Tag: মোঃ জাকির হোসেন

  • রড দিয়ে পিটিয়ে ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধেই মন্ত্রীর পাল্টা অভিযোগ

    রড দিয়ে পিটিয়ে ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধেই মন্ত্রীর পাল্টা অভিযোগ

    ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় বাসায় ডেকে তিনজনকে পেটানোর অভিযোগ রয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। এবার প্রতিমন্ত্রীর পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, প্রতিমন্ত্রীর সরকারি বাসায় আবু সুফিয়ানসহ অজ্ঞাত তিনজন হামলা করে এবং মন্ত্রীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।

    বৃহস্পতিবার (৭ ডিসম্বের) রমনা থানায় দেওয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, থানায় অভিযোগটি করেছে মন্ত্রীর অফিস সহায়ক মো. মমিন।

    তিনি অভিযোগে দাবি করেন, ‘সকাল ১১টায় আসামি মো. আবু সুফিয়ান বিশ্বাসসহ অজ্ঞাত ৩ জন বাসভবনের গেটে জোরে ধাক্কা দিলে মো. রাসেল পকেট গেট খুলে পরিচয় জানতে চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জোরপূর্বক তাকে ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। রাসেল প্রতিবাদ করলে আবু সুফিয়ান তার ইউনিফর্মের কলার ধরে কিল-ঘুষি দেওয়া শুরু করে এবং অজ্ঞাতরা তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে আসামি আবু সুফিয়ান তাকে বলে তোর মন্ত্রিকে খবর দে আমাকে ৫ (পাঁচ) লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।

    আসামিরা রাসেল নিরাপত্তা কর্মীর সরকারি কাজে বাধা প্রদানসহ ভীতি প্রদর্শন করে। তাদের হামলা অবস্থায় মো. রাসেলের ডাক চিৎকারে উল্লিখিত সাক্ষীরা বাসভবনের ভেতর থেকে ছুটে গেলে অজ্ঞাত আসামিরা পালিয়ে যায় এবং সাক্ষীদের সহায়তায় ধাওয়া দিলে আবু সুফিয়ান ডিবি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে ভেতর ঢুকে পড়লে, ডিবি নিরাপত্তা পুলিশের সহায়তায় আটক করা হয়। আবু সুফিয়ান বর্তমানে ডিবি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আটক রয়েছে।’

    অভিযোগের বিষয়ে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হোসেন বলেন, ঘটনার পর আমাদের খরব দেওয়া হয়। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। অভিযোগটি এখন তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ।

    ঘটনার বিষয়ে জানতে গোয়েন্দা রমনা বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

    প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য সুপারিশ করতে যান ‘বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ’-এর আবু সুফিয়ান বিশ্বাসসহ কয়েকজন। আবু সুফিয়ান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও খুলনা জেলার সভাপতি। ২০২২ সালের ৮ জুন মাসে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের বাসায় ওই মিটিং হয়।

    আবু সুফিয়ান জানান, ওই সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ৪৮ জনকে নিয়োগের জন্য ৬ কোটি টাকায় রফা হয়। মন্ত্রীর ভাইয়ের ছেলে লিটন ও ড্রাইভার মোমিনকে টাকা বুঝিয়ে দিতে বলেন। তখন অগ্রিম হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী কল্লোলের উপস্থিতিতে লিটন ও মোমিনের কাছে ৪৮ জন চাকরি প্রার্থীর জন্য ৯৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেন আবু সুফিয়ান ও নাছির হাওলাদার নামের এক চাকরি প্রার্থী। তবে ওই ৪৮ জনের কেউই চাকরি পাননি।

    ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অগ্রিম টাকা দেওয়ার পরও চাকরি না হওয়ায় ১১ জুন প্রতিমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে দেখা করেন আবু সুফিয়ানসহ অন্যরা। এ সময় মন্ত্রী তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

    কিন্তু প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও টাকা ফেরত পাননি ভুক্তভোগীরা। ফলে গত ১৪ মে ৪৮ জনের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন আবু সুফিয়ান। এতে ক্ষুব্ধ হন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

    সম্প্রতি ঘোষিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি জাকির হোসেন। এতে ক্ষুব্ধ হন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের ওপর। বৃহস্পতিবার তাদের টাকা ফেরত নেওয়ার কথা বলে মন্ত্রীর বাসায় ডাকেন ব্যক্তিগত সহকারী কল্লোল। কল্লোলের কথামতো সকাল ১১টায় মন্ত্রীর মিন্টো রোডেরে ১১ নম্বর বাসায় যান আবু সুফিয়ান, নাছির হাওলাদার ও জাহিদ হাসান নামের তিনজন।

    ওই তিনজন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী কল্লোলের রুমে ঢোকার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওপর থেকে ওই রুমে চলে আসেন মন্ত্রী। এ সময় মন্ত্রী তার কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বাসার নিরাপত্তায় থাকা ৭ থেকে ৮ জন ওই রুমে প্রবেশ করে। এ সময় রুমের দরজা আটকে দিয়ে তিনজনকে পেটাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে মন্ত্রী নিজেও রড দিয়ে পেটাতে থাকেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ছোটাছুটি করে রুমের দরজা খুলে ফেলেন ভুক্তভোগীরা। তিনজন থেকে নাছির হাওলাদার ও জাহিদ হাসান প্রধান ফটক দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। আবু সুফিয়ান পার্শ্ববর্তীর দেওয়াল টপকে ডিবি কার্যালয়ের মধ্যে ঢুকে পড়েন। পরে ডিবি কার্যালয়ের নিরাপত্তায় থাকা সদস্যরা তাকে আটক করে বলে জানিয়েছেন জাহিদ হাসান।

    মন্ত্রীর বাসা থেকে বের হয়ে আসার পর জাহিদ হাসান ও নাসির হাওলাদারের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ও তার ব্যক্তিগত সহকারী কল্লোলের মোবাইলে একাধিকবার ফোন কল দেওয়া হলেও দুজনের কেউ কল রিসিভ করেননি। পরে দুজনেরই মোবাইল নম্বরে ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

    এদিকে আবু সুফিয়ান এখন কোথায়, কী অবস্থায় রয়েছেন তা ডিবি কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

  • প্রাথমিকের ৪ লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিং’র আওতায়

    প্রাথমিকের ৪ লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিং’র আওতায়

    মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের ৪ লাখ ১০ হাজার ২৩৮ জন শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিং-এর আওতায় আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দেশের ১৬টি উপজেলার ২ হাজার ১৬৬ টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এতে সুফলভোগী হবে।

    প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন আজ কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার রৌমারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দারিদ্র্য পীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায় স্কুল ফিডিং-এর উদ্ভোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

    কুড়িগ্রামের জেলাপ্রশাসক সুলতানা পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সোহেল আহমেদ।

    এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব বদরুল হাসান বাবুল ও রতন চন্দ্র পন্ডিত , রাজিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো,ডব্লিউএফপিএ-এর রংপুর প্রতিনিধি বীথিকা বিশ্বাসসহ রংপুরের উপ-পরিচালক ও কুড়িগ্রামের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং এই কার্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস-এর প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।

    প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারাদেশের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে দুপুরে রান্না করা খাবার পরিবেশন করা হবে।এ উপলক্ষে জাতীয় মিড ডে- মিল নীতিমালা ২০১৯ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
    তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে দেশের ১৬টি উপজেলার ২ হাজার ১৬৬ টি বিদ্যালয়ের ৪ লাখ ১০ হাজার ২৩৮ জন শিক্ষার্থী এতে সুফলভোগী হবে। আজকেএই রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলাসহ ইতোমধ্যে ১৬ উপজেলায় এ কার্যক্রম চালু হল।এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ, বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তিনি।

    জাকির হোসেন বলেন, চলতি বছরের মার্চ থেকে স্কুল মিল কার্যক্রম চালু করা হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে একদিন অন্তর অন্তর রান্না করা খাবার ও উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ বিস্কুট সরবরাহ করা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

    তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার ছিল ৫০ ভাগেরও বেশি।এই সরকারের সময়ে এই পরিস্থিতি আমুল বদলে গেছে। শেখ হাসিনার সরকার দেখিয়েছেন বিদ্যালয়ে শিশুদের খাবার নিশ্চিত করা গেলে দেশ আরও এগুবে।

    প্রতিমন্ত্রী বলেন, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। তাই ২০২৩ সালের মধ্যে সারাদেশের স্কুলগুলো এ কর্মসূচীর আওতায় আসবে।

    উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকে দারিদ্য্র পীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচী’ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশের ১০৪ টি দারিদ্র্য প্রবণ উপজেলা যার মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলার সকল উপজেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। জানা গেছে বর্তমানে সরকারি অর্থায়নে ৯৪টি উপজেলায় এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অর্থায়নে ১০ টি উপজেলায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় প্রকল্পভুক্ত ১০৪ টি উপজেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (নতুন জাতীয়করণসহ), শিশুকল্যা ট্রাস্ট পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসায় এবং এনজিও পরিচালিত বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত প্রত্যেক শিক্ষার্থীদেরকে দৈনন্দিন উপস্থিতির ভিত্তিতে প্রতি স্কুল দিবসে ৭৫ গ্রাম ওজনের পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট সরবরাহ করা হচ্ছে।

    অন্যদিকে স্কুল মিল কার্ষক্রমে রান্নাঘর নিমার্ণ করা হয়েছে। শিশুদের মাঝে রান্না করা গরম খাবার সরবরাহ করার জন্য রাধুনি নিয়োগ করা হয়েছে। যাদের বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ( বারটান) এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

    পরে প্রতিমন্ত্রী রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায় শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার পরিবেশন করে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির উদ্ধোধন করেন।