Tag: রিজার্ভ

  • রিজার্ভ আবার কমে ২০.৪৭ বিলিয়ন ডলার

    রিজার্ভ আবার কমে ২০.৪৭ বিলিয়ন ডলার

    বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার কমে ২০ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আইএমএফসহ বিভিন্ন উৎস থেকে বড় অঙ্কের ঋণ পাওয়ার পর গত সপ্তাহে যা ছিল ২১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে নিট রিজার্ভ ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন থেকে নেমেছে ১৫ দশমিক ৪৫ বিলিয়নে।

    বুধবার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ এ পর্যায়ে নামলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

    আকু হলো- আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিস্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে প্রতি দু্ই মাস পর বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যে দায় পরিশোধ হয়। একটি সময় শ্রীলঙ্কা আকুতে থাকলেও অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে নিজ থেকেই তারা বেরিয়ে গেছে। এর আগে গত মে মাসে আকুতে ১ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমেছিল ১৮ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। আর গত জানুয়ারিতে আকুর দায় বাবদ ১২৭ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নামে ২০ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার।

    দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। তবে করোনা পরবর্তী অর্থনীতিতে বাড়তি চাহিদা এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি, বিদেশি ঋণ ও বিনিয়োগ কমে যাওয়া এবং আগের দায় পরিশোধ বেড়েছে। গত ৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৩৩ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। সব মিলিয়ে ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমছে।

    গত ২৭ জুন আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আইডিবি, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া গেছে আরও ৯০ কোটি ডলার। আবার জুনে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ২৫৪ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। সব মিলিয়ে রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছিল।

  • ২০ বিলিয়নের নিচে নামল রিজার্ভ

    ২০ বিলিয়নের নিচে নামল রিজার্ভ

    বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে। বুধবার রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। এর আগের দিন রিজার্ভের পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে ছিল।

    ডলার সংকটের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা বিক্রি করায় রিজার্ভ কমছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

    ২০২১ সালের আগস্টে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়নের ঘর ছাড়িয়েছিল। এরপর রিজার্ভ থেকে ২৯ বিলিয়ন ডলারের মতো বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

    রিজার্ভের ধারাবাহিক পতনের পাশাপাশি ডলারের দরও বেড়েছে অনেক। ২০২১ সাল নাগাদ আমদানির জন্য প্রতি ডলার ৮৫-৮৬ টাকায় পাওয়া যেত। এখন প্রতি ডলারের জন্য ১২২-১২৩ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। এরপরও কাঙ্খিত ডলার না পেয়ে অনেকে এলসি খুলতে পারছেন না।

     

  • রিজার্ভ কমে ২০ বিলিয়নের ঘরে

    রিজার্ভ কমে ২০ বিলিয়নের ঘরে

    এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের আমদানি বিল বাবদ ১২৭ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও কমে ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, রিজার্ভ ২০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

    মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আকুর বিল ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন (১২৭ কোটি) ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এখন মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদায়ী বছরজুড়ে ডলার সংকটের সঙ্গে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কম ছিল। ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমেছে। তবে বছরের শেষ সময় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) বিভিন্ন আর্থিক সহযোগী সংস্থার ঋণ পাওয়ায় রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছিল। নতুন বছরের শুরুতে আকুর বিল পরিশোধের কারণে আবারও রিজার্ভ কমেছে।

    আকু হলো- একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে আকুর সদর দপ্তর। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে। তবে এখন আকুর সদস্য পদ নেই শ্রীলংকার। অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে দীর্ঘদিন যাবত আমদানি ব্যয় পরিশোধের বিভিন্ন শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির আকু সদস্য পদ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক কমিশনের (এসক্যাপ) ভৌগলিক সীমারেখায় অবস্থিত সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর জন্য আকুর সদস্য পদ উন্মুক্ত।

    জানা গেছে, গত বছর (২০২৩) শেষে মোট রিজার্ভ বেড়ে ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার হয়েছিল। আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। সারা বিশ্বে প্রচলিত ও বহুল ব্যবহৃত আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম ৬) অনুযায়ী, রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার; এটি কমে হয়েছে ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার।

    এদিকে আমদানি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশি থাকায় আমদানি ব্যয় কমেনি। এছাড়া করোনা পর বৈশ্বিক বাণিজ্য আগের অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ২০২২ সালের মার্চ থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে, যা এখনো অব্যাহত। এ সংকট দিন দিন বাড়ছে। বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে রিজার্ভ থেকে নিয়মিত ডলার বিক্রি করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এ সূচকটির ধারাবাহিকতা কমছে। তবে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা উদ্যোগের কারণে দ্রুত সময়ের মধ্যে ডলার সংকট কেটে যাবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

    কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ছিল ২৫ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার। ২০১৫-১৬ তে ৩০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৩২ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ৩৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন। ২০২০-২১ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার এবং সব শেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩১ বিলিয়ন ডলার।

  • রিজার্ভ কমে ২০ বিলিয়নে নেমেছে

    রিজার্ভ কমে ২০ বিলিয়নে নেমেছে

    প্রবাসী আয় কম, আশানুরূপ রপ্তানি আয় না আসা ও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বৈদেশিক ঋণ না পাওয়ায় অব্যাহতভাবে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত রিজার্ভ। কেন না বৈদেশি মুদ্রার চাহিদা ও জোগানে ব্যাপক তারতম্য তৈরি হয়েছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত থেকে দায় মেটাচ্ছে সরকার। এতে করে ধারাবাহিক কমে ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে রিজার্ভ।

    আন্তর্জাতিক মুদ্রা সংস্থার (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী বিপিএম-৬ নিয়মে রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের ১৩ জুলাই। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী, দেশে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৩৫৬ কোটি) ডলার। তবে গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে রিজার্ভের যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন (২ হাজার ৯৫ কোটি ৭৮ লাখ) ডলার। তার মানে, তিন মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ২৬০ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

    ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি বা ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। সেই রিজার্ভ ১৮ অক্টোবর কমে হয়েছে ২ হাজার ৬৬৮ কোটি (২৬ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন) ডলার। আইএমএফ হিসাব পদ্ধতি ‘ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম ৬)’ অনুযায়ী, রিজার্ভ বর্তমানে ২ হাজার ৯৫ কোটি ডলার। এর বাইরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়। প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৭ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এখন যে পরিমাণ প্রকৃত রিজার্ভ আছে, তা দিয়ে শুধু তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচকই হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ।

    নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ কত জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, প্রকৃত রিজার্ভ কত আছে এটা জানা নেই। তবে আমরা যেটা প্রকাশ করি সেই তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী বিপিএম-৬ হিসাবে এখন ২০ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে।

    রিজার্ভের সংকট মেটাতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে আইএমএফ। এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার গত ফেব্রুয়ারিতে পায় বাংলাদেশ। আইএমএফ এর ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল চলতি বছরের জুনে প্রকৃত রিজার্ভ ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৫৩০ ডলার এবং ডিসেম্বরে ২ হাজার ৬৮০ ডলারে রাখতে হবে। কিন্তু গত দুই প্রান্তিকে তা অর্জন করতে পারেনি, ডিসেম্বরেও তা পারবে না।

    এমন বাস্তবতায়, কেন রিজার্ভ রাখতে পারেনি সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে আইএমএফের কাছে। এবং আইএমএফ সেই বিষয়ে আস্বস্ত হয়েছে। সেইসাথে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে আইএমএফের পর্ষদ সভায় ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ৬৮১ মি‌লিয়ন (৬৮ কো‌টি ১০ লাখ মা‌র্কিন ডলার) ডলার ছাড়ের বিষয়টি অনুমোদন হতে পারে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমান বাস্তবতায় আইএমএফের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়া দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

  • রিজার্ভের টাকা জনগণের সেবায় খরচ করেছি: প্রধানমন্ত্রী

    রিজার্ভের টাকা জনগণের সেবায় খরচ করেছি: প্রধানমন্ত্রী

    রিজার্ভ গেল কোথায়? অনেকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের সেবায় রিজার্ভের টাকা খরচ করেছি। ভ্যাকসিন কিনছি। খাদ্য মন্দায় খাদ্য কিনেছি, এখনো কিনছি।

    শনিবার (১৪ অক্টোরব) রাজধানীর বিমাবন্দর এলাকার কাওলা মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।

    শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ দারিদ্রের হার ১৮ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। করোনায় ধনি দেশ টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন দিয়েছে, আমরা দিয়েছি বিনামূল্যে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে যখন যেটা প্রয়োজন হয়েছে, করেছি।

    তিনি বলেন, বিএনপির আমলে দেশ ছিল পিছিয়ে। আওয়ামী লীগের আমলে এগিয়ে গেছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। খালেদা জিয়া আমলে ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট ছিল। আর আমরা এবার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছি।

    শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশের আদর্শ ও চেতনায় বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ সেটা ধারণ করে এবং জনগণের সেবা করে যাচ্ছে। আপনাদের এলাকাকে সিটি করপোরেশনের আওতায় এনেছি। কাজ করে যাচ্ছি। আজকে দেশের মানুষ ভূমি ও গৃহ পাচ্ছে। আমরা বলেছিলাম, বঙ্গবন্ধুর দেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। বস্তিবাসীদেরও ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট দিচ্ছি। তারা সুন্দরভাবে বাঁচবে। খালি বড়লোকরা ফ্ল্যাটে থাকবে, গরিবরা থাকবে না, এটা হতে পারে না।

    তিনি বলেন, বিএনপির আমলের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের ফলে সব মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। তাদের আন্দোলনে হাজার হাজার গাছ কেটেছে, রাস্তা কেটেছে। তারা ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি করতে জানে না। খুনিদের দল জনগণের কল্যাণ কখনো করতে পারে না। করেও না। একই দিনে ৬৪ জেলায় ৫০০ বোমা হামলা করলো। স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্রের ঝনঝনানিতে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেছে। নিজেরই তো শিক্ষা নেই, অন্যকে শিক্ষা দেবে কীভাবে? এসএসসিতে ফেল করেছে। পাস করেছে অংকে। কারণ টাকা-পয়সা হিসাব-নিকাশ ভালো জানতো।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তার (খালেদা জিয়া) বিদেশে চিকিৎসার দাবি নিয়ে অনশন করে। তারা কয়টা থেকে অনশন শুরু করেছে? বাসা থেকে কী দিয়ে নাস্তা করে এসেছে, গিয়ে কী খাবে? কয় ঘণ্টার অনশন? নাটক করার তো একটা সীমা থাকে। তারা অনশন করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে চায়, নেবেটা কে? যে ছেলে মাকে দেখতে আসে না। এমন আশা করাও দুরাশা।

    বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এতই অসুস্থ। তিনি নাকি মারা যাবেন! হ্যাঁ বয়স হয়েছে, আবার অসুস্থ। কিন্তু এত অসুস্থ হলে তার ছেলে তাকে দেখতে আসে না কেন? এটা কেমন ছেলে?

    তিনি বলেন, এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে জিয়া বা খালেদা জিয়ার কোনো অবদান নেই। বরং তারা ভোটচুরি করে ক্ষমতা দখল করেছে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে যে দেশের উন্নতি হয়, এটা আজকে আমরা প্রমাণ করেছি। গত ২৯ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা দেশের মানুষের জন্য কী করেছে? কিছুই করেনি। যা করেছে আওয়ামী লীগই করেছে।

    জিয়ার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এরা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করা আর স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতায় বসানোর কাজ করেছে। সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে। এদের জন্ম হয়েছে হত্যার মধ্যদিয়ে। ষড়যন্ত্র করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। আমার বাবার সঙ্গে দায়িত্বরত অফিসারদেরও হত্যা করেছে। জিয়া ও এরশাদের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। ওই অবৈধ দখলদারদের দোসর বিএনপি-জামায়াত আজ বাংলোদেশে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা বাংলাদেশের উন্নতি সহ্য করে না।

    তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে ভোটচুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে মাত্র দেড় মাসে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল। জনগণের আন্দেোলনের মাধ্যমে আমরা এদেশের মানুষের ভোটার অধিকার নিশ্চিত করেছি। নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার করেছি। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এদেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছে।

    ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির সঞ্চালনায় এতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা অংশ নেন।

    এর আগে বেলা সোয়া ৩টার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে রাজধানীতে ক্ষমতাসীনদের জনসমাবেশে উপস্থিত হর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এসময় নেতাকর্মীরা তাকে স্লোগানে স্লোগানে স্বাগত জানান। এসময় নেতাকর্মীদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। এ জনসভা গত শনিবার হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে তারিখ পরিবর্তন হয়। ফলে আজ কাওলায় হয় সমাবেশ।

    এ উপলক্ষে এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের বিভিন্ন শাখা ও ইউনিট থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হয়েছেন কাওলা মাঠে। দুই ঘণ্টা আগেই জনসভার মাঠে প্রায় ভরে যায়। রোদের মধ্যে আশপাশের এলাকায় গাছের ছায়াও অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে, ঢাকা-১৮ আসনের প্রার্থীদের শোডাউন চোখে পড়েছে। প্রত্যেকেই তার অনুসারীদের টি-শার্ট ও ক্যাপ, ব্যানার ফেস্টুনসহ নানা সাজে সাজিয়ে মিছিল নিয়ে এসেছেন। সভাস্থলে প্রার্থীদের ছবি হাতে সমর্থন জানান দিতে দেখা গেছে।

  • আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রিজার্ভ নেই

    আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রিজার্ভ নেই

    আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ। এই ঋণ পাওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত মানার প্রতিশ্রুতি ছিল। যার মধ্যে অন্যতম হলো গত জুনে প্রকৃত (নিট) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকতে হবে ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার। শর্ত অনুযায়ী সেই পরিমাণ রিজার্ভ রাখতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।

    এ ছাড়াও শর্তানুযায়ী সেপ্টেম্বরে দুই হাজার ৫৩০ ডলার এবং ডিসেম্বরে দুই হাজার ৬৮০ ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখতে হবে। এই শর্ত মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার প্রেক্ষিতে গত জানুয়ারির শেষ দিকে আইএমএফ ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ইতোমধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে ছাড় করা হয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় করার কথা আগামী নভেম্বরে। কিন্তু আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছিল তা পূরণ হয়েছে কিনা তা জানতে আইএমএফের প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যে ঢাকায় এসেছে।

    বুধবার (৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শর্ত পূরণের অগ্রগতি, সফলতা ও ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়। বৈঠকে রিজার্ভের শর্ত পূরণে ব্যর্থতার কথাও জানানো হয়।

    কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানা যায়, আইএমএফের ঋণের যেসব শর্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের পূরণ করার কথা, তার মধ্যে বেশির ভাগ শর্তই পূরণ হয়েছে। তবে যে পরিমাণ নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখার শর্ত দেওয়া হয়েছিল, সেই পরিমাণ রিজার্ভ রাখতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ইতিমধ্যে আইএমএফের বেশকিছু শর্ত পূরণ করা হয়েছে। দুই একটি জায়গায় ব্যর্থতা আছে। রিজার্ভ কিছু কম আছে। রাজস্ব আহরণ কম হয়েছে। তবে অনেক কিছু বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

    জানা যায়, আইএমএফ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সঙ্গে বসে আলোচনা করবে। প্রথম তথ্য নিচ্ছে তারপর আবার বৈঠক করবে। আগামী ১৯ অক্টোবর শেষ মিটিং; সেখানে তাদের মতামত জানাবে, আমরাও আমাদের বিষয়গুলো জানাব।

    এখন রিজার্ভের তিন ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। যেমন মোট রিজার্ভ, বিপিএম ৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ও প্রকৃত রিজার্ভ। দুই ধরনের হিসাব (মোট রিজার্ভ, বিপিএম ৬) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ করলেও প্রকৃত রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে না। তবে প্রকৃত রিজার্ভের তথ্য নিয়মিত আইএমএফকে জানাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত জুনে দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ১২০ কোটি ডলার। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ (ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) অনুযায়ী জুনে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলার।

    সর্বশেষ ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট রিজার্ভ আছে ২ হাজার ৭০৫ কোটি ডলার আর বিপিএম ৬ অনুযায়ী আছে ২ হাজার ১১৫ কোটি ডলার।

  • রিজার্ভ এখন ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার

    রিজার্ভ এখন ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার

    আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের পদ্ধতি মেনে রিজার্ভের নতুন হিসাব প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন হিসাবে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৩৫৬ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার ডলার।

    বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ হিসাব প্রকাশ করে। একই সঙ্গে নিজেদের হিসাবও দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

    কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজেদের হিসাবে রিজার্ভ দেখানো হয়েছে ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৯৯৭ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। গতকাল বুধবার রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার দেখায় বাংলাদেশ ব্যাংক, যা আজ সংশোধন করা হলো।

    বাংলাদেশকে দেওয়া আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল, বিপিএম-৬ ফর্মুলায় দেশের রিজার্ভ গণনা। এটি চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই প্রকাশ করার কথা ছিল। সেই শর্তের আলোকে আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে এ হিসাব প্রকাশ করলো।

    এর আগে গত জুনে আইএমএফের বিপিএম-৬ ফর্মুলা অনুযায়ী দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব গণনা অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।

    আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী দেশের যে রিজার্ভ (২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার) আছে তা দিয়ে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

  • রিজার্ভ এখন ৩২ বিলিয়নের ঘরে

    রিজার্ভ এখন ৩২ বিলিয়নের ঘরে

    এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১১২ কোটি ডলার পরিশোধের পর আরও কমেছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ (রিজার্ভ)। গতকাল রোববার দিন শেষে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ২৫৭ কোটি মার্কিন ডলার।

    অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মানদণ্ড অনুযায়ী বর্তমান রিজার্ভ থেকে আরও ৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে। এতে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ দাঁড়াবে ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

    আইএমএফ’র মানদণ্ড অনুসারে, রিজার্ভ হতে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ঋণ এবং দেশীয় প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যয় বাদ যাবে। তবে সরকার এখন আইএমএফ এবং নিজস্ব অর্থাৎ দুই ধরনের হিসাবই রাখছে।

    অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে আমদানি দায় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

    নতুন আমদানিতে বাণিজ্যিক ঋণপত্র (এলসি) কমলেও আগের দায় পরিশোধে কিছুটা চাপের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ কমেনি। গত নভেম্বর মাস পর্যন্ত পাঁচ মাসে আমদানি দায় পরিশোধ বেড়েছে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। এতে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। আর একই সময়ে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে।

    আমদানি দায় পরিশোধে গত বছর রিজার্ভ থেকে ১২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসবের প্রভাবে কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

    ২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। তবে করোনার প্রভাব আর রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে রিজার্ভ কমতে থাকে। সবশেষ রিজার্ভ ৩৩ থেকে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ওঠা-নামার মধ্যে ছিল।

    অন্যদিকে রিজার্ভের পতন ঠেকাতে আইএমএফ’র তহবিল থেকে সাড়ে ৪ বিরিয়ন ডলার ঋণ নেওয়ার আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে। তাছাড়া দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে সরকার বিশ্বব্যাংক, জাইকাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে।

  • পরিস্থিতি সামাল দিতে রিজার্ভ ব্যবহার করতে হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

    পরিস্থিতি সামাল দিতে রিজার্ভ ব্যবহার করতে হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিত্যপণ্যসহ বিশ্বে সব কিছুর দাম বেড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই এখন রিজার্ভ ব্যবহার করে চলতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ শনিবার (৫ নভেম্বর) জাতীয় সমবায় দিবসের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সরকারপ্রধান।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধের জন্য সব কিছুর দাম বাড়ছে। আমাদের রিজার্ভ ব্যবহার করে চলতে হচ্ছে, এটা মানুষের জন্যই। পৃথিবীর অন্যান্য দেশও তাই করছে। তাই আমি আবারও বলব আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারা বিশ্বে খাদ্যাভাব। আমাদের আরও উৎপাদন বাড়াতে হব। সঞ্চয় বাড়াতে হবে যাতে এই অভিঘাত আমরা মোকাবিলা করতে পারি।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধের জন্য সব কিছুর দাম বাড়ছে। আমাদের রিজার্ভ ব্যবহার করে চলতে হচ্ছে, এটা মানুষের জন্যই। পৃথিবীর অন্যান্য দেশও তাই করছে। তাই আমি আবারও বলব আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারা বিশ্বে খাদ্যাভাব। আমাদের আরও উৎপাদন বাড়াতে হব। সঞ্চয় বাড়াতে হবে যাতে এই অভিঘাত আমরা মোকাবিলা করতে পারি।’

    তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমি আশা করি, এ অবস্থা থাকবে না। দেশে সকলকে একটু সঞ্চয়ের দিকে নজর দিতে হবে।’
    বৈশ্বিক সংকটে সমবায়ীদের উৎপাদন বাড়ানোর আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বে যে সংকট চলছে তা যেন দেশে না হয়, সেজন্য সমবায়ীদের উদ্যোগী হতে হবে।

    আশ্রয়ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সমবায়ের অন্তভুক্ত করে সকলের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    প্রতিটি গ্রামে শহরের মতো সুযোগ-সুবিধা করে দেয়া হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামেও শহরের মতো সুযোগ-সুবিধা দিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। যেখানে সেখানে বাড়িঘর করে যাতে ফসলি জমি নষ্ট না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে যুব সমাজের অবদান ও সমবায়ের গুরুত্বও তুলে ধরেন তিনি।

    বলেন, জীবন জীবিকা উন্নত করার জন্য প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব চিন্তা থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে সেই সুযোগটা আমরা করে দিতে চাই।

    প্রধানমন্ত্রী জানান, জ্বালানী সংকট মেটাতে সোলার প্যানেলের উপর জোর দিচ্ছে সরকার। পরিকল্পনা আছে নেপাল ও ভুটানের সাথে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পেন মাধ্যমে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর। জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করেই দেশ পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগ সরকার।

    আওয়ামী লীগ করোনা যুদ্ধ সফলভাবে মোকাবেলা করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমবায়কে আরো শক্তিশালী করতে উৎপাদন ও সঞ্চয়ের ওপর জোর দেন তিনি।

    বঙ্গবন্ধুর দর্শন সমবায়ে উন্নয়ন এমন প্রতিপাদ্যে ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস ও সমবায় পুরস্কার প্রধান অনুষ্ঠানে দশটি ক্যাটেগরিতে নয়টি সমবায় সমিতি ও একজন সমবায়ীকে পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

    এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিনা পয়সায় সবাইকে কোভিডের টিকা দিয়েছি রিজার্ভ ব্যবহার করে। যাতে সবাই সুস্থ থাকে। মানুষের কল্যাণই আমাদের লক্ষ্য।

    আওয়ামী লীগ করোনা যুদ্ধ সফলভাবে মোকাবেলা করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমবায়কে আরো শক্তিশালী করতে উৎপাদন ও সঞ্চয়ের ওপর জোর দেন তিনি।

    বঙ্গবন্ধুর দর্শন সমবায়ে উন্নয়ন এমন প্রতিপাদ্যে ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস ও সমবায় পুরস্কার প্রধান অনুষ্ঠানে দশটি ক্যাটেগরিতে নয়টি সমবায় সমিতি ও একজন সমবায়ীকে পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

    এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিনা পয়সায় সবাইকে কোভিডের টিকা দিয়েছি রিজার্ভ ব্যবহার করে। যাতে সবাই সুস্থ থাকে। মানুষের কল্যাণই আমাদের লক্ষ্য।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা যাতে কোনোমতেই ব্যহত না হয়, দুর্বার গতি ধরে রেখেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। সমবায়ের মাধ্যমেই দেশ অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতা অর্জন করবে।
    ২৪ঘণ্টা/এনআর

  • রিজার্ভ থেকে দেশের উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর

    রিজার্ভ থেকে দেশের উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর

    দেশে বর্তমানে রেকর্ড পরিমাণ ৩৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ রয়েছে। তিন মাসের আমদানি খরচ হাতে রেখে এই রিজার্ভ থেকে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এমন প্রস্তাব দেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

    একনেকে প্রধানমন্ত্রীর আজকের প্রস্তাব তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩৬ বিলিয়ন ডলার। সর্বকালের রেকর্ড এটা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিদেশ থেকে ডলারে ঋণ নিই। আমরা নিজেদের টাকা তো নিজেরাই ঋণ দিতে পারি। সরকার নিজেই ঋণ নিতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের পক্ষে, জনগণের পক্ষে এই টাকা সংরক্ষণ করে। রিজার্ভ তাদের আয়ত্তেই আছে। ওখান থেকে আমরা প্রকল্পের জন্য ঋণ নিতে পারি।’

    এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘তার (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশনা হলো যে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চিন্তাভাবনা করে খুঁটিনাটি দেখবে। অর্থনৈতিক প্রভাব কী হতে পারে। যেমন প্রধানমন্ত্রীর ধারণা, সাধারণ তিন মাসের আমদানি ব্যয় হাতে রাখা নিরাপদ। তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ বিদেশি টাকা যদি হাতে থাকে, তাহলে স্বস্তিদায়ক মনে করা হয়। সুতরাং তিনি মনে করেন যে, আমদানি ব্যয়ের যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ হাতে রিজার্ভ রেখে বাকিটা অভ্যন্তরীণ নিজেদের অর্থে নিজেরাই ঋণ নিতে পারি এবং তুলে দিতে পারি।’

    রিজার্ভ থেকে প্রকল্পের জন্য ঋণ নেয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমি এটা মনে করি। আমি সমর্থন করি দুটো কারণে। একটা হলো আমাদের নিজস্ব টাকা ডান হাত থেকে বাম হাতে আনলাম। আবার ডান হাতে ফেরত দেব। এটা আগে নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ফেরত যায়। এটা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দ্বিতীয়ত, বিদেশ থেকে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে অনেক শর্ত থাকে, এটা-সেটা থাকে, সেগুলো মানতে হয়। মানতে গিয়ে ব্যয় বেড়ে যায়। ঋণচুক্তি সই করার পরে প্রক্রিয়া করতে অনেক সময় দেখা যায়, এক থেকে দেড় বছর পার হয়ে যায়। তখন আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। ডলারের মান বেড়ে যায়, টাকার মান কমে যায়। আমাদের নিজেদের টাকা হলে নিজেরাই খরচ করবো। ভয়ের কারণটা হলো যে ডলারটা দেব, তা ফেরত আসতে হবে। এখানে যদি ওই ধরনের কোনো ভীতি থাকে, যেটা ব্যাংকে আমাদের নন-পারফর্মিং (ঋণখেলাপি) ঋণের ক্ষেত্রে দেখেন। তাহলে আমি হাত দেব না। ওটা নিশ্চিত হয়ে আমি করতে রাজি আছি। আমি মনে করি, এটা সম্ভব।’

    আরেক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এটা তার অর্ডার নয়। তিনি একটা আইডিয়া তুলে ধরেছেন আলোচনার জন্য। তারপর আমরা সিদ্ধান্তে আসবো।’

    রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    সভা শেষে প্রকল্পগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর