Tag: মো. আব্দুল হামিদ

  • সেনা সদস্যদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

    সেনা সদস্যদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

    রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ আজ জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষার্থে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

    রাষ্ট্রপতি আজ বন্দর নগরী চট্টগ্রামের হালিশহর আর্টিলাটি সেন্টার ও স্কুলে এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্টের চার আর্টিলারির জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান।

    তিনি আরো বলেন, ‘জাতীয় পতাকা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। তাই পতাকার মান রক্ষা করা সকল সৈনিকের পবিত্র দায়িত্ব। এই পতাকার সম্মান রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে তাদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।’

    সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি জরুরি পরিস্থিতির পাশাপাশি মাতৃভূমির অস্তিত্ব রক্ষায় যে কোন দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।

    ১, ২, ৩ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি ও ৩৮ এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্ট আর্টিলারির জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, দেশ ও জাতীর প্রয়োজনে জনকল্যাণমূলক কাজেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অবদান রাখতে হবে।

    এ বিষয়ে তিনি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, তাদের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।

    রাষ্ট্রপতি বলেন, বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতানায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে।

    আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত উল্লেখ করে তিনি সকল সদস্যকে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি ও ও পেশাগত জ্ঞান অর্জনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

    রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ‘একটি আধুনিক, সময় উপযোগী ও শক্তিশালী সামরিক বাহিনী যে কোন দেশের জন্য অপরিহার্য।’

    তিনি আরো বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘প্রতিরক্ষা নীতি’ প্রণয়ন করেন। এই নীতির আলোকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামোর বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

    রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ‘ফোর্স গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।

    তিনি আরো বলেন, ‘আধুনিক বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বর্তমান সরকার আধুনিক সমরাস্ত্র, আর্টিলারি গান ও আধুনিক ইনফ্যান্ট্রি গ্যাজেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।’

    মূল কার্যক্রমের পাশাপাশি জাতিগঠনমূলক কর্মকা-ে অসধারণ অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়, ভোটার ডাটাবেজ তৈরি ও জরুরি মুহূর্তে বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

    রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে কুঁচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।
    অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রপতি সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে ছবি তুলেন এবং দর্শনার্থীদের বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

    এর আগে, রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছুলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।

    অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য, উচ্চ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিক ও রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ।

  • ইভিনিং কোর্স পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করছে : রাষ্ট্রপতি

    ইভিনিং কোর্স পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করছে : রাষ্ট্রপতি

    রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চালু হওয়া বিভিন্ন ইভিনিং কোর্সের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, একশ্রেণীর শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন, যাতে সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে।

    রাষ্ট্রপতি আজ বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বলেন, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ডিপার্টমেন্ট কোর্স, ইভিনিং কোর্স, ডিপ্লোমা কোর্স ও ইনস্টিটিউটের ছড়াছড়ি। নিয়মিত কোর্স ছাড়াও এসব বাণিজ্যিক কোর্সের মাধ্যমে প্রতি বছর হাজার হাজার গ্রাজুয়েট বের হচ্ছে। এসব ডিগ্রি অর্জন করে শিক্ষার্থীরা কতটুকু লাভবান হচ্ছে এ ব্যাপারে প্রশ্ন থাকলেও একশ্রেণীর শিক্ষক ঠিকই লাভবান হচ্ছেন। তারা নিয়মিত নগদ সুবিধা পাচ্ছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করছেন।

    রাষ্ট্রপতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন দিনে সরকারি ও রাতে বেসরকারি চরিত্র ধারণ করে। বিশ্ববিদ্যালয় সন্ধ্যায় মেলায় পরিণত হয়। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়।

    রাষ্ট্রপতি বলেন, কিছু শিক্ষক আছেন যারা নিয়মিত কোর্সের ব্যাপারে অনেকটা উদাসীন। কিন্তু ইভিনিং কোর্স, ডিপ্লোমা কোর্স ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়ার ব্যাপারে তারা খুবই সিরিয়াস। কারণ, এগুলোতে নগদ প্রাপ্তি থাকে।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত মূল সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে রাষ্ট্রপতি সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, মনে রাখবেন বিশ্ববিদ্যালয় চলে জনগণের টাকায়। সুতরাং এর জবাবদিহিও জনগণের কাছে।

    রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সান্ধ্য কোর্সগুলো পুনর্বিচনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি এই সান্ধ্য কোর্স পদ্ধতি পছন্দ করতে পারি না। সন্ধ্যার পর শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ থাকে না।’

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলার রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস-চ্যান্সেলার ও শিক্ষকদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা পয়সা সততার সঙ্গে সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

    উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান অভিভাবক ও একাডেমিক লিডার অভিহিত করে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, কোনো কোনো উপাচার্য ও শিক্ষকের কর্মকান্ড দেখলে মনে হয় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসল কাজ কি- তা ভুলে গেছেন। অনেক শিক্ষক প্রশাসনিক পদ-পদবি পেয়ে নিজে যে একজন শিক্ষক সে পরিচয় ভুলে যান।

    গবেষণা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অত্যন্ত মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এখন গবেষণার মান নিয়েও নানা কথা ওঠে। অনেক বিভাগেই অন্যান্য পদের শিক্ষকের চেয়ে অধ্যাপকের সংখ্যা বেশি।

    রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পদোন্নতির ক্ষেত্রে গবেষণা মৌলিক, নাকি কেবল পদোন্নতির জন্য একটি গবেষণা তা বিবেচনায় নেয়ার নির্দেশ দেন।

    সম্প্রতি দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অমানবিক ও অনভিপ্রেত ঘটনার প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, একে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার্থীদের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।

  • সুখি-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে শিক্ষিত তরুণরাই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে-রাষ্ট্রপতি

    সুখি-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে শিক্ষিত তরুণরাই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে-রাষ্ট্রপতি

    রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে একটি তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞানভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে ‘রূপকল্প ২০২১’ ও ‘রূপকল্প ২০৪১’ ঘোষণা করেছেন।

    এ রূপকল্প বাস্তবায়নে আমাদের নিরলস প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এরই মধ্যে আমরা স্বল্প মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার মধ্য দিয়ে উন্নয়নের রূপকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছি। আজকের শিক্ষিত তরুণরাই এ কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

    আজ ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

    রাষ্ট্রপতি কৃতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনবহুল এ দেশকে সমৃদ্ধশালী করতে হলে প্রয়োজন পরিকল্পিত উপায়ে বিদ্যমান সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার। প্রকৌশলীগণ উন্নয়নের কারিগর। তাদের মেধা, মনন ও সৃজনশীল চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসে টেকসই উন্নয়নের রূপরেখা। তাই প্রকৌশলীদের চিন্তা ও চেতনায় থাকবে দূরদৃষ্টির সুস্পষ্ট প্রতিফলন।

    আগামী ২০৫০ সালে বা ২১০০ সালে বাংলাদেশের উন্নয়ন কেমন হওয়া উচিত বা বাংলাদেশের অবস্থান কোন্ স্তরে পৌঁছাবে তা বিবেচনায় রেখেই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকেও যথাযথভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।

    বিশ্বায়নের এই যুগে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আমাদের জ্ঞান ও দক্ষতাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা আজ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিক। আমাদের আত্ম-মর্যাদা সমুন্নত রাখতে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। আমি আশা করি, আজকের নবীন প্রকৌশলীরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে উপলব্ধি করবে এবং তাদের সৃজনশীল চিন্তা ও লব্ধ জ্ঞানকে এ লক্ষ্যে কাজে লাগাবে।

    নবীন গ্রাজুয়েটবৃন্দের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি মাইলফলক; একইসাথে তা স্নাতকদের জন্যও একটি স্মরণীয় দিন। জীবন চলার পথে তোমরা আজ একটা গুরুত্বপূর্ণ সোপান অতিক্রম করলে। জীবনের আসল সংগ্রাম এখন থেকে শুরু হবে। আজকের এ সনদ প্রাপ্তি সেই সংগ্রামে অবতীর্ণ হবার স্বীকৃতি পত্র। এ সনদের সম্মান তোমাদের রাখতে হবে।

    মনে রাখতে হবে, তোমাদের এ অর্জনে দেশের মানুষের অনেক অবদান রয়েছে। তোমরা তোমাদের সেবা, সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেম দিয়ে এ সনদের মান সমুজ্জ্বল রাখবে। কর্মক্ষেত্রে তোমরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাক না কেন; মাতৃভূমি এবং এ দেশের জনগণের কথা কখনো ভুলবে না। অন্যায় ও অসত্যের কাছে মাথা নত করবে না। তোমাদেরকে এ পর্যায়ে আসতে দেশবাসী যে সহায়তা করেছে তোমরা তোমাদের মেধা, মনন ও কর্মের মাধ্যমে তা পরিশোধ করবে। আমি তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। তোমরা বড় হও এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রাখ।

    এতে সমাবর্তন বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ.কে. আজাদ চৌধুরী বলেন, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের ধারাবাহিক অর্থনৈতিক সামাজিক সূচকের অগ্রগতি সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও বাংলাদেশের সাফল্য সারা বিশ্বে প্রসংশিত হয়েছে। আর এই ক্রমবর্ধমান অগ্রগতির পিছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন যে সব তরূণ প্রকৌশলী এবং প্রযুক্তিবিদ যাদের অনেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। আমার বিশ্বাস জাতিসংঘ ঘোষিত টেকশই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (ঝউএ) অর্জনেও তোমরা বিশ্বে প্রসংশনীয় ভূমিকা রাখবে।

    অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী।

    অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, রাউজানের সাংসদ এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শিরীণ আকতার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোঃ ইলিয়াছ হোসেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা, কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগসহ অন্যান্য অতিথিগণ উপস্থিত ছিলেন।

    এবারের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গত চার বছরের সর্বোচ্চ সিজিপিএধারী ৪ জনকে “বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক” প্রদান করা হয়। তাঁরা হলেন- ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ই.এম.কে. ইকবাল আহমেদ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়া আবসার, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সঞ্চয় বড়–য়া এবং ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ রাশেদুর রহমান। এছাড়া সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ২ হাজার ১৪৮ জন গ্র্যাজুয়েট এবং ৮৩ জন পোস্ট-গ্র্যাজুয়েটসহ মোট প্রায় ২ হাজার ২৩১ জন ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সমাবর্তন ডিগ্রী প্রদান করা হয়।

  • কাল চুয়েটে আসছে রাষ্ট্রপতি : সমাবর্তন ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সাজ সাজ রব

    কাল চুয়েটে আসছে রাষ্ট্রপতি : সমাবর্তন ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সাজ সাজ রব

    নেজাম উদ্দিন রানা, রাউজান প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ৪র্থ সমাবর্তন ও সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানকে ঘিরে বর্ণিল সাজে সেজেছে চুয়েট। রাষ্ট্রপতি এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ এর আগমনকে ঘিরে আয়োজনে যোগ হয়েছে বাড়তি মাত্রা।

    শুধু চুয়েট নয় চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে চুয়েট এলাকা পর্যন্ত সড়কের আশপাশে বিরাজ করছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। সড়কটির রাউজান অংশে মদুনাঘাট ব্রীজ থেকে চুয়েট এলাকা পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে উৎসাহ উদ্দীপনার পালে যেন ঢেউ লেগেছে রাউজানের সর্বত্র।চুয়েটে সাজসজ্জ্বা

    সন্ধ্যার পর যেন চুয়েট ক্যাম্পাস এলাকায় শোভা পাচ্ছে বর্ণিল আলোকচ্ছটা। শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা।

    সরেজমিনে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের একাংশ ঘুরে দেখা গেছে, পিংক, ক্লিন ও গ্রিন উপজেলা খ্যাত রাউজানের দক্ষিণাংশের পরিচ্ছন্ন পরিবেশটাকে আরো ঝকঝকে করে তুলতে রাউজানের সাংসদ এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর নির্দেশে সড়কের আশপাশের সৌন্ধর্য্যবর্ধন কাজে নেমে পড়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।

    দিন-রাত সমানতালে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। ইতিপূর্বে সড়কের আশপাশের গাছের গোড়ালিতে পিংক ও সাদা রঙের প্রলেপ লাগানো হলেও নতুন করে সেগুলো আবার রঙ করা হচ্ছে। সড়কের আশপাশের ঝোপঝাঁড় কেটে একেবারে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে গড়ে তোলা হচ্ছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানস্থলে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি।

    রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি উপলক্ষে রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে সার্বিক দিক নির্দেশনা দিয়েছেন রাউজানের সাংসদ এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়নে সার্বিক প্রস্তুতি ও করণীয় নিয়ে হচ্ছে সভা।চুয়েট

    চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) সূত্রে জানা গেছে, ৪র্থ সমাবর্তন ও সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানকে অনুষ্ঠান আগামীকাল ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গত চার বছরের সর্বোচ্চ সিজিপিএধারী ৪ জনকে “বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক” প্রদান করা হবে।

    তাঁরা হলেন- ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ই.এম.কে. ইকবাল আহামেদ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রুবায়া আফসার, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সঞ্চয় বড়ুয়া এবং ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ রাশেদুর রহমান।

    এছাড়া সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ২ হাজার ১৪৮ জন গ্র্যাজুয়েট এবং ৮৩ জন পোস্ট-গ্র্যাজুয়েটসহ মোট প্রায় ২ হাজার ২৩১ জন ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সমাবর্তন ডিগ্রী প্রদান করা হবে।

    গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। এতে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ.কে. আজাদ চৌধুরী।

    অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এম.পি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এম.পি এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।

    চুয়েটের গৌরবময় পথচলার ৫০ বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে আগামী ৬ ডিসেম্বর, দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এম.পি। এতে বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন, রেলপথ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাউজানের সংসদ এ.বি.এম. ফজলে করিম চৌধুরী এম.পি।

    অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। উক্ত সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের ভিভিআইপিগণ, মন্ত্রী পরিষদ সদস্যগণ, এমপিগণ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে পাশকৃত বিপুল প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, চুয়েট পরিবারের বর্তমান সদস্যগণ মিলে প্রায় ১০ হাজার লোকের মিলনমেলা বসতে পারে।

    সুবর্ণজয়ন্তীর জমকালো আয়োজনে থাকবে- আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে নগরজুড়ে আনন্দ র‌্যালি, সন্ধ্যায় আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাতে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান, আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসে যাত্রা, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান, চুয়েটের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আমন্ত্রিত শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, নৈশভোজ, ফায়ারওয়ার্কস, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী জেমস ও নগর বাউলের জমজমাট কনসার্ট প্রভৃতি।

    সমাবর্তন অনুষ্ঠান উপলক্ষে গত ৩০ নভেম্বর শনিবার চুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিভিন্ন সেবা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক সভা সমন্বয় চুয়েট ভিসি ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

    চুয়েটে রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে গত ২৭ নভেম্বর বুধবার চুয়েটের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে স্থাপিত হেলিপেডে হেলিকপ্টার মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।

    চুয়েট সূত্র জানায়, আজ ৪ ও আগামীকাল ৫ ডিসেম্বর সমাবর্তন উপলক্ষে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি সনদ গ্রহণকারীদের মাঝে গাউন, ক্যাপ ও সমাবর্তন সামগ্রী প্রদান করা হবে। এবং আজ ৪ ডিসেম্বর বুধবার বেলা আড়াইটায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের প্যান্ডেলে সমাবর্তনের রিহার্সেল অনুষ্ঠিত হবে।