Tag: যাবজ্জীবন

  • চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৩ জনের যাবজ্জীবন

    চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৩ জনের যাবজ্জীবন

    চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক বাপ্পি হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

    বুধবার (২৬ জুলাই) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত এই রায় দেন।

    মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার উত্তর লক্ষ্যারচর এলাকার মন্ডল পাড়ার জাকির হোসেনের মেয়ে রাশেদা বেগম (২৮) ও পটিয়া থানার শোভনদন্ডী এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে হুমায়ুন রশিদ (২৮)।

    যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বরগুনা জেলার তালতলী থানার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া আকন্দ বাড়ির মনসুর আলীর ছেলে আল আমিন (২৮), নোয়াখালী জেলার সাধুরাম থানার ব্রহ্মপুর এলাকার আন্দার বাড়ির মৃত হাবিবুল্লাহ’র ছেলে আকবর হোসেন রুবেল প্রকাশ সাদ্দাম (২৩) ও খাগড়াছড়ি জেলার সদর থানার শালবন এলাকার ফিরোজ সরকার বাড়ির হাফিজুল ইসলামের ছেলে মো.পারভেজ আলী (২৪)।

    জাকির হোসেন প্রকাশ মোল্লা জাকির নামে একজন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

    রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী নেছার আহম্মেদ।

    তিনি বলেন, পাঁচজন আসামির মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাশেদা বেগম, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আল আমিন ও আকবর হোসেন পলাতক রয়েছে। রায়ের সময় আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হুমায়ুন রশিদ ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মো.পারভেজ আলী এবং খালাস পাওয়া জাকির মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।

    পরে হুমায়ুন রশিদ ও মো.পারভেজ আলীকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

    মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর নগরীর চকবাজার থানার কে বি আমান আলী রোডের একটি তিন তলা ভবন থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহত আইনজীবীর বাবা আলী আহমদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন।

    মামলার তদন্ত শেষে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর তৎকালীন পরিদর্শক ও বর্তমান খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করেন আদালত।

    চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. আবদুর রশিদ বলেন, বাপ্পি হত্যা মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। আদালত সাক্ষী ও প্রমাণের ভিত্তিতে দুজনের মৃত্যুদণ্ড, তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজন আসামিকে খালাস দিয়েছেন।

    পিপিকে মামলা পরিচালনায় সহযোগিতা করেন চট্টগ্রাম অতিরিক্ত মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট দুলাল চন্দ্র দেবনাথ, অ্যাডভোকেট ফারহানা রবিউল লিজা ও অ্যাডভোকেট তৌহিদা আক্তার খানম রাবেতা।

  • বিশ্বজিৎ হত্যা: ১০ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

    বিশ্বজিৎ হত্যা: ১০ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

    বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি খন্দকার মো. ইউনুছ আলী ওরফে ইউনুছকে (৩৬) দীর্ঘ ১০ বছর পর গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-২)।

    সোমবার (৩১ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জের কেল্লাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

    ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের পাশে দর্জি দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিৎ দাসকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় ডিবি ২১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

    বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। গ্রেফতার ইউনুছ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলেও তিনি পলাতক ছিলেন।

    পরে ২০১৭ সালে হাইকোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খন্দকার ইউনুছের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বহাল রাখেন।

    র‌্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মো. ফজলুল হক জানান, গ্রেফতার ইউনুছ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

    ২৪ঘণ্টা/এনআর

  • চেয়ারম্যান আমজাদ হত্যায় ১০ জনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন

    চেয়ারম্যান আমজাদ হত্যায় ১০ জনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন

    সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন হত্যা মামলায় ১০ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের আদালত।

    আজ রবিবার দুপুরে বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম মোজাম্মেল হকের আদালত এই আদেশ দেন। মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত ও চার্জশিট ভুক্ত আসামি মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান চৌধুরী মারা যান।

    অন্য আসামিরা হলেন নেজাম উদ্দিন, মো. ইদ্রিস, জাহেদ, আবু মোহাম্মদ রাশেদ, ফারুক আহমদ, হারুনুর রশিদ, জিল্লুর রহমান, মো. রফিক, ইমতিয়াজ প্রকাশ মানিক ও তাহের।

    এছাড়া রায়ে আরও ৪ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৪ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
    বাদীপক্ষের আইনজীবী এসইউএম নুরুল ইসলাম বলেন, ১৯৯৯ সালে সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন হত্যা মামলায় প্রায় ২১ বছর পর ১০ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

    আমজাদ হোসেনের স্ত্রী ও মামলার বাদী সৈয়দা রওশন আক্তার বলেন, স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে ২১ বছর অপেক্ষা করেছি। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পেয়ে আমি আনন্দিত। আমি আদালতের এই রায় দ্রুত কার্যকর হোক এটাই চাই।

    প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ৪ অক্টোবর রাত ১২টায় সাতকানিয়া থানার মির্জাখীল বাংলাবাজার এলাকার একটি চায়ের দোকানে বসে কথা বলার সময় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনকে গুলি করে হত্যা করেন একদল দুর্বৃত্ত।

    হত্যাকাণ্ডের পর ২০ জনকে আসামি কওে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী সৈয়দা রওশন আক্তার। মামলার তদন্ত শেষে ২০ জনের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের ২২ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

    এরপর দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত মামলার রায় প্রদান করেন।

  • যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস,আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়

    যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস,আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়

    যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কারাভোগ করতে হবে বলে রায় দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। তবে আদালত চাইলে প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ৩০ বছর কারাদণ্ড দিতে পারেন।

    প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।

    ভার্চুয়াল আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্ত ছিলেনন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর আসামি পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী শিশির মনির।

    রায়ে আদালত বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড অর্থাৎ স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত। তবে বিচারিক (নিম্ন) আদালত যদি ৩০ বছরের সাজা দেন সেক্ষেত্রে ৪৫, ৫৩ এবং ৫৫ ও ৫৭ এই ধারাগুলা একসঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে। কিন্তু ৩০ বছরের সাজার বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারের ক্ষেত্রে কোনো সুবিধা পাবে না।

    প্রসঙ্গত ২০০১ সালে সাভারে জামান নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২০০৩ সালে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল। হাইকোর্টে আপিলের পর বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল থাকে।

    এর বিরুদ্ধে আপিলের পর ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আসামিদের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন সর্বোচ্চ আদালত।

    রায় ঘোষণার সময় আপিল বিভাগ ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে আমৃত্যু কারাবাস’ এমন মন্তব্য করেন। এর প্রতিবাদ জানান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

    ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে এ মামলার ৯২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশিত হয়। পরে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর আতাউর রহমান মৃধার আইনজীবী ওই রায়ের রিভিউর কথা সাংবাদিকদের জানান।

    গত বছর ১১ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে শুনানি শেষে রিভিউ আবেদনটির রায় (সিএভি) অপেক্ষমাণ রাখেন। তার আগে রিভিউ শুনানিতে সর্বোচ্চ আদালত পাঁচ অ্যামিকাস কিউরির বক্তব্য শোনেন। তারা হলেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ, এএফ হাসান আরিফ, আবদুর রেজাক খান, মুনসুরুল হক চৌধুরী ও এএম আমিন উদ্দিন।

  • যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস : রিভিউ রায় ১ ডিসেম্বর

    যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস : রিভিউ রায় ১ ডিসেম্বর

    এক হত্যা মামলায় আপিল বিভাগের দেয়া ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ রায়টি পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে রায়ের জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

    মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

    আদালতে আজ আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। যুক্ত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

    গত বছরের ১১ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে শুনানি শেষে মামলাটি সিএভি (রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ) রেখেছিলেন। তখন রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন অ্যামিকাস কিউরি ছিলেন।

    গত বছরের ১১ এপ্রিল এ মামলায় চারজন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতকে আইনি সহায়তাকারী) নিয়োগ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। তারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। অ্যামিকাস কিউরিরা হলেন- ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, এএফ হাসান আরিফ, আব্দুর রেজাক খান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন।

    তখন শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, যাবজ্জীবন সাজার একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকতে হবে। আমাদের আইনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হিসেবে ৩০ বছর বলা আছে। যা রেয়াত পাওয়ার পর সাড়ে ২২ বছর হয়। উন্নতবিশ্বেও সাজার মেয়াদ বলে দেয়া হয়। সেখানে প্যারোল ব্যবস্থাও রয়েছে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের দীর্ঘদিন কারাগারে থাকতে হয় না। কিন্তু আমাদের দেশে সে ব্যবস্থা নেই। তাই যাবজ্জীবন হিসেবে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হলে কারাগারগুলো বৃদ্ধাশ্রম হয়ে যাবে।

    উল্লেখ্য, ২০০১ সালে সাভারে জামান নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২০০৩ সালে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। হাইকোর্টে আপিলের পর বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল থাকে। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হলে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আসামিদের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন সর্বোচ্চ আদালত।

    রায় ঘোষণার সময় আপিল বিভাগ ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে আমৃত্যু কারাবাস’ এমন মন্তব্য করেন বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তবে ওইদিন অন্যান্য মামলার আসামিদের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে কিনা- সে বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, সবার ক্ষেত্রে এ রায় প্রযোজ্য হবে কিনা- সেটি পূর্ণাঙ্গ রায় না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না।

    একইদিন খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, রায়ের সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু (ন্যাচারাল লাইফ) কারাবাস। তখন আমি এর প্রতিবাদ করেছি।

    ‘আমি বলেছিলাম, দণ্ডবিধির ৫৭ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অর্থ ৩০ বছর। এছাড়া যাবজ্জীবনের আসামিরা কারাগারে রেয়াত পেয়ে দণ্ড আরও কমে আসে। যদি আমৃত্যুই হয়ে থাকে, তাহলে তাদের রেয়াতের কী হবে? আমি আরও বলেছিলাম, প্রধান বিচারপতির এ মন্তব্য যেন মূল রায়ে না থাকে। তবে যদি থাকে, তাহলে সব আসামির ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে।

    ওইদিন মরহুম অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, সাভারের একটি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ। তবে আদেশে বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর নয়, আমৃত্যু কারাদণ্ড। তখন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর।

    ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ মামলার ৯২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশিত হয়। পরে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর আতাউর রহমান মৃধার আইনজীবী ওই রায়ের রিভিউয়ের কথা সাংবাদিকদের জানান। পরে রিভিউ করেন আতাউর রহমান মৃধা।

    এদিকে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে আদালত বলেন, দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী দোষী ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে এটাই বিধান। এক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডটা হচ্ছে ব্যতিক্রম। যখন এ ধরনের পরিস্থিতিতে কাউকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়, তখন এর কারণ অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়। দণ্ডবিধির ৫৩ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অর্থ ৪৫ ধারার সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হবে। সেক্ষেত্রে দেখা যায় যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড।

    আদালত আরও বলেন, যদি হাইকোর্ট বিভাগ বা এই আদালত (আপিল বিভাগ) মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন তখন এবং নির্দেশ দেন যে, তার স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত এই কারাদণ্ড ভোগ করবে, তখন এ ধরনের মামলায় সাজা কমানোর আবেদন গ্রাহ্য হবে না।

    আদালতের এ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অপরাপর আসামির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিব ও কারা মহাপরিদর্শককে বলা হয়।

  • ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণ: ধর্ষক মজনুর যাবজ্জীবন

    ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণ: ধর্ষক মজনুর যাবজ্জীবন

    রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতাল এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে একমাত্র আসামি মজনুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

    বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৭-এর বিচারক মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার এ রায় দেন। মজনুকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের জেল দিয়েছেন আদালত।

    রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আফরোজা ফারহানা আহম্মেদ অরেঞ্জ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

    তিনি বলেন, এই মামলায় আসামি মজনু ধর্ষণের কথা আদালতে স্বীকার করেছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা রায়ে খুশি।

    উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে নামলে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে ধর্ষণের শিকার হন ওই ঢাবি শিক্ষার্থী। ধর্ষণের একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন নির্যাতিতা।

    রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরলে পরে সিএনজি নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যান ওই ছাত্রী। রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।

    পরের দিন সকালে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি উত্তর)। গত ৮ জানুয়ারি মজনুকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ১৬ জানুয়ারি ঘটনার দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় মজনু।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • অস্ত্র মামলায় প্রতারক সাহেদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

    অস্ত্র মামলায় প্রতারক সাহেদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

    ডেস্ক নিউজ : রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার হোতা সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে করা একটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

    সোমবার দুপুর ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন। এই আইনের অপর ধারায় সাহেদকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। রায়ে আদালত বলেছেন, উভয় ধারা একসঙ্গে কার্যকর হবে।

    অর্থপাচার, মাদক মামলাসহ সারা দেশে সাহেদের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা থাকলেও এই প্রথম তার বিরুদ্ধে কোনো মামলার রায় দিয়েছেন আদালত।

    রায় ঘোষণার আগে বেলা ১১ টার দিকে সাহেদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে প্রথমে আদালতের গারদ খানায় রাখা হয়। পরে এজলাসে তোলা হয়। মামলায় ১৪ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ১১ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

    গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে।

    এ ঘটনার পর পালিয়ে যান সাহেদ। ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনা হয়।

    করোনা পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্টসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৬ জুলাই সাহেদকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এরপর ১৯ জুলাই তাকে নিয়ে উত্তরার বাসার সামনে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ।

    সেখানে সাহেদের নিজস্ব সাদা প্রাইভেটকারে পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ১০ বোতল ফেনসিডিল, একটি পিস্তল এবং একটি গুলি উদ্ধার করা হয়। এরপর উত্তরা পশ্চিম থানায় অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়।

    গোয়েন্দা পুলিশ অস্ত্র মামলায় ৩০ জুলাই আদালতে সাহেদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। আর ২৭ আগস্ট অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে সাহেদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করেন আদালত।

    ২০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। মামলাটির আট কার্যদিবসে বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা হয়।

    আদালতে সাহেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন ১১ জন সাক্ষী। আর রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে চেয়েছেন সাহেদের বিরুদ্ধে সবোর্চ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, সাহেদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন তারা।

    ২৪ ঘণ্টা/রাজীব

  • পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: এসআই জাহিদসহ ৩ পুলিশের যাবজ্জীবন

    পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: এসআই জাহিদসহ ৩ পুলিশের যাবজ্জীবন

    পুলিশ হেফাজতে জনি নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ছয় বছর পর আজ বুধবার মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। রায়ে পল্লবী থানার তৎকালীন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদসহ তিন পুলিশ সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এই তিন পুলিশ সদস্যের প্রত্যেককে বাদীপক্ষকে দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

    আজ বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন। দেশের ইতিহাসে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর মামলায় এটিই প্রথম রায়।

    যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন-পল্লবী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু। সাত বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-সোর্স সুমন ও রাশেদ।

    মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর-১১ নম্বর সেক্টরে স্থানীয় সাদেকের ছেলের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশের সোর্স সুমন মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় জনি ও তার ভাই সুমনকে চলে যেতে বলেন। সুমন চলে গেলেও পরদিন এসে আবার আগের মতো আচরণ করতে থাকেন। তখন জনি ও তার ভাই তাকে চলে যেতে বললে সুমন পু্লিশকে ফোন করে তাদের ধরে নিয়ে যান। তাদের নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার লোকজন ধাওয়া দিলে পুলিশ গুলি ছোড়ে।

    পরে থানায় নিয়ে জনিকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে জনির অবস্থা খারাপ হলে ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    ওই ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি।

    মামলার অন্য আসামিরা হলেন-পল্লবী থানার সাবেক এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, এসআই আবদুল বাতেন, এসআই রাশেদ, এসআই শোভন কুমার সাহা, কনস্টেবল নজরুল, সোর্স সুমন ও রাসেল।

    ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম মারুফ হোসেন পাঁচজনকে অভিযুক্ত এবং পাঁচজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তকালে পুলিশের এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

    ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই রাশেদুল, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু, সোর্স সুমন ও রাশেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • হাটহাজারীর রঞ্জন হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, দুজনের যাবজ্জীবন

    হাটহাজারীর রঞ্জন হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, দুজনের যাবজ্জীবন

    চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে রঞ্জন সিংহ চৌধুরী হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

    সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. আব্দুল হালিম এ আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আবদুল কাদের, মো. মহসিন, এমরান ও ফোরকান। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আবদুল মোনাফ ও শাহাদাত।

    রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামির মধ্যে আদালতে মাত্র একজন আসামি আব্দুল মোনাফ হাজির ছিলেন। বাকিরা সবাই পলাতক। মোনাফকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক এবং বাকিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা যায়।

    এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি আইয়ুব খান। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১১ বছর ধরে আদালতে বিচারাধীন হাটহাজারীর রঞ্জন হত্যা মামলায় ১৯ সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য নিয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত সোমবার এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। এতে চার আসামির মৃত্যুদণ্ড ও দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

    আদালত সুত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৮ মে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের আসাদনগর এলাকা থেকে রঞ্জনকে তুলে নিয়ে যান দুর্বৃত্তরা। ওই দিন রাতে যোগীরহাট এলাকার একটি পুকুর থেকে রঞ্জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় তার স্ত্রী স্মৃতি রাণী চন্দ হত্যা মামলা দায়ের করেন।

    মামলাটির তদন্ত শেষ করে ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এতে অভিযুক্ত করা হয় ৬ আসামিকে। এরপর চার্জ গঠন করে আসামিদের বিচার শুরু করেন আদালত।

    ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৩৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য মামলাটি চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তর করেন।

  • বাঁশখালীতে মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষণ : রাজমিস্ত্রির যাবজ্জীবন

    বাঁশখালীতে মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষণ : রাজমিস্ত্রির যাবজ্জীবন

    বাঁশখালী উপজেলায় এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।

    আজ বুধবার (১৬ অক্টোবর) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মশিউর রহমান খান এ রায় দেন। দন্ডিত ধর্ষক হলো, কক্সবাজারের পেকুয়া ৬ নম্বর শীলখালি ওয়ার্ডের বজল আহমদের ছেলে মাহমুদুর রহমান হায়দার।

    রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জেসমিন আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অপহরণের দায়ে আসামি মাহমুদুরকে ১৪ বছরের এবং ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দুই ধারাতে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

    আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট বাঁশখালীর একটি মাদ্রাসার দশম শ্রেণির এক ছাত্রী ক্লাস করতে বের হলে অভিযুক্ত ধর্ষক তাকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে। পরে পুলিশ চট্টগ্রামের কালুরঘাট হামিদচর এলাকা থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে এবং এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা অপহরণ, ধর্ষণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে মাহমুদুরকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

    ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৭ সালের ২৭ আগষ্ট বিচার কার্য শুরু হয়। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার আদালত রায় ঘোষণা করেন।

  • কুমিল্লায় ব্যবসায়ী হত্যা : ৯ জনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন

    কুমিল্লায় ব্যবসায়ী হত্যা : ৯ জনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন

    কুমিল্লায় এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নয়জনকে মৃত্যুদণ্ড, চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের আদালত। সোমবার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. আবদুল হালিম এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

    মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন-সজীব, হারুণ, রাজিব, শাওন, আমিন, রবু, মমিন, আবু তাহের ও মহসিন। এদের মধ্যে বর্তমানে গ্রেফতার আছেন মহসিন ও আবু তাহের। বাকি সাতজন এখনো পলাতক রয়েছে।

    একই রায়ে মতিন, শাহ পরান, শামিম ও খোকন মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। এদের মধ্যে ঘটনার পর থেকেই পলাতক আছেন শামীম। এছাড়া নয়ন মিয়া, মোছলেম মিয়া ও বিলালকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। এদের মধ্যেও মামলা চলাকালীন সময়ে নয়ন মিয়া পলাতক ছিলেন।

    রায়ের বিষয়ে ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের পিপি আইয়ুব খান। তিনি বলেন, কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ছয় বছর আগে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যা মামলার রায়ে এ ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশ দেন। অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। একই রায়ে ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়ে হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় আদালত তিনজনকে খালাস দিয়েছেন বলে তথ্য নিশ্চিত করেছেন পিপি।

    পিপি আইয়ুব খান ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর গ্রামে মৎস্য প্রকল্পের অংশদারীত্ব এবং ‘সমাজ’ নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধের জের ধরে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে হত্যা করা হয়।

    আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর রাতে জাহাঙ্গীর আলম ওয়াজ শুনে ফেরার পথে গৌরিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়া গ্রামের আবু ইউসুফের বাড়ির সামনে আসামিরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা জাহাঙ্গীরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় গৌরিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    ওই ঘটনায় জাহাঙ্গীরের বাবা ফজর আলী বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৪ সালের ১৬ মার্চ এ মামলায় ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বও অভিযোগ গঠন করা হয়।

    দুই বছর পর মামলাটি বিচারের জন্য চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন।

    এ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে মামলার বাদী ও নিহতের বাবা ফজর আলী ‘উচ্চ আদালতেও যেন এ রায়টি বহাল থাকে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।

  • ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে গৃহবধুকে গণধর্ষণ মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন

    ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে গৃহবধুকে গণধর্ষণ মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন

    চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গণধর্ষণের অভিযোগে ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়েছে আদালত।

    আজ রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. মোতাহের আলী এই রায় দেন।

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে তথ্যটি নিশ্চিত করেন মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবি এম এ নাসের। তিনি বলেন, ধর্ষিত গৃহবধূসহ ছয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতের কাছে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯(১) ধারায় তিনজনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে। তাছাড়া প্রত্যেককে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেন আদালত।

    আদালত সূত্রে জানা যায়, দণ্ডিত আসামীরা হলেন, মৃত আব্দুল শুক্কুরের ছেলে মো. সোহেল (৩২), মৃত আজিজুল হকের ছেলে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (২৮) ও মৃত তোফায়েল আহম্মেদের ছেলে ফয়েজ আহমদ (৩০)। তারা প্রত্যেকে হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

    দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৭ মে রাতে হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের একটি বাড়িতে দলবেঁধে প্রবেশ করে একদল যুবক। এসময় তাদের কাছে থাকা অস্ত্রের মুখে সন্তানদের জিম্মি করে এক গৃহবধুকে গণধর্ষণ করে যুবকরা।

    পরে এ ঘটনায় হাটহাজারী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ধর্ষিত গৃহবধূর স্বামী। মামলার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে অবিযান চালিয়ে পুলিশ অভিযুক্ত সোহেল, ফয়েজ ও মহিউদ্দিনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে গ্রেফতার সোহেল ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

    ২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে গত বছরের ৪ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করে আদালত।