Tag: মির্জা ফখরুল

  • খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো বর্ষই সফল হবে না: ফখরুল

    খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো বর্ষই সফল হবে না: ফখরুল

    বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো বর্ষই সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    তিনি বলেন, ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কারাবরণ করেছেন। গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ নয় বছর সংগ্রাম করেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এখন জেলে আছেন, তাকে কারাগারে রেখে কোনো বর্ষই সফল হবে না।’

    শনিবার (৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা-১০ আসনে বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম রবিসহ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পালনের অনুষ্ঠানে ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঢাকায় আসছেন। তার সঙ্গে বিএনপির কোনো বৈঠক হবে কি না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত কোনো আলোচনা হয়নি।’

    মোদীর আগমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আগেই পরিষ্কার করে বলেছি, আজকে বাংলাদেশের যে অবস্থা, ভারতের এনআরসি নিয়ে দাঙ্গা হয়ে গেলো, সেটার যে প্রভাব এখানে পড়েছে, তাতে তার (মোদীর) এখানে আসাটা কতটুকু সমীচীন এটা তারাই বিচার করবেন।

    ‘বিএনপি সিরিয়াসলি নির্বাচনে অংশ নেয় না, তারা নির্বাচনে অংশ নেয় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য’ আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগতো কত কথাই বলবে। তারাতো জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া, ভোট ছাড়া, শুধু অস্ত্র দিয়ে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। স্বাভাবিকভাবেই তারা এ ধরণের কথাবার্তা বলবে, যাতে করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ হয়। কিন্তু সেটাতে তারা সফল হয়নি। আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি কারণ আমরা বিশ্বাস করি ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়। আমরা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বলেই আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।

    তিনি আরও বলেন, আগেও বলেছি এই নির্বাচনটা গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলনের অংশ। আমরা এই নির্বাচনে অত্যন্ত সিরিয়াস। প্রত্যেকটি নির্বাচনেই আমরা সিরিয়াসলি অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এই সরকার জনগণের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। জনগণ তাদের সহ্য করে না। তারা জোর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে নির্বাচনকে তারা তাদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করে। সেটার প্রতিবাদ করার জন্য ও প্রতিরোধ করার জন্য আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। অতএব তাদের যে যুক্তি সেটা কোনোদিনই গ্রহণযোগ্য নয়।

    অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্র। এটাকে কেন্দ্র করেই দীর্ঘকাল ধরে স্বাধীনতার দাবি উঠেছে, স্বাধীনকারের সংগ্রাম হয়েছে। সুতরাং একজন ব্যক্তি বা একটা গোষ্ঠি-একটা দল স্বাধীনতার দাবিদার হতে পারে না। সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ সুদীর্ঘ সময় ধরে স্বাধীনতার জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছে। তারই ফলে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আমরা স্বাধীন হয়েছি।

    সরকারের পক্ষ থেকে দল মত নির্বিশিষে সবাইকে নিয়ে মুজিববর্ষ পালনের কথা বলা হচ্ছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা একটা মকারি প্রহসন। কারণ বেগম জিয়া যিনি গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। গণন্ত্রের জন্য দীর্ঘ নয় বছর সংগ্রাম করেছেন। তাকে কারাগারে রেখে কোনো বর্ষই সফল হবে না।

    ঢাকা-১০ আসনের বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম রবির বিষয়ে মহাসচিব বলেন, আমাদের প্রার্থী গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একজন নেতা। তিনি ছাত্র রাজনীতি করেছেন, দীর্ঘকাল রাজনীতি করছেন। এলাকায় তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয় নেতা। আমি বিশ্বাস করি তিনি মেধাবী ছেলে নিজের মেধা প্রমাণ করে জনগণের ভোটে জয়ী হতে পারবেন।

    এ সময় ঢাকা-১০ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শেখ রবিউল আলম রবি, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনসী বজলুল বাসিত আঞ্জু, দক্ষিণের সহসভাপতি নবী উল্লা নবী, সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • ওবায়দুল কাদের-মির্জা ফখরুলের সেই আলোচিত ফোনালাপ ফাঁস

    ওবায়দুল কাদের-মির্জা ফখরুলের সেই আলোচিত ফোনালাপ ফাঁস

    সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফোনালাপ নিয়ে আলোচনা চলছে সর্বমহলে। গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি টেলিফোনে ৭ মিনিট কথা বলেন ফখরুল। পরের দিন ওবায়দুল কাদের নিজেই ওই ফোনালাপের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। এ নিয়ে সর্বত্র কৌতুহলের সৃষ্টি হয়।

    ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন ফখরুল। প্যারোল নিয়েও কথা হয়েছিল।

    মির্জা ফখরুল জবাবে দাবি করেন যে, প্যারোল নিয়ে কোন কথা হয়নি। আসলে কি কথা হয়েছিল?

    তাদের সেই কথোপকথনটি তুলে ধরা হল::

    মির্জা ফখরুল: কাদের ভাই আসসালামুআলাইকুম।

    ওবাদুল কাদের: ওলাইকুম আসসালাম।

    মির্জা ফখরুল: ভাই কেমন আছেন..?

    ওবায়দুল কাদের: হুম, আছি মোটামোটি ভাল।

    মির্জা ফখরুল: আপনার শরীরের অবস্থা এখন কেমন আছে?

    ওবায়দুল কাদের: আছে মোটামোটি ভাল। কয়েকদিন ধরে শরীরটা ভাল যাচ্ছে না।

    মির্জা ফখরুল: চেকাপ করবেন, অসুখের ওপর খেয়াল রাখবেন।

    ওবায়দুল কাদের: হুম, নিয়মিত চেকআপ করাচ্ছি। ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ আছে।

    মির্জা ফখরুল: আপনাকে একটি বিষয় অবহিত করার জন্য ফোন দিয়েছি। আপনি জানেন, আমাদের ম্যাডাম খুবই অসুস্থ। দুইদিন আগে তার পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। তাদের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। তারা আমাকে বলেছেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটজনক। যা আপনাকে ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।

    ওবায়দুল কাদের: হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছেন যে, তার অবস্থা স্থিতিশীল। আপনারা বলছেন, অন্য কথা। তাহলে কার কথা শুনবো। মেডিকেলের রিপোর্টের বাইরে যাওয়ার আমাদের কোন সুযোগ নেই। তার বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার। আদালতের ওপরতো আমাদের কোন হস্তক্ষেপ করার নাই। এটা আমরা বার বার বলছি এবং এখনও বলছি।

    মির্জা ফখরুল: জি.., আপনি, আমি, জানি যে, কী মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়েছে।

    ওবায়দুল কাদের: কী মামলা মানে? এটাতো আমাদের আমলের সময় মামলা নয়, এই মামলাটি হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। মামলাটি পুরনো। দীর্ঘদিন ধরে বিচার চলছে। একদিনেও বিচার হয়নি। দীর্ঘদিন বিচার চলার পর ওই মামলার রায় হয়েছে। আদালত রায় দিয়েছে, বিষয়টি আদালতের ব্যাপার। এখানে সরকারের কিছু করার নেই। আর যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার চিকিৎসা চলছে সেটি বিশ্বমানের চিকিৎসা। আমার চিকিৎসাও সেখানে হচ্ছে।

    মির্জা ফখরুল: আমরা আদালতে বার বার জামিনের জন্য আবেদন চাইতে গেছি। আদালত দেয়নি। আপনি বলেন, বিচার বিভাগ কী পুরোপুরি স্বাধীন?

    ওবায়দুল কাদের: বিচার বিভাগ পুরোপুরি স্বাধীন রয়েছে। এই বিচার বিভাগের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা রয়েছে। আদালত স্বাধীন।

    মির্জা ফখরুল: হুম…., আমরা বার বার আদালতে গেছি….কিন্তু, আদালত ম্যাডামকে জামিন দেয়নি। বিষয়টি আপনারা মানবিক দৃষ্টিতে দেখেন। তিনি তিন বারের প্রধানমন্ত্রী। সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী। বাংলাদেশের বড় দলের সর্বোচ্চ নেতা। আপনারা মানবিক দৃষ্টিতে দেখেন। আপনাদের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।

    ওবায়দুল কাদের: হুম.., আমরাতো বলেছি যে, আমরা আদালতের বাইরে যেতে পারবো না। এর বাইরে যাওয়া সরকার ও দলের কোন এখতিয়ার নেই। আপনারা আদালতে যান। আদালতেই আপনাদের সামনের শেষ রাস্তা।

    আরেকটি রাস্তা আছে যে, তাকে প্যারোল চাইতে হলে আইন অনুযায়ী তাকে দোষ স্বীকার করে সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। প্যারোলের আবেদন আসলে সরকার বিষয়টি ভেবে দেখবে। আমাদের গণ্ডির মধ্যে থাকতে হবে….। এর বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

    মির্জা ফখরুল: আমরা যে, প্যারোল চাইবো তা আপনাদের এই মামলা নিয়ে যে সব কাণ্ড করলেন তা ভরসা করতে পারছি না। প্যারোল চাইলেই যে, তিনি মুক্তি পাবেন তা ভরসা করা যাচ্ছে না। তার দল থেকে প্যারোল চাইতে পারে। তবে আমরা বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার জন্য আপনাদের কাছে দাবি করছি। আপনারা বিষয়টি মানবিক হিসাবে দেখেন। ম্যাডাম খুব অসুস্থ। হঠাৎ একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেলে এর দায় কে নিবে বলেন? আপনারা বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণে দেখেন।

    ওবায়দুল কাদের: বিষয়টিতো মানবিকভাবেই দেখা হচ্ছে। তার ভাল চিকিৎসা হচ্ছে, উন্নত হাসপাতালে। আপনারা আদালতে যান। আদালতেই এর সমাধান দিবে।

    মির্জা ফখরুল: ওকে, কাদের ভাই ভাল থাকেন।

    ওবায়দুল কাদের: আপনিও ভাল থাকেন।

  • বিগত কিছু নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি-মির্জা ফখরুল

    বিগত কিছু নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি-মির্জা ফখরুল

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : বিএনপির বিগত কিছু নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি জানিয়ে আগামীর সকল নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহন করবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের মহানগর বিএনপি কার্যালয় নাসিমন ভবনে দলের মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।

    নগর বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সাংগঠনিক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ও তারেকে রহমানের নামে মামলা প্রত্যাহারের চলমান আন্দোলন জোরদার করার লক্ষ্যে এ মতবিনিময় সভা করা হয়।

    প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা মনে করি নির্বাচন ছাড়া আর অন্য কোন পথে ক্ষমতার পরিবর্তণ হতে পারে না এবং হওয়া উচিতও নয়। সেই কারণে আমরা সব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি।

    আমরা মাঝখানে কিছু নির্বাচণে অংশগ্রহণ বাদ দিয়েছিলাম, পরে লক্ষ্য করেছি সেই সিদ্ধান্ত আমাদের ভুল ছিলো। ভবিষ্যতে অবশ্যই সকল নির্বাচনে অংশ নিয়ে আমরা আমাদের দলকে, জনগণকে, গণতন্ত্রকে আন্দোলনে আরো বেশি সম্পৃক্ত করতে চাই।

    তিনি বলেন, জনগণের ঐক্যের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করতে হবে।চট্টগ্রামের মহানগর বিএনপি

    মহানগর বিএনপির সভাপতি ড. শাহাদাৎ হোসেন সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় এতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।

  • ইভিএমকে ইচ্ছে মতো ম্যানিপুলেটেড করা যায়:ফখরুল

    ইভিএমকে ইচ্ছে মতো ম্যানিপুলেটেড করা যায়:ফখরুল

    ক্ষমতাসীন দলের সমর্থিত কর্মকর্তাদের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কার কী ব্যাকগ্রাউন্ড আমরা কিন্তু জানি। যাদের কোনও মোরালিটি নেই তাদেরকেই নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। আর সেই মানুষগুলোই সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ভোটে ইভিএম এনেছে, যে ইভিএমকে ইচ্ছে মতো ম্যানিপুলেটেড করা যায়।’

    মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন। ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী হেল্প সেল’ এর উদ্যোগে বিগত আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীদের হাতে গুম, হত্যা, পঙ্গু হওয়া নেতাকর্মীর পরিবারের সদস্যদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানে এ অনুষ্ঠান হয়।

    এতে গুম হওয়া ১০ পরিবারের সদস্যদের হাতে শিক্ষাবৃত্তি হিসেবে আর্থিক অনুদান দেয়া হয়।

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে যে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হচ্ছে, এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কিন্তু আমরা জানি। কে গাড়ির অনুমোদন নেয়ার জন্য ফাইল বদল নিয়ে মন্ত্রীর কাছে গেছেন, কারা নিজের স্কুল পারমিশন নেয়ার জন্য সরকারি জমি নিয়েছেন-এসব খবর আমাদের কাছে আছে। তারপরে দেখা যাচ্ছে, এসব মানুষগুলোকে যাদের কোনো মোরালিটি নেই, তাদেরকে নির্বাচনে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের দিয়েই আবার নতুন যন্ত্র ইভিএম মেশিন আনা হয়েছে। যে মেশিন পৃথিবীর সমস্ত দেশে রিজেক্টটেড হয়ে যাচ্ছে, সেই মেশিনে কখনোই ভোটারের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে না। কারণ ইভিএমকে ম্যানিপুলেটেড করা যায়।’

    ইভিএমের বিরোধিতা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এর বিরেধিতা করেছি। আমরা বলেছি যে, ইভিএম দিয়ে কখনোই মানুষের যে রায়, তার প্রতিফলন হবে না। আমরা এখনো সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এর বিরোধিতা করছি। গতকাল চট্টগ্রামে উপনির্বাচন হয়েছে। ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে যেতেই দেয়নি। তার আগেই বোমা মেরে লাঠিসোটা দিয়ে ভোটারদের তাড়িয়ে দিয়েছে। তারপরে জিজ্ঞাসা করেন বলবে যে, আপনারা পারেননি। পারবো কোত্থেকে? গুন্ডামি আর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ যারা করে তাদের সঙ্গে ভদ্রলোকেরা সাধারণ মানুষেরা পারবে কোত্থেকে। দ্যাটস দ্যা রিয়েলিটি। যারা ভোটার তারা তো মারামারি করে না। তারা তাদের অধিকারটা প্রয়োগ করতে যায়, সেটা প্রয়োগ করতে দেয়া হয় না।’

    সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা আজকে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। এমন একটা সমাজ তৈরি করছে, এমন একটা রাষ্ট্র তৈরি করছে যে সমাজ এবং রাষ্ট্র এদেশের মানুষের ভবিষ্যতকে তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা সেজন্য বলি যে, বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে। তারপরও বলি, হতাশ হবেন না, ছেড়ে দেবেন না। নেভার গিভ আপ। যত কষ্ট আসুক, যত যন্ত্রণা আসুক, যত অত্যাচার-লাঞ্ছনা আসুক এদেশের মানুষ বার বার উঠে দাঁড়িয়েছে, তরুণরা উঠে দাঁড়িয়েছে, দাঁড়াবে, দাঁড়াচ্ছে। সব জায়গায় প্রতিরোধ হচ্ছে, প্রতিরোধ হবে।’

    অনুষ্ঠানের শুরুতে বর্তমানের সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে আমরা এই আক্রমণের স্বীকার হচ্ছি। আওয়ামী লীগ যারা স্বাধীনতাযুদ্ধের পূর্বে সংগ্রাম করেছিলো, গণতান্ত্রিক লড়াই করেছিলো তারাই স্বাধীনতাযুদ্ধের পরে দানবে পরিণত হয়েছে। একবার তারা ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলো। সেটা করতে যাওয়ার আগে তারা একইভাবে এদেশের দেশপ্রেমিক হাজার হাজার তরুণ-যুবককে হত্যা করেছিল।’

    তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের পরে তারা একইভাবে শুধু খোলসটা পাল্টিয়ে ভিন্ন আঙিকে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে, নিজের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে সংবিধান সংশোধন করেছে। এই বাংলাদেশ সৃষ্টির যে চেতনা ছিলো, মুক্তিযুদ্ধের যে মূল চেতনা ছিলো তাকে ধবংস করে দিয়েছে, গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে দিয়েছে। তারা তাদের শাসনব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করবার জন্য রাষ্ট্রের সমস্ত যন্ত্রগুলোকে ব্যবহার করছে। এমন একটা প্রতিষ্ঠান নেই যে প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে তারা বংশবদ করে ফেলেনি। এর মধ্যে যারা প্রতিবাদ করতে চেয়েছিলেন, রাজপথে নেমে এসেছিলেন তারা আজকে অনেকে আমাদের মাঝে নেই। তাদের অনেককে এনফোর্স ডিজএপিয়ারেন্স করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে গেছেন আর খোঁজ নেই, গুম হয়ে গেছে। অনেককে হত্যা করা হয়েছে অথবা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গোটা দেশকে গোটা জাতিকে একটা নির্যাতনের কারখানায় নিক্ষেপ করেছে সরকার।’

    গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের ছোট ছোট সন্তানদের দিকে তাকিয়ে তিনি আবেগপ্রবণ কণ্ঠে বলেন, ‘আজকে শিশুরা এখানে আছে। ওরা প্রতিমুহুর্তে ভাবে যে, তার বাবা ফিরে আসবে, আসে না। মায়েরা আছেন- ভাবেন যে, এই বোধহয় ছেলে দরজা নক করলো, আসে না। স্ত্রী অপেক্ষা করে থাকেন- কখন তার প্রিয় মানুষটা পাশে আসবে।’

    ফখরুল বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে দেশে এখন একটা অসহনীয় একটা দম বন্ধ করা পরিবেশ। এ সমাজ আজকে কিভাবে এই ধরনের

    একটা পরিস্থিতি সহ্য করছে-এটাও একটা চিন্তার ব্যাপার। এরা সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নগুলোকে ছারখার করে দিয়েছে, তছনছ করে দিয়েছে। এজন্য তাদের দাম্ভিকতার শেষ নেই। তাদের কথা শুনবেন, তারা যে বক্তব্য রাখে, তারা যে কথা বলে, তার মধ্যে তাদের যে দাম্ভিকতা এটা প্রকাশ পায়। প্রতিমুহুর্তে এতো যে তারা নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে- এজন্য তাদের এতটুকু অনুতাপ পর্যন্ত কখনো হয় না। একনায়কদের, স্বৈরাচারদের কখনও অনুতাপ হয় না।’

    এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ‘সকলকে উঠে দাঁড়ানো’র আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব।

    সংগঠনটির সভাপতি আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শফিউল বারী বাবু, মামুন হাসান, ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

  • প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে জাতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ:মির্জা ফখরুল

    প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে জাতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ:মির্জা ফখরুল

    বর্তমান সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের এক বছর পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেই ভাষণ দিয়েছেন তাতে জাতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে।’

    প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন।

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে অর্থনীতি হচ্ছে প্রধান সংকট। এটা হচ্ছে পুরোপুরি ভাবে রাজনৈতিক সংকট। এ সরকার একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। এমন একটি নির্বাচন হয়েছে, যেটা ৩০ তারিখে হয়নি ২৯ ডিসেম্বর রাতেই ভোট ডাকাতি হয়েছে। সেই হিসেবে জাতির একটি প্রত্যাশা ছিল সংকট নিরসনের একটি পথ তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) বক্তব্যের মধ্যে থাকবে। এ নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের কথা বা এমন কেন ইঙ্গিত দিবেন অথবা কোন একটা সংলাপের কথা বলবেন কিন্তু কেনটাই তিনি করেননি। এই সংকট নিরসনের জন্য তিনি কোন পথ দেখাননি।’

    তিনি বলেন, ‘অন্যদিকে যেই বক্তব্যগুলো রেখেছেন যা সত্য নয়। যেমন তিনি বলেছেন, ‘৭৫ এর পরে বছরগুলোতে মানুষ জরাজীর্ণ ছিল, মানুষের কঙ্কাল দেহ ছিল’ একথাগুলো চরম উল্টো। তার আগে ৭২-৭৫ সাল এদেশে একটি চরম দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আমলে, তাদের দুঃশাসনের কারণে।’

    বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৭৫ এর পরে জিয়াউর রহমানের যোগ্য নেতৃত্বে এদেশে পরিবর্তন ঘটে। আজকে বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক ভিত্তি এটার রচনা করেন জিয়াউর রহমান। এর মধ্যে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন। মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেন। যার মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। আর অর্থনীতির যে ভিত্তি গড়ে তোলেন মুক্তবাজার অর্থনীতি। বিদেশের কাছে উন্মুক্ত হাওয়া রফতানি বাড়ানো। সবচেয়ে বেশি গার্মেন্টস সেক্টরগুলোতে যার মাধ্যমে আমরা টিকে আছি এবং রেমিট্যান্স এই জিনিসগুলো জিয়াউর রহমান শুরু করেন। এ বিষয়গুলো তিনি বক্তৃতায় তুলে ধরেননি।’

    ফখরুল বলেন, ‘আরেকটি বিষয় হচ্ছে— দোষারোপ করা হয়েছে শুধু বিএনপিকে যে, বিএনপি সন্ত্রাস করেছে। ভুলে গেছেন ওনারা যে ১৭৩ দিন হরতাল করেছেন। কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে এবং সেই সময় বাসে ১১ জন ব্যক্তিকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। আর অনেক লোক নিহত হয়েছিল এই আন্দোলনের ফলে। দেশের রাজনীতির যে কালচার ছিল, এখনও আছে, যেটা এখন সরকার করছেন। তারা হত্যা করেছে, তুলে নিয়ে গিয়ে মারছেন, নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে, গুম হয়ে যাচ্ছে। এই জিনিসগুলো তাঁর বক্তব্যের মধ্যে আসেনি’

    বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ বক্তব্যের মধ্যে আশা রাখতে বলেছেন, ভরসা রাখতে বলেছেন। সেই ভরসা মানুষ কোথা থেকে রাখবে। অর্থনীতি চরমভাবে নিচে নেমে গেছে, কিন্তু অর্থনীতির বর্ণনা তিনি দিয়েছেন তা হচ্ছে পুরো উল্টো। ব্যাংকগুলো ভেঙে পড়েছে, মানুষ আস্থা রাখবে কোথায়।’

  • খালেদা জিয়াকে মুক্ত আন্দোলনে সবাইকে শরিক হতে হবে:ফখরুল

    খালেদা জিয়াকে মুক্ত আন্দোলনে সবাইকে শরিক হতে হবে:ফখরুল

    আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানো ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    তিনি বলেছেন, ‘যেভাবে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করা হয়েছিল, সেই ভাবে আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের মাধ্যমে সরিয়ে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে। এই আন্দোলনে সবাইকে শরিক হতে হবে।’

    বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে মহানগর নাট্যমঞ্চে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাদের (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে। অতীতে যেভাবে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, আগামী দিনে একইভাবে স্বৈরাচারের পতন ঘটানো হবে।’

    কারো নাম উল্লেখ না করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওপরের নির্দেশে আজকে সব স্তব্ধ হয়ে যায়। ওপরের নির্দেশে বিচারক খালেদা জিয়ার রায় দেন। বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। ৪৮ বছর পর আজকে আমাদের এ কথা বলতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ মানুষের স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না। শুধুমাত্র তাদের উন্নয়নে বিশ্বাস করে।’

    প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে দেশের স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমরা চিন্তিত। মেরুদণ্ডহীন সরকার কোনও প্রতিবাদ করতে পারছে না।’

    তিনি বলেন, ‘ভারত এনআরসির মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করছে। সরকার কোনও প্রতিবাদ করতে পারছে না।’

    বিজয় দিবসের আলোচনার থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তি শপথ নিতে নেতাকর্মীদের আহবানও জানান মোশাররফ।

    ভারতের এনআরসি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা ভারতকে শত্রু মনে করি না। কিন্তু তাদের কথা বার্তায় মনে হয় তারা আমাদের শত্রু মনে করে। তারা বাংলাদেশে শুধু আওয়ামী লীগের বন্ধু।’

    এনআরসির প্রদক্ষেপ আর মিয়ানমারের পদক্ষেপ একই দাবি করে এনিয়ে বাংলাদেশের অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন গয়েশ্বর। তিনি বলেন, ‘এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, অন্য দেশের জাতীয় স্বার্থে আঘাত লাগলে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে চাপা দেয়া যাবে না। আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে।’

    বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘যে গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, কেন আজকে সেই গণতন্ত্র অপসারিত হয়ে স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়েছে? এই সরকারকে তার জবাব দিতে হবে।’

    তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছরে দেশের মানুষের কোনও বিনিয়োগ হয়নি। উচ্চ সুদে বিদেশিদের বিনিয়োগ হয়ে। শুধু ফ্লাইওভার হয়েছে। দেশের মানুষের কোনও উন্নয়ন হয়নি।’

    খালেদা জিয়ার কারারুদ্ধ সম্পর্কে মঈন খান বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়ছে। বিএনপির সৈনিকেরা বুকে রক্ত দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবে।’

    আরও বক্তব্য দেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, আবদুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবীব-উন-নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এজিএম শামছুল হক প্রমুখ।

    এছাড়া অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রহমান, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।

    অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীসহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম।

  • রাজাকারদের তালিকা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’: বিএনপি

    রাজাকারদের তালিকা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’: বিএনপি

    রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করা প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশ স্বাধীনের ৪৮ বছর পর রাজাকারদের তালিকার প্রয়োজনটা কী? এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বলা হচ্ছে তালিকা নাকি পাকিস্তানের। পাকিস্তানের তালিকায় তো এদেশের তালিকা হবে না। এই তালিাকায় আসল রাজাকারদের নাম বাদ পড়েছে।’

    আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে একটি প্রোডাক্ট হিসেবে ব্যবহার করে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরে প্রকৃত রাজাকারদের বাদ দিয়ে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজাকারদের তালিকা তৈরি করেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

    মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয় দিবসের র‌্যালি উদ্বোধনের পূর্বে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরে আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি— এই সরকার অন্যায় ভাবে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে, জোর করে জনগণের সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় বসে আছে। আজকে আমরা দেখতে পাই— আমাদের যেই ভাই গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে সেই ভাই’ই গুম হয়ে যাচ্ছে। চার-পাঁচ বছর পার হয়ে যায় কিন্তু আমাদের সেই ভাইয়দের সন্তানেরা তাদের পিতার খোঁজ পায় না।’

    তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলে— তারা মুক্তিযুদ্ধের ধারক বাহক কিন্তু এরাই দেশের সকল গণতন্ত্র হত্যা করেছে। এরা ১৯৭৫ সালে বাকশাল কায়েম করে দেশের গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছিল। ৭৫ আওয়ামী লীগের সময় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল এবং মানুষ না খেয়ে মারা গেছিলো, সেই আওয়ামী লীগ এখন আবার জোর করে ক্ষমতায় চেপে বসেছে। আমাদের লক্ষ লক্ষ দেশ প্রেমিক মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে এই দেশকে কারাগারে পরিণত করেছেন। তারা আমাদের সকল অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় আছে।’

    বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে এই র‌্যালির নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার, যিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী। যিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। কিন্তু আজকের দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে দেশনেত্রীকে ছাড়াই আমাদের এই র‌্যালিতে অংশ নিতে হচ্ছে।’

    এ সময় বিএনপি মহাসচিব দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা অবশ্যই আমাদের গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে মুক্ত করে আনবো ইনশাল্লাহ। আপনারা সকল বিভেদ ভুলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য একটি ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তুলুন এবং এই সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করুন।’

    এ সময় খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে মূল চেতনা ছিল, আজকে দুঃখের সহিত বলতে হয় সেই মূল চেতনা ‘গণতন্ত্র’ বাংলাদেশে ভুলণ্ঠিত।’

    তিনি বলেন, ‘একটি মিথ্যা মামলায় সরকারের নির্দেশে মাদার অফ ডেমোক্রেসি গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি জামিনপাপ্য হলেও তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না।’

    তিনি আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র একব্যক্তি ও একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য, এদেশের সকল কিছু ধ্বংস করে বর্তমান সরকার লুটেরা অর্থনীতি তৈরি করেছে। তাই আজ কেউ শান্তিতে নেই। এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরাতে না পারলে, আমরা দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে পারবো না, দেশের গণতন্ত্র মুক্তি হবে না। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে হবে।’

    বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্ত্রী গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। আসুন আমরা আজ মরি বাঁচি (ডু অর ডাই) শপথ নেই, রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মুক্ত করি।’

    র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস-চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আব্দুল হাই, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শ্যামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

    এছাড়া অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান টুকু,টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, কৃষক দলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, মৎসজীবী দলের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম,তাঁতীদলের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • ফখরুলসহ বিএনপির ২৩ শীর্ষ নেতার আগাম জামিন

    ফখরুলসহ বিএনপির ২৩ শীর্ষ নেতার আগাম জামিন

    রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকায় তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়ার ঘটনায় করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির ২৩ নেতাকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

    মির্জা ফখরুল ছাড়াও জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবীব উন নবী খান সোহেল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ ২৩ জন।

    রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে করা এ সংক্রান্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে বিকেলেই বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই ২৩ নেতার জামিন মঞ্জুর করেন।

    এদিন আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার রহুল কদ্দুস।

    জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আদেশের আগের দিন গত ১১ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার পর হাইকোর্টের মাজার গেট, ঈদগাহ মাঠের গেট ও বার কাউন্সিলের গেটের সামনে তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনাকে নাশকতা বলে দাবি করে পুলিশ।

    পরে ওই রাতেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৩৫ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।

    ১২ ডিসেম্বর সকালে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান ব্রেকিংনিউজকে জানান, হাইকোর্ট এলাকায় মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে নাশকতার অভিযোগে শাহবাগ থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। এক মামলায় আসামির সংখ্যা ৭০ এবং আরেকটিতে ৬৫ জন।

  • ‘ভারতের এনআরসি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি’

    ‘ভারতের এনআরসি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি’

    ভারতের এনআরসি আমাদের (বাংলাদেশ) সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে দলীয় নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন।

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারতের এনআরসি যে বিষয়টা আমরা প্রথম থেকেই বলছি, আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন এবং এনআরসি আমাদের স্বার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি বলে মনে করছি। অতীতেও আমরা উল্লেখ করেছি, আজকে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে- এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, সমগ্র উপমহাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে, সংঘাত সৃষ্টি করবে। এবং রাজনীতির যে মূল বিষয়গুলো ছিল উদারপন্থী গণতান্ত্রিক রাজনীতি, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি সেই বিষয়গুলো ধ্বংস করে দিয়ে একটি সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এ ধরনের প্রয়াস চালানো হচ্ছে।’

    বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের যিনি ঘোষণা দিয়েছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আজকে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি, বুদ্ধিজীবী যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের কথা, স্বাধীনতা যুদ্ধের যিনি ঘোষণা দিয়েছেন তার সহধর্মিনী, তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন, নিগৃহীত হয়েছেন, বন্দি হয়েছেন, তাকে (খালেদা জিয়া) আজকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে।’

    তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের যে চেতনা, আমাদের স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকার আজকে ভেঙে খান খান করে দিয়েছে। তারা বাংলাদেশের অর্জনগুলোকে, জাতির অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে। আমরা আজকে একটা গণতন্ত্র বিহীন, জনগণের অধিকার বিহীন একটা অবস্থার মধ্যে বিরাজ করছি।’

    বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আজকে যখন আমাদের নেত্রী কারাগারে, যখন আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে, মিথ্যা মামলায় আজকে গণতান্ত্রিক দলগুলোকে স্তব্দ করে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে, বিএনপিকে যখন নির্মূল করার চেষ্টা হচ্ছে সেই সময়ে আজকে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন যেটা সমস্ত জাতির ঐক্য। আজকে সম্পূর্ণকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সবাইকে সংগ্রাম করতে হবে।’

    মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আজকে আমাদের এই দিনে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পথ অনুসরণ করে দেশের স্বাধীনতাকে স্বার্বভৌমত্ব রক্ষা করবার জন্যে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্যে আমাদের সংগ্রামের আরও গতি বাড়াব, সংগ্রামকে আরও বেগবান করব। ইনশাআল্লাহ, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিজয় অর্জন করব।’

  • মোটরসাইকেলে আগুন : ফখরুলসহ ১৩৫ জনের বিরুদ্ধে ২ মামলা

    মোটরসাইকেলে আগুন : ফখরুলসহ ১৩৫ জনের বিরুদ্ধে ২ মামলা

    গতকাল হাইকোর্টের সামনে তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৩৫ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় দুটি মামলা হয়েছে।

    আজ বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

    তিনি বলেন, গতকাল বুধবার রাতে শাহবাগ থানায় মামলা দুটি দায়ের করেছে পুলিশ। মামলায় দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকনকেও আসামি করা হয়েছে। একটি মামলায় ৭০ জন ও অপর একটি মামলায় ৬৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

    জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি ঘিরে গতকাল বুধবার সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। এর মধ্যে পৌনে ৫টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট এলাকার বাইরে তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। জাতীয় ঈদগাহ, হাইকোর্ট মাজার গেট ও বার কাউন্সিল ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে।

    এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ঘটনাটিকে নাশকতা বলেই মনে করছেন তারা। জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

  • বিএনপির আমলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে, নির্যাতন হয়নি:ফখরুল

    বিএনপির আমলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে, নির্যাতন হয়নি:ফখরুল

    বিএনপির আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর কোনও নির্যাতন হয়নি দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ভারতের সংসদে বলা হয়েছে- বিএনপি সরকারের আমলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা জোর গলায় বলতে পারি, বিএনপির আমলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে, নির্যাতন হয়নি। সংখ্যালঘুর ওপর আওয়ামী লীগের আমলে যত নিপীড়ন হয়েছে, তা আর কখনও হয়নি।’

    মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনির্ধারিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে পূর্বঘোষিত বিএনপির র‌্যালিতে পুলিশ অনুমতি না দেয়ায় তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে করেন মির্জা ফখরুল।

    এদিকে সকাল থেকে বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মোতায়েন করা হয়। এসময় বিএনপির কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের বের হতে বারবার নিষেধ করতে দেখা যায় পুলিশকে।

    ভারতের নাগরিকত্ব আইন এনআরসি’র প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাদের (ভারত) সংসদে খুব পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে। এটা নাকি বিএনপির আমলে হয়েছে। নতুন নাগরিকত্ব বিলে বলা হয়েছে, ভারতে অবস্থানরত সকল অমুসলিম অধিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। কিন্তু মুসলিমরা আবেদনের কোনও সুযোগ পাবে না। মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে না।’

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আমাদের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটা র‌্যালি হওয়ার কথা ছিল। সেভাবে প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু সকালে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নেতাকর্মীরা কার্যালয় থেকে নিচে নামলে তারা ব্যবস্থা নেবে। আমরা র‌্যালিটি করতে পারলাম না।’

    বিএনপি এই মুহূর্তে কোনও সংঘাতে যেতে চায় না উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আমাদের অধিকারগুলো নিয়ে কথা বলছি। এখন সভা-সমাবেশ করতেও অনুমতি নিতে হয়। এমনকি সাংগঠনিক কার্যক্রমেও অনুমতি লাগে।’

    ফখরুল বলেন, ‘দলীয় রাজনীতি ঊর্ধ্বে সারা বিশ্বে স্বীকৃত মানবাধিকার। সেই মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য আজকে র‌্যালি করার কথা ছিল। আমাদের দেশে একটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আছে। যার বয়স ১০ বছর, এই সময়ে তারা একটি মামলার তদন্ত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।’

    বাংলাদেশে এখন প্রতি মুহূর্তে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘আইন ও সালিশকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে ১ হাজার ৫৯৯ জনকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ধরনের হত্যার নাম দেয়া হয়েছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। বিএনপির হিসাবে, এ ধরনের হত্যা ২ হাজারও বেশি সংঘটিত হয়েছে। ১ লাখের ওপর বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীর নামে মামালা দেয়া হয়েছে। আজকে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে যে ব্যক্তি ভিন্ন মত পোষণ করে তাকে হয় গ্রেফতার করা হয়, না হয় গুম করা হয়। এরইমধ্যে অনেক নেতা, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক গুম হয়েছে।’

    পাকিস্তান আমলের চেয়েও গত ১০ বছরে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জাতিসংঘ থেকে বারবার বাংলাদেশকে ডাকা হয়েছে। ৪ বছর আগে মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ যে অঙ্গীকার করেছিল, তা রক্ষা করেনি। এজন্য গতবার সরকারের প্রতিনিধিদের তিরস্কার করা হয়েছে।’

    আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গার্মেন্ট শ্রমিক, বিদেশে নারী শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, কিন্তু সরকার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।’

    সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • অন্ধকারের পরেই আসবে নতুন ভোর:ফখরুল

    অন্ধকারের পরেই আসবে নতুন ভোর:ফখরুল

    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই দানব সরকারকে সরাতে হলে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে, এটাই হচ্ছে একমাত্র পথ। আমি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামার আহ্বান জানাচ্ছি।’

    তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেকেই হতাশার কথা বলেন। হতাশাই শেষ কথা নয়। মনে রাখতে হবে, অন্ধকারের পরেই আসবে নতুন ভোর।’

    রবিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

    আওয়ামী লীগের রোল মডেলের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন যেটা দাঁড়িয়েছে তারা এখন সন্ত্রাসের রোল মডেল, তারা আজকে নারী ধর্ষণের রোল মডেল, দুর্নীতির রোল মডেল। তারা আজ হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে দিচ্ছে।’

    ‘টাকা বানানো একটা ব্যাধ’- প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সেই ব্যাধিতে তো আপনারাই বেশি আক্রান্ত হয়ে গেলেন। আপনার সোনার ছেলেদের এখন ধরে ধরে আনতে হচ্ছে, তাদেরকে বলার চেষ্টা করছেন, তোমরা এখন ভালো হয়ে যাও।’

    তিনি বলেন, ‘এদেশে কেউ এখন নিরাপদ না। যারা একটু শারীরিকভাবে দুর্বল তারা বেশি অনিরাপদ। দু-মাসের শিশু থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বৃদ্ধ অথবা তরুণ-যুবক, বাবা, ভাই, কেউ কিন্তু এখানে নিরাপদ না। বাংলাদেশ আসলে এখন একটি সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে। সারা বাংলাদেশে আজ প্রতিদিনই নারী ও শিশুর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চলছে।’

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সমাজকে বিভক্ত করে ফেলা আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অপরাধ। সমাজকে পুরোপুরিভাবে দূষিত করে ফেলেছে। চতুর্দিকে তাকালেই দেখা যাবে বিভক্তি। এই বিভক্তিটা ভয়ংকরভাবে সমাজের মধ্যে চলে গেছে। সেই ভয়ে, ত্রাসে কেউ কথাও বলতে চায় না।’

    নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সভাপতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন- ঢাবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, প্রফেসর দিলারা চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান প্রমুখ।

    এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা ও নির্বাহী কমিটির সাদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।