হালনাগাদ যাচাই-বাছাইকৃত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক আগামী ২২ মার্চ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও রাউজান উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।
চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ের অবশিষ্ট ১৫৯টি ও ৪র্থ পর্যায়ের ৮৯৩টিসহ মোট ১০৫২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘরের মালিকানা হস্তান্তর করা হবে। “মুজিবশতবর্ষে একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ১ম পর্যায়ে সারাদেশে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
আজ ২০ মার্চ সোমবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এ তথ্য জানান।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মাসুদ কামাল ও রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) নু এমং মং মারমা উপস্থিত ছিলেন।
ডিসি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা করলেন স্বাধীন বাংলাদেশ। যুদ্ধ বিধ্বস্ত নবীন দেশে ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নোয়াখালী সফরে গিয়ে আশ্রয়হীনদের প্রথম পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন বঙ্গবন্ধু। জাতির পিতার কন্যা হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ১ম সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে আশ্রয়হীনদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি অর্থায়নে প্রথম উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করেন “আশ্রয়ণ প্রকল্প”।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁরই কন্যা দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বাসস্থান নিশ্চিতের ঘোষনা দেন। সরকারি উদ্যোগে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমি ও গৃহ প্রদানের এ নজির পৃথিবীর বুকে অনন্য। এতসংখ্যক ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে জমি সহ ঘর দেয়ার নজির পৃথিবীর আর কোথাও নেই।
তিনি বলেন, সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় ১ম পর্যায়ে ১ হাজার ৪৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে ২য় পর্যায়ে ২০২১ সালের ২০ জুন তারিখ সারাদেশে ৫৩ হাজার ৩৩০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। ২য় পর্যায়ে চট্টগ্রাম জেলায় ৬৪৯টি পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ১ম ও ২য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৩য় পর্যায়ে গত ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল সারাদেশে ৩২ হাজার ৯০৪ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময়ে চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ১ হাজার ২১৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। একই সালের ২১ জুলাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ৩য় পর্যায়ের (২য় ধাপ) ২৬ হাজার ২২৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এসময়ে চট্টগ্রাম জেলায় ২য় পর্যায়ে (২য় ধাপ) ৫৮৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার ৪টি উপজেলা যথাক্রমে-পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলাকে হালনাগাদ যাচাই-বাছাইকৃত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ২১ জুলাই (২০২২ সাল) ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান আরও বলেন, ১ম, ২য় এবং ৩য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৪র্থ পর্যায়ে আগামী ২২ মার্চ বুধবার সারাদেশে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ের অবশিষ্ট ১৫৯টি ও ৪র্থ পর্যায়ের ৮৯৩টিসহ মোট ১০৫২ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হবে।