Tag: শহীদ নূর হোসেন

  • জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন রাঙ্গা

    জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন রাঙ্গা

    শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে অপ্রীতিকর বক্তব্য দেওয়ার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা।

    বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, আমি সবার কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাচ্ছি। আমি তিনদিন ধরে জ্বরে ভুগছি। আমার হয়তো ভুলত্রুটি হতে পারে।

    সম্প্রতি শহীদ নূর হোসেনকে ‘ইয়াবাখোর’ হিসেবে অভিহিত করেন রাঙ্গা। সরকারি দল, বিরোধী দলসহ নানা মহলে তার এই বক্তব্য সমালোচনার ঝড় তুলেছে।

    রাঙ্গা সংসদে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে মন্ত্রী করেছেন। আমার দল হলেও হয়তো আমি কিছু হতে পারতাম না। আমি কাউকে কিছু বলতে চাইনি।

    আজ রবিবার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কার্যালয়ে মহানগর উত্তর শাখার উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় নব্বইয়ের দশকের স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময় নিহত শহীদ নূর হোসেনকে ‘অ্যাডিকটেড, ইয়াবাখোর’ বলে মন্তব্য করেন মশিউর রহমান রাঙ্গা।

    ওইদিন তিনি বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কাকে হত্যা করলেন। নূর হোসেন কে? নূর হোসেন কে? একটা অ্যাডিকটেড ছেলে। একটা ইয়াবাখোর, ফেন্সিডিলখোর।’

  • রাঙাকে সংসদে তুলাধুনা, বহিস্কারের দাবি

    রাঙাকে সংসদে তুলাধুনা, বহিস্কারের দাবি

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সংসদের বিরোধীদলের চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙাকে তুলাধুনা করেছেন সংসদের সিনিয়র সদস্যরা।

    একইসাথে তাকে জাতীয় পার্টি ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ পদ থেকে বহিষ্কার এবং তার এই ধরনের কটূক্তিতে জাতীয় পার্টির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তারা রাঙার ওই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং রাঙ্গাকে দুঃখ প্রকাশ ও সংসদে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।

    মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এ দাবি জানান সংসদ সদস্যরা। আওয়ামী লীগের সিনিয়র সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সিনিয়র সদস্যরাও তাকে তুলাধুনা করেন। রাঙা কীভাবে সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ এবং জাতীয় পার্টির মহাসচিব হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলের তার দলের সংসদ সদস্যরা।

    এক অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন- আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, তাহজীব আলম সিদ্দীকি, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ, মুজিবুল হক চুন্নু, গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। এসময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

    পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এই প্রসঙ্গের সূত্রপাত করে তাহজীব আলম সিদ্দীকি বলেন, নূর হোসেন দিবসে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন মশিউর রহমান রাঙ্গা। নূর হোসেনকে হত্যার পর সারাদেশের আনাচে কানাচে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। সেই নূর হোসেনকে নিয়ে অপমানজনক বক্তব্যের প্রতিকার চাই। তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার প্রতিশ্রুতিও দিতে হবে।

    এরপর আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, রাঙ্গা এমন একটি বক্তব্য দিয়েছেন, যেটাতে বাংলার মানুষের হৃদয়ে আঘাত লেগেছে। নূর হোসেন হত্যার ঘটনার পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন বেগবান হয় এবং মানুষ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। আমি অবাক হলাম রাঙ্গা বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নূর হোসেনের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। অথচ রাঙ্গা ভুলে গেছেন এরশাদও নূর হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছিল, সংসদে ক্ষমা চেয়েছিল। রাঙ্গা তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। তার এই বক্তব্যের ধিক্কার জানাই।

    তিনি বলেন, এরশাদের বক্তব্যের জন্য আমরা প্রশংসা করেছিলাম। কিন্তু রাঙ্গার বক্তব্যের কারণে সারাদেশে স্বৈরাচার শব্দটি উচ্চারণ হচ্ছে। রাঙ্গা যে বক্তব্য দিয়েছেন, এর জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি যে এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, সেই এলাকায় আওয়ামী লীগ তার সঙ্গে না থাকলে নির্বাচিত হতে পারতেন কিনা সেটা আমরা বলতে চাই না। রাঙ্গা খুবই খারাপ বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তার বক্তব্যে ঘৃণা প্রকাশ করি। সবাই এখন স্বৈরাচারী এরশাদ বলছে। একজন সুস্থ্য মানুষ, তিনি যদি স্বাভাবিক থাকেন তার পক্ষে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও নূর হোসেনকে নিয়ে এই বক্তব্য দেয়া সম্ভব নয়।

    আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। রাঙ্গা সেই চেষ্টা করেছেন। নূর হোসেন যখন হত্যা হয়, তখন দেশে ফেনসিডিল-ইয়াবা ছিল না। ভোট ডাকাতি, মিডিয়া ক্যু’র কথা বলা হয়। এই ভোট ডাকাতি-মিডিয়া ক্যু’র মূলহোতা ছিল এরশাদ। আজ সেটাকে ঢাকার জন্য রাঙ্গা এত বড় দুঃসাহস দেখাতে পারে না। এরশাদের সময় রাজনৈতিক নেতাদেরকে নির্যাতন ও পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয়েছে। এরশাদকে শুধু আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার বলে না, সারাদেশের মানুষ তাকে স্বৈরাচার বলে অভিহিত করেছে। বিশ্বে স্বৈরাচার বলে পরিচিতি পেয়েছে। রাঙ্গাকে অবশ্যই তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।

    আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, রাঙ্গা যেকথা বলেছেন, এটা কোনো সুস্থ মানুষ বলতে পারে না। বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকে কথা বলার আগে তার চিন্তা করা দরকার ছিল। রাঙ্গার এই বক্তব্য গণতন্ত্রের ওপর আঘাত করেছে। তাকে শুধু ক্ষমা চাইলেই হবে না, জাতীয় পার্টিকেও তার এই বক্তব্যের ক্লারিফিকেশন দিতে হবে।

    সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, নূর হোসেনকে নিয়ে কটাক্ষ করে কথা বলেছেন রাঙ্গা। কথায় আছে ‘রতনে রতন চেনে….’। আমি বাকি কথাটা আর বললাম না। যে নূর হোসেনকে সামনে রেখে আমরা আন্দোলন করেছি। তাকে তিনি কটাক্ষ করেছেন। এটা করে তিনি সংসদকে অপমান করেছেন। কারণ স্বৈরাচারের পতন না হলে তিনি সংসদে এসে বসতে পারতেন না। একথা বলে তিনি প্রমাণ করেছেন, স্বৈরাচার, দালালদের চরিত্র পরিবর্তন হয় না। এর জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।

    নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, মনে হয় রাঙ্গা শুধু নূর হোসেনের বিরুদ্ধে নয়, দেশের স্বাধীনতা, সংসদ ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি গণতন্ত্রের ধারাকে অপমান করেছেন। তার এই বক্তব্যের জন্য যদি জাতীয় পার্টি কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে জাতীয় পার্টি আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। রাঙ্গাকে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি ক্ষমা না চাইলে জাতীয় পার্টি থেকে তাকে বহিষ্কার করতে হবে।

    রাঙ্গার বক্তব্য নিয়ে সংসদে কড়া সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বান্দরকে লাই দিলে গাছের মাথায় ওঠে। আমি যতদিন রাজনীতি করি ততদিন ওর (মসিউর রহমান রাঙ্গা) বয়সও না। ও এই ধৃষ্টতা দেখায় কিভাবে, এই দুঃসাহক কিভাবে পেল? এই সংসদই তাকে লাই দিয়েছে। যাদের অতীত নাই, বর্তমানে কিছুই ছিল না। হঠাৎ তাকে মন্ত্রী বানানো হলো, একটার পর একটা প্রমোশন দেয়া হলো। আমরা তো তাজ্জব হয়ে গেলাম। এগুলো আমরা দেইনি। এই সংসদে সে চিফ হুইপ। আমি একদিন বললাম তাজুল ইসলাম চৌধুরী মারা গেছেন, তার বিষয়ে বক্তব্য রাখব। সে বলে আপনি দেবেন, আমি কেন নাম পাঠাব। এই ধৃষ্টতা সে দেখাতে পারে। সংসদে বিরোধী দলের চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা সম্পর্কে বক্তব্য হয়েছে। তার বক্তব্য আমি শুনেছি, আমি সেদিন সভায় ছিলাম না। পরে এটা ভাইরাল হয়ে গেছে। এই বক্তব্য জাতীয় পার্টির বক্তব্য না। এটা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য হতে পারে না। এটা রাঙ্গার নিজস্ব বক্তব্য হতে পারে। এই বক্তব্যের জন্য জাতীয় পার্টি লজ্জিত। আমরা দুঃখিত এবং অপমানিত অনুভব করছি।

    ফিরোজ রশীদ বলেন, কোথায় আন্দোলন করেছে? কোথায় সংগ্রাম করেছে? সে করেছে যুবদল। শুধু তাই না প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কেও সে কথা বলেছে। সে গণতন্ত্রের ছবক দেয়। যে লেখাপড়া করে নাই, রাতারাতি কাগজের মালা গলায় দিয়ে পরিবহনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে হঠাৎ করে এখানে এসে বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়ে গেছে। সে এ ধরনের ধৃষ্টতা দেখায়। আর তার জবাব দিতে আজ সংসদে দাঁড়াতে হয়। আজকে খুব লজ্জিত। এটা সম্পূর্ণ আমাদের ঘাঁড়ে এসে পড়েছে। আমরা দুঃখিত। নূর হোসেনের গায়ে লেখাটা ছিল একটা পোস্টার। সারা বিশ্বের লোক দেখেছে। এটা ছিল তার মনের কথা। তিনি বলেন, নূর হোসেন ’৯০-তে তার জীবন দিয়ে গেছেন। যে যুবক গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিতে পারেন, স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে পারেন সেই সাহসী যুবকের প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। আমরা কখনো এই ধরনের ধৃষ্টতা দেখাইনি। এই ধরনের অপমানজনক কথা কখনো বলিনি। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার বক্তব্য হতে পারে না।

    মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এটা রাঙ্গার ব্যক্তিগত বক্তব্য। জাতীয় পার্টি দলীয়ভাবে এটা সমর্থণ করে না। এটা তার একান্তই ব্যক্তিগত বক্তব্য । তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা তিনি নিজেই দেবেন।

    তিনি বলেন, নূর হোসেন মারা যাওয়ার পর তার বাসায় গিয়ে আমাদের নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দু:খ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া নূর হোসেনের পরিবারকে সাহায্য করেছেন। আমরা ১৯৯৬ সাল থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছি।

  • রাঙ্গাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে: শহীদ নূরের মা

    রাঙ্গাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে: শহীদ নূরের মা

    এরশাদের স্বৈরশাসনবিরোধী গণআন্দোলনে গুলিতে নিহত বীর যোদ্ধা নূর হোসেনকে নিয়ে গতকাল বিরুপ মন্তব্য করায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেছেন নূরের মা মরিয়ম বেগম।

    সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদী অবস্থানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

    উপস্থিত সাংবাদিকদের নূর হোসেনের মা মরিয়ম বেগম বলেন, ৩০ বছর পর এই লোক এতো বড় কথা বলেছে। তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। এর বিচারের ভার আমি দেশের মানুষের ওপর সরকারের ওপর ছেড়ে দিলাম।

    গতকাল রোববার জাতীয় পার্টি আয়োজিত ‘গণতন্ত্র’ দিবসের এক আলোচনায় রাঙ্গা বলেন, নূর হোসেন কে? একটা অ্যাডিকটেড ছেলে। একটা ইয়াবাখোর, ফেন্সিডিলখোর। নূর হোসেনকে নিয়ে গণতান্ত্রিক দুই দল, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি নাচানাচি করে।

    বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখবেন নূর হোসেন দিবস। সেই নূর হোসেন চত্বর এরশাদ করে দিয়েছেন। গণতন্ত্রের শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে সাবেক স্বৈর শাসকের দলের মহাসচিবের এমন মন্তব্যে তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে।

    উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালের ১০ই নভেম্বর বুকে ও পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান লিখে রাস্তায় নেমেছিলেন নূর হোসেন। ওইদিন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন নূর হোসেন। মিছিলটি জিরো পয়েন্ট এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান নূর হোসেন।

  • শহীদ নূর হোসেন ‘ইয়াবাখোর’ ও ‘ফেনসিডিলখোর’ ছিলেন : রাঙ্গা

    শহীদ নূর হোসেন ‘ইয়াবাখোর’ ও ‘ফেনসিডিলখোর’ ছিলেন : রাঙ্গা

    স্বৈরাশাসক এরশাদের শাসনামলে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া শহীদ নূর হোসেন মাদকাসক্ত ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা।

    তিনি বলেছেন, নূর হোসেন ‘ইয়াবাখোর’ ও ‘ফেনসিডিলখোর’ ছিলেন।

    আজ রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে আলোচনা সভায় রাঙ্গা এ মন্তব্য করেন। ১৯৮৬ সালের পর থেকে দিবসটিকে ‘গণতন্ত্র দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে জাতীয় পার্টি।

    আলোচনা সভায় মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘নুর হোসেনকে নিয়ে নাচানাচি করছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি। তাদের কাছে ইয়াবা-ফেন্সিডিলখোর ও ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের গুরুত্ব বেশি। কিন্তু এরশাদ সাহেবের কাছে এরা কোনো গুরুত্ব পাননি। যারা গণতন্ত্রের ‘‘গ’’ বোঝে না। অ্যাডিক্টেড একটি ছেলে নুর হোসেন।’

    সেই মিটিং

    নুর হোসেনের হত্যা নিয়ে রাঙ্গা বলেন, ‘পুলিশ গুলি করল সামনে থেকে আর ঘুরে গিয়ে পেছন থেকে লাগল। কী হাস্যকর যুক্তি! তখনো তো একজন মারা গেছে, এখন প্রতিদিনই মানুষ মরছে।’

    জাপা মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্র আজ নির্বাসনে সুন্দরবনে, যদি বিশ্বজিৎ ও আবরারকে হত্যা করা না হতো তাহলে বলতাম গণতন্ত্র রয়েছে। শিক্ষককে পানিতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে, জাবি ভিসির পদত্যাগের জন্য আন্দোলন করছে ছাত্ররা।’

    আলোচনা সভায় জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘এরশাদ সাহেব ১৯৮৬ সালে এই দিনে ঘোষণা দিয়েছিলেন, দেশে আর কোনোদিন সামরিক শাসন আসবে না। আর কিন্তু কখনই কাঠামোগতভাবে সামরিক শাসন আসেনি। যেদিন সঠিকভাবে ইতিহাস রচিত হবে, সেদিন দেশের মানুষ এই দিনটিকে গণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করবে।’

    প্রয়াত জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের কথা স্মরণ করে কাদের বলেন, ‘এরশাদের জীবন ব্যবস্থা ছিল গণতন্ত্রের জন্য উৎসর্গ। উনি গণতন্ত্রের স্বার্থে বাধ্য হয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন। আবার যখন প্রয়োজন হয়েছে গণতন্ত্রের স্বার্থে উনি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন।’

    ঢাকা মহানগর উত্তর জাপার সভাপতি প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম, সুনীল শুভরায়, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আলমগীর সিকদার লোটন, ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান প্রমুখ।

  • প্রধানমন্ত্রী বুলবুল পর্যবেক্ষণে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন

    প্রধানমন্ত্রী বুলবুল পর্যবেক্ষণে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ঘুর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলা পর্যবেক্ষণে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

    তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি নাকি যথেষ্ট নয়। অথচ ব্যাপক ও পর্যাপ্ত প্রস্তুতির ফলে আমাদের প্রাণ ও সম্পদ উভয়ই ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। আমি বলবো, নিজের চেহারাটা আয়নায় দেখতে। কারণ, তাদের সময়ে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে লাখ লাখ প্রাণহানি ও ব্যাপক সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বিমান বাহিনীর ৩৫ টিরও বেশি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল শুধু ব্যবস্থাপনার ত্রুটিতে, কারণ প্লেন তো উড়িয়েই অন্যত্র নেয়া যেত। বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারগুলো চলে এসেছিলো রাস্তায়। যখন মানুষের লাশ পানিতে ভাসছে, সমস্ত চট্টগ্রামে লাশের গন্ধ, তখন নওয়াজ শরিফ আসায় বেগম খালেদা জিয়া একদিনে সাতটি শাড়ি বদল করেছেন।’

    রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কার্যালয়ে ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে শহীদ নূর হোসেন সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

    তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার রক্তধমনীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর রক্তস্রোত প্রবাহমান, তিনি বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসে দেশ ও মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, মেহনতী মানুষের জীবনের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। সেকারণেই শেখ হাসিনার অপর নাম গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর দেশ ও জাতির উন্নয়ন।’

    মন্ত্রী বলেন, ‘নূর হোসেনের রক্ত বৃথা যায়নি। নূর হোসেনসহ সকল শহীদের রক্তে আমাদের গণতন্ত্র আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। নব্বইয়ের ১০ নভেম্বরের সেই দিন শুধু নূর হোসেন নয়, টার্গেট ছিলেন শেখ হাসিনাও।’

    শহীদ নূর হোসেন দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি তছলিম আহম্মেদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, নূরুল আমিন রুহুল, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, শহীদ নূর হোসেনের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।

  • শহীদ নূর হোসেনের প্রতি আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন শ্রদ্ধা

    শহীদ নূর হোসেনের প্রতি আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন শ্রদ্ধা

    স্বৈরাচার বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক শহীদ নূর হোসেনকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সংস্কৃতিক সংগঠন।

    আজ রোববার সকালে রাজধানীর গুলিস্তানের নূর হোসেন স্কয়ারে (জিরো পয়েন্টে) সর্বসস্তরের রাজনৈতিক নেতাকর্মী ফুল দিয়ে শহীদ নূর হোসেনকে স্মরণ করেন ও শ্রদ্ধা জানান।

    সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এ শ্রদ্ধা নিবেদন চলে। সকাল সাড়ে ৯ টায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরে নেতৃত্বে নুর হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

    এ সময় নূর হোসেনের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য নূর হোসেন রক্ত দিয়েছিলেন দেশে সেই গণতন্ত্র বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে।

    ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, ঘুর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় সরকার ও আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। সরকারের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীরা কাজ করছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

    এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক আসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দিলীপ রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

    আওয়ামী লীগ ছাড়া শহীদ নূর হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্ট, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটি, বাম গণতান্ত্রিক জোট।

    এছাড়াও আওয়ামী যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানায়।

    ১৯৮৭ সালের এই দিনে তৎকালীন সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে রাজধানীর রাজপথে আন্দোলনে সামিল হয়ে নূর হোসেন নিহত হন। তার এই আত্মত্যাগে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন বেগবান এবং পাবর্তীতে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।