ক্যাসিনোকাণ্ডে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুবলীগ নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
২০১২ সালে যুবলীগের ৬ষ্ঠ কংগ্রেসে যুবলীগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান ওমর ফারুক চৌধুরী। সাম্প্রতিক ক্যাসিনো ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তার সম্পৃক্তার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে সংগঠনে ওএসডি করে রাখা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে গণভবনে কে থাকবেন আর কে থাকবেন না, যাদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ আছে তারা থাকবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় থাকলেও যুবলীগ একটি তালিকা জমা দিয়েছে। সেই তালিকায় বহু বিতর্কিতরাও ছিল। এটা নিয়ে বহু সংশয় থাকলেও শেষ পর্যন্ত এ সংক্রান্ত তালিকা জমা দিয়েছে যুবলীগ।
রোববার বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে সংগঠনের চলমান ‘সংকট’ উত্তরণে দিকনির্দেশনা চাইবেন যুবলীগ নেতারা। একইসঙ্গে ৭ম জাতীয় কংগ্রেসসহ ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়েও তার পরামর্শ চাওয়া হবে।
গণভবনে যাচ্ছেন আওয়ামী যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুনুর রশীদ। তার সঙ্গে থাকছেন: প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ শামসুল আবেদীন, শহিদ সেরনিয়াবাত, মজিবুর রহমান চৌধুরী, মোঃ ফারুক হোসেন, মাহবুবুর রহমান হিরন,আবদুস সাত্তার মাসুদ, মোঃ আতাউর রহমান, এডভোকেট বেলাল হোসাইন, আলতাব হোসেন বাচ্চু, মোঃ সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, আবুল বাশার, মোহাম্মদ আলী খোকন, অধ্যাপক এবিএম আমজাদ হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার নিখিল গুহ, শাহজাহান ভুইয়া মাখন, এডভোকেট মোতাহার হোসেন সাজু, ডা. মোখলেছুজ্জামান হিরু, শেখ আতিয়ার রহমান দিপু।
ভাইস চ্যান্সেলরের মতো মহিমান্বিত পদকে জনগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মীজানুর রহমান কলুষিত করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, ‘একদা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস চ্যান্সেলররা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বা দেশের রাষ্ট্রপতি হবার স্বপ্ন দেখতেন। আর এখন তারা যুবলীগের সভাপতি হবার স্বপ্ন দেখেন।’
রবিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘এই আওয়ামী জাহেলিয়াতের আমলে অবস্থা এতটাই বিপর্যয়কর অবস্থায় পৌঁছেছে, এই দেশে এখন একজন উপাচার্য পদের চেয়ে যুবলীগের নেতা হওয়াকে বেশি গৌরবজনক মনে করে। গণভবনের আনুকূল্য একজন উপাচার্যকে কতটা রুচিহীন, অমার্জিত ও অসংস্কৃত করে তুলতে পারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মিজানুর রহমান তার উদাহরণ।’
তিনি বলেন, ‘এই উন্মাদ একনায়কতন্ত্রের যুগে আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ ও চিন্তা-চেতনায় যে পচন ধরেছে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আকাংখা তারই নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ও সম্ভ্রমপূর্ণ বিদ্যাপীঠ গড়ে তোলার বদলে ভাইস চ্যান্সেলরের দিবাস্বপ্ন যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়া। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদ ভাইস চ্যান্সেলরের মতো মহিমামন্বিত পদকে কলুষিত করলেন জনগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মিজানুর রহমান।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুয়া-ক্যাসিনো ও অবৈধ টাকা মিশ্রিত একটি প্রতিষ্ঠানের নাম হয়ে পড়েছে যুবলীগ। স্বাধীনতাত্তোর জেলা শহরগুলোতে যুবলীগের নেতারা ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ পেয়েও মিজানুর রহমান এখনও যুবলীগ তথা ক্যাসিনো লীগের প্রেসিডিয়ামের ১ নম্বর সদস্য হিসাবে আছেন ! এই পদটা ছাড়েননি ! কতটা নির্লজ্জ, নির্বোধ ও দলকানা হলে ভিসির মতো পদ ছেড়ে তিনি যুবলীগের সভাপতি হতে চান!
এ থেকে স্পষ্ট যে, মিজানুর রহমানরা ক্যাসিনোর হিসাবটা বুঝে গেছেন, এখন নতুন সম্রাট হতে তিনি খুবই আগ্রহী! উনি যোগ্য ছিলেন যুবলীগের হাতুড়ী বাহিনীর নেতা হওয়ার। উনাকে করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। দীর্ঘদিনের শ্রদ্ধা-সম্ভ্রমের এই পদটিকে কলঙ্কিত করছে ড. মিজান। এই সরকারের পচনটা মাথায়।’
রিজভী বলেন, ‘সরকার এখন কুশিক্ষা-অশিক্ষায় একটি দলীয় বুদ্ধিজীবী শ্রেণী তৈরি করার ব্রত নিয়েছে। ফলে প্রথিতযশা শিক্ষাবিদদের অবজ্ঞা করে উপাচার্য করা হচ্ছে নিরুচীর দলীয় কর্মীদের। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির গর্ব ১০ টাকায় চা-সিঙ্গারা, রাজশাহীর ভিসির স্বপ্ন জয় হিন্দ প্রতিষ্ঠা, বুয়েটের ভিসি হল ডরমেটরিতে তার পালিত ক্যাডারদের হাতে আবরার ফাহাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে বলে অনাকাঙ্খিত মৃত্যু। সমাজের এই চরম অবক্ষয়ের জন্য দায়ী জবাবদিহিহীন রাষ্ট্র ব্যবস্থা। যে রাষ্ট্র দখল করে আছে একটি ভোট ডাকাত অবৈধ সরকার। তাদের বিদায় না ঘটানো পর্যন্ত এই পচন বন্ধ করা সম্ভব নয়।’
ছিলেন দিনমজুর। বহু কষ্টে জমানো টাকায় খুলে বসেছিলেন একটা টং দোকানও। তারপর খুব দ্রুত বদলে গেল সবকিছু।
দিনমজুর সেই লোকটিই রাতারাতি হয়ে গেল বিলাসবহুল বাড়ি আর গাড়ির মালিক।
ছয় বছর আগে একমাত্র বাহন অল্প দামি একটি মোটরসাইকেল থাকলেও ছয় বছর শেষে হয়েছে কোটি টাকা দামের বিলাসবহুল গাড়ি। কিছুদিন পরপরই তিনি পরিবর্তন করেন গাড়ির ব্র্যান্ড। যেখানেই যান, তার গাড়িবহরের সামনে-পেছনে থাকে শতাধিক সহযোগীর একটি দল। নিজের সংগ্রহে রয়েছে মার্সিডিস, বিএমডব্লিউ, ক্রাউন প্রাডো, ল্যান্ডক্রুজার ভি-৮, বিএমডব্লিউ স্পোর্টসসহ নামিদামি সব ব্র্যান্ডের গাড়ি।
এই হলো কাউন্সিলর তারিকুজ্জামান রাজীবের গল্প। রাজীবের গল্পটা শুনে মনে হতেই পারে যে, সে আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ পেয়েই ধনী হয়ে গেছে। কিন্তু গল্প আর বাস্তব এক নয়। তবে গল্পের সাথে বাস্তবের কিছু মিল থেকেই যায়।
রাজীবের আলাদীনের প্রদীপ না থাকলেও ছিল প্রদীপের দৈত্যের মতো বিশাল রাজনৈতিক গডফাদার। মূলত এই গডফাদারদের জোরেই টং দোকানদার থেকে মোহাম্মদপুরের `সুলতান’ হতে পেরেছিল রাজীব।
জানা গেছে, মোহাম্মদপুরে যুবলীগ দিয়েই শুরু রাজীবের রাজনৈতিক জীবন। মাত্র এক বছরের রাজনীতি করেই বাগিয়ে নেয় মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়কের পদ। এ পদ পেয়েই থানা আওয়ামী লীগের এক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে জুতাপেটা করে। সে সময় যুবলীগ থেকে তাকে বহিষ্কারও করা হয়। শোনা যায়, রাজীব মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে বহিষ্কারাদেশ বাতিল করে উল্টো ঢাকা মহানগরী উত্তর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বনে যায়। এই পদ কিনতে সে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ করেছিল বলে জানা যায়।
২০১৪ সালে কাউন্সিলর হওয়ার পর মাত্র কয়েক বছরেই রাজীব কয়েক শ কোটি টাকার মালিক হয়ে যায়। শোনা যায়, কাউন্সিলর নির্বাচন করার আগে রাজনীতির পাশাপাশি এক চাচাকে কাজকর্মে সহযোগিতা করতো সে। ওই চাচা ঠিকাদারি করতেন। নির্বাচনের সময় তার ওই চাচা একটি জমি বিক্রি করে ৮০ লাখ টাকা দিয়ে রাজীবকে কাউন্সিলর নির্বাচন করতে সহযোগিতা করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় ওই চাচার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করে রাজীব।
মাত্র ছয় বছর আগেও মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির একটি বাড়ির নিচতলার গ্যারেজের পাশেই ছোট্ট এক বাড়িতে ৬ হাজার টাকায় সস্ত্রীক ভাড়া থাকত রাজীব।
মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির ১ নম্বর সড়কের ৩৩ নম্বর প্লটে রয়েছে রাজীবের ডুপ্লেক্স বাড়ি। জানা গেছে, ৫ কাঠা জমির ওপর বাড়িটি করতে খরচ হয়েছে ৬ কোটি টাকা। এর বাইরে রহিম ব্যাপারী ঘাট মসজিদের সামনে আবদুুল হক নামে এক ব্যক্তির ৩৫ কাঠার একটি প্লট যুবলীগের কার্যালয়ের নামে দখল, ওই জমির পাশেই জাকির হোসেনের ৭-৮ কাঠার ১টি প্লট দখল করেছিলেন। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে ময়ূর ভিলার মালিক রফিক মিয়ার কয়েক কোটি টাকা দামের জমি দখল করেন রাজীব। পাবলিক টয়লেট নির্মাণের মাধ্যমে জমিটি দখল করলেও সেখানে ৫টি দোকান তুলে ভাড়া দিয়েছেন। ঢাকা রিয়েল এস্টেটের ৩ নম্বর সড়কের ৫৬ নম্বর প্লট, চাঁদ উদ্যানের ৩ নম্বর সড়কের রহিমা আক্তার রাহি, বাবুল ও জসিমের ৩টি প্লটসহ অন্তত ১০টি প্লট দখল করেছেন তিনি। বিদেশেও আছে অঢেল সম্পত্তি।
জানা গেছে, রাজীবের আয়ের মূল উৎস হলো সরকারি জায়গা দখল করে ভাড়া দেওয়া, জমি দখল, তদ্বির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি এবং ক্যাসিনো ব্যবসা।
রাজীবের সব অপকর্মের সঙ্গী যুবলীগ নেতা শাহ আলম জীবন, সিএনজি কামাল, আশিকুজ্জামান রনি, ফারুক, রাজীবের স্ত্রীর বড় ভাই ইমতিহান হোসেন ইমতিসহ অর্ধশত ক্যাডার। অভিযোগ রয়েছে, রাজীবের নির্দেশেই যুবলীগ কর্মী তছিরকে হত্যা করে রাজীবের ঘনিষ্ঠরা।
২০১৫ সালের কাউন্সিলর নির্বাচনে রাজীব ছিল আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। বিভিন্ন কারসাজি করে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা ঢাকা মহানগরী উত্তর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শেখ বজলুর রহমানকে হারায় সে।
অভিযোগ রয়েছে, এর পর থেকেই এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নানাভাবে অপমান অপদস্থ করে আসছিল সে।
মোহাম্মদপুরের পুরো নিয়ন্ত্রণই চলে গিয়েছিল তার হাতে। মোহাম্মদপুর, বেড়িবাঁধ, বসিলার পরিবহনে চাঁদাবাজি এবং অটোরিকশা, লেগুনা, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও বাস থেকে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা চাঁদা তোলে তার লোকজন। পাঁচ বছর ধরে এলাকার কোরবানির পশুর হাটের ইজারাও নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল রাজীব।
সেপ্টেম্বরে শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর সে অন্তত ২০০ কোটি টাকা খরচ করে তার গ্রেপ্তার আটকাতে চেয়েছিল বলে দাবি করেছে একটি সূত্র।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সমস্ত চেষ্টাই বিফলে গেল।ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদপুর-বসিলা-ঢাকা উদ্যানসহ আশপাশ এলাকার অঘোষিত সম্রাট রাজীবের সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছে। দিনমজুর থেকে চাঁদাবাজি ও দখলের টাকায় ধনকুবের হয়ে ওঠা রাজীব গতকাল ভাটারা থেকে আটক হয়েছেন র্যাবের হাতে। ওই বাড়িতে রাজীব ১৩ অক্টোবর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন। বাড়িটি তার আমেরিকাপ্রবাসী বন্ধুর।
রাতে গ্রেফতার হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আওয়ামী যুবলীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
শনিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত পাশে ৮ নম্বর সড়কের ৪০৪ নং বাসায় অভিযান চালায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব)। সেখানে রাজীবকে গ্রেফতার করে র্যাব-১। এরপরই তাকে বহিষ্কার করে সংগঠনটি। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের ‘কথিত’ ছেলে রাজীব। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রাজত্ব গড়ে তুলেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, টেন্ডারবাজি, খুন, কিশোর গ্যাং, মাদক ও ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে।
এসব সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বসুন্ধরার ওই বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে রাজীবকে গ্রেফতার করা হয়। ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরুর পর গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন তিনি। সেটি তার বন্ধুর বাড়ি ছিল।
গ্রেফতারের পর ওই বাসাতেই রাজীবকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তিনি কী বলেছেন-তা জানা যায়নি।
গেল ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীতে ক্যাসিনো ও দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চলছে। এসময়ে গডফাদারসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
একের পর এক নেতা গ্রেফতারের পর যুবলীগে ঘোষণা করে, চলমান অভিযানে সংগঠনের কেউ দুর্নীতি কিংবা অন্য কোনও কারণে গ্রেফতার হলে তাকে বহিষ্কার করা হবে।
আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে যুবলীগের নীতিনির্ধারণী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
তবে এ বৈঠকে থাকছেন না যুবলীগের আলোচিত সমালোচিত চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।
গতকাল শনিবার (১৯ অক্টোবর) সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চতি করেছেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ। বৈঠকে যুবলীগের কাউন্সিল ও সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।
আজ বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সঙ্গে এ বৈঠক করবেন তিনি।
এর আগে ৯ অক্টোবর যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের চার সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২৩ নভেম্বর যুবলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
যুবলীগের সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল সাত বছর আগে। ২০১২ সালের ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় তিন বছর মেয়াদি সর্বশেষ সম্মেলন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এরপর ২০১৫ সালে পরবর্তী সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। মূলত সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের অনীহার কারণেই নির্ধারিত সময়ের পরও সম্মেলন করা যায়নি বলে অভিযোগ কয়েকজন যুবলীগ নেতাদের।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমানকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এছাড়াও ওই সভা সূত্রে জানা গেছে, দু’একদিনের মধ্যেই যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন।
এসএসসি পাশ কাজী আনিসুর রহমান যুবলীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পিয়ন ছিলেন। ২০০৫ সালে মাত্র ৫ হাজার টাকা বেতনে ঐ চাকরি পান তিনি যুবলীগের সাবেক এক সভাপতির হাত ধরে। যুবলীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পিয়ন থেকে দপ্তর সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেওয়ার পাশপাশি এখন তিনি ৩০০ কোটি টাকার মালিক।
অফিসের পিয়নের কাজের পাশাপাশি কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন তিনি। এতে করে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি কার্যালয়ে আসা তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেও পরিচয়ের সুযোগ হয় তার। কম্পিউটারে নিয়মিত সারাদেশের সব যুবলীগ কমিটির তালিকা তৈরি করতে গিয়ে সব তথ্য তার নখদর্পণে চলে আসে। মুখস্থ বলে দিতে পারতেন যে কোনো কমিটির নেতার নাম।
২০১২ সালে যুবলীগের নতুন কমিটি গঠনের সময় তিনি নিজেও আনিসকে একটা সদস্যপদ দিতে সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু আনিস পেয়ে যান উপদপ্তর সম্পাদকের পদ। দপ্তর সম্পাদক পদটি শুরু থেকেই খালি ছিল, ছয় মাসের মধ্যেই সেটাও পেয়ে যান। আনিস থাকতেন টিকাটুলী এলাকায়। কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার পর ধানমন্ডিতে ভাড়া বাসা খোঁজেন। কিন্তু ভাড়া না নিয়ে ১৫ নম্বর সড়কে প্রায় আড়াই হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনে নেন। এখানেই আছেন প্রায় সাড়ে তিন বছর।
বর্তমানে রাজধানীর ধানমন্ডির ১০/এ সড়কের এক বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে থাকেন কাজী আনিস। পাঁচ বছর আগেও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে টিনের ঘরে থাকা আনিসুরের বাড়িতে এখন সুরম্য অট্টালিকা। ময়মনসিংহের ভালুকা, ঢাকার স্বামীবাগ, ইত্তেফাক মোড়, যাত্রাবাড়ী, শুক্রাবাদ, উত্তরায়ও বাড়ি আছে তার।
এছাড়া লালমাটিয়া, ঝিগাতলা ও ধানমন্ডিতে আছে কয়েকটি ফ্ল্যাট। উত্তরা, মিরপুর ও গুলশানে মার্কেটে আনিসের নামে আছে দোকান। নারায়ণগঞ্জের একটি চটের মিলেরও মালিক আনিস।
এছাড়া যুবলীগ অফিসের এক পিয়ন ৯০০ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। যুবলীগের শীর্ষ নেতার কোনো কোনো খাত থেকে বা কারা কোটি কোটি টাকা প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এসে দিয়ে যায় তা আনিসের মাধ্যমেই নেতার কাছে পৌঁছে যেত। এ কারণে আনিসকে পিয়ন থেকে দপ্তর সম্পাদকের পদ উপহার দেওয়া হয়।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রাজধানীর বিভিন্ন ক্যাসিনো ক্লাবের অভ্যন্তরীণ এসব চিত্র ভিডিওসহ বিস্তারিত প্রমাণাদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে দিয়েছে। এসব দেখে প্রধানমন্ত্রী কঠোরভাবে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন।
ফলে চলমান দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানে এসব অপকর্মকারীর পালানোর কোনো পথ থাকছে না এবং অস্বীকার করে কিংবা নালিশ বা তদবির করেও বাঁচার সুযোগ নেই।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশ থেকে একুশে পত্রিকা সম্পাদক ও রাঙ্গুনিয়া জার্নালিস্ট অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক আজাদ তালুকদারকে প্রকাশ্যে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে।
রাউজান উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আরজু সিকদার একুশে পত্রিকা সম্পাদককে আক্রমণ করে প্রায় ৬ মিনিটের বক্তব্য দেন।
পুরো বক্তৃতাজুড়ে ছিল আজাদ তালুকদারকে মেরে ফেলা, কেটে ফেলার হুমকি। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
একুশে পত্রিকা সম্পাদককে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি কাজী আবুল মনসুর, সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান, চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দিন তোতা, সাধারণ সম্পাদক লতিফা আনসারী রুনা, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভাপতি শফিক আহামদ সাজীব ও সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম বাবু।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহ সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। দলের নাম ব্যবহার করে সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দলীয় ও সরকারী সিদ্ধান্ত হয়েছে। এমন অবস্থায় একজন সাংবাদিককে হুমকি সরকার ও দলের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়ার মতো। উপজেলা যুবলীগ সভাপতি হওয়ার মতো যোগ্যতা আরজু সিকদারের আছে কিনা সেটাই এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সাংবাদিকবান্ধব সরকার। সাংবাদিককে হুমকি দিয়ে গণমাধ্যমে সরকারের অর্জনকে ধুলিসাৎ করে দিতে চায় আরজু সিকদার। সাংবাদিকের ওপর কোনো ধরনের হুমকি বরদাশত করা হবে না। দ্রুত হুমকিদাতা আরজু সিকদারকে আইনের আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস বলেন, আরজু সিকদারের মতো লোকরা বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করছে। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই অভিযান চালানো উচিত। আমরা চাই, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকুক। আরজু সিকদারের মতো যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
হুমকির বিষয়ে একুশে পত্রিকা সম্পাদক আজাদ তালুকদার বলেন, সমাবেশ থেকে আমাকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এর পুরো ভিডিও চিত্র আমার কাছে আছে। আমি আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেলে একুশে পত্রিকা সম্পাদককে সরাসরি আক্রমণ করে ‘রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগ নিয়ে কটূক্তিকারী’ উল্লেখ করে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের ব্যানারে স্থানীয় ইছাখালী এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে আরজু সিকদার।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলন আগামী ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
ক্ষমতাসীন দলের মেয়াদোত্তীর্ণ আরও দুটি সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলনের তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে সংগঠনগুলোর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগেরও সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এসব সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সম্মেলনের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন আয়োজন করবেন বলে জানান তিনি।
বিপ্লব বড়ুয়া জানান, আগামী ২৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। ২ নভেম্বর কৃষক লীগ, ৯ নভেম্বর জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
ব্যাংক হিসাব তলবের পর এবার যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলি জানিয়েছে, ঢাকা মহনগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটসহ যুবলীগের একাধিক নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর যুবলীগ চেয়ারম্যানের বিদেশ যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, সাম্প্রতিক শুদ্ধি অভিযানে যেসব রাজনৈতিক নেতাদের যেসব দুর্নীতি, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয় উঠে আসছে সেগুলো নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে যুবলীগ চেয়ারম্যানকে আপাতত দেশ না ছাড়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সব ধরনের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেনের বিবরণী তলব করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট। ওমর ফারুকের ব্যাংক হিসাবের সকল তথ্য আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়। এরপর আজ বিদেশ যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো যুবলীগ চেয়ারম্যানের।
রাজধানীতে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির ঘটনায় এর আগেও কয়েকজন যুবলীগ নেতা ও ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব তলব করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সময় তাদের অনেকের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়। ফ্রিজ করা হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে সংগঠনটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ এ তথ্য জানান।
উল্লেখ্য আজ রবিবার ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সহযোগী আরমানকেও গ্রেপ্তার করে র্যাব।
রবিবার সকালে র্যাব-১ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করে।
এতে বলে হয়, চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার ভোর ৫টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ক্যাসিনো ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু হলে আলোচনায় আসে সম্রাটের নাম। গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে তাকে আটকের।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, দেশে ক্যাসিনো বাণিজ্যের মূলহোতা সম্রাট। অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া লোকজন জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানিয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সম্রাট চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের শুরু থেকে তাদের নজরদারিতে ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও চালিয়েছিলেন।