Tag: মা মাছ

  • হালদায় মা মাছ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

    হালদায় মা মাছ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

    মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন, প্রজনন মৌসুমে চট্টগ্রামের হালদা নদীতে মা মাছ রক্ষায় সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

    শুক্রবার দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদী পরিদর্শনে এসে স্থানীয় সাত্তারঘাটে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা জানান।

    মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কাজী হাসান আহমেদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, মেরিন ফিশারিজ একাডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মাসুক হাসান আহমেদ, চট্টগ্রামের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী, রাউজান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এহেছানুল হায়দর চৌধুরী, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবীর সোহাগ, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রুহুল আমীন, স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধি ও মৎস্যজীবীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

    মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্য উৎপাদনের অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখার জন্য সকলে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। কারণ এই খাত আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল করার সবচেয়ে বড় খাত হবে।’

    দেশের মাছ উৎপাদনে হালদার ভূমিকা বিশাল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘স্মরণাতীতকালের সর্বোচ্চ মাছের পোনা এবছর হালদায় উৎপন্ন হয়েছে। এটা সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সম্ভব হয়েছে।

    তিনি বলেন, ‘মাছের পোনা উৎপাদনে হালদায় অনেক প্রতিকূলতা আমরা অতিক্রম করেছি। এখানে শিল্প কলকারখানার বর্জ্য যাতে নির্গত না হয়, মৎস্য আহরণ বন্ধকালে অসাধু উপায়ে যাতে কেউ মা মাছ ধরতে না পারে এবং কোনভাবেই হালদায় মাছের প্রজনন ক্ষেত্রে যাতে বিঘ্ন না হয়, নির্বিঘ্নে যাতে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ কার্যক্রম ঠিকভাবে চলছে কিনা সেটা সরেজমিনে দেখতে প্রশাসন মাঠে কাজ করছে।

    সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকাকালে সারাদেশের মৎস্যজীবীদের যাতে খাবারের কোন সমস্যা না হয় সেজন্য তাদেরকে প্রণোদনা হিসেবে সরকার ভিজিএফ দিচ্ছে। হালদা এলাকায় কেউ বাদ পড়ে থাকলে অবশ্যই তাদের তালিকা হালনাগাদ করে সে সুযোগ দেয়া হবে।

    তিনি বলেন, ‘এবছর হালদায় যে পরিমাণ মাছের পোনা পাওয়া গেছে এটা একটা বিশাল সাফল্য। এ সাফল্যের অনেকাংশে অংশীদার এ অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষ।’

    মন্ত্রী বলেন, “কোভিড-১৯ এর ভয়াবহতা থেকে গোটা দেশকে কিভাবে বাঁচানো যায়, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সেজন্য অবিরাম পরিশ্রম করছেন। এসময় একজন মানুষও না খেয়ে মারা যাননি’।

    তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে যেভাবে অর্থনৈতিক স্থবিরতা দেখা দিচ্ছে, এই স্থবিরতা কাটিয়ে উঠার জন্য মৎস্য সম্পদই হবে আমাদের মূল সম্পদ। এ জন্য মাছের প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

    রেজাউল করিম বলেন, ‘মৎস্য আহরণে বিরত থাকা সকল মৎস্যজীবীদের ক্রমান্বয়ে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। যাতে একজন মৎস্যজীবীর খাদ্যের অভাবে কষ্ট না পায়। এটা চলমান প্রক্রিয়া।’

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • যে কোনো মুহুর্তে হালদা নদীতে ডিম ছাড়তে পারে মা মাছ, প্রস্তুত ডিম আহরনকারীরা

    যে কোনো মুহুর্তে হালদা নদীতে ডিম ছাড়তে পারে মা মাছ, প্রস্তুত ডিম আহরনকারীরা

    নেজাম উদ্দিন রানা, রাউজান (চট্টগ্রাম):::প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে যে কোনো সময় মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। গত রবিবার রাতে ডিম আহরণকারীদের জালে পাওয়া গেছে নমুনা ডিম। এখন হালদা পাড়ে নৌকা ও ডিম আহরণের সরঞ্জাম নিয়ে শত শত ডিম আহরণকারী অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। ডিম ছাড়লেই যেন শুরু হবে উৎসব। এই ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন মৎস্যজীবিরা।

    গতকাল দুপুরে হালদা নদীর আজিমের ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীর পাড়ে নৌকা নিয়ে অপেক্ষমান পোনা আহরণকারীরা।

    এ সময় রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নের পোনা আহরণকারী মোঃ নাছির বলেন, ১২ টি নৌকা নিয়ে তিনি কয়েকদিন ধরে ডিম ধরার সরঞ্জাম নিয়ে হালদাপাড়ে অপেক্ষায় আছেন।

    স্থানীয় পোনা আহরণকারী ও মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, সাধারণত আমবস্যা-পূর্ণিমায় লাগাতার বজ্রসহ বৃষ্টি, শীতল আবহাওয়া ও পাহাড়ি ঢলে কার্প জাতীয় মা মাছ হালদা নদীতে ডিম ছাড়ে। নদীর দূষণ কমে আসায় এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ মৌসুমে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশী পরিমান ডিম সংগ্রহের বিষয়ে আশাবাদী সকলে। তবে ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুমে নদীতে যান্ত্রিক নৌযানের অবাধ চলাচল থাকায় মা মাছের জন্য হুমকি মনে করছেন স্থানীয় সচেতন লোকজন।

    হালদাপাড়ে মোবারেকখীল হ্যাচারিও প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে পাশাপাশি স্থানীয় মৎস্যজীবিরা প্রাচীণ সনাতন পদ্ধতির মাটির কুয়াও প্রস্তুত করেছেন।

    আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। হালদা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা আইডিএফের স্বেচ্ছাসেবক রোসাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতিবছর ডিম ছাড়ার মৌসুম আসছে নদীপাড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।আমরা সনাতন পদ্ধতির মাটির কুয়ার সাথে পাকা কুয়াও প্রস্তুত করে রেখেছি।

    রাউজান উপজেলা সি, মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন হালদার বর্তমান পরিস্থিতি উল্লেখ করে বলেন, হালদায় অনুকুল পরিবেশ না থাকায় মা মাছ ডিম ছাড়ছেনা।আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে যে কোনো সময় মা মাছ ডিম ছাড়বে।

    তিনি বলেন, হালদা নদীতে আমরা নিয়মিত টহল জোরদার করেছি। আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। মোবারেকখীল হ্যাচারিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানে জেনারেটরের ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে। ডিম আহরণকারীরাও নৌকা, জালসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত আছে।

    রাউজান উপজেলা সি. মৎস্য কর্মকর্তা পিযুষ প্রভাকর বলেন, হালদায় ডিম ছাড়ার বিষয়টি প্রকৃতির উপর নির্ভর করছে। আশা করছি ডিম ছাড়ার অনুকুল পরিবেশ বিরাজ থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই হালদায় মা মাছ ডিম ছাড়ার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।

    ২৪ ঘন্টা/এম আর