Tag: মুখে হাসি

  • কৃষকের মুখে হাসি : বোয়ালখালীতে আমন ধান কাটার ধুম

    কৃষকের মুখে হাসি : বোয়ালখালীতে আমন ধান কাটার ধুম

    পূজন সেন, বোয়ালখালী প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। সোনালী ধানের ডগায় জমা শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীত আসন্ন। সন্ধ্যা হতেই চারদিকে জমাট হয়ে নামছে কুয়াশা। সারারাত ঝরা কুয়াশায় সিক্ত পাকা ধান।

    ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে দল বেঁধে কৃষকেরা কাচি নিয়ে নামছে ধান ক্ষেতে। কৃষকের পরিশ্রম আর অনুকূল আবহাওয়ায় আমনের ফলনের সম্ভাবনাকে করেছে উজ্জ্বল। কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। ঘরের গোলাভরা নতুন ধানে হবে নানান পিঠাপুলি।

    বাতাসে এখন শীতের আমেজ। গত ক’দিন ধরে বইছে উত্তুরে হাওয়া। শীতের এই ছোঁয়া কৃষকের মন-প্রাণেও দিয়েছে খুশির জোয়ার। শীতের কুয়াশা জমা শিশির বিন্দু ধানকে হৃষ্টপুষ্ট হতে সহায়তা করছে। রোপা আমনের যেসব ধান একটু বিলম্বে আসে শীতের এই কুয়াশায় ধানেও প্রাণ এনে দিয়েছে।

    ধানের ভেতরের চাল শক্ত হতে সাহায্য করছে আর পোকামাকড়ের শঙ্কাও কেটে গেছে বলে জানায় কৃষকরা। তবে গেলবার আমনের ভালো দাম না পাওয়ায় এবারও কৃষকরা কিছুটা শংকিত ন্যায মূল্য নিয়ে।

    উপজেলার কয়েকটি বিল ঘুরে দেখা গেছে, পুরোদমে কৃষকরা আমন ধান কাটায় লেগেছেন। কষ্টের ফসল ঘরে তোলার আনন্দে মাতোয়ারা। ইতিমধ্যে প্রায় ৩০-৩৫ শতাংশ আমন ঘরে তুলেছে কৃষকরা। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আমন পুরোপুরি ঘরে উঠবে বলে ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানিয়েছেন উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গৌতম চৌধুরী।

    তিনি বলেন, আমন চাষে কৃষকদের সব ধরণের পরামর্শ সহোযোগিতা দিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। ফলে আমরা আশা অনুরূপ ফসল ঘরে তুলতে পারছি।

    শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি কফিল উদ্দীন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, আমন চাষে কৃষকের আগ্রহ থাকলেও ধান বিক্রিতে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অনেকে চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সরকারী বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করি যাতে কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহ না হারান।

    আইপিএম সভাপতি মো. সেকান্দর ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, এবার প্রায় ৫ একর জমিতে আমন চাষ করেছেন। ফলন ভালো হয়েছে। তবে চাষাবাদে খরচের সাথে ফলনের সমন্বয় হচ্ছে না। সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। একই কথা জানিয়েছেন আইপিএম সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিচ বিকম, কৃষক রায়হান, আবদুল কাদের ও মো. শামসুল আলম।

    বোয়ালখালী উপজেলায় এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৫শত হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৪শত ৮০হেক্টর। প্রাকৃতিক কোনো দূর্যোগ না হওয়ায় এবারের আমন ধান ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ।

    তিনি ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, অতিবৃষ্টি, খরা, রোগ-বালাই তেমন একটা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি কৃষকের সামনে, প্রাকৃতিক দূর্যোগ তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। এ বছর আমন চাষে ভালো ফলন হয়েছে।

  • রাউজানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষক পরিবারে হাসি

    রাউজানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষক পরিবারে হাসি

    চট্টগ্রামের রাউজানের প্রত্যন্ত এলাকায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে আমনের। বিস্তৃত ফসলী জমিতে দোল খাচ্ছে হলদে বর্ণের আমন ফসল। ইতিমধ্যেই উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে শুরু হয়েছে ফসল ঘরে তোলার কাজ। বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফিরেছে হাসির আভা।

    সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য বারের চাইতে এবার আমনের ফলন আশানুরুপ ভালো হয়েছে।

    রাউজান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (উন্নয়রন শাখা) সঞ্জিব কুমার সুশীল ২৪ গন্টা ডট নিউজের প্রতিবেদককে বলেন, চলতি আমন মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৭৬ হেক্টর। এর বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৪৮০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০৪ হেক্টর বেশী চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে উপশী জাতের ১১ হাজার ২১০, হাইব্রিড জাতের ৮০ হেক্টর, ও স্থানীয় জাতের ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ করেছে কৃষকরা।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০হাজার মেক্টিকটন শুকনা ধান উৎপাদন হতে পারে।

    উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনকূলে থাকায় এবারের মৌসুমে আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া উপজেরা কৃষি অফিস মাঠপর্যায়ে প্রান্তিক চাষীদের নানান পরামর্শ ও সেবা দেওয়ায় মাঠে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ ছিল অন্যান্য বারের চেয়ে তুলনামূলক কম। ফলে বাম্পার ফলন দেখা গেছে আমন ক্ষেতে।

    উপজেলার পাহাড়তলী, বাগোয়ান, কদলপুর, নোয়াপাড়া, সুলতানপুর, হলদিয়া, পশ্চিম গুজরা, উরকিরচর, গহিরা, নোয়াজিশপুর, চিকদাইরছাড়াও রাউজার পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কৃষি জমিতে হলদে বর্ণের আমনের দোল খাওয়ার দৃশ্য কৃষকদের মাঝে ফিরে এনেছে স্বস্তি। অনেক ইউনিয়নে আগেভাগেই শুরু হয়েছে আমন ফসল কাটার ধূম। মান্ধাতা আমলের ধান মাড়াইয়ের দৃশ্যও চোখে পড়ছে অনেক স্থানে। পাশাপাশি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় উপজেলার কৃষকরা ধান মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র ব্যাবহার করে অল্প সময়ে মাঠের ধান মাড়াই করে ঘরে তুলছে।

    আমনের মৌসুম শুরু হওয়ায় বাজারে কামলার উপস্থিতি বেড়ে গেছে। মৌসুমী কামলাদের ভীড় দেখা গেছে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে। ভোলা, নোয়াখালী, সন্দীপ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, বাশঁখালীসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে কামলারা ছুটে আসছে রাউজানসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায়। অতীতের তুলনায় কামলাদের মজুরীও খুব বেশী হওয়ায় বিপাকে পড়েছে অনেক কৃষক। একেকজন কাজের লোকের দৈনিক মজুরি ৫০০-৬০০ টাকা।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রান্তিক জনপদের কৃষকরা মোবাইলে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করে কৃষি বিষয়ক নানান সেবা গ্রহন করে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে এবার উপজেলায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।