২৪ ঘন্টা ডট নিউজ।চট্টগ্রাম ডেস্ক : মহান মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়ার বীরত্বপূর্ণ অবদান বাংলাদেশের জনগন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে বলে মত প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের অন্যতম মিত্রশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় রাশিয়া। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যখন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় বিনা উস্কানিতে পাখির মতো মানুষ হত্যা করতে শুরু করে ঠিক তখনই বাংলাদেশের জনগনের পক্ষে জাতিসংঘে অবস্থান নেন রাশিয়া।
আজ ২৮ ডিসেম্বর শনিবার বেলা ১টায় রাশিয়ার অনারারি কনসাল স্থপতি আশিক ইমরানের সাথে প্রেসক্লাবস্থ দফতরে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সুজন এসব কথা করেন।
নাগরিক উদ্যোগের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা খোরশেদ আলম সুজন বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রধান সহায়তাকারী দেশ ভারতের সাথে সামরিক চুক্তি করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় রাশিয়া। আর বাংলাদেশের পক্ষে রাশিয়া ছিল বলেই পাকিস্তানের পক্ষে বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌ-বহর পাঠানোর সাহস পায়নি যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের বিজয় অনিবার্য দেখে পাকিস্তানের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও চীন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তুললে রাশিয়া সেই প্রস্তাবে ভেটো দেয়। তাছাড়া যুদ্ধের পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাইন ও ধ্বংসাবশেষ অপসারণে রাশিয়ার সামরিক বিশেষজ্ঞরা ব্যাপক অবদান রাখে। মূলত ১৯৭০-৮০ দশকে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির দূত হিসেবে আবির্ভূত হন রাশিয়া।
কেবল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধেই নয় বাংলাদেশের পুনর্বাসন কাজেও রাশিয়া পাশে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশের পূর্ণগঠন তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নততর বাংলাদেশ বিনির্মাণে একের পর এক মেগা প্রকল্পসমূহের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে রাশিয়া।
সুজন রাশিয়ার অনারারি কনসালের মাধ্যমে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন, সামরিক সহযোগিতা, মহাকাশ বিজ্ঞাণ সহযোগিতা এবং ছাত্রবৃত্তি প্রদানে রাশিয়ার সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী সরকারগুলো রাশিয়ার অসামান্য অবদানের কথা ভূলে গিয়ে বাংলাদেশের সাথে স্থাপিত সুসম্পর্ক ধরে রাখতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হন।
বর্তমানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার সাথে স্থাপিত সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করে শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞচিত্তে রাশিয়ার সে অবদানের কথা স্বীকার করে। সুজন বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য রাশিয়ার ট্যুরিষ্ট ভিসা, বিজনেস ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসা সমূহের প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূর করে পূণরায় ভিসা সমূহ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য রাশিয়ার অনারারি কনসালের নিকট আহবান জানান।
রাশিয়ার অনারারি কনসাল স্থপতি আশিক ইমরান সুজনের সাথে আন্তরিক পরিবেশে শুভেচ্ছা বিনিময় করে তার সাথে স্বাক্ষাত করতে আসায় নাগরিক উদ্যোগের সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন রাশিয়ার সরকারও বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে বদ্ধপরিকর। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে রাশিয়ার যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল ঠিক একইভাবে বর্তমানে বাংলাদেশের উন্নয়নে রাশিয়া সরকারের সহযোগিতা উন্নত থেকে উন্নততর হবে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বৃহৎ বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পসমূহে রাশিয়া যাবতীয় সহায়তা প্রদান করা যাচ্ছে।
তিনি নাগরিক উদ্যোগের প্রেরিত প্রস্তাবনাসমূহ গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করেন এবং এ ব্যাপারে রাশিয়া সরকারের সাথে হৃদত্যাপূর্ণ আলোচনা করবেন বলে নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাজী মো. ইলিয়াছ, এস এম আবু তাহের, নাগরিক উদ্যোগের সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, নিজাম উদ্দিন, মো. শাহজাহান, সোলায়মান সুমন, রকিবুল আলম সাজ্জী প্রমূখ।