রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেছেন, পুরোনো কালুরঘাট সেতু মেরামত করা হচ্ছে। মার্চের মাঝামাঝিতে এ সেতুতে যান চলাচল শুরু হবে। নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণে ৪ থেকে ৫ বছর সময় লাগবে।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের রেস্ট হাউসে রেলওয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, রেল এক সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। রেললাইন উপড়ে ফেলা হচ্ছে। ট্রেনে আগুন দেওয়া হচ্ছে। এরপরেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলকে ঢেলে সাজাচ্ছেন। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলা রেল যোগাযোগের আওতায় নিয়ে আসার কাজ করছেন। গ্রামীণ কৃষকদের উৎপাদিত ফসল যাতে ট্রেন যোগে শহর পর্যন্ত চলে আসে, প্রান্তিক কৃষক যেন যথাযথ মূল্যে ফলফলাদি ও সবজি বিক্রি করতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করছি৷
রেলমন্ত্রী বলেন, রেলকে সচল করার চেষ্টা করবো। অনেক স্থানে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেগুলো স্বাভাবিক করার পরিকল্পনা রয়েছে। কক্সবাজার রুটে আগামী দুই মাসের মধ্যে একটি কমিউটার ট্রেন চালু করা হবে। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা সেটা হলো লোকো মাস্টার সমস্যা। লোকো মাস্টার নিয়োগ হলে আমরা খুব শিগগিরই এ রুটে আরও কিছু ট্রেন চালু করবো।
তিনি আরও বলেন, আমি নতুন হলেও চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। রেল নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে পরিকল্পনা সেটি আমি বাস্তবায়ন করবো। রেলের পঙ্গু অবস্থা থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। সকলের সহযোগিতায় রেল ব্যবস্থাকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে চাই। ইতোমধ্যে রেলকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে পাঁচ হাজারের উপরে লোকবল নিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। অনেকগুলো ইঞ্জিন ও কোচ আমদানি করা হচ্ছে। কিছু আমদানি হয়েছে। এসব ইঞ্জিন রেল বহরে যুক্ত হলে রেলে ইঞ্জিন সংকটে দূর হবে।
বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতাল-অবরোধে রেলে আক্রমণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মো. নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে চারটি ট্রেনে হামলা হয়েছে। এতে ট্রেনে থাকা পাঁচ যাত্রী নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রেলভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন।
মন্ত্রী বলেন, গত ১৬ নভেম্বর টাঙ্গাইল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আগুন দেয় এবং এতে দুটি কোচ সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এটি সরাসরি রেলের ওপর আক্রমণের প্রথম ঘটনা। এরপর ১৯ নভেম্বর সরিষাবাড়ীতে দাঁড়িয়ে থাকা যমুনা এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়। এতে দুটি কোচ সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এ দুটি ঘটনায় যদিও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি, তবে রেলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, এরপর ২২ নভেম্বর সিলেটে উপবন এক্সপ্রেসে আগুনের ঘটনায় একটি কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৩ ডিসেম্বর রাজেন্দ্রপুরে রেলের পাত উপড়ে ফেলা হয়, এতে দুর্ঘটনায় একজন নিহত হন। এ ঘটনায় ৫০ জনের মতো আহত হন এবং ছয়টি কোচ রেললাইন থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যায়। আজ সকালেও তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনটি কোচে পুড়ে যায়। চারজন নিহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রেল চলাচলে হুমকি তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রত্যেকের সহযোগিতা চাই। রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে রেলকে সম্পৃক্ত করে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ফেলে জনজীবন যে হুমকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এগুলো ফৌজদারি অপরাধ। আমরা নিরাপদ রেলযাত্রার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। রেলের নিরাপত্তার জন্য ২৭০০ আনসার সদস্য চেয়েছি। দু-একদিনের মধ্যে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।
আগামী ২৯ জুনকে পবিত্র ঈদুল আযহার দিন ধরে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এবারই প্রথমবারের মতো অঞ্চল ভেদে অনলাইনে যাত্রীদের টিকিট পাওয়া আগের চেয়ে নিশ্চিত করতে দুই শিফটে টিকিট বিক্রি করা হবে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুরে রেল ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, ২৪ জুনের টিকিট ১৪ জুন; ২৫ জুনের টিকিট ১৫ জুন; ২৬ জুনের টিকিট ১৬ জুন; ২৭ জুনের টিকিট ১৭ জুন এবং ২৮ জুনের টিকিট ১৮ জুন বিক্রি করা হবে। এছাড়া ঈদের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ২৯, ৩০ জুন ও ১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি করা হবে। এছাড়া যাত্রী সাধারণের অনুরোধে ২৫ শতাংশ টিকিট যাত্রা শুরুর আগে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে।
রেলমন্ত্রী বলেন, এবারও ঈদে ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। তবে ২টি শিফটে এই টিকিট বিক্রি করা হবে। সকাল ৮টায় বিক্রি হবে পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট এবং দুপুর ১২টায় বিক্রি হবে পূর্বাঞ্চলের টিকিট।
মন্ত্রী আরও বলেন, এবার ঈদে ঢাকা থেকে বহির্গামী আন্তঃনগর ট্রেনে মোট আসন সংখ্যা হবে ২৯ হাজার। সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান প্রমুখ।
আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে ট্রেন যাবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
আজ মঙ্গলবার সকালে কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে রেলমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি প্রথমে আইকনিক স্টেশন, এরপর রামু স্টেশনের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। এরপর চকরিয়ার ডুলহাজার রেললাইন কাজ পরিদর্শনে যান।
এসময় রেলমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কক্সবাজারের ঝিংলজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়াস্থ নির্মাণাধীন ঝিনুক আকৃতির আইকনিক রেলস্টেশনটি অনন্য স্থাপত্যশৈলী ও দৃশ্য নন্দন। যার নিমার্ণ কাজ শেষ পর্যায়ে। এটি কেবল মাত্র কক্সবাজারে গর্ব না; এটি বাংলাদেশের গর্বও বটে।’ তিনি আরো বলেন, দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইনের কাজ। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।’
দোজাহারি-কক্সবাজার রেলপ্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ‘করোনা মহামারি ও ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে এই রেলপথ নির্মাণে নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছে। বিদেশ থেকে যেসব উপকরণ আনতে হয়েছে তাও মজুদ রয়েছে। এখন বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসলে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে।’
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, রেলের টিকিটের কালোবাজারি ঠেকাতে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা প্রয়োজনে শতভাগ রেলের টিকিট অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা করবো। তাহলে কালোবাজারির আর সুযোগ থাকবে না।
শনিবার দুপুরে পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশনে নবনির্মিত প্রধান ফটক ও সংযোগ সড়ক এবং পঞ্চগড়-সান্তাহার রুটে ‘দেলনচাঁপা এক্সপ্রেস’ আন্তঃনগর ট্রেন এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘একটি ভারসাম্যমূলক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে সরকার। রেলের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি বাজেটেও ১৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ রেলপথগুলো ডাবল লাইনে উন্নীত করার কাজ চলছে। পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা হয়ে জলপাইগুড়ি স্টেশন পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানের রেলযোগাযোগ স্থাপিত হবে।’
পরে তিনি পতাকা উড়িয়ে পঞ্চগড়-সান্তাহার রুটে ‘দেলনচাঁপা এক্সপ্রেস’ এবং ফিতা কেটে ও ফলক উম্মোচন করে নবনির্মিত প্রধান ফটক ও সংযোগ সড়ক উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) অসীম কুমার তালুকদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম, জেলা পরিষদ প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিবুল হাসান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। এতে রেল বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ উপস্তিত ছিলেন।
ভারত থেকে ট্রেনের কোচ আমদানির কথা ভাবছে বাংলাদেশ। এলক্ষ্যে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে অবস্থিত ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি (আইসিএফ) পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
কারখানা পরিদর্শনের পর সেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি থেকে ট্রেনের কোচ আমদানির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে। বৃহস্পতিবার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন চেন্নাইয়ের এই ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি (আইসিএফ) পরিদর্শন করেন। এসময় রেলমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলী ছিলেন। সংক্ষিপ্ত এই সফরে তারা লিংক হফম্যান বুশ (এলএইচবি) ভিস্তাডোম কোচ, এলএইচবি এসি টু টায়ার এবং থ্রি টায়ার-সহ আইসিএফ’র তৈরি বিশেষ কোচগুলো পরিদর্শন করেন।
পিটিআই বলছে, কারখানা পরিদর্শনের পর আইসিএফ’র মহাব্যবস্থাপক এ কে আগারওয়ালের সাথে আলাপকালে রেলমন্ত্রী সুজন বলেন, বাংলাদেশে রেলওয়ের বর্তমান মিটারগেজ ট্র্যাকগুলোকে ব্রডগেজে রূপান্তর করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে এবং আইসিএফ থেকে এলএইচবি কোচগুলো বাংলাদেশ রেলওয়ের আধুনিকীকরণে অনেক সাহায্য করবে।
এদিকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, শ্রীলঙ্কা ও নেপালে সম্প্রতি আইসিএফ’র রপ্তানি করা ডেমু (ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট) ট্রেনের মতো গণ যাতায়াতের জন্য ট্রেন সেট আমদানির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আইসিএফ থেকে কোচ রপ্তানির প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের একটি দল শিগগিরই চেন্নাইয়ের আইসিএফ পরিদর্শন করবে।
তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভারতীয় সেনাদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং প্রতিবেশী এই দেশ চিরকাল (বাংলাদেশের সঙ্গে) সম্পর্ক বজায় রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এছাড়া বন্দে ভারত কোচ-সহ আইসিএফ নির্মিত অন্যান্য রেল কোচ দেখে নুরুল ইসলাম সুজন মুগ্ধ হয়েছেন বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রী মো.নুরুল ইসলাম সুজন এমপি বলেছেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গৃহীত মেগা প্রকল্পের সাথে আমাদের স্বার্থ এক ও অভিন্ন। দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বন্দর নগর চট্টগ্রাম এগিয়ে গেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন আজ সোমবার সকালে মন্ত্রীর সাথে তাঁর সচিবালয়ের দপ্তরে স্বাক্ষাতকালে তিনি একথা বলেন।
এসময় ফজলে হোসেন বাদশা এমপি ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সেলিম রেজা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাক্ষাতকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন নগরীর মাদারবাড়ি এলাকায় বরাদ্দের টাকা ও জমির উন্নয়ন বাবদে টাকা পরিশোধের পরও ৭একর জায়গা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দখলে থাকা সত্ত্বেও ওই জমির বরাদ্দ বাতিল হওয়ার বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রীকে অবহিত করে তা প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। মন্ত্রী প্রশাসকের বক্তব্য শুনে তা মিমাংসার আশ্বাস দেন।
প্রশাসক সুজন মন্ত্রীর নিকট মিরসরাই হতে বেজার ব্যবস্থাপনায় চালু হতে যাওয়া বাংলাদেশের বৃহত্তম শিল্পাঞ্চল বঙ্গবন্ধু শিল্প পার্কের গুরুত্ব অনুধাবন করে ওই এলাকার সাথে শহর কেন্দ্রীক মানুষের যোগাযোগের সুবিধার্থে কয়েক জোড়া শাটল ট্রেন চালু ও চট্টগ্রাম দোহাজারি রুটে কমপক্ষে ৪ জোড়া ট্রেন চালুর প্রস্তাব করেন। এতে একদিকে বঙ্গবন্ধু শিল্প পার্কের সাথে সকল শ্রেণির কর্মজীবীদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় পবির্তনের পাশাপাশি শ্রমিক ও কর্মজীবীদের সহজলভ্যতা নিশ্চিত হবে।
এসময় চট্টগ্রাম নগরীকে পরিচ্ছন্ন, পরিবেশ বান্ধব মানবিক শহরে পরিণত কতে আরো বেশ কিছু প্রস্তাবনা রেলপথ মন্ত্রীর বরাবরে উত্থাপন করেন চসিক প্রশাসক সুজন।
মন্ত্রী সাময়িক দায়িত্ব পাওয়ার পরও নগরীর উন্নয়নে প্রশাসকের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন চিন্তা ভাবনায় প্রশংসা করে তাঁকে ধন্যবাদ জানান।
প্রশাসক সুজন রেলপথ মন্ত্রীর নিকট আরো যেসব প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছেন তা হলো চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনারবাহী রেল লাইনের সংস্কার ও বগী বাড়ানো, পাহাড়তলীতে স্থাপিত রেল ওয়ার্কশপ পুনরায় চালু ও সংস্কার করা, চট্টগ্রাম নগরীর নতুন রেল স্টেশনের সামনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বা রেলের উদ্যোগে মাল্টি স্টোর বা বহুমুখি পার্কিং চালু করন, রেলওয়ের মালিকানাধীন পাহাড়তলী জোড় ডেবা সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তার করা।
প্রস্তাবগুলো মন্ত্রী ও প্রশাসকের পারস্পরিক আলাপ-আলোচনায় প্রশাসক সুজন তাঁর প্রস্তাবনার বিষয়ে বেশ কিছু যুক্তি মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। এরমধ্যে বন্দরের কন্টেইনার জট কমাতে রেললাইন সংস্কারের পাশাপাশি বগী বাড়ানোর সুজনের প্রস্তাব মন্ত্রী গুরুত্বসহকারে আমলে নেন।
এছাড়াও নগরীর যানজট নিরসনে নতুন রেল স্টেশনের সামনে বহুমুখি পার্কিং চালু ও পাহাড়তলী জোড় ডেবার অপব্যবহার রোধের পাশাপাশি এর আশে পাশে অপরাধমূলক ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে স্টেশনের ওই জায়গা ও জোড় ডেবা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে বরাদ্দ দেয়ার জন্য রেলপথ মন্ত্রীকে অনুরোধ করেন চসিক প্রশাসক সুজন।
প্রশাসক রেলপথ মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন পাহাড়তলী জোড় ডেবার একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। এক সময় এলাকার অধিবাসীরা সুপেয় পানির সংকট দূর করতে এই দীঘি খনন করে। আজ অনাদরে অবহেলায় প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে আমরা ম্লান হতে দিতে পারি না। এই জোড় ডেবাকে আমি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নান্দনিক সাজে সাজিয়ে বিনোদনকেন্দ্র রূপে গড়ে তুলতে চাই। আশাকরি আপনি আমার প্রস্তাবে সায় দিবেন।
স্বাক্ষাতকালে প্রশাসকের সকল প্রস্তাব ও কথা রেলপথ মন্ত্রী মনোযাগ সহকারে শুনে বলেন, আমিও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক দুজনই ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে আসা রাজনৈতিক কর্মী। জাতীয় উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, প্রধানমন্ত্রীর মিশন ভিশন ২০৪০ বাস্তবায়নে আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসে চট্টগ্রাম আঞ্চলিকতার গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সুদৃঢ় অবস্থান করে নিবে বলে আমার বিশ্বাস।
সে সময় রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুবিধাজনক সময়ে চট্টগ্রাম সফরে এসে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকের প্রস্তাবিত স্থানগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে এর সম্ভ্যবতা যাচাই করে দ্রুত তাঁর একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত চসিক প্রশাসককে জানাতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চসিকের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরকার সচেষ্ট: সাক্ষাতকালে প্রশাসক সুজনকে নৌ- সচিব
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন আজ ঢাকায় সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী’র সাথে তাঁর অফিস কক্ষে সাক্ষাত করেন।
এই সময় তিনি সচিবকে চট্টগ্রাম বন্দরের বাৎসরিক আয় থেকে চসিককে ১ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ পরিশোধ, সদরঘাট থেকে কাপ্তাই ও কাপ্তাই থেকে রাঙামাটি পর্যন্ত নৌ রুটে সী-বাস চালু এবং সদরঘাট থেকে বিমানবন্দর সংলগ্ন ১৫নং ঘাট পর্যন্ত সূলভ ভাড়ায় সী-বাস সার্ভিস চালুকরণ প্রসঙ্গে ইতোপূর্বে যে তিনটি পৃথক পৃথক চাহিদা পত্র প্রদান করে ছিলেন তার আলোকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী চসিক প্রশাসকের এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বলেন, চাহিদা পত্রে উল্লেখিত প্রস্তাবনা ও দাবী জনস্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিষয়গুলো মন্ত্রণালয় আমলে এনেছে এবং গুরুত্ব বিবেচনায় এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় সাধন করে পর্যায়ক্রমে যথাযথ উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সচিব চসিকের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও জনস্বার্থে প্রদত্ত চাহিদা পত্রের জন্য প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার জনবান্ধব। তাই জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা ও চাহিদা আমলে এনে তা পূরণ করা ও সমাধান নিশ্চিত করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গীকার। সর্বোপরি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরকার সচেষ্ট।
চসিক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম বন্দরের বাৎসরিক আয় ১ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ পরিশোধ প্রসঙ্গে সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীকে অবহিত করেন, চট্টগ্রাম বন্দর ও চসিক অভিন্ন। চট্টগ্রাম নগরীর টেকসই সড়ক অবকাঠামো ব্যবস্থাপনার উপরই নিভরশীল বন্দরের আমদানী ও রপ্তানী পণ্য পরিবহনের বিষয়টি। বন্দরমুখী ও বহিমুখী ভারীযান গুলোর মাত্রাতিরিক্ত চাপের ফলে সড়কগুলো মারাত্নক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে বন্দরের সক্ষমতায় বিরুপ প্রভাব ও সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে জনদুর্ভোগ অসহনীয় পর্যায়ে ঠেকেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে বে-টার্মিনাল এবং মহেষখালীর মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর হলেও সড়ক ও স্ট্রাকচারাল সক্ষমতা না থাকলে বন্দরের সক্ষমতার ক্ষেত্রে বড় ধরণের ঘাটতি থেকে যাবে। তাই বন্দরের বাৎসরিক আয় থেকে ১ শতাংশ হারে চসিককে পরিশোধ করা হলে আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নের কর্মকান্ড চলমান রাখা সম্ভব হবে। এতে সাধারণ মানুষ ও পণ্য পরিবহন সহজ, নিশ্চিত ও নিরাপদ হবে এবং এর সুফল হিসেবে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
সদরঘাট থেকে কাপ্তাই ও রাঙামাটি নৌ-রুটে সী-বাস সার্ভিস চালুর চাহিদা পত্র প্রসঙ্গে চসিক প্রশাসক বলেন, সড়কের পাশাপাশি অন্য কোন বিকল্প চলাচল পথ না থাকায় যানজট সহ নানা দুর্ভোগ হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় নৌ-রুট। সদরঘাট থেকে কাপ্তাই হয়ে রাঙামাটি পর্যন্ত সী-বাস বা লঞ্চ রুট হলে যাত্র ওজন্য পরিবহন এবং পার্বত্য এলাকা থেকে তরিতরকারী, শাক-সবজীসহ কৃষিপণ্য চট্টগ্রাম শহরে পরিবহন সহজলভ্য হবে এবং কৃতি অর্থনীতির ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
চাহিদাপত্রে সদরঘাট থেকে বিমান বন্দর সংলগ্ন ১৫নং ঘাট পর্যন্ত সী-বাস চালু ও এর সূলভ মূল্যে ভাড়া নির্ধারণ প্রসঙ্গে বলেন, এতে নগরীতে যানজট নিরসন কিছুটা হলেও সম্ভব হচ্ছে। বিশেষ করে বিমান বন্দর ব্যবহারকারী যাত্রীদের জন্য বেশ স্বস্থিদায়ক তবে জনপ্রতি ৪০০ টাকা করে ভাড়া নিধারণ করাটা সবার জন্য সক্ষমতার বাইরে। সূলভ মূল্যে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রনাধীন বিআইডব্লিউবিসি বা বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে একই জেটি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের জন্য সী-সার্ভিস চালু হলে এয়ারপোর্ট রোডে চলাচলে যানজট থেকে নগরবাসী রেহাই পাবে।
তিনি মেরিন রোড সদরঘাট থেকে কর্ণফুলী ব্রীজ পর্যন্ত সরাসরি সংযোগ করার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এই রোড দিয়ে এখন ফিরিঙ্গিবাজার থেকে কর্ণফুলী ব্রীজ পর্যন্ত চলাচল করতে পারছে। এতে যানজট কিছুটা নিরসন হচ্ছে। তবে সদরঘাট থেকে ফিরিঙ্গিবাজার পর্যন্ত রোডটি সংযোগ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ভারী যানবাহন সদরঘাট কর্ণফুলী সেতু হয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফ পর্যন্ত সরাসরি চলাচল করতে পারছে না। তাই সদরঘাট থেকে ফিরিঙ্গিবাজার পর্যন্ত অংশটি দ্রুত সম্পন্ন করে মেরিন রোডের সাথে যুক্ত হলে পুরো নগরী যানজট মুক্ত হবে এবং দূরপাল্লার সড়ক যোগাযোগ সহজতর হবে।
২৪ ঘণ্টা বোয়ালখালী প্রতিনিধি : কালুরঘাটে সড়কসহ রেলওয়ে সেতু নির্মাণে সৃষ্ট সকল জটিলতা কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন।
আজ বুধবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় কালুরঘাট সেতু ও নতুন সেতুর জায়গা পরিদর্শন শেষে এক পথ সভায় তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এসময় মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী ২০২২ সালের মধ্যে এ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
তিনি বলেন, নানান জটিলতার কারণে সেতু নির্মাণের কাজ দীর্ঘসূত্রতায় পড়েছিলো। তবে সকলের আন্তরিকতায় সব জটিলতা নিরসন হয়েছে। প্রস্তাবিত সেতুতে ডাবল সড়ক ও দুই লাইন বিশিষ্ট রেল লাইন (ব্রডগেজ) থাকবে।
প্রস্তাবিত সেতু নির্মাণে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন ও মানুষের মাঝে সেতু নিয়ে যে দ্বিধা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েেেছ তা দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ সফর করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ সেতুর উচ্চতা নিয়ে নৌ অধিদপ্তরের যে আপত্তি এসেছে তা অচিরেই আভ্যন্তরীণ বৈঠকেই সমাধান করা হবে।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান, রেলওয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রণব চন্দ্র ঘোষ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আছিয়া খাতুন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামীকাল রোববার থেকে সীমিত আকারে বিভিন্ন রুটে ৮ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল কববে। আগামী ৩ জুন থেকে আরও ১১ জোড়া ট্রেন চালু হবে।
তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে ট্রেনের ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে টিকিটের দাম বাড়বে না।
আজ শনিবার দুপুরে রেলভবনের সম্মেলন কক্ষে ট্রেন চালুর বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এসব তথ্য জানান।
রেল মন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু বাসে ভাড়া বাড়ানোর একটা প্রক্রিয়া চলছে। আপনারা জানেন রেল সরকারি সেবামুলক পরিবহন। তাই আমরা এখানে কোন ভাড়া বাড়াবো না। আগের ভাড়াই চলবে। এ কারণে রেলের যাত্রী বেড়ে যাবে।’
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্যই আমরা ট্রেনের ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করব। ট্রেনের সব টিকিট অনলাইনে দেওয়া হবে। একই সাথে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কেবিনের বালিশ, কাঁথা এগুলো দেওয়া হবে না। তাছাড়া করোনার এই সময় ট্রেনে কোন ধরনের খাবার সরবরাহ করা হবে না।
ট্রেনের যাত্রীদের উদ্দেশ্যে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হবেন না। ট্রেনে যাত্রা করার সময় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। টিকিট ছাড়া কোন যাত্রী ট্রেনে উঠবেন না। তাছাড়া বিমানবন্দর স্টেশন থেকে কোন যাত্রী তোলা হবে না। সবাইকে কমলাপুর স্টেশন থেকে উঠতে হবে।
রেলমন্ত্রী বলেন, যাত্রীদের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানীয় সঙ্গে নিতে হবে। তাপমাত্রা পরিমাপের সুবিধার্থে যাত্রীদের ট্রেন ছাড়ার কমপক্ষে ৬০ মিনিট পূর্বে স্টেশনে পৌঁছাতে হবে। কোনো অবস্থাতেই টিকেট ছাড়া প্লাটফরমে প্রবেশ করা যাবেনা। দর্শনার্থী / প্লাটফরম টিকেট বিক্রয় বন্ধ থাকবে।
মাসিক/স্বল্পদূরত্বের যেমনঃ ঢাকা বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, নরসিংদীতে কোন ট্রেন থামবে না।
তিনি বলেন, প্রথম দফায় আগামীকাল থেকে যেসব রুটে চলবে আন্তঃনগর ট্রেন সেগুলো হলো, সুবর্ণ এক্সপ্রেস (চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম), উদয়ন এক্সপ্রেস (চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম), লালমনি এক্সপ্রেস (লালমনিরহাট-ঢাকা-লালমনিরহাট), কালনী এক্সপ্রেস (সিলেট-ঢাকা-সিলেট), চিত্রা এক্সপ্রেস (খুলনা-ঢাকা-খুলনা), সোনার বাংলা এক্সপ্রেস (ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা), বনলতা এক্সপ্রেস (চাপাইনবয়াবগঞ্জ-ঢাকা-চাপাইনবয়াবগঞ্জ), পঞ্চগড় এক্সপ্রেস (পঞ্চগড়-ঢাকা-পঞ্চগড়)।
এছাড়া দ্বিতীয় দফায় আগামী ৩ জুন থেকে চালু করা হতে পারে আরো ৯ টি আন্তঃনগর ট্রেন, সেগুলো হলো , ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজর রুটে তিস্তা এক্সপ্রেস, ঢাকা-বেনাপোল, বেনাপোল এক্সপ্রেস, ঢাকা-চিলহাটি, নীলসাগর এক্সপ্রেস, খুলনা-চিলহাটি, রূপসা এক্সপ্রেস, খুলনা-রাজশাহী, কপতাক্ষ এক্সপ্রেস, রাজশাহী-গোয়ালন্দঘাট, মধুমতি এক্সপ্রেস, চাট্টগ্রাম-চাঁদপুর, মেঘনা এক্সপ্রেস, ঢাকা-কিশোরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ও ঢাকা-নোয়াখালী, উপকূল এক্সপ্রেস, ঢাকা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, ঢাকা-চাঁদপুর ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস।
সংবাদ সম্মেলনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সেলিম রেজা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামে রেলের পরিত্যক্ত জমিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় নির্মিত হচ্ছে ৫০০ আসনের হাসপাতাল ও ১০০ আসনের মেডিকেল কলেজ। প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৮৬ কোটি টাকা। ৬ একর জায়গার মধ্যে নতুন এই হাসপাতালটি নির্মাণ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
সভাশেষে রেলমন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন জায়গায় রেলের জমি আছে, সেগুলো হয়ত রেলের ডেভলপমেন্টের জন্য কাজে লাগবে। সেই পরিত্যক্ত জমিগুলো কিভাবে ব্যবহার করতে পারি এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে সরকারের যে নীতি আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর প্রায় ৩০ ভাগ পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপের অধীনে নেয়ার এবং পিপিপি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে এগুলো দেখভাল করা হয় পিপিপি অনুযায়ী। এর অধীনে চট্টগ্রামে ৫০০ বেডের একটি হাসপাতাল ও ১০০ সিটের একটি মেডিকেল কলেজ হবে। এই প্রকল্পটি আজ পারচেজ কমিটিতে অনুমোদিত হলো। এটা রেলওয়ের প্রথম পিপিপি প্রকল্প রেলওয়ের। আগামীতে আমাদের দেশের রেলের ভূমিগুলোতে এই প্রক্রিয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করব।
তিনি বলেন, এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৮৬ কোটি টাকা। এটি ৫০ বছরের জন্য বাস্তবায়ন হবে, পরে চুক্তি অনুযায়ী হাসপাতালটি রেলের হয়ে যাবে কমিটি।
বেদখল জমি উদ্ধার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেগুলো বেদখল আছে সেগুলো তো উদ্ধার করেছি ইতোমধ্যে। বিভিন্ন জায়গায় উদ্ধার প্রক্রিয়া চলমান। আমাদের মূল বিষয়ে হবে জমিগুলো উদ্ধার করে আমরা কী করব সেটি ঠিক করা। উন্নয়নের জন্য রেল পরিচালনার জন্য যে কাজগুলো হচ্ছে, লাইন সম্প্রসারণ, বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ। এছাড়াও কিছু জমি আছে যেগুলো বিভিন্ন ধরনের মার্কেট করে হয়ত নিজেরাই ভোগ দখল করছে। সেগুলো উদ্ধার করে একটি ব্যবস্থাপনার মধ্যে আমরা নিয়ে আসতে চাই। সেগুলো উদ্ধার করে অর্থনৈতিকভাবে যেন রেল কিছু পেতে পারে সরাসরি সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।
দলীয় অফিসের ব্যানারে রেলের জমি দখল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো কোনো কিছুই থাকবে না। আমরা দলমত নির্বিশেষে রেলের জায়গাগুলো রেলের অধীনে নিয়ে আসতেছি। এবং এগুলো কিভাবে ব্যবহার করা যায় সেজন্য আমরা সেই প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছি। পিপিপির অধীনে বড় ধরনের কোন প্রকল্প করা যায় সেই সুযোগও তৈরি করছি। আবার নিজেরা মার্কেট করে ভাড়া দিতে পারি সে ব্যবস্থাও করছি।
চট্টগ্রামের সিআরবিতে ৬ একর জমিতে মেডিকেল এবং মেডিকেল কলেজটি হবে বলে জানান তিনি।
রেলমন্ত্রী নুরল ইসলাম সুজন বলেছেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে এখন একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ লাভ করেছে। এ প্রতিষ্ঠানে হাসপাতাল আছে, স্কুল আছে, নিজস্ব নিরাপত্তাবাহিনী ও যোগাযোগ এবং পরিবহন ব্যবস্থাও আছে। আমরা এখন আর অন্যের ওপর নির্ভরশীল নই। আমরা নিজেদের আয় দিয়ে চলতে পারি।
রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে রেলওয়ের ৪১তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি রেলের সম্প্রতি উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘রেলওয়ে একসময় স্বকীয়তা হারাতে বসেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় এ রেল আবারও সগৌরবে ফিরে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর কয়েকটি মেগা প্রকল্পের মধ্যে কক্সবাজার রেলপ্রকল্পও একটি। তাঁর নির্দেশেই ঢাকায় মেট্রো ট্রেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে বুলেট ট্রেন চালুর কাজ চলছে। তিনি এ রেল ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নিয়েছেন।’
রেলমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের প্রত্যেকটি জেলায় ট্রেন নিয়ে যাওয়ার জন্য রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ চলছে।
তিনি চট্টগ্রাম থেকে রেল যোগাযোগের সুব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে আখাউড়া হয়ে লাকসাম ও টঙ্গী পর্যন্ত ডাবল লাইনের কাজ চলছে। এ কাজ শেষ হলে রেলে এ রুটে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা খুব কম সময়ে যাওয়া যাবে।’
২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। ডেস্ক : মসজিদে নামায পড়তে গিয়ে নিজের ব্যাক্তিগত মুঠোফোনটি হারিয়ে ফেলেছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তার মুঠোফোনটি ফিরে পেতে পুলিশের শরনাপন্ন হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।
থানায় সাধারণ ডায়েরি করার বিষয়টি নিশ্চিত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাতে মন্ত্রীর পক্ষ থেকে এক ব্যক্তি রমনা থানায় মুঠোফোন হারানোর বিষয়টি উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করেন শুক্রবার রাজধানীর বেইলি রোডের ‘টিপ টপ’ মসজিদে নামাজ আদায়ের পর থেকে মন্ত্রী তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি খুঁজে পাচ্ছেন না।
তবে মুঠোফোনটি চুরি হয়েছে নাকি কোথাও হারিয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে হারানো মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।