোসাইন।

    অনুষ্ঠানে অতিথি ও বক্তারা ৯৬ জন জলদস্যু ও শীর্ষ অস্ত্রের কারিগরের আত্মসমর্পণের মধ্যস্থতাকারী এম.এম আকরাম হোসাইনের ভূয়সী প্রশংশা করে বলেন, এম.এম আকরাম হোসাইন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাষ্ট্রকে যে সহায়তা করেছেন, তা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

    জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন সভাপতির বক্তব্যে আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুর মতো সেখানকার অন্যান্য অপরাধীদেরও রাষ্ট্রের কাছে আত্মসমর্পণের আহবান জানান।

    এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্র তৈরীর শীর্ষ কারিগরকে আত্মসমর্পণ করানো ছিলো কক্সবাজার জেলা পুলিশের জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে ইনশাআল্লাহ।

    এছাড়া গত ২ এপ্রিল এই ৯৬ জন জলদস্যু ও শীর্ষ অস্ত্রের কারিগরের পরিবারকে হোয়ানক টাইমবাজারে কক্সবাজার জেলা পুলিশের পক্ষে তাদের খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়।

    গত বছরের ২৩ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে এখন কারাগারে থাকা ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্রের শীর্ষ কারিগরের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হতে এক লক্ষ টাকা করে অনুদান পেয়ে মহান আল্লাহতায়লার তারা কাছে শোকরিয়া জ্ঞাপন এবং কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

    ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্রের শীর্ষ কারিগরের পরিবারের সদস্যরা এসময় বলেন, “আত্মসমর্পণের আগে আমাদের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে যখন মধ্যস্থতাকারী ও আনন্দ টিভি’র চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান এম.এম আকরাম হোসাইনকে আমরা বলেছিলাম, তখন তিনি কক্সবাজারের এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) মহোদয়কে বললে, সেদিন এসপি মহোদয় আমাদের সংসার চালানোর দায়িত্ব নিজে নিয়েছিলেন। এক লক্ষ করে অনুদান প্রদান করা ছাড়াও এসপি মহোদয়ের উদ্যোগে চলমান করোনা ভাইরাসজনিত সংকটে আমাদের যে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে তা আমরা কোন দিন ভুলতে পারবো না। তারা আরো বলেন, এসপি মহোদয় আমাদেরকে দেওয়া কথা রেখে এই দুর্দিনে আমাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন, সেটা আমাদের জন্য বিশাল প্রাপ্তি।”

    প্রসংগত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম (বার) পিপিএম, সাংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কালারমার ছরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্রের শীর্ষ কারিগর তাদের অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম, অস্ত্রশস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ করেছিলো।

  • মহেশখালীতে বজ্রপাতে ৩ লবণ চাষী নিহত

    মহেশখালীতে বজ্রপাতে ৩ লবণ চাষী নিহত

    কক্সবাজার প্রতিনিধি : চলতি শুষ্ক মৌসুমে বছরের প্রথম বৃষ্টির সাথে সৃষ্ট বজ্রপাতে তিন লবণচাষী নিহত হয়েছে। এছাড়া-প্রান্তিক লবণ চাষিদের মাঠের লবণ ব্যাপক ক্ষতি করেছে।

    শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার সময় কাল বৈশাখী তান্ডব শুরু হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জামিরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    নিহতরা হলেন, মানিক( ১৭)। সে হোয়ানকে পশ্চিম বানিয়াকাটা এলাকার নেছার আহম্মদের ছেলে। মানিক মৈন্নাঘোনা লবণ মাঠে কাজ করা অবস্থায় বজ্রপাতে নিহত হয়।

    অপরজন মোস্তাফিজুর রহমান (২৫) সে পেকুয়া উপজেলার টৈটং ধৈনিনিয়া কাটা এলাকার ছৈয়দুর রহমানের ছেলে।

    মোস্তাফিজুর রহমান হোয়ানকের আন্নুঘোনায় লবণ মাঠে কাজ করা অবস্থায় বজ্রপাতে নিহত হয়।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোয়ানক ইউপির মেম্বার নুরুল কবির।

    তৃতীয়জন হলেন, বড়মহেশখালী ইউনিয়নের জাগিরাঘোনার এলাকার জালাল আহমদের ছেলে মোঃ ফারুক (২৫) । সে কালাপাইন্না ঘোনায় নিহত হন।

    চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হঠাৎ কালবৈশাখী ধমকা ও বৃষ্টির কারণে মাঠে উৎপাদিত লবণের ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে মাঠের লবণ।

    শনিবারের কাল বৈশাখী তান্ডবে উপজেলার মাতারবাড়ী,ধলঘাটা,কালামারছড়া, হোয়ানক, বড়মহেশখালী, কুতুবজোম ও পৌরসভার লবণ চাষীদের মাঠের লবণ বৃষ্টির পানিতে ভেসেগিয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

  • বদলে যাওয়া একটি দ্বীপের গল্প

    বদলে যাওয়া একটি দ্বীপের গল্প

    নুর মোহাম্মদ রানা : তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনিয়া। আদিনাথ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে সে। কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী’র এই শিক্ষার্থী প্রায়ই ঢাকার অভিজ্ঞ শিক্ষকের কাছ থেকে পাঠ নেয়। দুর শিক্ষণের মাধ্যমে সে নিজ বিদ্যালয়ে বসেই ইংরেজী, অংক, বাংলা বিষয়ে পাঠ নিচ্ছে। জাগো ফাউন্ডেশনের জাগো ডিজিটাল স্কুলের শিক্ষক ফারিহা আহমদ ঢাকায় বসেই সরাসরি তাসনিয়াদের ইংরেজী পড়াচ্ছেন।

    তাসনিয়ার মতো ফারিহা ইসলাম, বুলবুল আহমদ সহ বিদ্যালয়টির অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও খুশী দুর-শিক্ষণের মাধ্যমে ইংরেজী শিখতে পেরে। তাসনিয়া জানায়ঃ “ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমরা ঢাকার ম্যাডাম থেকে পড়া শিখছি। এতে আমরা আনন্দ পাচ্ছি, নতুন নতুন অনেক কিছু শিখছি।“

    দ্বীপের গোরকঘাটার আনোয়ারা বেগম তার ছয় বছরের মেয়েকে নিয়ে এসেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। জটিল রোগ হওয়ায় আনোয়ারা বেগম তার মেয়েকে নিয়ে কক্সবাজার কিংবা চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দিল। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শিব শেখর ভট্টাচার্য্য ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে আনোয়ারা বেগমের মেয়ের চর্ম রোগের ব্যবস্থাপত্র নিলেন। আনোয়ারা বেগম তার মেয়েকে নিয়ে এখন আর তাকে দূরে যেতে হচ্ছে না। দ্বীপে থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে পারছে। আনোয়রা বেগম জানানঃ “মহেশখালীতে বসেই তার মেয়ের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা করাতে পেরে সে খুশী। তার সময় এবং অর্থ দুটোই বেঁচে গেল।“

    দ্বীপের বাসিন্দা দিদারুল ইসলাম, মারুফা নাসরিন লোপা এবং রোমেনা আকতার। মূল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপে শুধু পড়ালেখা নিয়েই বসে থাকেননি এই তরুণ-তরুণীরা। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছেন অনলাইন ব্যবসায়। নিজেদের গড়ে তুলেছেন উদীয়মান ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে। তারা মোট নয় জন মিলে গড়ে তুলেছেন অনলাইনে বিষমুক্ত শুটকি বিকিকিনির ব্যবসা প্রতিষ্টান ‘ই-বিজনেস সেন্টার’। এখান থেকেই ওই তরুণ-তরুণীরা মাঠ পর্যায় থেকে বিষমুক্ত শুটকি মাছ সংগ্রহ করে অনলাইনে দেশের নানাপ্রান্তে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। আর তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে দেশের অন্যতম বৃহৎ অনলাইন প্রতিষ্টান ‘দারাজ’। মহেশখালীতে বেড়াতে আসা পর্যটকেরাও তাদের কাছ থেকে শুটকি কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

    এসবই সম্ভব হয়েছে দ্রুতগতির ইন্টারনেট গতির মাধ্যমে ই-সেবা দিয়ে মহেশখালীকে ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসার কারণে। ডিজিটাল আইল্যান্ড হিসেবে মহেশখালীকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সেবা দেয়া হচ্ছে। গত ২৭ জানুয়ারী ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালী উপজেলায় বিভিন্ন ই-সেবা, কেন্দ্র, ই-কমার্স সেন্টার এবং ডিজিটাল স্কুল সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে। বর্তমান সরকার তথ্য প্রযুক্তির সেবা গ্রামের তৃনমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে পাইলট প্রকল্প হিসেবে মহেশখালী দ্বীপকেই বেছে নিয়ে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ই-সেবা শুরু করেছে।

    আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর ডিজিটাল আইল্যান্ড প্রকল্পটি দেশের দ্রুততম ইন্টারনেট গতির মাধ্যমে মহেশখালীকে একটি বিচ্ছিন্ন উপদ্বীপ থেকে একটি উদীয়মান প্রযুক্তি কেন্দ্র হিসাবে রূপান্তর করতে সহায়তা করছে। এই প্রকল্পটি আইওএম বাংলাদেশ মিশনের প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্প।

    আইওএম, কোরিয়া টেলিকম, বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল যৌথভাবে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ডিজিটাল আইল্যান্ড প্রকল্পটি দ্বীপের একটি পৌর এলাকা ও দুইটি ইউনিয়ন এলাকার মানুষের মাঝে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহেশখালীকে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড’ ঘোষণা করেছিলেন।

    আইওএম-এর ট্রানজিশন এন্ড রিকভারি ডিভিশন (টিআরডি)-এর প্রধান প্যাট্রিক শেরিগনন জানানঃ “মহেশখালী দ্বীপটিকে এই প্রকল্পের জন্য নির্বাচন করা হয়েছিল কারণ এটি বাংলাদেশের অন্যতম স্বল্প-উন্নত জনগোষ্ঠী। এখানে নিরক্ষরতার হার বেশি এবং মাটির লবণাক্ততা কৃষিফলনকে বাধাগ্রস্থ করে। স্থানীয় যুবসমাজ দ্বীপ থেকে স্থানান্তরিত হচ্ছে এর ফলে এই দ্বীপের ভবিষ্যৎ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। ডিজিটাল দ্বীপ প্রকল্পটির লক্ষ্য হল সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বিদ্যমান জনসুবিধাদির আরো প্রসার ঘটিয়ে মহেশখালীর বাসিন্দাদের জন্য সুযোগ তৈরি করা।“

    প্রকল্পটির অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে মহেশখালীতে বিদ্যমান একটি টাওয়ার সংস্কার এবং গিগা মাইক্রোওয়েভ স্থাপন যার ফলে মহেশখালীর বাসিন্দারা ১০০ এমবিপিএসেরও বেশি গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছেন। মহেশখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো জামিরুল ইসলাম বলেনঃ “ডিজিটাল আইল্যান্ড একটি বহুমুখী প্রকল্প যা বাংলাদেশের অন্যতম বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীটিকে দেশের দ্রুততম গতির ইন্টারনেট মাধ্যমে বিশ্বের সাথে যুক্ত করেছে।“

    তিনি আরো বলেনঃ “ডিজিটাল আইল্যান্ড প্রকল্পটির মাধ্যমে দ্বীপে পজিটিভ পরিবর্তন এসেছে। সুফল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, টেলিমেডিসিন, দুর-শিক্ষণ, তথ্যপ্রযুক্তি ও কমিউনিটি ক্লাবের মাধ্যমে সেবা পাচ্ছেন জনগণ।“ তাঁর মতে, দ্রুতগতির ইন্টারনেটের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন ই-ফাইলিংয়ের মাধ্যমে ৮০ শতাংশ দাপ্তরিক কাজ করছে। ই-ফাইলিংয়ের মাধ্যমে মহেশখালী উপজেলা প্রশাসন সারাদেশের সবগুলো উপজেলার মধ্যে ১৪তম অবস্থান করে নিয়েছে।

    মহেশখালী দ্বীপ সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা স্থানীয় জনগোষ্ঠীটিকে উন্নত স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের পরিষেবাগুলো নিশ্চিতে ভূমিকা রাখছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্বীপটির বাসিন্দাদের শিক্ষার সরঞ্জামাদি এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য অনলাইন স্বাস্থ্য পরিষেবাও দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় শুটকি উৎপাদনকারিদের উৎপাদিত শুটকি বিক্রির জন্য ই-কমার্সের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড দ্বীপ’ উদ্যোগও বাংলাদেশের অগ্রগতির একটি অংশ হয়ে প্রকাশ পেয়েছে।

    স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রকল্পটি ই-টিচিং এবং ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে স্থানীয় শিক্ষকদের সক্ষমতা উন্নত করছে। প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পরে এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেয়া শিক্ষা-উপাদানগুলো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষকদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। কীটনাশক এবং সংরক্ষণকারী রাসায়নিক উপকরণগুলোর ব্যবহার কমিয়ে স্থানীয়দের জৈব কৃষি এবং অর্গানিক পদ্ধতিতে মাছ শুকানোতে উৎসাহিত করছে এই প্রকল্প। পাশপাশি ই-কমার্সের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য বিক্রির মাধ্যমে আয় বাড়ানো ও মধ্যস্বত্তভোগীদের দৌরাত্ম্য দূর করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

    ‘ডিজিটাল দ্বীপে’র সুবিধাভোগীরা জানান, আইওএম-এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে ২৫টি স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্টান ১০০ এমবিপিএসেরও বেশি স্পিডের ইন্টারনেট পাচ্ছে।

    জাগো ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্টানের মাধ্যমে দশটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের দূর-শিক্ষণ পরিষেবা দেয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় রাজধানী ঢাকার শিক্ষকরা মহেশখালী দ্বীপের শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ইংরেজী কোর্সে শিক্ষা দেন।

    চারটি কমিউনিটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক এবং একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে মোবাইল স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। এসব পরিষেবাগুলো হলো স্বয়ংক্রিয় স্বাস্থ্যগত রেকর্ড সিস্টেম, টেলিমেডিসিন পরামর্শ, মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা ডিভাইসগুলোর মাধ্যমে নির্ণয়, যেমন- মূত্র পরীক্ষক, আল্ট্রাসাউন্ড ডিভাইস এবং রক্ত পরীক্ষক ইত্যাদি। স্থানীয় এবং সরকারী কর্মকর্তাদের কম্পিউটার দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে আইওএমের গড়া ডিজিটাল সেন্টারে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে একটি কমিউনিটি ক্লাব এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে কম্পিউটার এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তারা।

    মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়া বলেনঃ “এই প্রকল্পের মাধ্যমে মহেশখালীবাসি অনেক সুফল পাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঢাকার মতো শিক্ষা পাচ্ছে। কৃষকরাও সুফল পাচ্ছেন। মাত্র তিন বছরে মহেশখালীকে ডিজিটাল আইল্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এই দ্বীপকে ডিজিটাল দ্বীপ হিসেবে একশ ভাগ সফলতা পেতে হলে এই প্রকল্প চলমান রাখতে হবে।“

    তিনি মনে করেন, এখন পৌরসভাসহ যে ৩ ইউনিয়নে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড’ প্রকল্পের কাজ চলছে তা ১০০ ভাগ সফল হওয়ার পর অন্য ৭টি ইউনিয়নকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। তার আগে সব ইউনিয়নে একসাথে কাজ শুরু করলে পুরোপুরি সফলতা পাওয়া যাবে না।

    উল্লেখ্য, আইওএম গত ২১ অক্টোবর, ২০১৯-এ এই দ্বীপে আয়োজন করে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড ফেস্ট’। এই আয়োজনে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও বাসিন্দারা নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনার এবং ভিডিও-অনলাইনের বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে ‘ডিজিটাল দ্বীপ’-কে তুলে ধরে।

  • কাল মহেশখালীতে আত্মসমর্পণ করবে শতাধিক জলদস্যু

    কাল মহেশখালীতে আত্মসমর্পণ করবে শতাধিক জলদস্যু

    কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপে আগামীকাল শনিবার আরো শতাধিক জলদস্যু আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

    দ্বিতীয়বারের মতো এই উদ্যোগে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া ও পেকুয়ার বেশ কিছু অস্ত্র কারিগরও আত্মসমর্পণ করতে পারে।

    আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন।

    কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন জানান, শনিবারের অনুষ্ঠানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে দস্যুতার জীবন থেকে আলোর পথে ফেরার সম্মতি জানিয়েছে এসব জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগর। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে তাদের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রণোদনাসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

    জানা গেছে, ইতিমধ্যে মহেশখালী দ্বীপের দুর্ধর্ষ সাতটি দস্যু বাহিনীর প্রধানসহ তাদের সহযোগীরা পুলিশের সেফ হোমে চলে এসেছে। এসব দস্যুর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের কারণে যুগ যুগ ধরে মহেশখালী-কুতুবদিয়াসহ পুরো উপকূলীয় এলাকায় অশান্তি লেগে থাকত। গভীর সাগরে মাছ ধরা নৌকাগুলোর অসংখ্য জেলে এদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে।

    প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর র্যাবের মাধ্যমে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার ৪৩ জলদস্যু আত্মসমর্পণের পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় অনেক শীর্ষ জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগর। এ কারণে দ্বীপের পাহাড় ও সাগর উপকূলে অভিযান জোরদার করে পুলিশ। অভিযানের মুখে আবারও আত্মসমর্পণে আগ্রহ দেখায় মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার এসব জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগর।

  • ঘুষ নেওয়ায় দুদকের হাতে গ্রেফতার সার্ভেয়ার আবদুর রহমান

    ঘুষ নেওয়ায় দুদকের হাতে গ্রেফতার সার্ভেয়ার আবদুর রহমান

    ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে দুদকের হাতে গ্রেফতার হয়েছে কক্সবাজারের মহেশখালী ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আবদুর রহমান। গ্রেফতার পরবর্তী তার কাছ থেকে ঘুষের আড়াই লাখ টাকাও উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

    আজ সোমবার বিকেলে মহেশখালী ভূমি অফিসে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

    দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. মাহবুব আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে অভিযানে মহেশখালী ভূমি অফিসে অভিযানে গেলে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এসময় ঘুষের আড়াই লাখ টাকাসহ সার্ভেয়ার আবদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।