Tag: রিজভী

  • অপরাধীরা প্রটেকশন পায় সরকারের কাছ থেকে:রিজভী

    অপরাধীরা প্রটেকশন পায় সরকারের কাছ থেকে:রিজভী

    খুনিরা সরকারের আশ্রয়ে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

    শনিবার (২৬ অক্টোবর) নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।

    সমাবেশের পর আবরার হত্যার প্রতিবাদে ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল। নয়াপল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে আবারও বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

    রিজভী বলেন, ‘আমরা দেখেছি, সরকারের সোনার ছেলেরা অপরাধ করলে সেই অপরাধকে প্রটেকশন দেন এ সরকার বা সরকার প্রধান। নাটোরের নুর হোসেন বাবুর হত্যাকারীদের বিচার হয়নি, নাটারের রানার হত্যাকারীদের ফাঁসি হয়েছিলো সেটা রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পেয়েছেন। খবরের কাগজে বেরিয়েছে এই আওয়ামী লীগের আমলে দুইজন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এবং আবদুল হামিদ সাহেবের আমলে ৩৪ থেকে ৩৫ জন হত্যাকারীরা যাদের ফাঁসি হয়েছে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পেয়েছেন।’

    তিনি বলেন, ‘অপরাধীরা প্রটেকশন পায় সরকারের কাছ থেকে। সেই সরকারের হঠাৎ করে সোনারকাঠি-রুপাকাঠি পরিবর্তন করে আজকে রাক্ষস থেকে মানবতার মূর্ত প্রতীক হলেন কি করে? ঘটনা কি? বিশ্বজিৎকে যারা হত্যা করেছে তাদেরও কিন্তু কিছু হয়নি। একের পর এক খুন, একের পর এক হত্যা, এই হত্যার সঙ্গে এই সরকার দলীয় যারা জড়িত তারা কোনো না কোনোভাবে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে।’

    রিজভী বলেন, ‘আজকে হঠাৎ করে টাকার খনি, ডলারের খনি, ক্যাসিনোর খনি। গত ১০ বছর কিছুই হলো না তাহলে হচ্ছে কেনো? এ নিয়ে জনমনে বড় বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেউ বলেন গৃহ বিবাদ, কেউ বলেন অন্য কোনো বিষয় আছে।’

    তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। আমরা বলতে চাই, দুর্নীতি করা নিশ্চয় অপরাধ। সবচাইতে বড় দুর্নীতি হচ্ছে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে জনগণকে প্রতারিত করে দিনের ভোটকে রাতে করা। এটা হলো মহাদুর্নীতি। এই দুর্নীতির জন্য সবার আগে এই সরকারের বিচার হওয়া উচিত ছিলো।’

    তিনি বলেন, ‘এই ভোটারবিহীন সরকার জনগণের সরকার নয়, এটি একটি মাফিয়া সিন্ডিকেট। তা না হলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হবে না কেনো? এরকম মামলায় অসংখ্য জামিন হয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীই বলেছেন, তারেক যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে তার মা মুক্ত হবে না। ওই জামিনের চাবিটা শেখ হাসিনার হাতে আছে, ওই চাবিটা শেখ হাসিনা যতক্ষন পর্যন্ত না তালা খুলবেন ততক্ষন পর্যন্ত দেশনেত্রী মুক্ত হবেন না।’

    রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রীর কাছে তার আত্বীয়-স্বজনরা যাচ্ছেন, খবর নিয়ে আসছেন। তিনি ডান হাত বাম হাত নাড়াতে পারছেন না, প্রতিদিন সেটা ফিক্সড হয়ে যাচ্ছে। যে ভদ্র মহিলা, যে জাতীয় নেত্রী তিনি আজকে ‘হুইল চেয়ারবাউন্ড’ হয়ে গেছেন। তাকে দুইজন লোক ধরে তুলতে হয়। কিন্তু আমরা দেখলাম তিনি হেঁটে কারাগারের মধ্যে গেছেন। কেনো তার এই অবস্থা? তার এই চরম শারীরিক অবস্থার জন্য দায়ী আজকের প্রধানমন্ত্রী, তার ক্ষোভ, তার প্রতিহিংসা, তার জিজ্ঞাসা, তার রাষ্ট্রক্ষমতায় ভোগ দখলের জন্য আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ধুঁকে ধুঁকে জেলখানায় আছেন।’

    তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী হাসপাতালে আছেন তার চিকিৎসা নাই। তার আত্বীয়-স্বজনরা বলছেন, দেশনেত্রী মুক্ত হলে তিনি সিদ্ধান্ত নেবে। তারা দেশের বাইরে নিয়ে যাবে, দেশের মধ্যে বা বাইরে যেখানে উন্নতমানে চিকিৎসা হয় তারা করাবেন।’

    তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারের এই আকুতি আজকে সরকারের কানে ঢুকে না। আজকে কোথায় যাবো? মানুষের শেষ আশ্রয় আদালত সেখানে কোনো বিচার নেই, কোনো বিচার পাওয়া যায় না। আমরা মনে করি, অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, তার মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

    মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার। যে প্রদীপ জ্বলে উঠার আগেই এই স্বৈরাচারী সরকার তাকে নিভিয়ে দিলো তার সোনার ছাত্রলীগ বাহিনী দিয়ে। এই আবরারকে যেভাবে তিল তিল করে হত্যা করা হয়েছে শারীরিক ও মানসিক অবর্ণনীয় বর্বর হামলা করে এটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সে আমার মতোই কোনো মায়ের সন্তান।

    তিনি বলেন, যারা হত্যা করেছে এই হত্যাকারী শুধু ধরলেই হবে না, তাদের প্রত্যেককে দৃশ্যমান ফাঁসি দিতে হবে। হত্যাকারীর পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্যদের আমি বিচার চাই। কারণ যারা এই সন্তানদের জন্ম দিয়েছে, লালন-পালন করেছে অবশ্যই তারা দায়-দায়িত্ব রাখে। আমি সবার বিচার চাই।

    খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যিনি এই দেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। গণতন্ত্রের অপর নাম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বাংলাদেশের অপর নাম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজকে তিনি কারাগারে মানে বাংলাদেশ কারাগারে, গণতন্ত্র কারাগারে। তাকে অবশ্যই আমাদের মুক্ত করে আনতে হবে।

    সংগঠনের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ সভা পরিচালনা করেন। সমাবেশে মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান ও পেয়ারা মোস্তফা বক্তব্য দেন।

  • ভিসিরা এখন রাষ্ট্রপতির স্বপ্ন না দেখে যুবলীগ সভাপতি হবার স্বপ্ন দেখেন

    ভিসিরা এখন রাষ্ট্রপতির স্বপ্ন না দেখে যুবলীগ সভাপতি হবার স্বপ্ন দেখেন

    ভাইস চ্যান্সেলরের মতো মহিমান্বিত পদকে জনগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মীজানুর রহমান কলুষিত করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।

    তিনি বলেন, ‘একদা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস চ্যান্সেলররা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বা দেশের রাষ্ট্রপতি হবার স্বপ্ন দেখতেন। আর এখন তারা যুবলীগের সভাপতি হবার স্বপ্ন দেখেন।’

    রবিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

    রিজভী বলেন, ‘এই আওয়ামী জাহেলিয়াতের আমলে অবস্থা এতটাই বিপর্যয়কর অবস্থায় পৌঁছেছে, এই দেশে এখন একজন উপাচার্য পদের চেয়ে যুবলীগের নেতা হওয়াকে বেশি গৌরবজনক মনে করে। গণভবনের আনুকূল্য একজন উপাচার্যকে কতটা রুচিহীন, অমার্জিত ও অসংস্কৃত করে তুলতে পারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মিজানুর রহমান তার উদাহরণ।’

    তিনি বলেন, ‘এই উন্মাদ একনায়কতন্ত্রের যুগে আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ ও চিন্তা-চেতনায় যে পচন ধরেছে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আকাংখা তারই নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ও সম্ভ্রমপূর্ণ বিদ্যাপীঠ গড়ে তোলার বদলে ভাইস চ্যান্সেলরের দিবাস্বপ্ন যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়া। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদ ভাইস চ্যান্সেলরের মতো মহিমামন্বিত পদকে কলুষিত করলেন জনগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মিজানুর রহমান।’

    তিনি আরও বলেন, ‘জুয়া-ক্যাসিনো ও অবৈধ টাকা মিশ্রিত একটি প্রতিষ্ঠানের নাম হয়ে পড়েছে যুবলীগ। স্বাধীনতাত্তোর জেলা শহরগুলোতে যুবলীগের নেতারা ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ পেয়েও মিজানুর রহমান এখনও যুবলীগ তথা ক্যাসিনো লীগের প্রেসিডিয়ামের ১ নম্বর সদস্য হিসাবে আছেন ! এই পদটা ছাড়েননি ! কতটা নির্লজ্জ, নির্বোধ ও দলকানা হলে ভিসির মতো পদ ছেড়ে তিনি যুবলীগের সভাপতি হতে চান!

    এ থেকে স্পষ্ট যে, মিজানুর রহমানরা ক্যাসিনোর হিসাবটা বুঝে গেছেন, এখন নতুন সম্রাট হতে তিনি খুবই আগ্রহী! উনি যোগ্য ছিলেন যুবলীগের হাতুড়ী বাহিনীর নেতা হওয়ার। উনাকে করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। দীর্ঘদিনের শ্রদ্ধা-সম্ভ্রমের এই পদটিকে কলঙ্কিত করছে ড. মিজান। এই সরকারের পচনটা মাথায়।’

    রিজভী বলেন, ‘সরকার এখন কুশিক্ষা-অশিক্ষায় একটি দলীয় বুদ্ধিজীবী শ্রেণী তৈরি করার ব্রত নিয়েছে। ফলে প্রথিতযশা শিক্ষাবিদদের অবজ্ঞা করে উপাচার্য করা হচ্ছে নিরুচীর দলীয় কর্মীদের। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির গর্ব ১০ টাকায় চা-সিঙ্গারা, রাজশাহীর ভিসির স্বপ্ন জয় হিন্দ প্রতিষ্ঠা, বুয়েটের ভিসি হল ডরমেটরিতে তার পালিত ক্যাডারদের হাতে আবরার ফাহাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে বলে অনাকাঙ্খিত মৃত্যু। সমাজের এই চরম অবক্ষয়ের জন্য দায়ী জবাবদিহিহীন রাষ্ট্র ব্যবস্থা। যে রাষ্ট্র দখল করে আছে একটি ভোট ডাকাত অবৈধ সরকার। তাদের বিদায় না ঘটানো পর্যন্ত এই পচন বন্ধ করা সম্ভব নয়।’

  • রিজভীর নেতৃত্বে আবরার হত্যার বিচার দাবিতে মিছিল

    রিজভীর নেতৃত্বে আবরার হত্যার বিচার দাবিতে মিছিল

    বুয়েটের মেধাবি শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের পিটিয়ে হত্যা ও ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির প্রতিবাদ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি।

    বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

    মিছিলটি রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারও বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে অংশ নেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন মতি, সাইফুর রহমান মিহির, কোষাধ্যক্ষ আতাউর রহমান চেয়ারম্যান, সহ-সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রেজাউর রহমান ফাহিম, দফতর সম্পাদক এ বি এম এ রাজ্জাক, প্রমুখ।

    মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভা করে বিএনপি। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান।

    এতে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-বাংলাদেশের স্বার্থ শেখ হাসিনা বিক্রি করবে এটা হতে পারে না। তাহলে ভারত থেকে কি কি নিয়ে আসলেন ? জনগণ প্রত্যাশা করেছিল- ‘ভারতকে সারাজীবন মনে রাখার মত’ আপনার দেয়া ট্রানজিট, বানিজ্য, কানেক্টিভিটি, ৭ রাজ্যের নিরাপত্তা, নদী, সমুদ্র, বন্দর, সুন্দরবন, প্রতিরক্ষা, বৃহত্তম রেমিটেন্স, অবাধ রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের বিপরীতে আপনি প্রতিবারের মত এবারও হয়ত খালি হাতে ফিরবেন না।

    ‘সব প্রধানমন্ত্রীই বিদেশ সফরে কিছু না কিছু আনতে যায়। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে সবকিছু উজাড় করে দিয়ে আসেন। প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গেলেই দেশের মানুষের উদ্বেগ বেড়ে যায়। এবারও আপনি দেশের অনেক কিছু দিয়ে দিলেন, আর ফিরে আসলেন খালি হাতে’-যোগ করেন রিজভী।

    বিএনপির এই নেতা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে করেন, আপনি বললেন দেশের স্বার্থ আপনি বিকিয়ে দেন না, তাহলে ভারতকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর কেন দিয়ে আসলেন ? গতকালের সংবাদ সম্মেলনে তার কোনো সদুত্তর দিতে পারলেন না। বরং আমাদের বন্দরগুলো ব্যবহারে ভারতের অধিকারও আছে বলে যে জাতীয় স্বার্থপরিপন্থী বক্তব্য রাখলেন, তাতে গোটা জাতি হতভম্ব হয়ে পড়েছে।

    তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করতে না পারায় সরকার প্রধানের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, এবারও তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো চুক্তি হবে না। আপনি তিস্তার পানি চাইতেই পারলেন না, বরং ফেনী নদীর পানি দিয়ে আসলেন ভারতকে! আপনি এখন দাতা হাতেমতাই হয়ে বলছেন, ‘কেউ পানি চাইলে, তা যদি না দেই, সেটা কেমন দেখায় ?’ অথচ আপনি ভুলেই গেছেন, আপনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আপনার সাংবিধানিক দায়িত্ব নিজ দেশের মানুষের ন্যায্য পানির অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। নিজেদের পানি চাহিবামাত্র বিনাস্বার্থে অন্যকে উজাড় করে দিয়ে আসা নয়! এছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে আপনি ভারতকে চাপ দিতে পারেননি। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের বদলে দিয়ে এসেছে ফেনী নদীর পানি এবং গ্যাস। জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) বিষয়ে টু শব্দটি করেননি। যৌথ বিবৃতির কোথাও এটির উল্লেখ নেই। অথচ বাংলাদেশের মানুষ সেটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। এছাড়া সীমান্ত হত্যা, বানিজ্য ঘাটতির মতো ইস্যুগুলো এজেন্ডার কোথাও স্থান পায়নি। যা বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট।

    ভারতের রাডার স্থানের অনুমতি দেয়ার নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, ভারতকে আমাদের উপকূলে নজরদারির জন্য ২০টি রাডার স্থাপনে অনুমতি দেয়া হলো। তাতে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের আঞ্চলিক সংঘাতের বলি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনি স্বাধীন দেশের সমুদ্র বন্দর, ফেনী নদীর পানি, উপকুলে ভারতের নজরদারীর জন্য ২০টি রাডার স্থাপন এবং জ্বালানী সংকটের এই দেশে গ্যাস অন্য দেশের হাতে তুলে দেয়া হলো-তা সম্পূর্ণভাবে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তি এবং সুষ্পষ্টভাবে সংবিধান লঙ্ঘন।

    বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, মূলত অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল এবং সেই ক্ষমতা দীর্ঘ মেয়াদে ভোগ করার মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করতেই ‘গণতন্ত্রের মা’ এদেশের গণমানুষের আস্থাভাজন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১০ মাস আগেই মিথ্যা ও সাজানো মামলায় জড়িয়ে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করে রেখেছে সরকার। আওয়ামী সরকার জানে যে, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী রেখে তিলে তিলে নি:শেষ করতে পারলেই দেশ বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকাটা সহজ হবে, কিন্তুজনগণের ক্ষমতা সম্পর্কে এখনও তাদের হুঁশ হয়নি। এখন সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ প্রবল শক্তি নিয়ে রাস্তায় নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিরাপরাধ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে জাতীয়তাবাদী শক্তি এখন আরও বেশী ঐক্যবদ্ধ।

    খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, আমি আবারও অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

  • স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধে প্রথম শহীদ আবরার: রিজভী

    স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধে প্রথম শহীদ আবরার: রিজভী

    ভারতের সঙ্গে দেশ বিরোধী চুক্তির বিরোধীতা করায় বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরারকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

    তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধে, দেশের মাটি, পানি রক্ষার যুদ্ধে প্রথম শহীদ আবরার ফাহাদ।’

    মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

    রিজভী আহমেদ বলেন, ‘ফেনী নদীর নাম হোক- ‘আবরার নদ’। ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের মাটি বিক্রি, পানি বিক্রি, দেশ বিক্রির অমানবিক নষ্টবুদ্ধির বিরুদ্ধে সকলকে মৃত্যুপণ যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে। ক্ষমতাসীনদের মুঢ় অহমিকার বিরুদ্ধে সকলকে প্রতিরোধে সামিল হতে হবে। আমরা আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি।’

    শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফেরাতে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, ফেসবুকে দেশবিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেয়ার অপরাধে নারকীয় কায়দায় রাতভর নির্যাতন চালিয়ে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা খুন করেছে বুয়েটের সোনার টুকরা মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে। আবরার ফাহাদের মত নিরীহ নিরপরাধ দেশপ্রেমিক মেধাবী ছাত্রকে হত্যার মাধ্যমে ছাত্রলীগ প্রমাণ করেছে যে, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জান-মালের কোনো নিরাপত্তা নেই। ইতোপূর্বে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রলীগের হামলা থেকে রেহাই পায়নি। ছাত্রলীগের খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্যকে ম্লান করে দিয়ে এর ডাকনাম এখন হয়ে পড়েছে চাপাতিলীগ। ছাত্রলীগ নামক এই দানব জঙ্গীলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরবে না। শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না।

    নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে হালকাভাবে দেখিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের বুয়েট প্রশাসন বাঁচানোর চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাকে বাঁচাতে বুয়েট প্রশাসন উঠেপড়ে লেগেছে। নির্লজ্জ বুয়েট প্রশাসন এই হত্যাকাণ্ডকে সামান্য অনাকাংখিত মৃত্যু বলে বিবৃতি দিয়েছে। তারা খুনিদের আড়াল করতে সিসিটিভিতে ধারণকৃত ২০ মিনিটের ভিডিও এডিট করে মাত্র দেড় মিনিটের একটি ক্লিপ দিয়েছে আন্দোলনরত ছাত্রদের।

    আজ সারাদেশের সাধারণ ছাত্রসমাজ ফুঁসে উঠেছে। আবরারের খুনিদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন এখন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। দেশের সাধারণ ছাত্রসমাজের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান- এই মৃত্যু উপত্যাকাকে শান্তিময় করতে রাজপথে এখনই নেমে আসতে হবে।’

    তিনি বলেন, আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের নামে মামলা হওয়া উচিত। বাস পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে যদি বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নামে মামলা হয় তবে আবরার হত্যার জন্য ক্ষমতাসীনদের শীর্ষ নেতাদের নামে মামলা হবে কি না তা জাতি জানতে চায়। আবরার সত্য তথ্য উল্লেখ করে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়েছিল, সেই পোষ্টে ওইসব চুক্তির অসঙ্গতি তুলে ধরেছিল, এজন্য তাকে জীবন দিতে হলো।

    তিনি আরও বলেন, ‘দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, যাতে আর কোনো মায়ের কোল শুন্য না হয়।’

    এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘ভারতের সাথে অসম চুক্তির প্রতিবাদে ধাপে ধাপে বিএনপির পক্ষ থেকে রাজপথে কর্মসূচি দেয়া হবে।’

    সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • ‘দেশবিরোধী চুক্তি’ আড়াল করতেই সম্রাট নাটক : রিজভী

    ‘দেশবিরোধী চুক্তি’ আড়াল করতেই সম্রাট নাটক : রিজভী

    ‘জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলী দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী একতরফা চুক্তি করেছেন’ এমন অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

    তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার সাংবিধানিক শপথ ভঙ্গ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়নি, একতরফাভাবে সবকিছু দিয়ে এসেছে।

    রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ দাবি করেন।

    তিনি বলেন, চুক্তির বিষয়ে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে এতদিন পর সম্রাটকে গ্রেফতার দেখানোর নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। সমুদ্র বন্দর, ফেনী নদীর পানি এবং জালানী সংকটময় দেশের গ্যাস ভারতের হাতে তুলে দেয়ার যে চুক্তি করা হলো, তা সুস্পষ্ট সংবিধান পরিপন্থী। চুক্তির ব্যাপারে সংসদসহ কোনো পর্যায়েই আলোচনা করেনি সরকার। তিস্তাসহ কোনো সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছে সরকার।

    বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভারত সফরের তৃতীয় দিনে গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীযুক্ত নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তিগুলোর খবর জেনে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। মনে হয়েছে এগুলো চুক্তি নয় যেন শেখ হাসিনা আরেকটি দাসখত দিলেন।’

    ‘এর মাধ্যমে মুলত স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সমুদ্র বন্দর, ফেনী নদীর পানি এবং জ্বালানী সঙ্কটময় বাংলাদেশের গ্যাস ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও নিজেদের নিরাপত্তার কথা না ভেবে উপকূলীয় নজরদারির জন্য বাংলাদেশে রাডার স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তার বদলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেয়েছেন ক্ষমতার মসনদে থাকার গ্যারান্টি আর ঠাকুর শান্তি পুরস্কার। তবে বাংলাদেশের জনগণের বদনসিব, বিনিময়ে বাংলাদেশ কিছুই পায়নি’ বলে উল্লেখ করেন রিজভী।

    রিজভী বলেন, ‘‘এই ফেনী নদীর পানির দামে কী ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতায় থাকাটা পাকাপোক্ত হলো? গত ১২ বছরে যা যা দিলেন তারপর আর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের কিছু অবশিষ্ট থাকল? আসলে এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে জনগণ ও দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা করতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাতো রাতের অন্ধকারে বিনা ভোটে ক্ষমতা দখল করেছেন। তাই জনগণের প্রয়োজন নেই। দেশ বিক্রি করে হলেও ক্ষমতা তার প্রয়োজন। তাই সব দেশের প্রধানমন্ত্রীই বিদেশ সফরে কিছু না কিছু আনতে যায়। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যান সবকিছু উজাড় করে দিয়ে আসতে!

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বিশাল লটবহর -লোক লস্কর নিয়ে ভারতে গিয়ে সবকিছু দিয়ে আসার প্রেক্ষিতে কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের একটি কবিতার চরন যেন মিলে যাচ্ছে ‘যত চাও তত লও তরণী-পরে। আর আছে? আর নাই, দিয়েছি ভরে॥ এতকাল নদীকূলে যাহা লয়ে ছিনু ভুলে সকলি দিলাম তুলে থরে বিথরে এখন আমারে লহো করুণা করে।’’

    এ সময় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রিজভী আরও বলেন, নির্বাচনের নামে রংপুর-৩ আসনে প্রহসন হয়েছে আমরা এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করছি।

    সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মনির হোসেন প্রমুখ।