বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজের বিরুদ্ধে আনা ১১টি অভিযোগের সব কয়টি প্রত্যাখান করেছেন তিনি। বেশিরভাগ অভিযোগকে হাস্যকর বলেও মন্তব্য করেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, বরাবর আমি বিএনপিকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করেছি। জেল থেকে বেগম জিয়া নির্দেশনা দিয়েছিলেন দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার। আমি সেটিও করেছি। কিন্তু তারাই আমার বিরুদ্ধে বলেন আমি সংস্কারপন্থী, আমি ভাঙার পক্ষে। এর চাইতে দুঃখজনক লজ্জাজনক কিছু হতে পারে না।
শনিবার নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আত্মপক্ষ সমর্থন করে সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।
গত দেড় দুই বছর ধরে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। তবে আগে সবসময় আমন্ত্রণ জানানো হতো।
তিনি আরও বলেন, বিএনপিতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোণঠাসা করে রাখতে একটি মহল সক্রিয় রয়েছে। আমি মুক্তিযোদ্ধা, জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি। মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে আমরা সিলেট দখল করেছি। ১৯৭৭ সালে গণভবনে আমাকে ডেকে জিয়া বলেছেন তুমি নির্বাচন করো, তখন আমি বলেছি আমি এখন রাজনীতি করবো না।
তিনি বলেন, বিএনপিতে যোগদানের আগে আমি তিনবার সংসদ সদস্য ছিলাম। ১৯৯১ সালে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়ে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলাম। আমি গত ২২ বছর ধরে দলের অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছি।
আমি এলাকার জন্য কাজ করি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছি। আমি ২৯ বছর ধরে এই দল করি। আমি কখনও বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলি নাই। এমন কি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও কখনও খারাপ মন্তব্য করি না কারণ এসব আমার আচরণে নেই।
দলীয় মানববন্ধনে অংশগ্রহন না করা, বরিশালে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির কর্মসূচিতে অংশ না নেয়া, বিএনপির সর্বোচ্চ স্তরের নেতাবৃন্দদের নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেয়াসহ ১১ টি অভিযোগ এনে সম্প্রতি মেজর হাফিজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে মেজর হাফিজ বলেন, আমার নামের ভুল সহ নানা ভুল সহিত আক্রমনাত্মক ভাষায় যে চিঠি রুহুল কবির রিজভী আমাকে দিয়েছেন আমি তাতে হতবাক৷ জিয়াউর রহমান থাকলে তিনি নিজেও লজ্জা পেতেন যে আমাকে শোকজ করা হয়েছে। এসময় তিনি ২০২১ সালের মধ্যে বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলিং করা সহ চারটি সুপারিশ করেন৷
মেজর হাফিজ বলেন, আমি পদত্যাগ করছিনা। আমি যে ব্যাখা দিয়েছি সেটি কিভাবে তারা নেয় তা দেখতে চাই। যদিও ভেবেছিলাম পদত্যাগ করব, আমার সাবেক কলিগ, বন্ধুরা বলেছিলেন পদত্যাগ করতে। কিন্তু আমার যারা নেতাকর্মীরা তারা আমাকে অনুরোধ করেছেন যাতে পদত্যাগ না করি। তাদের অনুরোধের কারণেই কেবল আমি পদত্যাগ করলাম না৷
উল্লেখ্য গত সোমবার দলের দুই ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে কারণ দর্শানোর নোটিস (শোকজ) দিয়েছিল বিএনপি। ওই নোটিশে সই করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।