চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বর্তমান সময়ে মারাত্মক সমস্যারগুলোর মধ্যে মাদক,সন্ত্রাস,জঙ্গীবাদ ও দূর্নীতি অন্যতম। দেশে বিভিন্ন স্তরে প্রায় ৭০ লক্ষ মাদকসেবী রয়েছে। দিন দিন এর ব্যাপ্তি ঘটছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও দেশের জন্য অভিশাপ। এই অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে পরিবারকে মাদকমুক্ত রাখতে হবে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে বান্ডেল রোড হরিজন সম্প্রদায়ের উদ্যোগে নগরীর বান্ডেল এস কলোনী প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে সন্ত্রাস,মাদক,জঙ্গীবাদ ও দূর্নীতির রিরুদ্ধে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ কথা বলেন।
ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক উত্তম দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক ইয়াছির আরাফাত, বান্ডেল হরিজন সমাজের সভাপতি মায়াদিন সর্দার, শ্রী শ্রী তারাচরণ সেবাশ্রমের সভাপতি রতন দাশ প্রমুখ।
এছাড়াও কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসীম, সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, মকসুদ আলী, নাসির উদ্দিন কুতুবী, জালাল আহমদ রানাসহ হরিজন সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমবেত হরিজন সম্প্রদায়ের মা’দের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, আপনারাই পারেন সমাজকে বদলে দিতে। মাদকাসক্ত, বিপথগামী স্বামী, ভাইকে বোঝান, মাদক, নেশায় যে টাকা ব্যয় হচ্ছে তা দিয়ে নিজেরা পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন। বিনামূল্যে কি নেশা পায়? যারা মাদকাসক্ত আছেন সংশোধন হয়ে যান। আপনারা চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে না পারলে, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে কিংবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মাদকাসক্তদের নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি ও চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা করবো।
তিনি হরিজন সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দকে মাদকাসক্তদের তালিকা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমি আর্থিকভাবে সহযোগিতা করবো, পুরো চিকিৎসার ব্যয় আমরা বহন করবো। আমি চাই না কাউকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাক, জেল খাটুক। আমি জোর করে কিছু করার পক্ষে নই।
মেয়র বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী ৫-৭ বছর পর বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে। এখন দেশে ২১ শতাংশের নিচে দারিদ্র্যের হার, যার সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন কোটি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার আগে গরিব ছিল ৪২ শতাংশ। বর্তমান সরকারের মেয়াদে দারিদ্র্যের হার আরও ৬-৭ শতাংশ কমে আসবে। এভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হবে। দেশের সবচেয়ে বড় স্পেশাল ইকোনমিক জোন বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর হচ্ছে মিরসরাইতে। প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। যাদের কাজ করার মানসিকতা থাকবে সবাই কাজ পাবে। তারাই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারবে।
তিনি বলেন, আপনারা ধৈর্য ধরুন। নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। আমার আমলে দুইবার সেবকদের বেতন বাড়িয়েছি। স্থায়ী-অস্থায়ী সবাইকে বৈশাখী ভাতা দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে আরও সুবিধা বাড়ানো হবে। সেবকদের জন্য আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনারা সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কাজে সহযোগিতা করবেন। এ দেশটা আমাদের। যার যার দায়িত্ব সততা, স্বচ্ছতা ও সঠিকভাবে পালন করবেন। মেয়র দলমত নির্বিশেষে পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ ও বাসযোগ্য দেশ গড়ার প্রত্যয়ে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
মেয়র আরো বলেন, সম্প্রতি হরিজন সমাজের কেউ কেউ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বিদেশে লেখা-পড়া করতে যাচ্ছে। আবার কেউ উন্নত পেশায়ও সংযুক্ত হচ্ছে। এটা বর্তমান সরকারের সকল সম্প্রদায়ের প্রতি সম নীতির সুফল। আমরা চাই তারা আগামীতে আরো উন্নত সমাজ গঠনে নিজেদের পরিবর্তন করবে।