Tag: রাউজান থানা

  • করোনায় আক্রান্ত রাউজান থানার চার পুলিশ সদস্যের জন্য উপহার পাঠালেন সাংসদ ফজলে করিম

    করোনায় আক্রান্ত রাউজান থানার চার পুলিশ সদস্যের জন্য উপহার পাঠালেন সাংসদ ফজলে করিম

    রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থাকা রাউজান থানার চার পুলিশ সদস্যের জন্য বিভিন্ন জাতের ফল পাঠিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি।

    বুধবার রাতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজের নেতৃত্বে সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজানের নেতৃবৃন্দসহ একটি দল আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের বাসায় গিয়ে সাংসদের উপহার পৌঁছে দেন। সাংসদের পাঠানো এসব সামগ্রী বুঝে নেন রাউজান থানার ওসি কেপায়েত উল্লাহ।

    এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিকদাইর ইউপি চেয়ারম্যান প্রিয়তোষ চৌধুরী, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক রোকন, সেন্ট্রাল বয়েজ এর সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ জামাল নকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক মঈনুদ্দিন জামাল চিশতি, কর্মকর্তা মোহাম্মদ নোমান প্রমুখ।

    ওসি কেপায়েত উল্লাহ জানান, করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা আগের চেয়ে সুস্থ আছেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/নেজাম

  • রাউজান থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ

    রাউজান থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ

    রাউজান প্রতিনিধি : “পুলিশ সপ্তাহ ২০২০ ” উপলক্ষে রাউজান থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে রাউজান থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া মেম্বারের নিজস্ব অর্থায়নে এলাকার গরিব ও দুস্থদের মাঝে এক হাজার পিস কম্বল বিতরণ করা হয়।

    এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ কেফায়েত উল্লাহর সভাপতিত্বে ও রাউজান থানার উপ পরিদর্শক সাইমুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, সমাজসেবক ফারাজ করিম চৌধুরী।

    অতিথি ছিলেন নোয়াপাড়া পথেরহাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাফর আহমদ, আ.লীগ নেতা তফসির আহমেদ বাবুল,জাহাঙ্গীর সিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন, সুমন দে, দ. রাউজান পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ম্যালকম চক্রবর্তী, হাফিজ উদ্দিন মেম্বার , সেকান্দর হোসেন মেম্বার, যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম।

    অনুষ্ঠানে শীতার্থ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন ফারাজ করিম চৌধুরী।

    ফারাজ করিম চৌধুরী বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং জনগণের মাঝে পুলিশের আস্থার সেতুবন্ধন সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে। সন্ত্রাসমুক্ত, অপরাধমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি শীতার্থ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের যে উদ্যোগ তারা নিয়েছেন সেটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় একটি কাজ।

  • রাউজান থানা হেফাজত থেকে মায়ের বুকে ফিরলো শিশু সুজন

    রাউজান থানা হেফাজত থেকে মায়ের বুকে ফিরলো শিশু সুজন

    নেজাম উদ্দিন রানা, রাউজান প্রতিনিধি : চারদিন রাউজান থানা হেফাজতে ছিল শিশু সুজন। চঞ্চল এই শিশুটি চারদিনেই আপন করে নিয়েছিলেন রাউজান থানার ওসিসহ সকল কর্মকর্তার মন। থানার এ কক্ষ থেকে ও কক্ষে হাসি-আনন্দে মাতিয়ে রাখতেন থানা ভবনটা।

    বিশেষ করে থানার নারী পুলিশ সদস্যরা রীতিমতো আপন করে নিয়েছিলেন ছেলেটিকে। তাদের সাথে সারাক্ষণ খুনসুটি আর আনন্দ উল্লাসে সময় কাটাতেন শিশু সুজন। কিন্তু যেই ছেলেটিকে নিয়ে এত আনন্দ কোলাহল তার ঠিকানা জানা ছিলনা কারো। তাই শিশুটির হাসিমুখ সবার মন জয় করলেও রীতিমতো শিশুটিকে নিয়ে টেনশনের কমতি ছিলনা থানার কর্মকর্তাদের।

    রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেফায়েত উল্লাহ শিশুটির ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুটির সন্ধান জানতে চেয়ে একটি পোষ্ট দেন। নিখোঁজ শিশুটিকে নিয়ে পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়। অনেকেই শিশুটির ছবিসহ ফেইসবুকে বিষয়টি শেয়ার করেন।

    বিষয়টি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ছবি দেখেই তার স্বজনরা পরিচয় শনাক্ত করে ছুটে আসেন রাউজান থানায়। টানা কয়েকদিন বিচ্ছিন্ন থাকার পর মা ছেলের মিলনমেলা যেন হার মানিয়েছে সিনেমার গল্পকে।

    ১৮ নভেম্বর সোমবার বিকেলে শিশু সুজনকে যখন রাউজান থানার ওসি কেফায়েত উল্লাহ তার মা চম্পা খাতুনকে হস্তান্তর করছিলেন তখন আনন্দ অশ্রুতে টলমল রাউজান থানার কর্মকর্তা থেকে শুরু করে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।

    শিশু সুজন হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের কেরামত আলীর মেয়ে চম্পা খাতুন ও একই এলাকার সিদ্দীক আলীর তৃতীয় পুত্র।

    সুজনের মা চম্পা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, বিগত পাঁচ বছর পূর্বে তাদের ঘর আলোকিত করে সুজন জন্ম নেওয়ার পরই তার পিতা সিদ্দিক আলী পরপারের ডাকে সাড়া দেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই মেয়ে ও এক সন্তানকে নিয়ে সংসারের ভার বইতে গিয়ে চোখে মুখে অন্ধকার দেখতে পান চম্পা খাতুন।

    সন্তানদের সুখের কথা ভেবে সাত মাস পূর্বেই সিলেট জেলার জজ মিয়ার সাথে দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর স্বামীর সাথে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন চর রাঙ্গামাটিয়া এলাকার করিম ম্যানসনে ভাড়াবাসায় উঠেন। চম্পা খাতুন ভেবেছিলেন হয়তো তার দ্বিতীয় স্বামী পিতৃস্নেহে তার সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করবেন। কিন্তু কিছুদিন অতিবাহিত হতেই সংসারে দানা বাঁধে কলহ।

    চম্পা খাতুন আরো বলেন, তার সন্তান নিখোঁজের ৩/৪দিন পূর্বে সন্তানকে বিক্রি করার হুমকি দিয়েছিল তার সৎপিতা জজ মিয়া। গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন বরিশাল বাজার এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় শিশু সুজন। সুজন নিখোঁজের পর তার সৎপিতার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা চম্পা খাতুন পাগলের মতো হন্যে হয়ে ছেলের খোঁজ নিতে থাকে।

    এদিকে সুজন নিখোঁজের ঘটনায় এলাকায় মাইকিং প্রচারনাও চালানো হয়। টানা কয়েকদিনেও ছেলের খোঁজ না পেয়ে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে চোখের জলে বুক ভাসাতেন মা চম্পা খাতুন। অবশেষে ছেলের ছবিসহ সংবাদ পত্রিকায় দেখে স্বজনদের নিয়ে রাউজান থানায় ছুটে এসে সুজনকে বুকে জড়িয়ে আরেকবার কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি।

    রাউজান থানার ওসি কেফায়েত উল্লাহ ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, গত শুক্রবার শিশুটিকে নোয়াপাড়া পথের হাটের জান্নাত হোটেলে পেয়ে স্থানীয়রা লোকজন তাকে নোয়াপাড়া পুলিশকে ক্যাম্পে দিয়ে দেন। সেখান থেকে তাকে রাউজান থানা হেফাজতে রাখা হয়। এই চারদিন শিশুটি সবাইকে আপন করে নিয়েছিল।

    থানার নারী সদস্যরা শিশু সুজনকে নতুন জামাও কিনে দিয়েছিলেন। এখন তাকে তার মায়ের বুকে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুব খুশি লাগছে। শিশুটি যাওয়ার সময় ওসি কেফায়েত উল্লাহ তার মায়ের হাতে যাতায়াত খরচের জন্য কিছু টাকাও দেন। এ সময় মায়ের কোলে করে শিশুটির চলে যাওয়ার সময় আবেগ সংবরণ করতে পারেনি উপস্থিত সকলে। মা ছেলের মিলনের মাঝেও থানা ভবন চত্বরে বিচ্ছেদের সুর বেজে উঠেছিল।

    বুকের মানিক ধনকে ফিরে পেয়ে চম্পা খাতুন বলেন, স্বামীর সাথে আর সংসার করবেননা তিনি। তার বিচ্ছেদ ঘটিয়ে সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়িতেই চলে যাবেন তিনি।