২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। সারাদেশ ডেস্ক : দেশের কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মারা গেছে ইতালি ফেরত এক প্রবাসী। গতকাল ২২ মার্চ রবিবার রাত ১১টার সময় স্থানীয় একটি হাসপাতালে প্রবাস ফেরত ৬০ বছর বয়সী আব্দুল খালেকের মৃত্যু হয়।
উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব বুলবুল আহমেদ তথ্যটি নিশ্চিত করেন।
ইতালি ফেরত প্রবাসীর মৃত্যুর খবর পেয়ে রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
স্থানীয়রা মৃত ব্যক্তির করোনায় আক্রান্ত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করেছে আইইডিসিআর।
এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন মৃত ব্যক্তির চারপাশের ১০টি ঘর এবং দুটি বেসরকারি হাসপাতালের মানুষের চলাচল সীমিত করেছে। ঘটনার রাতে দুই হাসপাতালে যাঁরা কর্মরত ছিলেন, তাঁদের হাসপাতালের ভেতরেই অবস্থান করতে বলা হয়েছে। পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে মৃত ব্যক্তির বাড়ির চারপাশেও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তি দেড় যুগ আগে ইতালিতে যান। ইতালির পরিস্থিতি নাজুক পর্যায়ে যাওয়ার পর ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখে তিনি দেশে আসেন। দেশে আসার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে পর্যায়ক্রমে দুটি বেসরকারি হাসপাতাল আবেদিন জেনারেল হাসপাতাল ও ডক্টরস চেম্বারে চিকিৎসা দেয়া হয়। তাঁর দুই ছেলে বর্তমানে ইতালিতে আছেন।
তবে ওই ব্যক্তি ইতালি থেকে ফেরার বিষয়টি উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির নজরে আনেননি। এমনকি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কোনো হাসপাতালেও যাননি এবং এলাকায় স্বাভাবিক চলাফেরা করছিলেন। প্রতিবেশীরা এই নিয়ে শঙ্কিত থাকলেও তিনি লোকলজ্জার কারণে সরাসরি কিছু বলেননি।
শনিবার থেকে ওই ব্যক্তি জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে রাত নয়টার দিকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর চিকিৎসকেরা তাঁর পরিবারের সদস্যদের তাঁকে হৃদ্রোগের চিকিৎসা করাতে পরামর্শ দেন।
এ অবস্থায় ওই হাসপাতাল থেকে তাঁকে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবানা ফারজানা জানান, তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কি না জানতে নমুনা সংগ্রহ করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘ওই ব্যক্তি আমাদের তালিকার বাইরে ছিলেন। জেনেছি, তিনি নিজে হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জেনেছি, তাঁর জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল। নমুনা সংগ্রহের জন্য রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানো হয়েছে। তারা আসছে।
তিনি বলেন, যে নিয়মে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির দাফনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়, এই মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম অনুসরণ করা হবে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৮ মার্চ (বুধবার) প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রথম এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর দেয় আইইডিসিআর।
এরপর গত শনিবার (২১ মার্চ) মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আরেকজনের মৃত্যুর খবর দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এছাড়া করোনায় এখন পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ জন।
২৪ ঘন্টা/আর এস পি