Tag: রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিক

  • পাটকলগুলোর আধুনিকায়নে উৎপাদন বন্ধ করে শ্রমিকদের এককালীন পাওনা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার

    পাটকলগুলোর আধুনিকায়নে উৎপাদন বন্ধ করে শ্রমিকদের এককালীন পাওনা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার

    সরকার বিজেএমসি পরিচালিত রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একে আরো সক্ষম করে গড়ে তুলতে উৎপাদন বন্ধ করে শ্রমিকদের এককালীন পাওনা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

    এজন্য বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন’র (বিজেএমসি) ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে শ্রমিকদের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার পাওনা পরিশোধ করা হবে।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সকালে গণভবনে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলসমূহ নিয়ে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

    প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

    বৈঠক শেষে বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

    তিনি বলেন, ‘সরকারি খাতের পাটকলগুলোর সংস্কার ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে শ্রমিকদের সমুদয় পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

    মুখ্য সচিব বলেন, ‘বর্তমানে দেশে যে পাট ও পাট জাত পণ্য উৎপাদিত হয় তার শতকরা ৯৫ শতাংশই বেসরকারী পাটকলে উৎপাদিত হয়। সরকারী খাতটি অত্যন্ত স্কুইজড (সংকুচিত) হয়ে গেছে। যা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছিল না।’

    ‘এগুলোকে আবার প্রতিযোগিতায় কিভাবে আনা যায় এবং কিভাবে শক্তিশালী করা যায় সে বিবেচনায় এখন পাটকলগুলো বন্ধ করার ঘোষণা করা হয়েছে,’ বলেন তিনি।

    একইসঙ্গে ‘এসব পাটকল বন্ধ থাকলে যে পরিমাণ ক্ষতি হয় চালু থাকলে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ক্ষতি হয়,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কাজেই এসব পাটকলের সঙ্গে জড়িত শ্রমিক ভাইদের জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তার জন্য সরকার তাঁদেরকে ২০১৫ সালের জাতীয় মজুরি কাঠামো অনুযায়ী সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

    ড.কায়কাউস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনাও দিয়েছেন যে-পাটকলগুলো বন্ধ আছে সেগুলো কিভাবে চালু করা যায়, যাতে সেগুলো বর্তমান এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে।’

    এ সংক্রান্ত একটি কর্মপন্থতা প্রস্তুত করে অতি দ্রুত তাঁর নিকট নিয়ে আসার জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, বলেন তিনি।

    মুখ্য সচিব ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো গত ৪৮ বছরের মধ্যে শুধু চার বছর লাভের মুখ দেখেছে এবং ৪৪ বছর ধরে অব্যাহতভাবে মোট ১০ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে।

    তিনি বলেন, লোকসান হলে কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য সরকারের অর্থের উপর নির্ভর করতে হতো বলে প্রতি মাসেই শ্রমিক কর্মচারীদের এ সংক্রান্ত সমস্যা চলছিল।

    মুখ্য সচিব বলেন, পাটকল শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের লক্ষ্যে আগামী তিন দিনের মধ্যে তাঁদের তালিকা প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

    ড. কায়কাউস বলেন, ‘২০১৫ সালের সর্বশেষ মজুরি কাঠামো অনুযায়ী পাটকল সমূহের ২৫ হাজার শ্রমিককে তাদের অবসরকালীন সুবিধাসহ পাওনা পরিশোধ বাবদ সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।’

    মুখ্য সচিব বলেন, ‘পাটখাতের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজর রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর দর্শন হচ্ছে পাটকল শ্রমিকদের বাঁচানো।’

    এরই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ইতোপূর্বে পাটের জন্মরহস্য উন্মোচনের জন্য গবেষণা খাতে অর্থায়ন করেছিলেন এবং পাটের বহুমুখী ব্যবহারের উপর বিশেষ নজর দেন বলেও উল্লেখ করেন ড. কায়কাউস।

    শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের ধরন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, পাওনা বুঝিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে যেসব শ্রমিক অনধিক দুই লক্ষ টাকা প্রাপ্য তাদেরকে পুরো টাকা এককালীন নগদ পরিশোধ করা হবে।

    মুখ্য সচিব বলেন, পাওনা টাকার মধ্যে ৫০ শতাংশ এককালীন নগদ এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ শ্রমিকদের ভবিষ্যত জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয় পত্র আকারে পরিশোধ করা হবে।

    সঞ্চয় পত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত আর্থিক সুবিধার বর্ণনা দিয়ে ড. কায়কাউস বলেন, ১১ শতাংশ সুদে প্রত্যেক শ্রমিক প্রতি তিন মাসে সর্বনিম্ন ১৯ হাজার ৩২০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৭৪ হাজার ৫২০ টাকা পর্যন্ত পাবেন।
    এছাড়া এ পর্যন্ত অবসরে যাওয়া ৮ হাজার ৯৫৬ জন পাটকল শ্রমিকের অবসর ভাতা পরিশোধ করতে সরকারের ১ হাজার ২০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে ও জানান তিনি।

    মুখ্য সচিব বলেন,‘পাটকল শ্রমিকদের পাওনা টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাংক হিসাবে’ পাঠানো হবে এবং কোন পাটকল অথবা অন্য কোন মধ্যস্বত্বভোগীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকবে না।’

    ব্রিফিংয়ে উপস্থিত বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া জানান, অবসর ভোগীদের টাকা আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই নিজ নিজ ব্যাংক একাউন্টে চলে যাবে।

    সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে মুখ্য সচিব বলেন,‘এখানে কাউকে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে না এবং পরবর্তীতে এ কারখানাগুলো পুনরায় চালু হলে নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।’

    প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং বিজেএমসি’র চেয়ারম্যানও ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • পাটকল শ্রমিকদের অনশন ৩ দিনের জন্য স্থগিত

    পাটকল শ্রমিকদের অনশন ৩ দিনের জন্য স্থগিত

    খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা শর্ত দিয়ে তিন দিনের জন্য ঘরে ফিরেছেন। ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনরত খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা। চার দিন পর তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়েছে।

    শুক্রবার রাত সোয়া ১টায় শ্রমিক নেতাদের দেয়া তিনদিনের স্থগিতাদেশ মেনে নিয়ে নিজ নিজ ঘরে ফেরেন সাধারণ শ্রমিকরা।

    তবে, তাদের আন্দোলনের স্থানে নির্মাণকৃত প্যান্ডেল, তাবু ও মঞ্চ এখনই তারা ভাঙছেন না। ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় পাটমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দাবি মেনে নেওয়া না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে আবারো অনশন পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্লাটিনাম জুট মিল সিবিএ’র সভাপতি শাহানা শারমিন।

    এর আগে শুক্রবার রাতে নগরীর বয়রাস্থ শ্রম অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মজুরি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের চলমান অনশন কর্মসূচি ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করার আহবান জানান শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।

    এ সময় শ্রমিক নেতারা বলেন, সাধারণ শ্রমিকদের কাছে এ প্রস্তাব দেয়া হবে। তারা যদি মেনে নেয় তাহলেই কেবল এটি বাস্তবায়ন হতে পারে।

    মতবিনিময় সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এই পাটকল এবং শ্রমিকদের ব্যাপারে আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খুলনার বন্ধ হওয়া পাটকলগুলো চালু হয়েছে। এ সরকারের আমলে মজুরি কমিশন ২০১৫ পাশ হয়েছে এবং এ সরকারই তা বাস্তবায়ন করবে। প্রতিমন্ত্রী শ্রমিক নেতাদের বলেন, দাবি-দাওয়া পূরণ করতে এক সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ প্রেক্ষাপট তৈরি করা দরকার।

    প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। এছাড়া জাতীয় মজুরি কমিশন ২০১৫ বাস্তবায়নে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় আগামী ১৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা এবং বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি)’র সভাকক্ষে শ্রমিক নেতাদের সাথে সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে চলমান অনশন প্রত্যাহার করার জন্য তিনি শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

    বৈঠকে খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইউসুপ আলী, শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. কাউসার শিকদার এবং আন্দোলনরত পাটকলগুলোর সিবিএ ও ননসিবিএ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

    বিষয়টি নিশ্চিত করে প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির জানান, শ্রম প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বরের বৈঠকে দাবি পূরণ না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে আবারও আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করা হবে। অনশন স্থগিত হওয়ার পর খালিশপুরের বিআইডিসি সড়ক থেকে অনশনরত সকল শ্রমিকরা ঘরে ফিরে গেছেন বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।

    উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা বাস্তবায়ন দাবিতে ১০ ডিসেম্বর থেকে খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয় পাটকলের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরণ অনশন শুরু করে শ্রমিকরা। এতে প্রায় অর্ধ লক্ষ শ্রমিক অংশ নেন। ইতোমধ্যে বৃহস্পতিবার আব্দুস সাত্তার নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। শুক্রবার সকাল ১০টায় তার জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীতে তাকে দাফন করা হয়।

    এছাড়া দুই শতাধিক শ্রমিক এ অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন সবাই তাকিয়ে আছেন রোববারের বৈঠকের দিকে। বৈঠক ফলপ্রসু না হলে আবারো আমরণ অনশনে বসার হুঁশিয়ারি রয়েছে শ্রমিক নেতাদের।

  • ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশনে পাটকল শ্রমিকেরা

    ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশনে পাটকল শ্রমিকেরা

    বকেয়া মজুরি পরিশোধ, জাতীয় মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরণ অনশনে নেমেছেন আমিন জুট মিলসহ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা।

    পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৮টা থেকে চট্টগ্রামের আমিন জুট মিলের সামনে জড়ো হতে থাকেন শ্রমিকরা। এরপর তারা আমরণ অনশন শুরু করেন। এখন বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছেন সিবিএ এবং নন-সিবিএ নেতা-শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

    আমিন জুট মিল সিবিএ’র দপ্তর সম্পাদক কামাল উদ্দিন বলেন, আমিন জুট মিলে প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক কর্মরত আছেন। এর বাইরে চট্টগ্রামে আরও ৯টি পাটকল রয়েছে। সেগুলোর শ্রমিকনেতারাও আমাদের সঙ্গে মিল গেটে অবস্থান করছেন।

    এর আগে কয়েক দফায় আমিন জুট মিলের শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে বিক্ষোভ এবং পাটমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ, থালা-বাটি হাতে শ্রমিকরা ভুখা মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন।

    আমিন জুট মিল সিবিএ সভাপতি আরিফুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি। এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার আমরা বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর কাছে গিয়েছি। কিন্তু পাটশিল্প রক্ষায় তার কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। তাই আজ আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে লাগাতার অনশনে নেমেছি।’

    এই সিবিএ নেতা বলেন, ‘আমাদের কোনো দাবিই পূরণ হয়নি। গত রমজানেও আমরা আন্দোলন করেছি। সরকারি ও অন্যান্য কর্পোরেশনের কর্মচারীরা পেয়েছেন জাতীয় মজুরি কমিশন ২০১৫ স্কেল। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা পাননি। আমরা যে ন্যূনতম মজুরি পাই তাও ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত বকেয়া। অনেক শ্রমিক অবসরে গেলেও তাদের এককালীন পাওনা পাননি। মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। এমনকি পাওনা ছাড়াই অনেক শ্রমিক মারা গেছেন, মারা গেছেন তাদের নমিনিও।’

    তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কারখানার কর্মচারীরা গত ১৩ সপ্তাহ ধরে বেতন পাচ্ছেন না। কর্মকর্তারা বেতন পেয়েছেন তিন মাস আগে। এই কারথানায় প্রায় চার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তারা কী খেয়ে বেঁচে আছেন সে খবর কি কারও আছে? তাই আমরা বাধ্য হয়ে আমাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে লাগাতার অনশনে এসেছি।’

    আমিন জুট মিল সিবিএ সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা জানান, আমিন জুট মিল ছাড়াও চট্টগ্রামে আরও ৯টি পাটকল রয়েছে। চট্টগ্রামের সব শ্রমিক নেতাও আজকের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।

    তিনি বলেন, ‘কেবল ১১ দফা দাবিই নয়, আমাদের আরও অনেক ক্ষোভ রয়েছে। পাটকল শ্রমিকদের সমস্যা লাঘবে সরকারের কোনো সদিচ্ছা নেই। সরকার বরাবরের মতোই আমাদের ব্যাপারে উদাসীনতা দেখিয়ে আসছে। সত্যি কথা বলতে কী- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এ সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।’