Tag: রামগড়

  • রামগড়ে বিজিবি’র তিনটি অভিযানে ১০৩ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ

    রামগড়ে বিজিবি’র তিনটি অভিযানে ১০৩ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ

    ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির রামগড় ৪৩ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবি’র পৃথক তিনটি অভিযানে ১০৩ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ করা হয়েছে। রবিবার রাতের বিভিন্ন সময়ে ব্যাটালিয়ন অধীনস্থ ভুজপুর থানার নলুয়াটিলা নামক স্থান হতে ৩৫ বোতল, জোরারগঞ্জ থানার বৈদ্য গেরামারা নামক স্থান হতে ২৮ বোতল এবং ভূজপুর থানার সিকদারখিল নামক স্থান হতে ৪০ বোতল সহ মোট ১০৩ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ করে বিজিবি টহলদল।

    বিজিবি জানায়, জব্দকৃত ভারতীয় মদ স্ব-স্ব থানায় জিডি করে পরবর্তীতে ধ্বংস করার জন্য ব্যাটালিয়ন সদরে জমা রাখা হয়েছে।

    রামগড় ব্যাটালিয়ন (৪৩ বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, বিজিবি’র নিয়মিত অভিযানে এসব মাদক জব্দ করা হয়েছে। মাদক ও চোরাচালানসহ সীমান্ত অপরাধ রুখতে বিজিবি’র অভিযান অব্যাহত থাকবে।

  • রামগড় হানাদার মুক্ত দিবস পালিত

    রামগড় হানাদার মুক্ত দিবস পালিত

    ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: ১৯৭১ সালের ৮ই ডিসেম্বর রামগড় পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়।দিবসটি পালন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড দিনব্যাপী নানান কর্মসূচির আয়োজন করে।

    মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা ও সর্বস্তরের জনগণের সমন্বয়ে সকাল দশটায় উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে রামগড় শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহ প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রা শেষে রামগড় বিজয় ভাস্কর্যের পাদদেশে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ছালে আহম্মদ,ভূপেন ত্রিপুরা, প্রমোদ বিহারী দেবনাথ, ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মফিজুর রহমান। পরে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারি।

    সভায় মহান মুক্তিযুদ্ধে রামগড়ের অবদান আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন, রামগড় উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মফিজুর রহমান,রামগড় পৌরসভার মেয়র মোঃ রফিকুল আলম কামাল,রামগড় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজি নুরুল আলম আলমগীর, রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতা রামগড় পৌরসভার কাউন্সিলর মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

    বক্তারা বলেন আজ ৮ই ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে রামগড় হানাদার মুক্ত হয়। বক্তারা আরও বলেন দীর্ঘ ৯ মাসের সংগ্রামী মুক্তি যুদ্ধের লড়াইয়ের পর পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের পতনের পর ৮-ই ডিসেম্বর পড়ন্ত বিকেলে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য প্রয়াত সুলতান আহম্মেদ মুক্তিকামী বাঙালিদের নিয়ে রামগড় প্রধান ডাকঘরের শীর্ষে লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলণ করে রামগড়কে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করা হয়।

    রামগড়ের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে গেরিলা কৌশলে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য গোটা বাংলাদেশকে ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল তার মধ্যে ১নং সেক্টরের আওতাধীন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অবস্থিত পার্বত্য অঞ্চলে রামগড় ছিল অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর ।এটিই খাগড়াছড়ি জেলার প্রথম মুক্তাঞ্চল।

  • রামগড়ে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ডালপালা ছাঁটার নামে বৃক্ষ উজাড়

    রামগড়ে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ডালপালা ছাঁটার নামে বৃক্ষ উজাড়

    খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ির রামগড়ে পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে কৃষি অধিদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে ডালপালা ছাঁটার নামে মূল্যবান অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে কেন্দ্রটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার সম্মতিতে।

    এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা খোঁজখবর নেয়ার পর তিনি অসৌজন্যতা দেখিয়েছেন বলেও সাংবাদিকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি গেস্ট হাউজের পেছনে, অফিসের আশপাশসহ আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন বাগানের বিভিন্ন স্পটে নানা প্রজাতির অনেকগুলো মূল্যবান গাছ কাটা হয়েছে। কাটা গাছগুলির কিছু অংশ কেটে লাকড়ি হিসেবে শ্রমিকদের মাঝে কিছু বিক্রি করা হয়েছে বাকী অংশগুলি স্থানীয় করাত কলে চিড়ানোর পর অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের অফিস ভবনের উত্তর পার্শ্বে ও গেস্ট হাউজসংলগ্ন আরো একটি বড় কাঁঠাল গাছ কেটে রাখা হয়েছে। কাটা গাছের স্মৃতিচিহ্ন লুকাতে কাটা গাছের শেকড়শুদ্ধ তুলে ফেলা হয়েছে।

    এই বিষয়ে অফিস সহকারী সুনীল দাস জানিয়েছেন গাছ কাটার লিখিত কোন অনুমতি তাদের কাছে নেই। সরকারি অনুমতি ছাড়া কিভাবে এসব মূল্যবান সরকারি গাছ কাটা হচ্ছে এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

    সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: এমদাদুল হক জানান, মাতৃগাছ রক্ষায় গবেষণার জন্য গাছপালা কাটার প্রয়োজন হয়। অনুমতির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেয়া হয়েছিল কিন্তু অনুমতি পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র গাছের ডালপালা কাটা হয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা গাছ কাটার ছবি ও ভিডিও তুলে ধরলে তিনি চুপ হয়ে যান।

    পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.এস এম ফয়সাল অশ্রু অফিসে না থাকায় মুঠোফোনে জানিয়েছেন বারি-২ মাতৃকাঁঠাল গাছের ফল কাঠবিড়ালের আক্রমণ হতে রক্ষা করার জন্য কিছু চাপালিশ গাছের ডাল কাটা হয়েছে। কটেজের রান্নাঘরের পাশের কাঁঠাল গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না, অফিসে আসলে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

    রামগড় উপজেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা এয়ার আহমেদ জানান, সরকারি গাছ কাটতে হলে স্ব-স্ব মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করতে হয়। তারপর যে দপ্তরের গাছ সে দপ্তরের হেড অফিস থেকে বন বিভাগকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়। রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণার গাছ কাটার বিষয়ে বনবিভাগে কোন লিখিত অনুমতি আসেনি।

    ২৪ ঘণ্টা/প্রদীপ চৌধুরী

  • রামগড়ে দিনে-দুপুরে পাহাড় ও টপসয়েল কাটছে প্রভাবশালীরা, প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

    রামগড়ে দিনে-দুপুরে পাহাড় ও টপসয়েল কাটছে প্রভাবশালীরা, প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

    খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : প্রশাসনের পূর্বানুমতি ব্যতিত খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড়ে অবাদে পাহাড় ও কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। দিনে-দুপুরে পাহাড় কেটে ও কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে গাড়িতে করে অন্যত্র নিয়ে বাড়ি নির্মাণ, রাস্তা সংষ্কার এবং ইটভাটাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করলেও উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। দিনের আলোয় পাহাড় কাটার মহোৎসব চললেও প্রশাসন কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ কর্মীরাও।

    পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষিজমি ও টিলার মাটি কাটা দন্ডনীয় অপরাধ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১২–এর ৬ ধারায়) অনুযায়ী, প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট টিলা ও পাহাড় নিধন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অন্যদিকে ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী, কৃষিজমির টপ সয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করাও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে। দুই আইনে শাস্তির বিধান একই রকম। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকার জরিমানা ও দুই বছরের কারাদন্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একই কাজ দ্বিতীয়বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদন্ড হবে। এ ক্ষেত্রে এ কাজের সঙ্গে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের জন্যই সমান শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

    গত কয়েক বছর ধরে খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড় ধসে প্রাণহানী ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও পাহাড় কাটা বন্ধ হয়নি। বিনা বাধায় পাহাড় খেকোরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পরিবেশ সুরক্ষা আইনের লঙ্ঘন করে খাগড়াছড়ির রামগড়েউপজেলার সোনাইআগা, কালাডেবা, খাগড়াবিল, বলিপাড়া, সদুকার্বারী পাড়া, বল্টুরাম টিলাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে স্কেভেটর ব্যবহার করে অবাদে পাহাড় ও কৃষি জমির টপসয়েল কেটে ট্রাকে করে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে পাহাড় খেকোরা। কাটার আগে এসব পাহাড় ও কৃষি জমি স্বল্প দামে ক্রয় করে মাটি কেটে তা চড়া দামে বিক্রি করছে তারা।

    অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার অন্তত ৫-৭টি স্থানে অবাদে এসব পাহাড় ও জমির টপ সয়েল কাটা সিন্ডিকেটে জড়িত আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ছাড়াও একই দলের নির্বাচিত বর্তমান জনপ্রতিনিধি, সাবেক জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত রয়েছেন।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাগড়াবিল জুনিয়র হাই স্কুলের পাশের পাহাড়, বল্টুরাম টিলা এনআরডিসি সমিতি ভবনের পাশের পাহাড় ও সোনাইআগাসহ উল্লেখিত স্থানে ‘বুলোডোজার দিয়ে পুরোটা পাহাড়ে উপরিভাগ কয়েকটি লেয়ারে কাটা হয়েছে। পাহাড়ে কোথাও সবুজের চিহ্ন মাত্র নেই। পাহাড়ের কাটা মাটি পড়ে আশপাশের জলাশয়ও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েক লক্ষ ঘণফুট মাটি কাটা হয়েছে এসব স্থান থেকে। নতুন করে আরো এক লেয়ারে অর্ধেক কাটার কাজ শেষ। এসব মাটি বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়।’এর বাইরে উঁচু কিছু কৃষি জমিকে ফলন উপযোগী করার অজুহাতে স্কেভেটর দিয়ে জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) কেটে ট্রাক্টর ও পিক-আপে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে উপজেলার বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটভাটায়। এসব মাটি নিয়ে যেতে দিনে-দুপুরে খাগড়াবিল, কালাডেবা হয়ে সোনাইপুল ও রামগড়ের প্রধান সড়ক ব্যবহার করা হলেও অদৃশ্য কারণে উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর প্রায় নিরব। পাশ্ববর্তী গুইমারা, মানিকছড়ি ও মাটিরাঙ্গা উপজেলায় নিয়মিত পাহাড়খেকো ও ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা ও দন্ড প্রদান করা হলেও রামগড়ে ঘটছে তার ঠিক উল্টো। গত কয়েকমানে উপজেলার কোথাও দৃশ্যমান অভিযানও পরিচালনা করেনি উপজেলা প্রশাসন।

    এছাড়া বিভিন্ন ড্রাম ট্রঠশ ও ট্রাক্টরে নিয়মিত মাটি পরিবহণ করায় খাগড়াছড়িল, কালাডেবাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার গ্রামীন সড়কগুলোতেও ব্যাপক ক্ষতিসাধান হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা বিষয়টি নিয়ে অতিষ্ট হলেও প্রভাবশালীদের দাপটের কাছে অসহায়, যার ফলে ভয়ে মুখ খুলতে চাইছে না কেউই।

    স্থানীয়রা জানান, ‘কম দামে পাহাড় কেটে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা পাহাড়ে থাকা গাছের গাছপালা কেটে মাটি বিক্রি শুরু করেছে। সকাল থেকেই বুলডোজার দিয়ে এখানে মাটি কাটা হয়। দিনেই পরিবহন করে। ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না। তবে কয়েকজন জানান পাহাড় কাটা ক্ষতি । কিন্তু আমরা কিছু বললে এলাকায় থাকতে পারব না।’

    নির্বিচারে পাহাড় ও কৃষি জমির টপ সয়েল কাটায় স্থানীয় এক ব্যক্তি এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে, খাগড়াছড়ির গুইমারা, মাটিরাঙ্গাসহ কয়েকটি উপজেলায় অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে দন্ড, জরিমানাসহ ভাটা গুড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন। অদৃশ্য কোন কারনে রামগড়ের ভাটাগুলো যেন দ্বিগুন শক্তি নিয়ে জ্বলে উঠেছে। এখানে উপজেলা কিংবা জেলা প্রশাসন নিরব, পরিবেশ অধিদপ্তরতো রামগড় চিনেই না। সবচেয়ে বড় কথা হলো রামগড়ে সব ইটভাটার মালিকই কোন না কোন জাতীয় রাজনৈতিক দলের হেডামধারী নেতা। বিএনপির এক নেতা এমনকি বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও এখানে কৃষি জমি ধ্বংস করে ভাটা চালাচ্ছেন, পোড়ানো হচ্ছে বনের চারা গাছ, কাটা হচ্ছে জমির টপ সয়েল, পাহাড়ের মাটি। আর দোহাই দেয়া হচ্ছে উন্নয়নের। আইন যেন প্রভাবশালী এসব নেতাদের পকেটের খুচরো পয়সা।’

    খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী জানান ‘অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্ষায় পার্বত্য জেলায় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসে। প্রশাসনিক ভাবে পাহাড় কাটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় দেদারছে পাহাড় কাটা চলছে। অবিলম্বে তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করা না গেলে ভয়াবহ পরিবেশ ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।’

    এই বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড় কাটা সিন্ডিকেটের একজন কাজী সেলিম পাহাড় কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন ‘আমি ঠিকাদির কাজ করি। পাহাড় কাটা আমার কাজ নয়। এছাড়া রামগড় উপজেলার কোথাও আমি পাহাড় বা টপ সয়েল কাটি এটার কেউ প্রমান দিতে পারবে না বলেও জানান তিনি।’

    পাহাড় ও টপ সয়েল কাটা চক্রের অন্য আরেক সদস্য ও পৌর আওয়ামীলীগের এক নেতাকে এ বিষয়ে জানতে কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।

    এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মু. উল্লাহ মারুফকে মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি, তবে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সজীব কান্তি রুদ্র মুঠোফোনে পাহাড় ও টপ সয়েল কাটার বিষয়টি নিয়ে অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানান। দিনে-দুপুরে পাহাড় কাটার বিষয়ে তিনি বলেন, দিনের বেলা পাহাড় কাটার বিষয়ে তার জানা নেই। তিনি আরো বলেন, অভিযান পরিচালনা করতে গেলে ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়না।

    উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ জানুয়ারি একই চক্র কর্তৃক উপজেলার ১ নম্বর রামগড় ইউনিয়নের খাগড়াবিল জুনিয়র স্কুলের পাশের একটি পাহাড় কেটে মাটি ড্রাম ট্রাকে লোড করার সময় হঠাৎ পাহাড় থেকে মাটির একটি বড় অংশ ধসে পড়ে সেখানে কর্মরত দুই শ্রমিকের উপর। এসময় জেলার মাটিরাঙ্গার তৈকাতাং হেডম্যান পাড়ার খেরত কুমার ত্রিপুরার ছেলে এতে খগেন্দ্র ত্রিপুরা (৩৫) মাটির নিচে সম্পূর্ণ চাপা পড়ে নিহত হন এবং একই এলাকার হেতেন্ত্র ত্রিপুরার দেহের অর্ধাংশ চাপা পড়ে তিনিও মারাত্নক আহত হন। এরপরও অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়নি সেখানে পাহাড় কাটার মহোৎসব।

    ২৪ ঘণ্টা/প্রদীপ

  • ৩৪ বছরেও অজানা রামগড়ের পাতাছড়া গণহত্যার কথা

    ৩৪ বছরেও অজানা রামগড়ের পাতাছড়া গণহত্যার কথা

    খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : ১৯৮৬ সালের ১৩ জুলাই। সেদিনের বিভীষিকাময় স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেনি খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাতাছড়া ডাকবাংলা পাড়ার বাসিন্দারা। তৎকালীন শান্তিবাহিনীর একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসীর এলোপাতাড়ি গুলি ও অগ্নিসংযোগে সেদিন নিহত হয়েছিল ৫ শিশু সহ ৭ জন। কয়েকদিন পর ঘটনাস্থলের খুব কাছ থেকে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছিল স্থানীয়রা। একই বছরের ১৩ আগস্ট আরও এক নিরহ গ্রামবাসীকে গুম করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

    প্রথমদিনের ঘটনায় নিহতদের গণকবরে ঠাঁই হলেও পরবর্তীতে নিহতদের কপালে তাও জুটেনি। নিরহ গ্রামবাসীর ওপর পরপর এমন হামলায় ভয়ে পালিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিল ২ শতাধিক পরিবার। কয়েক বছর পর নিজেদের বাস্তুভিটায় ফেরার চেষ্টা করলেও তৎকালীন পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশাসন ফিরতে দেয়নি। আর ৩৪ বছরেও ফেরা হয়নি।

    গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী, নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়দের দাবি, ১৯৮৬ সালের ১৩ জুলাই নিহতদের গণকবর সংরক্ষণের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ববর্তী সময়ে তিন পার্বত্য জেলায় সংগঠিত বিভিন্ন গণহত্যার নথিপত্রে রামগড়ের পাতাছড়া গণহত্যার ঘটনা প্রকাশ করা। এছাড়া বাস্তুভিটাহীন পরিবার গুলোকে নিজ ভূমি ফেরত পাঠানোসহ প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

    প্রত্যক্ষদর্শীদের চোখে ১৯৮৬ সালের ১৩ জুলাইঃ
    মো. নাসির উদ্দিন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঘটনার দিন মাগরিবের কিছু সময় আগে হঠাৎ করে একদল অস্ত্রধারী শান্তিবাহিনীর সদস্য বাড়িতে ঢুকে পড়ে। কিছু বুঝে উঠার আগে এলোপাঁতাড়ি গুলি ছুঁড়ে। এ সময় গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় কেউ কাউকে উদ্ধারে এগিয়ে আসতে পারেনি। সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। আমার (নাসির) ছোট ভাই আবুল কাশেমকে আগুনে নিক্ষেপ করে। এ সময় আমাকেসহ নিয়ে মা বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করে। মায়ের কোলে একবছর বয়সী ছোট বোন আনোয়ারা থাকলেও ভুলে আরেক বোন মনোয়ারাকে বাড়ির ভেতর রেখে আসেন। মনোয়ারাকে আনতে মা বাড়ির ভেতর গেলে সন্ত্রাসীরা মাকে গুলি করে এবং ছোট বোন আনোয়ারাকে মায়ের কুল থেকে কেড়ে নিয়ে আগুনে নিক্ষেপ করে। আর মনোয়ারাকে মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে খুন করে। পরেরদিন আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সহ গিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করে রাস্তার পাশে গণকবরে দাফন করি।

    ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী নজরুল ইসলাম জানান, ১৩ জুলাই সকালে পাতাছড়ার ডাকবাংলা গ্রামে বাইরে থেকে কিছু অপরিচিত লোকজন আসে। স্থানীয় এক পাহাড়ীর বাড়িতে তারা কাজে এসেছেন বলে জানান। আসরের পরপর যখন হামলা শুরু হয় তখন তাদেরকেও সন্ত্রাসীদের সাথে দেখার কথা জানান নজরুল। বাড়িতে ঢুকে মা ছবুরী খাতুনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে এবং বোন রেহানা আক্তারকে আগুনে নিক্ষেপ করে হত্যার কথা ভুলতে পারেনি এখনও।

    রামগড় পাতাছড়ার বাসিন্দা ও তৎকালীন আনসার সদস্য মো. মমতাজ মিয়া জানান, ৩৪ বছর অতিবাহিত হলেও নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত গণহত্যার কোন নথিতে উল্লেখ নেই। স্বজন হারানোর কষ্ট বুকে চেপে জীবন রক্ষায় সেদিন কোন মতে একটি কবরে স্বজনদের রেখে চলে যেতে হয়েছিল নিরহ গ্রামবাসীদের।

    রামগড় পাতাছড়া ডাকবাংলা পাড়া গণহত্যায় নিহতদের নামের তালিকাঃ
    আবুল খায়েরের স্ত্রী হালিমা বেগম(৫৫), মেয়ে মনোয়ারা বেগম(৬), ছেলে আবুল কাশেম(৫), আনোয়ারা বেগম(১), ছায়েদুল হকের স্ত্রী ছবুরী খাতুন ও মেয়ে রেহানা রেহানা আক্তার। লাল মিয়ার মেয়ে মফিজা খাতুন। ১৯৮৬ সালের ১৩ জুলাই নিহতদের সবাইকে পাতাছড়া এলাকায় গণকবর দেওয়া হয়। পরেরদিন ১৪ জুলাই মো. সাত্তার নামে একজনের গলাকেটে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। একই বছরের ১৩ আগস্ট মো. আদম ছফি উল্লাহ নামে একজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করা হয়।

    ২৪ ঘণ্টা/প্রদীপ চৌধুরী

  • রামগড়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বে গোলাগুলি,দুই সহোদর গুলিবিদ্ধ

    রামগড়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বে গোলাগুলি,দুই সহোদর গুলিবিদ্ধ

    খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ির রামগড় কাজী পরিবারে অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে রামগড় পৌরসভার মেয়রের দুই ভাই গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

    রোববার রাতে রামগড় পৌর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এসময় পৌর মেয়র কাজী রিপনের ছোট ভাই কাজী শিপন ও কাজী শাহেদ গুলিবিদ্ধ হয়। রাতে তাদেরকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে প্রেরণ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ মোহাম্মদ ফরহাদ।

    রামগড় পৌরসভার মেয়র কাজী রিপন জানান, ‘রোববার রাতে আমার ছোট ভাই কাজী শিপন ও শাহেদ উপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। এসময় তাদের পায়ে ও মাথায় গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ দুই ভাই চট্টগ্রামে প্রেরণ করা হয়।

    তিনি আরো জানান ,‘মসজিদের জমি অধিগ্রহণ কেন্দ্রকে আমাদের পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলছি। এরই জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানতে পেরেছে আমার আরেক ভাই শিমুলের হাতে এসময় অস্ত্র ছিল। তবে কীভাবে এই ঘটনা ঘটেছে তা বলতে পারছি না।’

    রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ মোহাম্মদ ফরহাদ জানান,‘এটি মূলত তাদের (কাজী পরিবার) পারিবারিক বিরোধের জেরে গোলাগুলি হয়েছে। তবে এই ঘটনায় একজনের মাথায় এবং অন্য জনের পায়ে গুলি লাগে। দুজনকে চট্টগ্রামে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।’
    ২৪ ঘণ্টা/প্রদীপ চৌধুরী

  • রামগড়ের পৌর মেয়র রিপনের বিরুদ্ধে মসজিদের কোটি টাকা কুক্ষিগত করার অভিযোগ দুই সহোদরের

    রামগড়ের পৌর মেয়র রিপনের বিরুদ্ধে মসজিদের কোটি টাকা কুক্ষিগত করার অভিযোগ দুই সহোদরের

    নিজস্ব প্রতিবেদক,খাগড়াছড়ি : রামগড় পৌরসভার মেয়র কাজী মোহাম্মদ শাহজাহান রিপনের বিরুদ্ধে সোনাইপুল মসজিদের কমিটি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা কুক্ষিগত করার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরই আপন দুই সহোদর।

    গত মঙ্গলবার মসজিদের সাধারণ সভায় এসব অভিযোগ করেন মসজিদের ভূমিদাতা (মেয়র ও অভিযোগকারীদের পিতা) সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কাজী রুহুল আমিনের ছেলে কাজী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইসলাম শাহেদ এবং কাজী সাইফুল ইসলাম শিমুল।

    আছরের নামাজের পর এলাকার সকল মুসল্লী,গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন রামগড় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার ফারুক, মসজিদ কমিটির সভাপতি ও পৌর মেয়র কাজী শাহাজান রিপন, সাধারণ সম্পাদক রবি মজুমদার, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বাহার উল্লাহ মজুমদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, জসীম চৌধুরী এবং সোনাইপুল বাজার কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার ইসলাম সাহেদ।

    সাধারণ সভায় দীর্ঘদিন ধরে কমিটি আটকিয়ে রেখে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেন কমিটির সভাপতি পৌর মেয়র ও মসজিদ কমিটির সভাপতি শাহাজাহান রিপন বলেন, তাঁর সময়েই মসজিদের জায়গা বৃদ্ধির জন্য দশ শতক জায়গা কেনা হয়েছে এবং মসজিদে আধুনিক শীততাপ যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। রামগড় স্থল বন্দরের ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা মসজিদের উন্নয়নে ব্যয় হবে বলে জানান তিনি।

    মসজিদ কমিটির সভাপতির বক্তব্যের বিরোধীতা করে তাঁর ভাই কাজী শাহরিয়ার ইসলাম শাহেদ বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে কমিটি আটকিয়ে রেখে উন্নয়ন মূলক কাজের নামে নানা রকম দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে কমিটির সভাপতি। এই ১৪ বছরে একবারের জন্যও মসজিদের আয়-ব্যয়ের কোন হিসাব দেননি। স্বেচ্ছাচারিতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে মসজিদের জায়গা ক্রয় এবং শীততাপ যন্ত্র লাগানোর নাম করে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন কমিটির নির্বাচন না হওয়ায় মসজিদের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড স্থবির হয়ে গেছে বলে জানান।

    তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, স্থল বন্দরের জন্য মসজিদের জায়গার ক্ষতিপূরণ বাবদ দুই কোটি বাষট্টি লক্ষ টাকা বর্তমান সভাপতির অধীনে নিয়ে আসলে সেটি তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর (মেয়র) পৌর নির্বাচনের খরচের জন্য ব্যবহার করবেন বলে অভিযোগ করেন কাজী শাহরিয়ার।

    খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক বরাবর এক লিখিত অভিযোগে কাজী শাহরিয়ার ইসলাম শাহেদ ও কাজী সাইফুল ইসলাম শিমুল উল্লেখ করেন, মসজিদের জন্য তাঁদের পিতার দানকৃত জায়গার পঁয়ত্রিশ শতক ভূমি রামগড় উপজেলা এক্সেস লোড স্টেশন কন্ট্রোলার নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় পড়েছে। জায়গা বাবদ তাঁদের পরিবারের সদস্যরা যে ক্ষতিপূরণ পাবেন তা বর্তমান সভাপতির হাতে তুলে না দিয়ে সমাজের গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে মসজিদ ফান্ডে দান করবেন।

    লিখিত অভিযোগে শাহেদ তাঁর বড় ভাই পৌর মেয়র ও মসজিদ কমিটির সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শাহাজাহান রিপন ও তাঁর অপর ভাই জিয়াউল হক শিপনের বিরুদ্ধে তাঁর পিতার জায়গা বাবদ ক্ষতিপূরণের ০.০৬ ন(ছয় শতক) ভূমির ৪২৬৭০০০(বেয়াল্লিশ লক্ষ সাতষট্টি হাজার) টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ করেন।

    সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বাহার উল্লাহ মজুমদার মসজিদ কমিটি নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদন ধরে এই কমিটির কোন মিটিং হয়না। মসজিদ কমিটির বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ করায় তাঁর উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। প্রাণের ভয়ে তিনি রামগড় থানায় সাধারন ডায়েরী করেছেন।

    রামগড় উপজেলা পরিষদের ভাইস- চেয়ারম্যান আনোয়ার ফারুক তার বক্তব্যে বলেন, মসজিদ আল্লাহর ঘর। কোন বিশৃঙ্খলা না করে সকলকে ধৈর্য্য ধরে সুন্দর সমাধানের আহবান জানান।
    দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় এমন অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিমত প্রকাশ করেন।

    তিনি উপস্থিত সমাজের সকলকে অনুরোধ করে বলেন, সবার মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য মসজিদ পরিচালনা কমিটি গঠন করতে। মসজিদ কমিটির অনেকেই বেঁচে নেয়। এই অবস্থায় নতুন করে মসজিদ কমিটি গঠন ছাড়া কোন বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি।

    এদিকে মসজিদ কমিটির সাধারণ সভাকে কেন্দ্র করে মসজিদ সংলগ্ন এলাকা গুলোতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিরাপত্তা জোরদারে মসজিদের বাইরে পুলিশ এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কঠোর নজরদারির মধ্য দিয়ে মুসল্লীদের মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।

    রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মসজিদ কমিটির বিরোধকে কেন্দ্র করে যেন কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টি না হয় এজন্য বাড়তি নিরপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম/প্রদীপ

  • রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগে রামগড়ে ইজারাদারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

    রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগে রামগড়ে ইজারাদারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

    খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : আম পরিবহণের সময় টোলের অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও টোল আদায় করে রশিদ না দেয়ায় খাগড়াছড়ির রামগড়ে জেলা পরিষদ টোল ইজারাদারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।

    শুক্রবার (২৬ জুন) বিকেলে খাগড়াছড়ি-ফেনী সড়কের রামগড়স্থ সোনাইপুল জেলা টোল আদায় কেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত টোলের ঠিকাদার খাগড়াছড়ির মেসার্স বেগম অটো রাইস মিলকে এ জরিমানা করেছে।

    জানা গেছে, অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আ.ন.ম বদরুদ্দোজা নিজে কৃষি পণ্যবাহী গাড়িতে যাত্রী সেঁজে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে কৃষি পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯৬৪ সনের ১২/২ এর ধারায় টোল আদায় কেন্দ্রের ঠিকাদার মেসার্স বেগম অটো রাইস মিলকে ৫০ হাজার টাকা পরিমানা করেন।

    এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী মাহবুব আলম, সোনাইপুল ফরেনার্স চেক পোস্টের পুলিস সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/প্রদীপ চৌধুরী

  • খাগড়াছড়ির রামগড়ে স্বামীর ছুটি না মেলায় এনজিওকর্মী স্ত্রী’র অকাল মৃত্যুর অভিযোগ

    খাগড়াছড়ির রামগড়ে স্বামীর ছুটি না মেলায় এনজিওকর্মী স্ত্রী’র অকাল মৃত্যুর অভিযোগ

    খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : স্বামী ছুটি না পাওয়ায় সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর অকাল মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ‘পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র’-এর রামগড় শাখার মাঠকর্মী নবরতন চাকমা।

    তিনি এজন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটির মানিকছড়ি এরিয়া ম্যানেজার ইকবাল বিন তৈয়বকে দায়ী করেছেন।

    মাঠকর্মী নবরতন চাকমা জানান, রামগড়ে পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন সংস্থার মাঠকর্মী হিসেবে আট মাসে যোগ দিই। স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতাম। সোমবার আমাকে প্রশাসনিক কারণে রামগড় থেকে মানিকছড়িতে বদলি করা হয়। আড়াই মাসের অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীকে রামগড় ভাড়া বাসায় রেখে মানিকছড়িতে যোগ দিই। যোগদানের পর অসুস্থ স্ত্রী আমাকে ফোন করে তার অসুস্থতার কথা জানায়। স্ত্রীর পাশে থাকার জন্য আমি একাধিকবার ম্যানেজারের কাছে ছুটি চাই। স্ত্রী অসুস্থ জেনেও তিনি আমাকে ছুটি দেননি। ছুটি না পাওয়ায় বাড়ি যেতে পারেনি। শারীরিককভাবে অসুস্থ স্ত্রীর পাশে থাকার জন্য ২ দিন ছুটি চাইলেও মন গলেনি ম্যানেজারের।

    তিনি আরো জানান,‘ বুধবার আমার স্ত্রী গুরতর অসুস্থ হয়। এসময় সহকর্মীরা আমাকে দ্রুত রামগড় হাসপাতালে আসতে বলে। তখনও জানতাম না আমরা স্ত্রী মারা গেছে। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম আমার স্ত্রী মারা গেছে। তার সাথে শেষ দেখাও হয়নি, কোন কথা বলার সুযোগও পায়নি।

    বিষয়টি নিয়ে মাঠকর্মী নবরতন চাকমা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেগঘন পোস্ট দেওয়ার পর সমালোচনার ঝড় উঠে। এমন অমানবিক কর্মকান্ডের জন্য এরিয়া ম্যানেজারকে দুষছেন সবাই। করোনার মতো মহামারীর সময়েও এমন অমানবিক কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান অনেকে।

    নবরতন চাকমার স্ত্রী বিপাশী চাকমার মৃত্যুর জন্য এরিয়া ম্যানেজারকে দায়ী করে বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা।

    তাঁরা বলেন, এরিয়া ম্যানেজারের গাফিলতির কারণে বিপাশী চাকমার মৃত্যু হয়। তার গর্ভের সন্তানও মারা যায়। এরকম যাতে আর কারো ক্ষেত্রে না ঘটে। আমরা এর বিচার চাই।

    এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র-এর মানিকছড়ি এরিয়া ম্যানেজার ইকবাল বিন তৈয়ব। এই নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন ঐ কর্মকর্তা।

    তিনি বলেন,‘ পদক্ষেপের একজন কর্মী হয়ে নব রতন এভাবে ফেসবুকে লিখতে পারেন না। তার অভিযোগ মিথ্যা। তিনি আমার কাছে সেভাবে ছুটি চাননি। তার স্ত্রী স্ট্রোক করে মারা গেছেন। তিনি (নব রতন চাকমা) সেখানে (রামগড়) থাকলেও মারা যেত।

    এ বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি এড. মহিউদ্দিন কবির বাবু বলেন, ঘটনাটি সংবেদনশীল এবং তদন্তযোগ্য। মৃত নারীর মরদেহ পোস্টমর্টেম সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া আইনসম্মত।

    যেহেতু স্বজনরা দাবি করছেন, স্বামীর অনুপস্থিতির কারণে তাঁর (বিপাশী চাকমা)-এর যথাযথ চিকিৎসার অভাব ঘটেছে। তাই মানবাধিকার এবং মৌলিক অধিকারের প্রশ্নেই এই ঘটনার সুষ্ঠু সুরাহা কাম্য।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/প্রদীপ

  • খাগড়াছড়িতে স্বাস্থ্যকর্মীসহ করোনা আক্রান্ত ২, মধ্যরাত থেকে জেলায় আবারো লক-ডাউন

    খাগড়াছড়িতে স্বাস্থ্যকর্মীসহ করোনা আক্রান্ত ২, মধ্যরাত থেকে জেলায় আবারো লক-ডাউন

    খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়িতে স্বাস্থ্য কর্মীসহ আরও ২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

    সোমবার রাতে স্বাস্থ্যকর্মীসহ ২ জন আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন নুপুর কান্তি দাশ।

    তিনি জানান,‘আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত। তিনি উপজেলায় করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ করতেন। গত ১৪ মে তার নিজের নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পাঠানোর সোমবার রাতে পজেটিভ রির্পোট আসে।

    স্বাস্থ্য কর্মী আক্রান্তের ঘটনায় রামগড়ে আরো করোনা রোগী থাকার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর সংস্পর্শে আসাদের নতুন করে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। আক্রান্ত অন্যজন জেলার পানছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। তিনি চট্টগ্রাম ফেরত। তিনি বর্তমানে হোম কোয়ারান্টাইনে আছেন। ’

    এই নিয়ে জেলার পাঁচ উপজেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১জন।

    এদিকে জেলায় সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার (১৯ মে) রাত ১২টার পর থেকে পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত পুরো জেলায় আবারও লক-ডাউন জারি করেছের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস।

    তিনি জানান, এ সময়ে জরুরী পরিষেবা ছাড়া আর কাউকেই জেলার তিনটি প্রবেশমুখ দিয়ে ঢুকতে-বেরোতে দেয়া হবে না। রামগড়-মহালছড়ি ও মানিকছড়িতে চেক পোস্ট দিয়ে গমনাগমন নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তাছাড়া জেলার ভেতরেও এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় কেউ চলাচল করতে পারবেন না।

    জেলা প্রশাসকের এই সিদ্ধান্তকে জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই লক-ডাউন মানতে সাধারণ মানুষ রাজনীতিক-জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/প্রদীপ