Tag: শহীদদের স্মরণ

  • সামরিক স্বৈরশাসকরাই ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের খলনায়ক:প্রফেসর ড. ইফতেখার

    সামরিক স্বৈরশাসকরাই ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের খলনায়ক:প্রফেসর ড. ইফতেখার

    আন্তর্জাতিক সমাজবিজ্ঞানী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ব ইতিহাসে ২৪ জানুয়ারি মানবতা বিরোধী বর্বরতম একটি কালো দিন। আমরা জালিওয়ানবাগ হত্যাকান্ড সহ অনেক নৃশংস বর্বরতার কথা জানি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা সদত্ত স্বাধীন বাংলাদেশকে কলঙ্কের তিলক পরিয়ে দেয়। আরো লজ্জা ও কলঙ্কের বিষয় কুখ্যাত সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের রক্ষায় কালো আইন ইনডেসনিটি অধ্যাদেশ জারী করে বিশ্বশ্রেষ্ঠ খলনায়ক হিসেবে ঘৃণিত ও নিন্দিত হয়েছেন।

    তিনি আজ বিকেলে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম গণহত্যায় নিহত শহীদ স্মরণে ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

    তিনি আরো বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যকান্ডের খালেদা জিয়ার শাসনামলে এদেশে উগ্রমৌলবাদ ও জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটে।

    একাত্তরের ঘৃণিত চিহ্নিত স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক দালালদের মনত্রী বানানো হয়। গণতান্ত্রিক সংবিধানকে কাঁটা ছেড়া করে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্ম নিরপেক্ষতা জলঞ্জলি দিয়ে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়। তবে আশার কথা বিএনপি-জামাত জোট যখন ক্ষমতাসীন ছিল তখন নারকীয় গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করার পর চট্টগ্রাম গণহত্যার বিচার ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করেছেন।

    মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি সামরিক স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখনই শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত গণহত্যা চালায়। এই হত্যাকান্ড বর্বরতম ও জঘন্য। এই অপকর্ম অমানবিক।

    বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন ২৪ জানুয়ারির চট্টগ্রাম গণহত্যার সময় আমি মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। সেদিন সিএমপি কমিশনার রকিবুল হুদার নির্দেশে শেখ হাসিনার ট্রাক বহরে গুলিবর্ষণের বিভীষিকা ও নির্বিচারে গণহত্যার একটি কলঙ্কিত কালো দিন।

    প্রদীপ প্রজ্জলন অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেন, মামলার বিচারিক রায়ে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত ৫ পুলিশ সদস্যের মধ্যে অন্যতম সিএমপি’র তৎকালীন উপ পরিদর্শক গোপাল চন্দ্র মন্ডল (জে.সি.মন্ডল) বিদেশে পলাতক। যে দেশে তিনি রয়েছেন সে দেশের সাথে কূটনৈতিক প্রক্রিয়অর মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা হোক। চট্টগ্রাম গণহত্যায় নিহতদের মধ্যে অনেকের পরিবার বিপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। সরকারকে সে সমস্ত পরিবারের পুর্নবাসন করার দাবি জানান। চট্টগ্রাম গণহত্যা মামলার বাদী এডভোকেট শহীদুল হুদা ১৯৯২ সালে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। তিনি বেঁচে নেই। তাঁর সাহসী ভূমিকার জন্য তাঁকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়ারও আহ্বান জানান।

    বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন পরিষদের কো চেয়ারম্যান চসিক কাউন্সিলর আলহাজ্ব এইচ এম সোহেলের সভাপতিত্বে প্রধান সমন্বয়ক সাংস্কৃতিক সংগঠক মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ২৪শে জানুয়ারি চট্টগ্রাম গণহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন।

    বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শফর আলী, নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মাহমুদুল হক, সরাইপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আলহাজ্ব নুরুল আমিন, চসিক কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক সায়রা বানু রশ্মি, নগর যুবলীগের সদস্য সুমন দেবনাথ, ওয়াহিদুল আলম শিমুল, আকবর শাহ থানা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ইয়াছির আরাফাত, আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল হক সওদাগর, মুজিবুর রহমান, সাইদুর রহমান পুতুল, নারী নেত্রী ঝুমা আলমগীর, সাংস্কৃতিক সংগঠক রুপম মুৎসুদ্দী টিটু, কবি সজল দাশ, নগর ছাত্রলীগের সদস্য নাছির উদ্দিন কুতুবী, শ্রমিক নেতা শাহ আলম ভূইয়া প্রমুখ।

    ২৪ জানুয়ারি গণহত্যা দিবসের নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।