Tag: রাজশাহী

  • চারদিকে বন্যার পানি,ঘরের মেঝেতেই বাবাকে দাফন

    চারদিকে বন্যার পানি,ঘরের মেঝেতেই বাবাকে দাফন

    দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে শুকনো জায়গা না পেয়ে মৃত বাবাকে অগত্যা ঘরের মেঝেতেই কবর দিয়েছেন ছেলে।

    রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বড়বিহানালী ইউনিয়নের বেড়াবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ছেলে আবুল হোসেন বাগাতি (৫০) নিজেই গত বুধবার মৃত পিতাকে শয়ন ঘরের পাশের বৈঠক ঘরে কবর দিয়েছেন। বন্যার পানি বাড়ার কারণে ঘরের ভেতরেই কবর দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

    তিনি বলেন, ‘চলমান বন্যায় গোরস্থান ডুবে গেছে। শুকনো জায়গাও নাই। তাই বিপাকে পড়ে বাবাকে ঘরের ভেতর কবর দিয়ে তালা মেরে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, এখন এই গ্রামের কেউ মারা গেলে ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।’

    আবুল হোসেন বাগাতি জানান, গত মঙ্গলবার রাতে বৃদ্ধ বাবা আবু তাহের (৮৭) মারা যান। নিজেদের কবরস্থানসহ আশপাশের এলাকা ডুবে যাওয়ার কারণে নিরুপায়ে তাঁদের বৈঠকখানায় কবর খনন করে সেখানেই দাফন করা হয়েছে।

    খবর পেয়ে রোববার সরেজমিনে গিয়ে বৈঠকখানার ভেতরে কবর দেখা যায়। বাহির থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে সেখানে তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি ঘরের তালা খুলে তার বাবার কবর দেখান।

    তিনি জানান, তারা বৈঠক খানার পাশের বাড়িতে থাকছেন। বাড়িতে অতিথি আসলে সেখানে (বৈঠকখানায়) রাখতেন। তারাও মাঝে মধ্যে থাকতেন বৈঠকখানায়। সেটা এখন বাবার কবর বলে জানান তিনি।

    এদিকে, বন্যায় পুরো গ্রামটি (বেড়াবাড়ি) এখন ভাসছে। এই গ্রামের তিনশতাধিক লোকজন গত এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়াও আশপাশের আরও দুটি গ্রামের বন্যার পানি ঢুকে বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। গবাদি পশু ও বাড়ির মালামাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পুরো গ্রামবাসী। এ কারণে অনেকে কমদামে গবাদি পশু বিক্রি করে দিয়েছেন।

    আবার অনেকে সড়কে বা আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে রেখে এসেছেন। পানিবন্দী হওয়া লোকজনদের মধ্যে খাবারের কষ্ট দেখা দিয়েছে। নলকূপ ডুবে যাওয়ার কারণে বিশুদ্ধ পানিও পান করতে পারছেন না। অনেককে উঁচুস্থানে বা বাড়ির ছাদে রান্না করতে দেখা যায়। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

    রোববার পর্যন্ত সেখানে কোনো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি। প্রশাসন বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও খোঁজ-খবর নেননি বলে অভিযোগ করেন।

    আখিজান বেগম (২৮) নামের একজন বাসিন্দা বলেন, তাদের বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। ঘরের ভেতরের পানি সেচে সেখানে খাটের ওপর কোনো রকম রাত পার করছেন। জাহাঙ্গীর আলম নামের একজন শ্রমিক বলেন, বাজার ও রান্না করার ব্যবস্থা নেই। শিশু সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে আছেন বলে জানান।

    স্থানীয় ব্যাংক কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার জানান, এক সপ্তাহ ধরে গ্রামের লোকজন বন্যাকবলিত। গ্রামের লোকজন পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। গবাদি পশু ও মালামাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। গ্রামের রাস্তাঘাটও তলিয়ে গেছে। নৌকা ছাড়া চলাচল করা যায় না।

    বড়বিহানালী ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান বলেন, সরকারি ভাবে এখনো কোনো ত্রাণ সামগ্রী পাওয়া যায়নি। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের তালিকা করতে বলা হয়েছে। তিনি তালিকা জমা দিবেন। বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। তিনি গ্রামটিতে যাননি বলে স্বীকার করেছেন।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। অনেক এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো হয়েছে। তবে বেড়াবাড়ি গ্রামের লোকজনদের দুর্ভোগের বিষয়ে তাকে কেউ জানায়নি বলে জানিয়েছেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • কলেজ শিক্ষক এখন দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে গ্রিল মিস্ত্রির শ্রমিক!

    কলেজ শিক্ষক এখন দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে গ্রিল মিস্ত্রির শ্রমিক!

    রাজশাহীর বাঘা উপজেলার জহুরুল ইসলাম বাবলু নামের এক কলেজ শিক্ষক এখন গ্রিল মিস্ত্রির শ্রমিক। গত দুই মাস থেকে আড়ানী পৌর বাজারে মেসার্স জনতা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজে দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে গ্রিল মিস্ত্রির শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন তিনি।

    জহুরুল ইসলাম বাবলু আড়ানী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি আড়ানী সোনাহদ গ্রামের মৃত ছইরুদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে এবং পাঁচপাড়া আবদুর রহমান সরকার বিএম কলেজের কম্পিউটার অপারেশন বিষয়ের প্রভাষক।

    তিনি ১৫ বছর চাকরি করেও প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত না হয়ে বৃদ্ধ মাসহ ৭ সদস্যের সংসার চালাতে গিয়ে অবশেষে গ্রিল মিস্ত্রির শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন।

    জানা গেছে, জহুরুল ইসলাম বাবলু ১৯৯৯ সালে রাজশাহী কলেজের দর্শন বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করেন। তারপর তিনি কম্পিউটার বিষয়ে কোর্স করে ২০০৫ সালে বাঘা উপজেলার পাঁচপাড়া আবদুর রহমান সরকার বিএম কলেজের কম্পিউটার অপারেশন বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু কলেজটি সরকারিভাবে সব শর্তপূরণ করলেও ১৭ বছরে এমপিওভুক্ত হয়নি।

    এ দিকে ৬ শতাংশ জমির ওপর দুটি ঘর তুলে বৃদ্ধ মা ও বোনের দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েন জহুরুল ইসলাম বাবলু। তার বিবাহিত জীবনে স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। কিন্তু আর্থিক দীনতার কারণে স্ত্রী বর্তমানে পাশে নেই।

    এর আগে বেতনবিহীন কলেজে চাকরির পাশাপাশি হাটবাজারে খাজনা আদায়ের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। কিন্তু করোনার কারণে হাটবাজার সঠিকভাবে না লাগায়, সে কাজটিও তার নেই। পরে কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে বাল্যবন্ধু আড়ানী পৌর বাজারে মেসার্স জনতা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক নাজমুল হকের কাছে গ্রিলের কাজ শুরু করেন তিনি।

    এ বিষয়ে জহুরুল ইসলাম বাবলু বলেন, চাকরি করি কিন্তু বেতন নেই। সংসার চালাতে খরচ হয়। কী করে সংসার চালাব এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ি। কোনো উপায় না পেয়ে অবশেষে গ্রিলের কাজ করছি। তবে প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হলে এ কাজ আর করা লাগবে না।

    পাঁচপাড়া আবদুর রহমান সরকার বিএম কলেজের অধ্যক্ষ সামরুল হোসেন বলেন, কলেজটি ২০০৩ সালে স্থাপিত। এই কলেজে ২৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী ও ৪৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। কলেজ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের কিছু দিতে পারি না। বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তার সংসারে সদস্যা সংখ্যাও বেশি। কোনো উপায় না পেয়ে শুনেছি জহুরুল ইসলাম বাবলু বাজারের এক দোকানে গ্রিলের কাজ করছে।

    আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, জহুরুল ইসলাম এলাকায় একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি। সে নির্বাচন করে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার সংসারের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। বিষয়টি জানার পর পরিষদ থেকে সব সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়। কিন্তু সংসারে সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় কুলিয়ে উঠতে পারে না। জানি বর্তমানে সে এক দোকানে গ্রিলের শ্রমিকের কাজ করছে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • চিড়িয়াখানায় কুকুর ঢুকে খেয়ে ফেলল ৪ হরিণ

    চিড়িয়াখানায় কুকুর ঢুকে খেয়ে ফেলল ৪ হরিণ

    রাজশাহী এএইচএম কামরুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় ৫ ক্ষুধার্ত কুকুর চিড়িয়াখানার শেডে ঢুকে খেয়ে ফেলেছে ৪টি হরিণ। শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।

    ঘটনা ধামাচাপা দিতে সকালেই তড়িঘড়ি করে হরিণগুলোর দেহের অবশিষ্টাংশ মাটিচাপা দেয়া হয়। এই উদ্যান ও চিড়িয়াখানা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন।

    চিড়িয়াখানা সুপারভাইজার শরিফুল ইসলাম জানান, এই চিড়িয়াখানায় গত তিন মাসে হরিণের ১৫টি বাচ্চা জন্ম নিয়েছে। শেডে হরিণ ছিল ৭৫টি। এখন অবশিষ্ট আছে ৭১টি। কুকুরে খাওয়া ৪ হরিণের মধ্যে ৩টিই শাবক। অপরটি ছিল তাদের মা। বিকালে শেডের সব কটি হরিণের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ দেখা যায়।

    চিড়িয়াখানার তত্তাবধায়ক মাহবুব হোসেন জানান, শেডের ভেতরে মাটি ফেলার পর কিছু অংশ বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। বেড়ার ফাঁক দিয়েই কুকুরগুলো শেডের ভেতরে প্রবেশ করেছে।

  • পার্সেলের গাড়ীতে পণ্যের বদলে মানুষ, লাখ টাকা জরিমানা

    পার্সেলের গাড়ীতে পণ্যের বদলে মানুষ, লাখ টাকা জরিমানা

    করোনা ভাইরাসের কারণে যাত্রী পরিবহন বন্ধ হওয়ার আগের দিন অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ দেখে কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি পার্সেল পণ্যের বদলে ঢাকা থেকে অতিরিক্ত ভাড়ায় রাজশাহীতে যাত্রী পরিবহন করে লাখ টাকা জরিমানা দিয়েছে।

    বুধবার (২৫ মার্চ) বিকেলে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় আহমেদ কুরিয়ার সার্ভিসের মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

    রাজশাহী জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লোসনি চাকমা বলেন, বুধবার সকালে আহমদ কুরিয়ার সার্ভিস অ্যান্ড পার্সেলের গাড়িতে করে ঢাকা থেকে যাত্রী আনা হয়। তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ও করে কুরিয়ার কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় ব্যক্তিরা বিষয়টি আমাদের জানান এবং তাদের যাত্রী বহনের ছবি ও ভিডিও আমাদের হাতে আসে। তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিকেলে আমরা নগরীর কুমারপাড়ায় আহমেদ কুরিয়ার সার্ভিসে অভিযান চালাই। এসময় তারা বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক নবুয়াত আলীকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

  • করোনা : রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ

    করোনা : রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ

    করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) প্রতিরোধে রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বাস মালিক সমিতি ও জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন যৌথভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

    বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বিকাল থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।

    জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, রাজশাহীকে করোনাভাইরাস মুক্ত রাখতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বাস বন্ধ রাখার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়ার অনুরোধ করা হয়।

    তাই রাজশাহী থেকে ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ, সিলেট, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার বাসগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। তবে রাজশাহীর আশপাশের জেলাগুলোর সঙ্গে সীমিত সংখ্যায় বাস চলাচল করছে।

    রাজশাহী বাস মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে ইতিমধ্যেই মানুষের চলাচল কমে গেছে।

    এতে বাসে যাত্রী কম হচ্ছে। তেলের টাকাও উঠছে না। ভাইরাসের আতঙ্কে বাসের লোকজনও কাজ করতে চাচ্ছে না। যাত্রীদের মাধ্যমেও করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। এ দুটি বিষয় বিবেচনা করে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

    নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। শিরোইল ঢাকা বাস টার্মিনালেও কোনো বাস নেই। দূরপাল্লার বাসের কাউন্টারগুলোর সাঁটার নামানো। হঠাৎ করে এভাবে বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন যাত্রীরা।

    মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিভিন্ন জেলা থেকে দূরপাল্লার যে সব বাস এসেছিল সেগুলোও চলে গেছে। এগুলো যেন আর রাজশাহী না আসে সে জন্য বাসের লোকজনকে বলা হয়েছে। কতদিন এভাবে বাস বন্ধ থাকবে সেই সিদ্ধান্ত হবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে।

  • পদ্মায় নৌকাডুবি : নিখোঁজ কনের মরদেহ উদ্ধার

    পদ্মায় নৌকাডুবি : নিখোঁজ কনের মরদেহ উদ্ধার

    রাজশাহীর পদ্মায় নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ কনের মরদেহও উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে মোট ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো। নিখোঁজ সবাইকে খুঁজে পাওয়ায় উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

    নববধূর শোকে কাঁদছেন বর

    শুক্রবার বিকেলে পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়ের খানপুর গ্রামে বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে বর-কনেসহ ইঞ্জিনচালিত দু’টি নৌকায় করে ডাঙ্গারহাটে ফিরছিলেন কনেপক্ষের ৪০ জন। সন্ধ্যায় উত্তাল ঢেউয়ে নৌকা দু’টি উল্টে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে বেশ কয়েকজন সাঁতরে তীরে ওঠেন।

  • বাবার গলা জড়িয়ে ধরা অবস্থায় পানির নিচ থেকে উদ্ধার হল বাবা-মেয়ের লাশ

    বাবার গলা জড়িয়ে ধরা অবস্থায় পানির নিচ থেকে উদ্ধার হল বাবা-মেয়ের লাশ

    রোশনি (৭) বাবার গলা জড়িয়ে ধরে ছিল। হয়তো বাঁচার জন্যই বাবাকে জড়িয়ে ধরে ছিল অথবা নৌকায় থাকা অবস্থায় বাবার গলা জড়িয়ে ধরে কোলেই বসা ছিল। আজ শনিবার উদ্ধারকারী দল পানির নিচ থেকে গলা জড়িয়ে ধরে রাখা অবস্থায় বাবা শামীম ও মেয়ে রোশনির লাশ উদ্ধার করে।

    বিয়ের পর বউভাতের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে গতকাল শুক্রবার পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত ছয়টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। যাঁদের লাশ উদ্ধার হয়েছে, তাঁরা হলেন কনের বড় বোন শাহীনুর বেগমের স্বামী রতন আলী (৩০), তাঁদের মেয়ে মরিয়ম খাতুন (৮), চাচা শামীম (৩৫), চাচি মিনরা বেগম (২৮), চাচাতো বোন রোশনি (৭) ও খালাতো ভাই এখলাস হোসেন (২২)।

    এই দুর্ঘটনায় বর বেঁচে গেছেন। তবে আজ শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত কনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। শুধু কনে নন, তাঁর ফুপাতো বোন রুবাইয়া খাতুন (১২) ও খালা আঁখি খাতুন (২৫) নিখোঁজ।

    আজকের উদ্ধার অভিযান

    কনে সুইটি খাতুনের বাবা শাহীন আলী একজন ট্রাকশ্রমিক। বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার ডাঙ্গেরহাট গ্রামে। বর রুমন আলী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন ওয়ার্ড বয়। তাঁর বাড়ি উপজেলার চরখিদিরপুর গ্রামে। গ্রামটি পদ্মা নদীর ওপারে। গতকাল শুক্রবার বরের বাড়িতে বউভাতের অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে নৌকাডুবির এ ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

    আজ সকালে উপজেলার বসুয়া গ্রামে মরিয়মকে দাফনের পর বাবা রতনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকেও মেয়ের কবরের পাশেই দাফন করা হয়।

    আর ডাঙ্গেরহাট গ্রামে কনে সুইটির বাড়ির পাশে পরপর চারটি কবর খোঁড়া হচ্ছে। এগুলোতে কনের চাচা, চাচি ও চাচাতো বোনকে দাফন করা হবে। আর একটি কবর সুইটির জন্য। কবর খুঁড়ছিলেন প্রতিবেশী সাদ্দাক আলী। তিনি বলেন, যাঁরা নিখোঁজ আছেন, তাঁরা আর কেউ বেঁচে থাকতে পারেন না। তবে তাঁদের লাশ পাওয়া যাবে, এই আশায় পাশাপাশি চারটি কবর খুঁড়ছেন। পাশের বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ কাটা হচ্ছে। একদল লোক বাঁশ চিরে বাতা তৈরি করছেন। আরেক দল কবর খুঁড়ছেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে বাজানোর জন্য যে সাউন্ডবক্স নিয়ে আসা হয়েছিল, সেগুলো এখনো সুইটিদের বাড়ির এক কোনায় পড়ে রয়েছে। পাশের বারান্দায় বসে তাঁর মা বিলাপ করছেন। বলছেন, ‘আমি একা কয়জনের বাড়ি যাব, কয়জনের শোক সামাল দিব। এখুনি নাতিকে মাটি দিয়ে এলাম, আবার জামাইকে মাটি দিতে যাব।’ একপর্যায়ে আর কথা বলতে পারছেন না তিনি। কান্নায় ভেঙে পড়েন।

    নববধূর শোকে কাঁদছেন বর

    গ্রামে এক দৃশ্য পদ্মা নদীর ধারে আরেক দৃশ্য। পদ্মা নদীর শ্রীরামপুর এলাকার স্বজনদের সঙ্গে হাজারো উৎসুক মানুষকে সারা দিন তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে যখন বাবা-মেয়ের লাশ পাওয়া গেল তখন আর কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন অফিসার আবদুর রউফ বাবা-মেয়েকে একসঙ্গে পাওয়ার বর্ণনা দিতেই গিয়ে বলেন, সন্তানের প্রতি বাবার যে ভালোবাসা কত, তা এই জোড়া লাশ দেখেই বোঝা যায়। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়েই বাবা হয়তো নিজে বাঁচতে পারেননি।

    যেভাবে কনে ডুবে গেলেন

    কনে সুইটি খাতুনের সঙ্গে একই নৌকায় ছিলেন তাঁর আত্মীয় টুলু বেগম (৩০)। তিনি গায়ের শাড়ি খুলে ফেলে একটি চরাট ধরে ভাসছিলেন। এ সময় তিনি দেখেন সুইটি হাবুডুবু খাচ্ছেন। তার কপালের টিকলি দেখে তিনি তাঁকে চিনতে পারেন। বাঁচার জন্য তিনি সুইটিকে তাঁর কাপড় খুলে ফেলতে বলেন। সুইটি কাপড় খোলার চেষ্টা করতে যাচ্ছিলেন। পরক্ষণেই তাকিয়ে দেখেন সুইটি আর নেই। টুলু বেগমের স্বামী আবদুর রাজ্জাকও নৌকায় ছিলেন। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী ছোট নৌকায় যাত্রী বেশি ছিল। ঢেউয়ে নৌকায় পানি উঠে যাচ্ছিল। তাঁরা কয়েকজন পুরুষ যাত্রী পানিতে নেমে নৌকা জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করেও পারেননি।

    নৌকাডুবির ঘটনায় তদন্ত কমিটির সদস্য পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেনও নৌকা ডোবার কারণ হিসেবে একই কথা বলেন, ছোট নৌকায় যাত্রী বেশি ছিল, বাতাস উঠেছিল নদীতে। ঢেউ ছিল। এই অবস্থায় কিছু যাত্রী এক নৌকা থেকে লাফিয়ে আরেক নৌকায় যাওয়ার সময় দোল খেয়ে নৌকা ডুবে যায়।

    উদ্ধারের জন্য একসঙ্গে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও রাজশাহী মহানগর নৌ পুলিশ।

    নৌকাডুবির ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলামকে আহ্বায়ক করে গতকাল জেলা প্রশাসন সাত সদস্যের এই কমিটি করে দিয়েছে। দুই কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে বলা হয়েছে।

    জেলা প্রশাসক হামিদুল হক জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এখন নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে মরদেহ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করা হচ্ছে।

  • নববধূকে ফিরে পাওয়ার আকুতি নিয়ে পদ্মাপারে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে স্বামী

    নববধূকে ফিরে পাওয়ার আকুতি নিয়ে পদ্মাপারে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে স্বামী

    বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ঘর বেঁধেছিলেন পদ্মাপারের আসাদুজ্জামান রুমন (২৬)। কিন্তু বিয়ের পরদিনই বৌভাত শেষে শ্বশুর বাড়ী যাওয়ার পথে তার স্বপ্নের সংসার ভেসে গেল সেই পদ্মায় জলে। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ না হতেই নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হন রুমনের নববধূ সুইটি খাতুন পূর্ণিমা(২০। এ ঘটনায় আরও দুজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

    ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সন্ধান মেলেনি পূর্ণিমার। গতকাল শুক্রবার (০৬ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির এ ঘটনা ঘটে। একই নৌকায় স্ত্রীর সহযাত্রী ছিলেন রুমন। নৌকাডুবিতে ভাগ্যক্রমে সাতরিয়ে রুমন বেঁচে যান। তার সঙ্গে বেঁচে গেছেন নৌকার আরও ৩১ যাত্রী। এরা সবাই নিখোঁজ কনের স্বজন।

    তবে এখনও নিখোঁজ পূর্ণিমা, তার খালা আঁখি ও ফুফাতো বোনের মেয়ে রুবাইয়া। এরই মধ্যে একে একে পদ্মা নদীতে ভেসে উঠে বাবা-মেয়েসহ ছয়জনের লাশ।

    দুর্ঘটনার পর পদ্মা নদী থেকে নিখোঁজ কনের চাচা শামীম (৪০), চাচি মনি বেগম (৩৫), তাদের মেয়ে রশ্মি (১০), কনের দুলাভাই রতন আলী (২৮), ভাগনি মরিয়ম (৮) এবং খালাতো ভাই এখলাসের (২৮) লাশ উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব লাশ উদ্ধার হয়।

    এদিকে পদ্মাপারে বসে থেকে সারাদিন মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা দেখে কাঁদছেন বর রুমন। সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলেনি তার প্রিয়তমার লাশ। এই যাত্রায় বেঁচে ফিরলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন রুমন। নির্বাক দৃষ্টিতে পদ্মা নদীর দিকে চেয়ে সারাদিন কেটে গেছে তার।

    পদ্মাপারে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ভিড় জমিয়েছেন। তারাও কথা বলার চেষ্টা করেছেন রুমনের সঙ্গে। উৎসুক জনতার ভিড় তাকে ঘিরে। সারাদিন পদ্মা নদীর দিকে তাকিয়ে শুধু চোখের পানি ফেলেছেন রুমন।

    কান্নাজড়িত কণ্ঠে রুমন বলেন, আমরা যে নৌকায় ছিলাম সেটি হঠাৎ বিকল হয়ে যাই। এরপর দমকা হাওয়ায় উল্টে যায় নৌকাটি। অন্যদের সঙ্গে সাঁতরে তীরে ফিরলেও পূর্ণিমাকে হারিয়ে ফেলেছি আমি। তবে শেষবারের মতো তার মুখ দেখতে চাই আমি।

    নৌকাডুবির ঘটনার পর একদিনের ব্যবধানে বিয়েবাড়িতে এখন কেবল শোকের মাতম। অসীম শূন্যতা ভর করেছে চারপাশে। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পদ্মাপার। নিখোঁজদের লাশের অপেক্ষায় বর ও স্বজনরা।

    বৃহস্পতিবার (০৫ মার্চ) পদ্মার ওপারের পবা উপজেলার চরখিদিরপুর এলাকার ইনসার আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান রুমনের সঙ্গে একই উপজেলার ডাঙেরহাট এলাকার শাহীন আলীর মেয়ে সুইটি খাতুন পূর্ণিমার বিয়ে হয়।

    শুক্রবার (০৬ মার্চ) বরের বাড়ি থেকে বর-কনেকে নিয়ে আসছিল কনেপক্ষ। সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর ডিসির বাংলো এলাকায় পদ্মা নদীতে ডুবে যায় নৌকাগুলো। এতে বর-কনেসহ ২৬ জন নিখোঁজ হন।

    আজকের উদ্ধার অভিযান

    এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। তদন্ত কমিটির প্রধান রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম বলেন, ডুবে যাওয়া নৌকা দুটি ছিল ডিঙি নৌকা। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ছিল। হঠাৎ একটি নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। ওই সময় দমকা হাওয়ায় ডুবে যায় বরযাত্রীবাহী নৌকা দুটি।

    অনুসন্ধান ও উদ্ধার সমন্বয় কেন্দ্রের ফোকাল পয়েন্ট সালাহউদ্দিন আল ওয়াদুদ বলেন, সকাল থেকে যৌথ উদ্ধার অভিযান চলছে। দুপুরে দুর্ঘটনাকবলিত নৌকা দুটির অবস্থান নিশ্চিত হওয়া গেছে। উজান ও ভাটিতেও উদ্ধার তৎপরতা চলছে।

    তিনি বলেন, নৌকা দুটিতে ৪১ জন আরোহী ছিলেন। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৩২ জনকে। মরদেহ উদ্ধার হয়েছে ছয়জনের। এখনও নিখোঁজ কনেসহ তিনজন। নিখোঁজের স্বজনরা তাদের নাম-পরিচয় জমা দিয়েছেন। বাকি তিনজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা।

  • নৌকাডুবে বর কনেসহ নিখোঁজ ১৭, শিশুর লাশ উদ্ধার

    নৌকাডুবে বর কনেসহ নিখোঁজ ১৭, শিশুর লাশ উদ্ধার

    রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় ৩৫ জন বরযাত্রী নিয়ে পদ্মা নদীতে দুটি ইঞ্জিবোট ডুবির ঘটনা ঘটেছে।

    শুক্রবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘটা এ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত একজনকে মৃত এবং ১৭ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

    মৃক মরিয়ম (৬) বসুয়া এলাকার রতনের মেয়ে।

    এখনো নিখোঁজ রয়েছে ১৭ জন। নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ করছে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট।

    রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ জানান, চরখিদিরপুর এলাকায় বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে বর কনে নিয়ে পবা উপজেলার ডাইংপাড়ায় যাচ্ছিল। দুটি নৌকায় ৩৫ জন যাত্রী ছিল। এর মধ্যে ১৭ জন নারী ও ৬ জন শিশু। সন্ধ্যায় শ্রীরামপুর এলাকায় দুই নৌকা ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। এদের মধ্যে ১৭ জনকে জীবিত পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে এক শিশু মারা যায়। ঘটনার পর নৌকার মাছি খাদিমুল ইসলাম (২৩), আরোহী রতন আলী (২৮) ও তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন (২২), সুমন আলী (২৮) ও তার স্ত্রী নাসরিন বেগম (২২) এবং মেয়ে সুমনা আক্তার (৬) তীরে উঠে আসেন।

    দমকল বাহিনীর ডুবুরি দল ও বিজিবি সদস্যরা স্পিডবোট নিয়ে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।

    স্থানীয় সূত্র জানায়, পবা উপজেলার চরখিদিরপুর এলাকার ইনসার আলীর ছেলের সঙ্গে একই উপজেলার ডাঙেরহাট এলাকার শাহীন আলীর মেয়ে সুইটি খাতুনের বিয়ে হয় বৃহস্পতিবার। শুক্রবার বরের বাড়ি থেকে বর-কনেকে নিয়ে আসছিল কনেপক্ষ। ফিরতি পথে দুর্ঘটনার শিকার হয় কনেযাত্রীবাহী নৌকা। এতে নিখোঁজ রয়েছেন বর-কনেও।

  • গাছের সঙ্গে প্রাইভেটকারের ধাক্কা,নিহত ৬

    গাছের সঙ্গে প্রাইভেটকারের ধাক্কা,নিহত ৬

    রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি প্রাইভেটকার রাস্তার পাশে থাকা গাছে ধাক্কা খেয়ে অন্তত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

    শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে উপজেলার সাহাব্দিপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

    জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে গোদাগাড়ী উপজেলার সাহাব্দিপুর এলাকায় আসার পর একটি প্রাইভেটকারের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন এবং হাসপাতালে নেয়ার পর তিনজন মারা যান।

    বেলা একটার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের গোদাগাড়ী স্টেশনের কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, দুর্ঘটনার পর তারা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করেছেন। লাশগুলো থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

    একই সময়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস জানান, দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে এক নারী ও এক শিশুর লাশ এসেছে। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরে আরও একজন মারা যান।

    গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের লাশের খবর তাদের জানা নেই। তবে তাদের কাছে তিনজনের লাশ আছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহত-নিহত কারও পরিচয় জানা যায়নি। তবে প্রাইভেটকারের যাত্রীরা সবাই রাজশাহী শহর থেকে গোদাগাড়ী সদরের দিকে যাচ্ছিলেন।

  • শেখ কামাল আইটি সেন্টার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রীর

    শেখ কামাল আইটি সেন্টার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রীর

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহীতে শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন।

    প্রধানমন্ত্রী সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কে নির্মিত শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন।

    দেশের ৬৪টি জেলায় সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জ্ঞান-ভিত্তিক সমাজ এবং আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে এই কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে।

    একই অনুষ্ঠান থেকে শেখ হাসিনা সাতটি জেলা ও ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন এবং ফেনী ১১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।

    শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতার সাতটি জেলা হলো- ঢাকা, ফেনী, গোপালগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, জয়পুরহাট এবং মেহেরপুর।

    শতভাগ বিদ্যুতায়নের ২৩টি উপজেলা হলো- বাগেরহাট সদর, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নাসিরনগর, মেহেরপুরের আলমডাঙ্গা, কুমিল্লার দেবীদ্বার এবং মনোহরগঞ্জ, দিনাজপুরের খানসামা, জামালপুরের মাদারগঞ্জ, যশোরের সদর ও মণিরামপুর, খুলনার তেরখাদা, কুষ্টিয়ার মিরপুর, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও জুড়ী, নওগাঁর বাদলগাছী ও

    পত্নীতলা, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, নীলফামারীর জলঢাকা, শেরপুরের নকলা ও ঝিনাইগাতী, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল এবং সুনামগঞ্জের ছাতক।

    প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সেক্রেটারি এএনএম জিয়াউল আলম অনুষ্ঠানে শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ হাই-টেক পার্কগুলোর উন্নয়নের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন এবং বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. সুলতান আহমেদ বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের ওপর পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন।

    রাজশাহী শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. শফিকুল ইসলাম বাসসের রাজশাহী সংবাদদাতাকে জানান, ৭২ হাজার বর্গফুটের এই আইটি ইনকিউবেটর কেন্দ্রে বহুমুখী প্রশিক্ষণ, উচ্চমানের স্টার্ট-আপস, বৃষ্টির পানি সংগ্রহ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির সুবিধা রয়েছে।

    তিনি বলেন, ‘দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণে এখানে সব ধরনের ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে।’

  • সিআইডি’র রাজশাহী বিভাগীয় ফরেনসিক ল্যাবের উদ্বোধন

    সিআইডি’র রাজশাহী বিভাগীয় ফরেনসিক ল্যাবের উদ্বোধন

    রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) লাইন্সে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদ পুলিশ সদস্যদের গণকবর ও স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন এবং সিআইডি’র রাজশাহী বিভাগীয় ফরেনসিক ল্যাবের উদ্বোধন করেছেন আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

    সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) লাইন্সে তিনি এ উদ্বোধন করেন।

    উদ্বোধন শেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সকল শহীদ পুলিশ সদস্য, ৭১-এ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং রাজশাহীবাসীর কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

    এরপর আরএমপি পুলিশ লাইন্স মাঠে রাজশাহী’র সকল পুলিশ ইউনিটের সমন্বয়ে বিশেষ কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অফিসার ফোর্সদের বিভিন্ন আবেদন নিবেদন শোনেন এবং দ্রুত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে।

    উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ হুমায়ুন কবির। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিআইডি’র প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি এ কে এম হাফিজ আক্তারসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাগণ।