Tag: মানবাধিকার

  • গাজায় লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার, যুদ্ধবিরতি চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

    গাজায় লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার, যুদ্ধবিরতি চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আনীত প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন প্রস্তাব অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে বাস্তবায়িত করার জন্য সংলাপ ও আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।

    জাতিসংঘের ৭৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ দিবসের প্রাক্কালে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

    ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ সনদ কার্যকর হওয়ার বার্ষিকী উপলক্ষে ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যসহ এর বেশিরভাগ স্বাক্ষরকারীর দ্বারা প্রতিষ্ঠার নথি অনুমোদনের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিনে অস্তিত্ব লাভ করে।

    শেখ হাসিনা বলেন, মানবাধিকারের সমস্ত মৌলিক নীতিমালা, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং যুদ্ধের সাধারণ নিয়ম লঙ্ঘন করে গাজায় নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের চলমান হামলা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ এবং এর বিশেষায়িত সংস্থাগুলো বহু ফ্রন্টে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, যেমন উপনিবেশ রহিতকরণ, শান্তিরক্ষা, মানবিক কার্যক্রম, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, এমডিজি এবং চলমান এসডিজি অর্জন, মানবাধিকার উন্নয়ন ও সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বহুমুখী প্রভাব মোকাবেলা।

    শেখ হাসিনা বলেন, তবে, বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে যেমন বিশ্বের অনেক জায়গায় আমরা সশস্ত্র সংঘাত প্রত্যক্ষ করছি এবং সমৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছি, তেমনিভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতার অবসানেও বাস্তব কোনো অগ্রগতি নেই। তিনি বলেন, জাতিসংঘের ৭৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে, আমি জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতির প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি এবং আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারস্পারিক আস্থা ও বৈশ্বিক সংহতি গড়ে তোলা এবং শান্তি, নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়নের অগ্রগতির লক্ষ্যে বহুপাক্ষিকতাকে পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নেতৃত্ব ও নিরলস প্রচেষ্টার প্রশংসা করছি।

    ‘শান্তির সংস্কৃতি’র প্রবক্তা হিসেবে, বাংলাদেশ আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং অপর দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সকল প্রকার সন্ত্রাস ও সহিংস চরমপন্থার ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ বজায় রাখি।

    একইভাবে শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় অবদান রাখার স্বার্থে মিয়ানমারের নৃশংসতা থেকে পালিয়ে আসা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের দশ লাখেরও বেশি নাগরিককে বাংলাদেশ অস্থায়িভাবে আশ্রয় দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারপর থেকে রোহিঙ্গা সংকট শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে আমরা দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক কূটনীতি অব্যাহত রেখেছি।

    জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তিমুখী পররাষ্ট্রনীতি এবং দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমরা কাজ করছি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জাতিসংঘ এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শান্তি, সাম্য, স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, উন্নয়ন ও সহযোগিতার সাথে আমাদের সম্পৃক্ততাকে মূল নীতি হিসেবে অনুসরণ করে যাচ্ছি।

    সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সকল অংশীজনের সাথে অংশীদারিত্বে শান্তিরক্ষা এবং শান্তি-প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের অত্যন্ত মূল্যবান কাজের অগ্রভাগে রয়েছি এবং থাকব।

    বহুপাক্ষিকতার দঢ় সমর্থক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতিসংঘের সাথে থাকবো। বৈশ্বিক সুশাসনের প্রতীকের আসনে বসিয়ে আমরা জাতিসংঘকে দেখতে চাই, যা আমাদেরকে সামনে থেকে প্রেরণা দিবে বস্তুনিষ্ঠ ও নিমোহভাবে গোঠা বিশ্বেও প্রত্যাশা পূরণে।

    শেখ হাসিনা বলেন, আসুন, আমরা আমাদের প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করতে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অংশীদারিত্ব, সহযোগিতা ও সংহতির ভিত্তিতে একটি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতিসংঘ গড়তে এই উপলক্ষ্যকে ব্যবহার করি।

  • হিজড়া সম্প্রদায়ের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার-মেয়র

    হিজড়া সম্প্রদায়ের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার-মেয়র

    চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেছেন বাংলাদেশ সরকার হিজড়া সম্প্রদায়কে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে হিজড়া সম্প্রদায়ের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন।

    আজ সোমবার সকালে সিটি কর্পোরেশন কনফারেন্স হলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে হিজড়া প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণকালে সিটি মেয়র একথা বলেন।

    সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় হিজড়া দলনেতা জেরিন,পিংকী তাদের সমস্যাদি সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।

    অনুষ্টানে চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম,সমাজ সেবা অধিদপ্তরের এডি ওয়াহিদুল আলম,সমাজ সেবা কর্মকর্তা আবুল কাশেম,আরমান বাবু,হাফেজ আমান উল্লাহসহ হিজড়া প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

    সিটি মেয়র আরো বলেন এই সরকারই হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই স্বীকৃতির উদ্দেশ্যে হচ্ছে হিজড়া সম্প্রদায়কে স্বাভাবিক জীবন ধারায় সম্পৃক্তকরণ। দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে গতি আনায়ন। অর্থনীতির এ গতির জন্য সকল জনগোষ্টির সম্পৃক্ততা অপরিহার্য।

    কোনো সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে কাংখিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। হিজড়া সম্প্রদায়ও মানুষ। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে আনার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। তা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। হিজড়া ভাতাসহ বিভিন্ন ভাবে ভিক্ষাবৃক্তি থেকে সরিয়ে আনা আনা হচ্ছে হিজড়াদের। এমনকি তাদের সন্তানদের জন্য সরকার চালূ করেছে উপবৃত্তি।

    সরকারের এ উদ্যোগ আগামী দশ বছর চালু থাকলে দেশে কোনো হিজড়া বেকার কিংবা ভিক্ষাবৃত্তিতে থাকবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন তাদের নিয়ে আমাদের পরিবার, সমাজের নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। তার পরিবর্তন ঘটাও জরুরি। প্রচলিত আইন অনুযায়ী দেশের সব মানুষ সমান।

    ব্যাপক প্রচার- প্রচারণা চালিয়ে হিজড়াদের সম্পর্কে মানুষের মধ্যে যে ভুল ধারণা, তা দূর করতে হবে। এ ব্যাপারে তিনি তাদের নিজেদেরও মনমানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে বলে মেয়র উল্লেখ করেন।

    সিটি মেয়র বলেন সরকার ২০১৩ সালে হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তারপরও সমাজে তাদের অবস্থানের তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। সমাজে তারা প্রতিনিয়ত তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের শিকার হয়। নিজ পরিবারেও তারা অচ্ছুত ও অনাদৃত। বেশির ভাগ হিজড়াই কোনো সম্মানজনক জীবিকায় নেই, ভিক্ষা ও চাঁদাবাজিই তাদের মূল পেশা।

    এই প্রসঙ্গে সিটি মেয়র হিজড়া সম্প্রদায়ের ৯জনকে চসিকে চাকুরির কথা উল্লেখ করে বলেন হিজড়াদের সাথে আমরা কম বেশী সবাই পরিচিত। কিছু মানুষ হিজড়াদের সাথে মজা করতে পছন্দ করে, কেউ আবার এড়িয়ে চলে। নারীদের ক্ষেত্রে তারা হিজড়াদের রীতিমত ভয় পায় বিশেষ করে তাদের অশোভন আচরণ এর কারণে। এই ধরণের আচরণ পরিত্যাগ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

    সমাজসেবা অধিদপ্তরাধীন হিজড়া জনগোষ্টির জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি আওতায় ৫০জন হিজড়াকে ৪টি ট্রেডে ৫০দিন ব্যাপি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হিজড়ার হাতে ২৫ হাজার টাকার অনুদান ও সনদ তুলে দেন সিটি মেয়র।

    হিজড়া জনগোষ্ঠিপর দক্ষতা অর্জন ও স্বাবলম্ভী করার জন্য সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের এই উদ্যোগ। ট্রেডগুলো মধ্যে হস্তশিল্প,বুটিক,সেলাই ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ রয়েছে।