Tag: মায়ের কোল

  • মেলায় হারিয়ে যাওয়া শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিলো পুলিশ

    মেলায় হারিয়ে যাওয়া শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিলো পুলিশ

    মা এবং মামার সাথে ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলায় বেড়াতে আসে ৯ বছরের শিশু তামান্না। বেড়ানোর এক পর্যায়ে সে মা ও মামার নিকট হতে হারিয়ে যায়।

    রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মেলায়া ঘুরার একপর্যায়ে শিশুটি মা ও মামা থেকে আলাদা হয়ে যায়।

    মেয়েটির কান্না ও আর্তচিৎকারে বাণিজ্য মেলায় দায়িত্বরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের টি আই বিপ্লব ভৌমিক ও সার্জেন্ট আলী আহাম্মদ ট্রাফিক কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল রুমে নিয়ে আসেন।

    এ সময় মেয়েটির হারানো সংবাদ ট্রাফিক কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল রুমের মাইকে বার বার প্রচার করা হয়। সংবাদ পেয়ে দশ মিনিটের মধ্যে মেয়েটির মা ট্রাফিক কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল রুমে হাজির হন।

    মেয়েকে ফিরিয়ে পেয়ে কান্নায় আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন এবং পুলিশের কাজে সন্তুষ্ট হয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

  • রাউজান থানা হেফাজত থেকে মায়ের বুকে ফিরলো শিশু সুজন

    রাউজান থানা হেফাজত থেকে মায়ের বুকে ফিরলো শিশু সুজন

    নেজাম উদ্দিন রানা, রাউজান প্রতিনিধি : চারদিন রাউজান থানা হেফাজতে ছিল শিশু সুজন। চঞ্চল এই শিশুটি চারদিনেই আপন করে নিয়েছিলেন রাউজান থানার ওসিসহ সকল কর্মকর্তার মন। থানার এ কক্ষ থেকে ও কক্ষে হাসি-আনন্দে মাতিয়ে রাখতেন থানা ভবনটা।

    বিশেষ করে থানার নারী পুলিশ সদস্যরা রীতিমতো আপন করে নিয়েছিলেন ছেলেটিকে। তাদের সাথে সারাক্ষণ খুনসুটি আর আনন্দ উল্লাসে সময় কাটাতেন শিশু সুজন। কিন্তু যেই ছেলেটিকে নিয়ে এত আনন্দ কোলাহল তার ঠিকানা জানা ছিলনা কারো। তাই শিশুটির হাসিমুখ সবার মন জয় করলেও রীতিমতো শিশুটিকে নিয়ে টেনশনের কমতি ছিলনা থানার কর্মকর্তাদের।

    রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেফায়েত উল্লাহ শিশুটির ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুটির সন্ধান জানতে চেয়ে একটি পোষ্ট দেন। নিখোঁজ শিশুটিকে নিয়ে পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়। অনেকেই শিশুটির ছবিসহ ফেইসবুকে বিষয়টি শেয়ার করেন।

    বিষয়টি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ছবি দেখেই তার স্বজনরা পরিচয় শনাক্ত করে ছুটে আসেন রাউজান থানায়। টানা কয়েকদিন বিচ্ছিন্ন থাকার পর মা ছেলের মিলনমেলা যেন হার মানিয়েছে সিনেমার গল্পকে।

    ১৮ নভেম্বর সোমবার বিকেলে শিশু সুজনকে যখন রাউজান থানার ওসি কেফায়েত উল্লাহ তার মা চম্পা খাতুনকে হস্তান্তর করছিলেন তখন আনন্দ অশ্রুতে টলমল রাউজান থানার কর্মকর্তা থেকে শুরু করে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।

    শিশু সুজন হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের কেরামত আলীর মেয়ে চম্পা খাতুন ও একই এলাকার সিদ্দীক আলীর তৃতীয় পুত্র।

    সুজনের মা চম্পা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, বিগত পাঁচ বছর পূর্বে তাদের ঘর আলোকিত করে সুজন জন্ম নেওয়ার পরই তার পিতা সিদ্দিক আলী পরপারের ডাকে সাড়া দেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই মেয়ে ও এক সন্তানকে নিয়ে সংসারের ভার বইতে গিয়ে চোখে মুখে অন্ধকার দেখতে পান চম্পা খাতুন।

    সন্তানদের সুখের কথা ভেবে সাত মাস পূর্বেই সিলেট জেলার জজ মিয়ার সাথে দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর স্বামীর সাথে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন চর রাঙ্গামাটিয়া এলাকার করিম ম্যানসনে ভাড়াবাসায় উঠেন। চম্পা খাতুন ভেবেছিলেন হয়তো তার দ্বিতীয় স্বামী পিতৃস্নেহে তার সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করবেন। কিন্তু কিছুদিন অতিবাহিত হতেই সংসারে দানা বাঁধে কলহ।

    চম্পা খাতুন আরো বলেন, তার সন্তান নিখোঁজের ৩/৪দিন পূর্বে সন্তানকে বিক্রি করার হুমকি দিয়েছিল তার সৎপিতা জজ মিয়া। গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন বরিশাল বাজার এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় শিশু সুজন। সুজন নিখোঁজের পর তার সৎপিতার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা চম্পা খাতুন পাগলের মতো হন্যে হয়ে ছেলের খোঁজ নিতে থাকে।

    এদিকে সুজন নিখোঁজের ঘটনায় এলাকায় মাইকিং প্রচারনাও চালানো হয়। টানা কয়েকদিনেও ছেলের খোঁজ না পেয়ে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে চোখের জলে বুক ভাসাতেন মা চম্পা খাতুন। অবশেষে ছেলের ছবিসহ সংবাদ পত্রিকায় দেখে স্বজনদের নিয়ে রাউজান থানায় ছুটে এসে সুজনকে বুকে জড়িয়ে আরেকবার কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি।

    রাউজান থানার ওসি কেফায়েত উল্লাহ ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, গত শুক্রবার শিশুটিকে নোয়াপাড়া পথের হাটের জান্নাত হোটেলে পেয়ে স্থানীয়রা লোকজন তাকে নোয়াপাড়া পুলিশকে ক্যাম্পে দিয়ে দেন। সেখান থেকে তাকে রাউজান থানা হেফাজতে রাখা হয়। এই চারদিন শিশুটি সবাইকে আপন করে নিয়েছিল।

    থানার নারী সদস্যরা শিশু সুজনকে নতুন জামাও কিনে দিয়েছিলেন। এখন তাকে তার মায়ের বুকে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুব খুশি লাগছে। শিশুটি যাওয়ার সময় ওসি কেফায়েত উল্লাহ তার মায়ের হাতে যাতায়াত খরচের জন্য কিছু টাকাও দেন। এ সময় মায়ের কোলে করে শিশুটির চলে যাওয়ার সময় আবেগ সংবরণ করতে পারেনি উপস্থিত সকলে। মা ছেলের মিলনের মাঝেও থানা ভবন চত্বরে বিচ্ছেদের সুর বেজে উঠেছিল।

    বুকের মানিক ধনকে ফিরে পেয়ে চম্পা খাতুন বলেন, স্বামীর সাথে আর সংসার করবেননা তিনি। তার বিচ্ছেদ ঘটিয়ে সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়িতেই চলে যাবেন তিনি।